নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কনোকো ফিলিপস এর সাথে অসম চুক্তি মানিনা

আমার দেশ আমার মা, নাইজেরিয়া হবেনা

সাম্যবাদী

সাম্যবাদে বিশ্বাসী একজন মানুষ

সাম্যবাদী › বিস্তারিত পোস্টঃ

শোষণহীন সমাজের এক স্বপ্নপুরুষ কমরেড সিরাজ শিকদার (পর্ব-২)

০২ রা জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ২:৫৮





[সিরাজ সিকদারকে নিয়ে এ পর্যন্ত ব্লগে কম লেখা হয়নি। বেশীরভাগ লেখাই মনে হয়েছে, কোনো দলীয় স্বার্থ পূরণের জন্য। আবার ব্যক্তি সিরাজের জীবন নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করে অনেকে তার বিপ্লবীত্বকে খাটো করেছেন। তারা আসলে তার আত্নত্যাগকেই কটাক্ষ করেছেন। এটি মোটেই সিরাজ সিকদারের সংক্ষিপ্ত জীবনী বা তার কর্মকাণ্ডের সামগ্রীক মূল্যায়ন নয়। বরং এটি ভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে নির্মোহভাবে এই শহীদ দেশপ্রেমিক বিপ্লবীকে দেখার একটি ছোট্ট প্রয়াস।]



শোষণহীন সমাজের এক স্বপ্নপুরুষ কমরেড সিরাজ শিকদার (পর্ব-১)



আবার পাইপ গান এতো বেশী গরম হয়ে আসে যে/ ক্রমশ এর ব্যবহার কমে আসছে...সুবিমল মিশ্র।





নকশালী মূল্যায়ন: আই অ্যাম দা পার্টি!



১৯৬৬ সালের চীনের সাংস্কৃতিক বিপ্লবের একটি বড় ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে দুই বাংলায়। 'গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরাও' মাওসেতুং এর এই দীর্ঘস্থায়ী গেরিলা যুদ্ধ, তথা সশস্ত্র কৃষক বিপ্লবের রনোনীতি গ্রহণ করে যুদ্ধপূর্ব সময়ের বামপন্থী দলগুলোর একাংশ। সাধারণভাবে এসব বামদলগুলো পিকিংপন্থী (পরে নকশাল) হিসেবে চিহ্নিত হয়। এরই একটি পূর্ব বাংলার কমিউন্স্টি পার্টি; এই পার্টির নেতৃত্বে ছিলো আবার দুটি ভাগ। একটি অংশ টিপু বিশ্বাস ও দেবেন সিকদার মুক্তিযুদ্ধকে 'জাতীয় মুক্তি আন্দোলন' হিসেবে চিহ্নিত করেন। তারা ১৯৭১ সালে রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, দিনাজপুরসহ উত্তরবঙ্গ এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বিচ্ছিন্নভাবে গড়ে তোলেন পাক-বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ। তবে স্পষ্টতই এর বেশীরভাগ প্রতিরোধ যুদ্ধই পরিচালিত হয় মুজিব বাহিনীর বিরুদ্ধে।



এর আগে অগ্নিগর্ভ যুদ্ধপূর্ব বাংলাদেশে ১৯৬৯-৭০ সালে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানীর ন্যাপের নেতৃত্বে লাল টুপির সম্মেলন এবং সন্তোষ কৃষক সম্মেলনেও পিকিংপন্থী নেতারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।



তো পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (দেবেন সিকদার) কেন্দ্রীয় নেতা আজিজ মেহের ১৯৬৯ সালে সার্বক্ষনিক কর্মী হিসেবে পার্টির ঢাকা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল আঞ্চল তদারকির দায়িত্ব পালন করেন। এরই মধ্যে ২৫ মার্চ ইয়াহিয়া খান পাকিস্তানের নয়া প্রেসিডেন্ট হিসেবে সারাদেশে সামরিক আইন জারী করেছেন।



প্রকাশ্য রাজনীতি ছেড়ে আত্নগোপনে থেকেই পার্টির নেতারা চেষ্টা করলেন মাওবাদী ছোট ছোট গ্রুপগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার। মূল দায়িত্ব দেয়া হলো আজিজ মেহেরকে। বরিশালে একজন অ্যাডভোকেটের নেতৃত্বাধীন গ্রুপের সঙ্গে আজিজ মেহেরের প্রথম দফা বৈঠক অসফল হয়। পরে মাওপন্থী ছাত্রদের একটি গ্রুপ তাদের কর্মসূচির সঙ্গে একাত্নতা প্রকাশ করে পার্টিতে যোগ দেয়। এর পর ঐক্যের ডাক নিয়ে আজিজ মেহের সাক্ষাৎ করেন সর্বহারা পার্টির প্রধান সিরাজ সিকদারের সঙ্গে।



