নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কি বলা যায়! কিছু কথায় নিজেকে ব্যক্ত করা সম্ভব না আমার পক্ষে। তাই একটা সিরিজে কিছু কিছু করে সবই বলছি।

সামু পাগলা০০৭

আমি অতিআবেগী, আগে ব্যাপারটা লুকানোর চেষ্টা করতাম। এখন আর করিনা।

সামু পাগলা০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কানাডার স্কুলে একেকটি দিন (পর্ব ৪) - মফস্বলের কন্যের বৈদেশ ভ্রমণ; চলন ও বলন, এবং বৈদেশীদের নানা দর্শন!

২০ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৯:০২

কানাডা সিরিজের এত পর্বে স্কুলের ভেতরে থাকতে পাঠক নিশ্চই বোরড হয়ে গিয়েছিলেন। এজন্যে লাস্ট পর্বে সবাইকে স্কুলের বাইরে নিয়ে গিয়েছিলাম! আজকে সেই ভ্রমণের বাকি অংশটুকু বলে দেব! :)

আগের সিরিজ: কানাডার স্কুলে একদিন (এক থেকে বাইশ): পর্ব বাইশ । পর্ব বাইশে অন্য সকল পর্বের লিংক রয়েছে!
আগের পর্ব: কানাডার স্কুলে একেকটি দিন (পর্ব ১) - বাংলাদেশীদের যেসব বিষয় বিদেশীরা অদ্ভুত মনে করে!
কানাডার স্কুলে একেকটি দিন (পর্ব ২) - মফস্বলের কন্যের বৈদেশে শিক্ষাগ্রহন; ঘটন অঘটন এবং আমাদের নিয়ে বৈদেশীদের দর্শন!
কানাডার স্কুলে একেকটি দিন (পর্ব ৩) - মফস্বলের কন্যের বৈদেশ ভ্রমণ; চলন ও বলন, এবং ভিনদেশ নিয়ে বৈদেশীদের দর্শন!

অসম্ভব সুন্দর ও বৃহৎ লাইব্রেরীটি ঘুরে আমরা বেরিয়ে আসছিলাম। টিচার বাইরে দাড়িয়ে ছিলেন। বেরিয়ে ওনার কাছে দাড়ানোর পরে আমাকে বললেন, "তুমি কিছু ভুলে গিয়েছ! শিখিয়েছিলাম তোমাদেরকে!" হাসতে হাসতে বললেও উনি যে অসন্তুষ্ট সেটা বেশ বুঝলাম। মনে মনে ভাবছি, আমি আবার কি করলাম? কি ভুলেছি? বেশ নার্ভাস হয়ে ভাবছি অজান্তে মারাত্মক কোন কিছু করে ফেলিনি তো?

ওনার দিয়ে কনফিউজড তাকিয়ে, উনি তখন বললেন, "ইউ ফরগট টু হোল্ড দ্যা ডোর ফর আদারস হানি!" আমার তখন মনে হলো, ওহো, তাইতো! বেশ কিছুদিন আগে উনি বলেছিলেন, কানাডায় কোন দরজা দিয়ে বের হলে পেছনের মানুষটির জন্যে দরজা ধরে থাকতে হয়। সে থ্যাংকস বলে, আর সামনের মানুষটি ওয়েলকাম, ইয়াহ এসব বলে! এটা যেকোন মানুষের জন্যে যেকোন জায়গায় করতে হয়। অফিস, মার্কেট, স্কুল যেখানেই হোক না কেন। আর এমনও হয় যে পেছনের অপরিচিত মানুষটি এখনো দরজা পর্যন্ত এসে পৌঁছায়নি, একটু দূরে। তবে সামনের মানুষটি কিছুক্ষন অপেক্ষা করে দরজা ধরে দাড়িয়ে থাকবে! কাউকে অপেক্ষা করতে দেখলে পেছনের মানুষটি জোরে হেঁটে দরজা ধরতে আসবে। থ্যাংকস বলবে!

এই সাধারণ কাজটিকে না করা ওরা লিটারেলি ক্রাইম মনে করে! কানাডিয়ানরা কতটা সিরিয়াস এ বিষয়ে সেটা বোঝাতে একটু সামনে চলে যাই। তখন কানাডায় দেড় বছর হয়েছে। মোটামুটি মানিয়ে নিয়েছি। আমার সবচেয়ে ক্লোজ কানাডিয়ান বান্ধবী ছিল বি। সাদামাটা চেহারার, চিকন চাকন, লম্বা একটি মেয়ে। একবার ও এক আত্মীয়ের বিয়েতে আমেরিকায় যায়। ফিরে আসার পরে আমি জিজ্ঞেস করি, ট্রিপ কেমন ছিল? সে বলে, "নট দ্যাট গুড। আমেরিকানস আর সো রুড!" এটা অনেক কানাডিয়ানের কাছেই শুনেছি। আমি জানতে চাইলাম, কি রুড আচরন করেছে তোমার সাথে? ও বলল, "দে ডোন্ট হোল্ড ডোর ফর পিপল!" এটা বলে এমন বিরক্তির এক্সপ্রেশন দিল যেন এর চেয়ে জঘন্য কাজ আর হতে পারে না! আমি ভাবছি এই ব্যাপার? ওহ আল্লাহ! এই মেয়ে তো বাংলাদেশে গেলে আমাদেরকেও রুড ভাববে! আমাকে অনেকবার বলেছে যে আমার দেশে যাবে! আমি ওকে বোঝাতে শুরু করে দিলাম যে একেক দেশের একেক কালচার। ডোর না ধরলে রুড হয়না! ও শুনছে আর অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। হয়ত ভাবছে আমি আমেরিকার সাফাই গাইছি কেন? আমি তো মনে মনে জানি আসলে কোন দেশের সাফাই গাইছি! হাহাহা।

স্টাডি ট্যুরে ফিরে আসি। আমি টিচারকে সরি বললাম। উনি হেসে বললেন, "ইটস ওকে। পরেরবার থেকে খেয়াল রেখো!" টিচার বলার পরেও এমন ভুল কেন করলাম সেটা ভেবে মন খারাপ হয়ে গেল। মুখ গোমড়া করে বাসে উঠলাম আবার। এবারের গন্তব্য রেস্টুরেন্ট।

যেতে যেতে বাসের জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখছিলাম সবকিছু। আশেপাশের স্থাপত্যকর্ম দেখে অবাক হচ্ছিলাম। মনোরম, চোখে ধাঁধা লাগিয়ে দেওয়া ডিজাইনের একেকটি টাওয়ার। দেখতে গেলে চারিপাশে অনেক বিল্ডিং, মার্কেট, রেস্টুরেন্ট। কিন্তু ঘিঞ্জি মনে হয় না। সবকিছু এত পরিকল্পিত এবং সুবিন্যস্ত যে চোখে না দেখলে বিশ্বাস হয় না! সবকিছুর মধ্যেই পর্যাপ্ত দূরত্ব। প্রশস্ত রাস্তা এবং ফুটপাত! মনে হচ্ছিল রাস্তায় গাড়ির জ্যামও প্ল্যানড! যেন ঠিক করে রাখা হয়েছে এই গাড়িটার পরে এই গাড়িটা থাকবে! কোন বিশৃংক্ষলতা নেই কিছুতেই। আর সবকিছুকে ছাপিয়ে যখন আকাশ পাহাড় উঁকি দিয়ে ওঠে মনে হয় পুরোটাই শিল্পীর তুলির আঁচড়! এভাবে লোকালয় দেখতে দেখতে বাস রেস্টুরেন্টের কাছাকাছি এলো।