বাকী কথা আজিজ মেহেরের ভাষ্যে:



...একটি গ্রুপ কমরেড সিরাজ সিকদারের নেতৃত্বে তখন বিকশিত হচ্ছে ঢাকায় এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। যদিও তার সম্পর্কে বামপন্থী-বুদ্ধিজীবী মহলে নানা বিভ্রান্তি। কেউ মনে করতেন, এরা অ্যাডভেঞ্চারিস্ট, সন্ত্রাসবাদী; কেউ মনে করতেন, সিরাজ সিকদার হচ্ছেন সিআইএ'র এজেন্ট। তবে আমাদের পার্টি এ বিষয়টি এমন একপেশে, যান্ত্রিকভাবে দেখতো না।



আমি মনে করি, কমরেড সিরাজ সিকদারের একটি বিপ্লবী আকাঙ্খা ছিলো। কথাবার্তা, চলাফেরা-- সবকিছুর মধ্যে ছিলো একটা আকর্ষণীয় ব্যপার। তরুণ ছাত্রকর্মী, যারা বিপ্লবের জন্য ছিলো ব্যাকুল, তারা সহজেই আকৃষ্ট হয়েছিলো। তারা কয়েকটা গেরিলা গ্রুপ করে, কয়েকটি সরকারি অফিসে বোমাবাজী করে, দেয়াল লিখনে বেশ সাড়া জাগিয়েছিলো। বিশেষ করে সিরাজ সিকদারের থিসিস আকৃষ্ট করেছিলো ছাত্র-তরুণদের।



কিন্তু আমরা মনে করতাম, এদের কর্মকাণ্ডে যতটা রোমান্টিক বিপ্লবী উপদান আছে, ততটা মার্কসীয় উপাদান নেই।



তবু অনেক চেস্টার পর ১৯৬৯ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় কমরেড সিরাজ সিকদারের সঙ্গে আমার দেখা হলো। উনি আমাদের পার্টির দলিলই পড়েননি! তার ব্যাগে দলিল ভড়ে দিলাম। সব শুনে উনি বললেন, ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার কোনো ইচ্ছা 'তার বা তার পার্টির' নেই। কথা শুনে মনে হলো: উনিই পার্টি!



কথাবার্তার সময় সিরাজ সিকদার বার বার তার কোটের পকেট থেকে মাওসেতুং এর লাল বই (কোটেশন ফ্রম মাওসেতুং, রেড বুক হিসেবে সারা বিশ্বে বহুল প্রচারিত) বের করে দু-এক পাতা দেখে নিচ্ছিলেন। ওনার শোল্ডার হোল্ডারে একটা রিভলবার দেখতে পেলাম। সব কিছুই যেনো একটা 'শো' বলে মনে হচ্ছিলো।



মনে হলো, উনি একজন উচ্চাকাঙ্খী বামপন্থী নেতা। রোমান্টিক কর্মকাণ্ডের জন্য তার গ্রুপের কিছুটা বিকাশ হয়তো হবে; তার কোনো ভবিষ্যত নেই। আমাদের পার্টির ঐক্য হলো না।





(চলবে)

-------------------------



তথ্যসূত্র: স্মৃতি শুধু স্মৃতি নয়, আজিজ মেহের, শোভা প্রকাশ, একুশে বইমেলা, ২০০৪।

পড়ুন: মাওইজম ইন বাংলাদেশ : দ্য কেস অব পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টি



কোটেশন ফ্রম মাওসেতুং, রেডবুক।



সৌজন্যেঃ বিপ্লব রহমান

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১২/-৪

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৩:০৩

স্বপ্নকথক বলেছেন: কাদের পক্ষে কথা বলেন ভাই?? যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে "দুই কুকুরের কামড়া কামড়ি" বলতো, তাদের পক্ষে??

যারা জামায়াতের পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি, তাদের পক্ষে??