টিচারকে অনুসরণ করে রাস্তায় নেমে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি সবাই রেস্টুরেন্টের দিকে। হুট করে কানে গিটারের মধুর সুর ভেসে এলো। দেখি এক মধ্যবয়স্ক পুরুষ, গাল কিছুটা ভাংঙা ফুটপাতের একপাশে দাড়িয়ে গিটার বাজাচ্ছে। লম্বা, সুদর্শন, কাউবয় হ্যাট পরা, হাসিমুখ। তার শান্ত গিটারের সুর ব্যস্ত নগরীতে ছন্দপতন ঘটিয়ে অন্যরকম এক আবহ তৈরি করছিল! হঠাৎ দেখি আমাদের টিচার কয়েন নিয়ে ওনার পাশে রাখা বাক্সে ফেলে দিলেন। বক্সের ওপরে কাগজ এঁটে লেখা: "হোমলেস ফর ফোর মানথস। হ্যাভ টু কিডস। প্লিজ হেল্প!" মানে এ ভিক্ষুক? হায় হায়! এত বড়লোক দেশেও ভিক্ষুক থাকে? আর তার দাড়ানোর ভংগি, মুখে হাসি তো দেখো! রক স্টার মনে হচ্ছে! টিচার টাকা দেবার পরে তিনি হেসে বললেন, "থ্যাংক্স ম্যাম। হ্যাভ আ ওয়ান্ডারফুল ডে!" আমি মনে মনে ভাবলাম বাবাহ! কি দেশ! ভিক্ষুকও ইংলিশ বলে! এটা ভাবার সাথে সাথে আমার মনে হলো, ওদের তো মাতৃভাষাই ইংলিশ! এত ভীষন হাসি পেল নিজের বোকামিপূর্ণ ভাবনায়! মনে মনে কতক্ষন হেসে ছিলাম আমি! উফফ! এক ব্রাজিলিয়ান ছেলে আমার দিকে চোখ নাচিয়ে ইশারায় জিগ্যেস করল হাসছি কেন? আমি মাথা নেড়ে বললাম কিছু না!
কানাডায় গিয়ে হোমলেসদের দেখে ভীষন অবাক হতাম। এদেশে এত সম্পদ। তবুও রাস্তায় গরীব মানুষদের পরে থাকতে দেখি! গারবেইজ বিনগুলো থেকে কুড়িয়ে ক্যান বা বেচা যায় এমন জিনিস বের করতে দেখি অনেককে। আমাদের দেশের মতো অতো নাহলেও আছে। এতো সুযোগ সুবিধার দেশে কেউ কিভাবে একদম রাস্তায় নেমে যায় তা বুঝতেই পারতাম না। পরে আসল কারণটা বুঝতে পারি। দেশটির নানা প্রদেশই প্রাকৃতিক সম্পদের ওপরে চলে। কোন কারণে সেই রিসোর্চের বিজনেস ডাউন হলে হাজার মানুষ মুহূর্তেই জব হারায়। আর ওরা আমাদের মতো সঞ্চয় করেনা। যখন যা কামাই করে আনন্দে খরচ করে ফেলে। পার্টি, শপিং ইত্যাদিতে মনখুলে টাকা ওড়ায়। জীবনের প্রতিটি দিনকে এনজয় করতে চায়। যে কাল আসেনি তার কথা ভেবে কি হবে এমন ভাব অনেকেরই। আর বাড়ি, গাড়ি সব লোনে কেনা। প্রতিমাসে ব্যাংকে টাকা পরিশোধ করতে না পারলেই সব গেল! এজন্যে যেই ইনকাম বন্ধ হয়ে যায়, সেটা কয়েক মাসের জন্যে হলেও অনেকেই পথে নেমে আসে!

কিছুটা হেঁটেই আমরা রেস্টুরেন্টে পৌঁছে গেলাম। ছোটখাট ছিমছাপ একটা রেস্টুরেন্ট। টিচার সবাইকে বসতে বললেন। আমার পাশে একজন তাইওয়ানের মেয়ে আর সামনে দুজন ব্রাজিলিয়ান ছেলে বসে। কাছাকাছি টেবিলে অন্য স্টুডেন্টরা বসা। টিচার বসলেন বাস ড্রাইভারের সাথে। তারা হেসে হেসে গল্প করছিলেন। দেখে মনে হলো বেশ পরিচিত ও বন্ধু! কি সুন্দর একটি দৃশ্য! পেশা ও টাকার ওপরে ভিত্তি করে মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ নেই!
সবাই যে যার যার মতো বসে যাবার পরে টিচার আমাদের কাছাকাছি এসে আস্তে আস্তে বললেন, "সবার জন্যে নুডুলস আর কোল্ড ড্রিংকস অর্ডার করছি নিজের তরফ থেকে। তার খরচ স্কুল থেকে যাবে। তোমরা যদি নিজেরা অন্যকিছু খেতে চাও তবে নিজের খরচে কিনতে হবে!" আমি ভাবছি না বুঝে কি না কি অর্ডার করব। এদের খাবার দাবার তো চিনিই না! কত দাম হবে কে জানে! টিচার যা অর্ডার করেছেন তাই ভালো! চুপচাপ বসে খাবারের ওয়েট করছি। বাকি তিনজন ফোনে কি যেন করছিল। আমার ফোন ছিলনা, মাথা নিচু করে বসে ছিলাম। একটু পরে নুডুলস আসল সবার জন্যে। দেখি, এর মধ্যে মিট আছে! মাংস, সবজি নানা কিছু দিয়ে তৈরি! মা বাইরের মাংস খেতে নিষেধ করেছে হালাল না বলে। এখন কি করি? ভাবতে ভাবতে টিচারের কাছে গেলাম। ওনাকে বললাম, "আমি মাংস খাইনা। আমি কি বাড়ি থেকে আনা খাবার খেতে পারি? উনি বললেন, "ওহো! দাড়াও, আমি ম্যানেজারকে জিজ্ঞেস করি!" কিছুক্ষন পরে এসে বললেন, "সমস্যা নেই। কানে কানে ফিসফিসিয়ে আরো বললেন, "কিছু রেস্টুরেন্টে স্ট্রিক্ট রুল থাকে যে ওদের খাবার ছাড়া খাওয়া যাবেনা। এজন্যে জেনে নিলাম। তুমি কিছু মনে করোনা!" আমি ভীষন মুগ্ধ হলাম ওনার ব্যবহারে! সাহায্য করছেন আবার সরিও বলছেন! এত বিনয় মানুষের থাকে কি করে? আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। ভাগ্যিস মা জোর করে নাস্তা দিয়েছিল, নাহলে এখন সমস্যায় পরতাম!

সেদিন টিচারকে মাংস খাইনা বলার কারণ ছিল হালাল এবং হারাম মাংসের ইংলিশ আমি জানতাম না। আসল সমস্যাটি বোঝানোর মতো ইংলিশ জ্ঞান আমার তখন ছিল না। পরে অবশ্য জেনেছি, কানাডিয়ানরা হালাল হারাম শব্দ দুটোকে এভাবেই জানে। আরবি শব্দ দুটো নানা দেশের মুসলমানদের কল্যাণে ভালোই বিখ্যাত! বিদেশীদের আরবি উচ্চারণগুলো অদ্ভুত। যেমন মুসলিম কে বলে মোজলিম, হালাল কে বলে হ্যালাল! এগুলো শুনে হাসি পেত আর ভাবতাম ওরা তো আমার উদ্ভট ইংলিশ উচ্চারণে হাসে না! এটা ভেবে নিজে হাসি কন্ট্রোল করতাম!

তখন দুপুর প্রায়। এত ঘোরাঘুরির পরে খুব ক্ষিদে লাগার কথা। আমি খাবার বের করে দুবার আগ্রহে নিলাম। কিন্তু তারপরে আর নিতে পারলাম না। জীবনে যদি নিজের মন খারাপের পারদ বুঝতে হয় তবে খাবার চেষ্টা করা উচিৎ। আমার যে সারাদিনে সবার মধ্যে থেকেও একা ঘুরে ঘুরে কত মন খারাপ ছিল তা খেতে গিয়ে আরো ভালভাবে বুঝলাম! পুরোটা পথ একা একা নিজ মনে গল্প করে চলেছি। এত গুলো মানুষের মাঝে প্রাণখুলে কথার বলার মতো একটি মানুষও আমার নেই! শব্দ জ্ঞানের অভাবে মনের সব কথার বলতে না পারার অসহায়ত্ব আমাকে কি ভীষন ক্লান্ত করে দিত তা আমি বোঝাতে পারব না! বাকশক্তি থাকার পরেও বোবা মনে হতো নিজেকে। বারবার মনে হতো যা হবার হবে, আমি বাংলায় কথা বলা শুরু করে দেব। দেশে যেমন প্রানখুলে বকবক করতাম সেভাবে। কেউ বুঝুক আর না বুঝুক, আই ডোন্ট কেয়ার! ভাবতে ভাবতে আবেগে গলা আরোই আটকে আসল। ঠিকমতো খেতে পারিনি আমি সেদিন এবং সেদিনের মতো আরো অনেকদিনে!

আমার আশেপাশের মানুষেরা বেশ আনন্দ করে খেল। সবার লাঞ্চ শেষ হবার পরে বেরিয়ে পরলাম আবার। বাসের দিকে যেতে যেতে একটা বয়স্ক হ্যাট পরা মহিলা আমাদের দলটির দিকে তাকিয়ে বললেন, "লাভলি ওয়েদার হেই!" আর এই লাভলি ওয়েদার বলাটা পুরো ট্রিপে ১৬ তম বারের মতো হলো। সিরিয়াসলি। কানাডায় অপরিচিত মানুষেরা হুটহাট একে অপরের দিকে তাকিয়ে "হেই! হ্যাভ আ গ্রেইট ডে! লাভলি ওয়েদার!" এসব বলা শুরু করে দেয়। আমি এই বিষয়টাতে অভ্যস্ত হতে অনেক টাইম নিয়েছিলাম। হয়ত নিজের মনে রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছি, পেছন থেকে কেউ বলে উঠল, "লাভলি আউটফিট!" আমার সালোয়ার কামিজটাকে বলত আরকি। একটু চমকে উঠতাম। নিজেকে সামলে হেসে ধন্যবাদ দিতাম।