ছিঃ

লেখক বলেছেন: ভাই, আগে জানুন তারপর এ ধরনের মন্তব্য করুন। ৭১' এর যুদ্ধে মাওবাদীদের একটা অংশ যুদ্ধকে 'দুই কুকুরের লড়াই' আখ্যা দিয়েছিলো ঠিকই। কিন্তু সেটা ছিল একটা ভুল সিদ্ধান্ত। আর আমাদের যুদ্ধের মূল উদ্দেশ্য কি আদৌ পূরন হয়েছে? আপনি বলুন। না, আমি স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধী নই। আমরা স্বাধীন হয়েছি ঠিকই তবে এখনো আমাদের মুক্তি অর্জিত হয়নি। অসমাপ্ত যুদ্ধ সমাপ্ত করার দায়িত্ব আমাদেরই।

স্বপ্নকথক বলেছেন: আমার তিন মামাকে খুন করেছিলো কারা?

একদিকে পাক বাহিনী অন্যদিকে আপনার পেয়ারের বাহিনী, দুই শয়তানের মাঝে পড়ে কাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়েছিলো??

জীবনে আপনাদের বই পুস্তক সহ ইতিহাস কম পড়িনি বা শুনিনি।

রাজাকার দের পাশাপাশি আপনারা ছিলেন আরেক রাজাকার, যাদের কথা খুব কম মানুষই জানে।

কিন্তু সেটা ছিল একটা ভুল সিদ্ধান্ত। এই ভুল সিদ্ধান্ত কয়জনের লাশের জন্ম দিয়েছে জানাবেন একটু?

উত্তর নাই।

স্বপ্নকথক বলেছেন: সেদিনও আপনারা মাওসেতুংয়ের জন্মদিনে টিএসসিতে বললেন

"তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধ"!! পাকিস্তানের ভাইরা ভাই চীন এই জন্য??

মুক্তিযুদ্ধরে হালাল বললে চীনের ভাতা বন্ধ হয়ে যাবে তাই?

উত্তর নাই।

আপনার আদর্শ আপনার কাছেই থাক, দয়া করে আমাদের শেখাতে এসেন না।

২| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৩:১৩

নীল পরী বলেছেন: চলুক। অনেক অজানা জানতে পারছি। লেখককে ধন্যবাদ।

প্রিয়তে যুক্ত

পোষ্টে প্লাস

৩| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৩:২৮

সায়েম মুন বলেছেন: চলুক আর পোষ্টে প্লাস

৪| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৩:৩৬

মেহেদী_হাসান বলেছেন: rajakarke minus.

৫| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৮:১৪

ও.জামান বলেছেন: এই মাত্র চে গুয়েভারার উপর নির্মিত দুই পর্বের সিনেমা 'চে' দেখা শেষ করলাম। ইয়াংকীরা কাপুরুষের মতো এই বিপ্লবীকে হত্যা করেছিল বলিভিয়ায়। একই ভাবে সিরাজ শিকদারকে হত্যা করা হয়েছিল।

খুবই আশ্চর্য হই কিছু মানুষ নামের অমানুষের মন্তব্য এবং চিন্তা চেতনার গভীরতা দেখে। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র ২য় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান-জাপানের পক্ষ হয়ে মিত্র বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করেছেন। মিত্র বাহিনীর খাতায় তিনি যুদ্ধ অপরাধী কিন্তু ভারতের জনগনের কাছে তিনি বীর। কেন? কারণ তাঁরা নেতাজী কাদের সহায়তা নিয়ে যুদ্ধ করেছেন তা না দেখে কাদের জন্য যুদ্ধ করেছেন সেটা বিচার করে।

এই দেশের জন্য, দেশের নিপীড়িত মানুষের জন্য সংগ্রাম করতে গিয়ে সাম্রাজ্যবাদের ফ্যাসিস্ট দোশর কাপুরুষ বাকশালীদের হাতে নিহত সিরাজ শিকদারকে নিয়ে লিখলে রাজাকার উপাধি দেয়া হয়। বাকশালীদের ব্রেন ওয়াসের নমূনা দেখলে আশ্চর্য হতে হয়।

৬| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৮:১৭

ও.জামান বলেছেন: স্যরি, উপরের মন্তব্যে ভুল করে "নেতাজী সুভাষ চন্দ্র ২য় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান-জাপানের পক্ষ হয়ে মিত্র বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করেছেন।" লিখেছি। আসলে হবে, "নেতাজী সুভাষ চন্দ্র ২য় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান-জাপানের পক্ষ হয়ে মিত্র বাহিনীর বিপক্ষে যুদ্ধ করেছেন।"

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.