স্কুলে যাবার উদ্দেশ্যে বাসে উঠলাম সবাই। পুরোটা সময়েই টিচারের পাশে বসে ছিলাম আমি বাসে। আবারো তিনি গল্প করতে লাগলেন। এবারে পোষ্য নিয়ে বলা শুরু করলেন! মোবাইলে সেগুলোর ছবি দেখালেন পরম আগ্রহে। আমার এমন কোন কানাডিয়ান টিচার, ও বন্ধু বোধহয় নেই যারা কোন না কোন সময়ে তাদের বেবি (কুকুর, বিড়াল) এর ছবি আমাকে দেখায়নি। আর যখন দেখায় ওদের চোখ জ্বলজ্বল করে ওঠে। মনে হয় যে এর চেয়ে ভালোবাসার কিছু ওদের জীবনে আর নেই! কানাডায় এমন পরিবার কমই আছে যাদের পেট নেই। শুদ্ধভাবে বললে এমন পরিবার কমই আছে যাদের পুরো একটা চিড়িয়াখানা নেই। আমার এই টিচারেরই যেমন চারটি কুকুর ও দুটি বিড়াল ছিল। এই ভয়ংকর দর্শন বিশাল কুকুরগুলোকে কোন সাহসে কেউ বাড়িতে রাখে ভেবেই আমি অবাক হচ্ছিলাম। উনি ভীষন দুঃখ করে নিজের একটি মরে যাওয়া কুকুরের গল্প বলছিলেন। ওহ, পোষ্যের মৃত্যুতে ওরা শোক অনুষ্ঠানও করে। পোষ্য নিয়ে ওরা কি করে আর না করে বলে আসলে শেষ করতে পারবনা।
ওনার গল্প শুনতে শুনতে বাংলাদেশের কথা ভাবছিলাম। জানালা দিয়ে বা উঠানের গ্রিল দিয়ে বিড়াল বাড়িতে ঢুকে পরলে কি যে হাঙ্গামা হতো! বিড়াল তাড়াও অভিযানে মুহূর্তেই সবাই নেমে পরত। দাদী বিরক্তিভরে বলতেন, "আজ মাছ রান্না হয়েছে না? গন্ধ পেয়ে ঠিকই চলে এসেছে বদের বদ!" আমরা ছোটরা উত্তেজনা, মজায় চিল্লাচিল্লি, দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দিতাম। বিড়াল পালিয়ে পালিয়ে বেড়ায়। অনেক কসরত করে বিড়াল তাড়িয়ে ঘর পরিষ্কার করা হতো। নোংরা পায়ে বিছানায় উঠে গেলে চাদর ধোয়া হতো। মানে সে এক এলাহি ব্যাপার স্যাপার! সেসব স্মৃতি মনে করে মুচকি হাসি খেলে গেল ঠোঁটে।
বাংলাদেশের কথা ভাবতে ভাবতেই টিচারের কথা কানে আসল, "ব্যাংলাদেশে মানুষজন পেট তেমন রাখে না তাই না?" আমি বললাম, হুম। এখানকার মতো অতোটা না। তবে অনেকে রাখে। উনি বললেন, "ইয়েস আই ফিগারড! এক্সপেন্সের ব্যাপার আছে তো! এসবে অনেক খরচ!" ওনার এক্সপ্রেশনে বুঝলাম, বলতে চাইছেন যে, আমাদের দেশটা গরীব, নিজেদেরই খরচ জোগাতে পারিনা, আর বাড়তি পোষ্য তো দূরের! কথাটি খারাপ লেগেছিল। মুখের ওপরে বলতে পারিনি তবে মনে মনে বলেছিলাম, তোমাদের মতো একাকীত্বের ভারে পোষ্যের সাহায্য নিতে হয়না আমাদের। কিছু না বলে চুপ হয়ে রইলাম।
এইসব উচ্চবিত্ত দেশের মানুষেরা সরল মনে অনেককিছু বলে ফেলে। ওদের এসব কথা যে আমাদের আবেগে লাগে সেটা যদি ওরা বুঝত!

যাই হোক, গল্প করতে করতে বাস স্কুলে এসে গেলো। স্কুলের মূল প্রবেশদ্বারে সবাই জড়ো হলাম। স্কুলে পা রাখামাত্র আমার মনে হলো আমি আমার নিজ আঙিনায় দাড়িয়ে! এই স্কুলের মতো আপন জায়গা আমার আর নেই! এতদিন যে স্কুল আমার কাছে অস্বস্তির অন্য নাম ছিল, সেদিন সেই স্কুলকে স্বর্গ মনে হলো। সত্যিই। বাইরের সে পরিবেশটা এত অকওয়ার্ড ছিল আমার জন্যে যে বুঝে গেলাম এই নতুন দেশে আমরা সবচেয়ে নিরাপদ ও আপন জায়গা এই স্কুল। এখানের যেকোন টিচার, কাউন্সিলর এর কাছে আমি যেকোন সমস্যা মন খুলে বলতে পারব! বাইরের দুনিয়ায় সেটা পারব না।
টিচার সবাইকে ফরমাল কিছু কথা বলে ছুটি দিলেন। অদ্ভুত একটা প্রশান্তি সেদিন আমার মনকে ছুঁয়ে গিয়েছিল। নিজ দেশ হতে এতদূরে আমার একটা ঠিকানা আছে সেই অনুভবে। হাজারটা নাই নাইয়ের মধ্যে কিছু একটা থাকার বিশ্বাসে। কানাডার স্কুল কঠিন ছিল আমার জন্যে প্রথম প্রথম। মানিয়ে নিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলাম। একাকীত্বে গুমড়ে কেঁদে উঠত মন। এতকিছুর পরেও কোনদিন স্কুল মিস করিনি। প্রতিদিন গিয়েছি স্কুলে। দেশে বা কানাডার বাচ্চারাও পরিচিত পরিবেশে স্কুলে না যাবার জন্যে বাহানা করে। আমি ওখানের এতো কঠিন পরিবেশেও তা করতাম না। পিছে ফিরে তাকিয়ে এর কারণ খুঁজতে গেলে সেই দিনটির কথাই মনে পরে। আসলে সেই স্কুলটি প্রথম থেকেই আমাকে মায়ার বাঁধনে আকড়ে ধরেছিল। বাড়ি থেকে স্কুলের সেই পথ ও স্কুলটিই আমার দুনিয়া হয়ে গিয়েছিল অল্প সময়েই। এজন্যে এতো বৈরী পরিবেশেও আমি স্কুলে না যাবার কথা কখনো ভাবিনি। নিজের বাড়ির ফুঁটো ছাদ দিয়ে বৃষ্টির পানি পরলেও সেই বাড়িকেই সবচেয়ে শান্তির নীড় মনে হয়! কানাডিয়ান হাই স্কুল আমার জীবনে সেই মাথার ছাদ বা পরম আশ্রয় ছিল। যা আমাকে আগলে রাখত সবসময়। স্কুলটি আমার জ্ঞান ও ভাবনার ভিতকে মজবুত করে আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে।

সেই স্কুল এবং মানুষগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আজকের পর্ব শেষ করছি। পরের পর্বে অন্য কোন টপিক নিয়ে হাজির হবো। ভালো থাকুন সবাই!

মন্তব্য ৫৩ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (৫৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৯:২৭

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ঝরঝরে লেখাটি পড়ে অনেক ভাল লাগল আপু। পড়তে পড়তে কখনও হেসেছি। আবার আপনার মন খারাপের কথা শুনে খারাপ লেগেছে।
একটা নতুন দেশে গিয়ে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া তো অবশ্যই কিছুটা কষ্ট সাধ্য।তবে আপনি যে নিজেকে দ্রুত মানিয়ে নিতে পেরেছেন তা জেনে ভাল লেগেছে। কানাডিয়ানদের ভদ্রতা সত্যি খুবই প্রসংশার।
এইসব উচ্চবিত্ত দেশের মানুষেরা সরল মনে অনেককিছু বলে ফেলে। ওদের এসব কথা যে আমাদের আবেগে লাগে সেটা যদি ওরা বুঝত! ,এই কথাটি ভাল লেগেছে।
ভাল থাকুন আপু। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকব।

২০ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৯:৩৭

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: প্রথম মন্তব্যটিই ভীষন সুন্দর হয়ে গেল আপনার কল্যাণে। আপনার কমেন্ট পড়ে মনে হলো আপনি লেখাটি মন দিয়ে পড়েছেন।
যা আমরা মনের আবেগ দিয়ে লিখি তা যখন কেউ মন দিয়ে পড়ে ভীষন তৃপ্তি বোধ হয়। এজন্যে মন থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

জ্বি এটা ঠিক। আমি বেশ দ্রুতই পড়তে সামলাতে মানিয়ে নিয়েছি। তাতে আমার কানাডিয়ান টিচারদের অবদান অনস্বীকার্য!

হুমম, এই কথাটির সাথে অনেক প্রবাসীই রিলেট করতে পারবে। অনেক বাংলাদেশীই বিদেশে বাংলাদেশকে নিয়ে নানা নেগেটিভ কথা শোনে। যেগুলো বিদেশীরা হার্ট করার জন্যে বলেনা, কিন্তু মনের অজান্তেই আমাদের বিব্রত করে বা কষ্ট দিয়ে ফেলে।

হুমম, আপনিও অনেক ভালো থাকুন।
আমার সকল শুভকামনা রইল!

২| ২০ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৯:৩১

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আজ চেয়েছিলাম আপনার লেখায় প্রথম কমেন্ট করব কিন্তু লেখা না পড়ে আগেই ফাস্ট হইছি এই কমেন্ট করতে চাইনি। পড়ে তারপর কমেন্ট করার পরও দেখি ফাস্ট হইছি। যাক রোজা আছি চা কফি কিছু চাই না।
যেটা বলার জন্য আবার কমেন্ট করছি,ঈদের পরে আপনার কানাডার ঈদ অভিজ্ঞতার উপর একটি লেখা পোষ্ট দেওয়ার অনুরোধ রইল।
ভাল থাকুন। আর ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা রইল।

২০ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৯:৪২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হাহা, হনেস্টির সাথে ফাস্ট হয়েছেন। এজন্যে অভিনন্দন জানাই।

হুমম তবে ইফতারির সময়ে এসে যাবেন আমার ব্লগে। তখন যা চাইবেন খাওয়াব। হাহাহা।

আগে থেকেই বলে রাখার জন্যে ধন্যবাদ। আমি ভাবব বিষয়টি নিয়ে। আসলে কানাডায় ঈদের স্মৃতি খুব সুখকর নয়। তবে কিছু ভালো স্মৃতি আছে। আর প্রবাসীদের ঈদ কেমন কাটে সেটা জানার অধিকার দেশে বসবাসরত বাংলাদেশীদের আছে। তাই আমি চেষ্টা করব তেমন কিছু লেখার।

আপনার শুভেচ্ছায় মনে হলো ঈদ কড়া নাড়ছে!
আপনাকেও ঈদের অগ্রিম আন্তরিক শুভেচ্ছা।

ভীষন আন্তরিক দুটো কমেন্টে কৃতজ্ঞতা রইল।
ভালো থাকুন।

৩| ২০ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৯:৪৬

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: সুন্দর প্রতি মন্তব্যের জন্য আরও একবার ধন্যবাদ আপু।
আমি কোন লেখা পড়লে মন দিয়ে পড়ার চেষ্টা করি। লেখা পড়া শেষ হলে তারপর মন্তব্য করি।
এটা তো ফেসবুক না যে না পড়ে লাইক দিব।তবে ব্লগেও হয়তো অনেকে না পড়ে কমেন্ট করে।
না পড়ে কমেন্ট করাটাও একটা জঘন্য ছোটলোকি মনে হয় আমার কাছে। আমি না পড়ে একটা লেখায় কমেন্ট করলাম,খুব ভাল লাগল। এটা তো অবশ্যই মিথ্যা। আর যারা সহজে মিথ্যা কথা বলে তাদের ব্যক্তিত্ব নিশ্চয় ভাল নয়। তারা মানুষ হিসেবে আমার কাছে অত্যন্ত নিচ।

২০ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:০৬

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম! :)

একদম একমত। আমিও বেশ কিছু কমেন্ট পড়ি, যাতে মনে হয় যেন কমেন্টদাতা লেখাটি পড়েনইনি। আরে পড়ে যদি ভালো লাগে অথবা সমালোচনার মতো কিছু থাকে তবেই তো কমেন্ট করব! নাহলে কমেন্ট করার মানে কি? না পড়েই কমেন্ট করে যাওয়াটা অন্যায় লেখকের প্রতি। আমিও আপনার মতোই মন দিয়ে পড়ে তবেই কমেন্ট করি। নতুবা করিনা।

আপনি মন দিয়ে লেখা পড়ে কমেন্ট করেন, সেটা অসাধারণ একটি ব্লগীয় গুন। এজন্যে আপনাকে অভিনন্দন।
শুভেচ্ছা!

৪| ২০ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:১৬

সামিয়া বলেছেন: অনেক বড় লেখা , আপাতত লাইক রেখে গেলাম পড়ে এসে পড়বোনে :)

২০ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:৫৫

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: সামিয়া আপু!

হাহা। জ্বি অবশ্যই। আপনি অনেক ব্যস্ত থাকেন জানি আপু। তাই যখন হাতে সময় হবে, তখনই নাহয় শান্তি করে পড়ে যাবেন। আমি অপেক্ষায় থাকলাম আপনার পুনরাগমনের! :)

অনেক অনেক শুভকামনা!

৫| ২০ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:৩৬

শামচুল হক বলেছেন: অনেক কিছু জানা হলো। ধন্যবাদ

২০ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:৫৬

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: অনেক কিছু জানাতে পেরে আনন্দিত। :)

আপনাকেও পাঠ ও মন্তব্যে ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছা!

৬| ২০ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১১:২৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: টিচার বসলেন বাস ড্রাইভারের সাথে। তারা হেসে হেসে গল্প করছিলেন। দেখে মনে হলো বেশ পরিচিত ও বন্ধু! কি সুন্দর একটি দৃশ্য! পেশা ও টাকার ওপরে ভিত্তি করে মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ নেই

< ইসলাম শেখাল যে আচার, মুসলিমরা নিজেরাই ভুলে গেল তা!! আর বিদেশীরা আকঁকড়ে ধরল যত সুন্দর আর মৌলিক আচারণ গুলো বিশ্বাসীর হওয়া উচিত।

দরজা খুলে রাখার বিনয় জাপানীদেরও দেখেছি্ আমার আগের কোরিয়ান অফিসে জাপাণী ভিজিটর আসলেন। আমার সেকশনে দেখানো শেষে বেরিয়ে যাচ্ছে আমিও এগিয়ে দিতে আসছি। ওমা- ঐ মোষ্ট সিনিয়র দরজা ধরে- আমিতো দ্রুত এসে থ্যাংকস বলে ভাবলাম আমাদের দেশী মালিক বা বসরা উল।টোটার জন্যই পথ চেয়ে থাকে ;)

বাকশক্তি থাকার পরেও বোবা মনে হতো নিজেকে। বারবার মনে হতো যা হবার হবে, আমি বাংলায় কথা বলা শুরু করে দেব। দেশে যেমন প্রানখুলে বকবক করতাম সেভাবে। কেউ বুঝুক আর না বুঝুক, আই ডোন্ট কেয়ার!

<<সে এক দেখার মতো দৃশ্য হতো ;) হা হা হা
তবে কষ্টটুকু আসলেই ছূঁয়ে গেল। শব্দের গাথূনিতে।

মনে মনে বলেছিলাম, তোমাদের মতো একাকীত্বের ভারে পোষ্যের সাহায্য নিতে হয়না আমাদের। -

<<হুম কঠিন সত্য। আমাদের আন্তরিকতায় যদি শুধু মিনিমাম নিজেদের মৌলিক শিক্ষা টুকু ধরে রাকথে পারতাম- আমরাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিনয়ী, আন্তরিক, অতিথিপরায়ন জাতি হিসেবেই পরিচিত হতাম। আর ওরা আমাদের কাছ থেকে শীখত শত কষ্টের পরও কিভাবে সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে থাকতে হয়। ;)

বরাবরের মতোই দারুন সাবলীল, গতিময় আর বিষয় বৈচিত্রে ভরপুর সিরিজ পোষ্টে +++++
শুভেচ্ছা শুভকামনা সবসময়।

২০ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৬

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আরেহ সখা! ভালো আছেন আশা করি।
প্রথমেই অনেক ধন্যবাদ যে সময় নিয়ে কষ্ট করে এত বড় মন্তব্য করেছেন।

হাহা, অভিজ্ঞতা শেয়ারে ধন্যবাদ। জ্বি এই দরজা ধরে থাকার কালচার অনেক দেশেই আছে। তবে কিছু কিছু দেশ একটু বেশিই স্ট্রিক্ট রুলটি নিয়ে; যেমন কানাডা!

হুমম, ভালোই, আমি অসহায়ত্বে মরতাম। আর তিনি হাসছেন! তবে ঠিকই বলেছেন। দেখার মতোই হতো। আমি বাংলায় বকবক করেই যাচ্ছি। ওরা কিছুই বুঝতে পারছে না! সব বিদেশী হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। হাহা। সিনটা কল্পনা করেই আমি হেসে শেষ!

আমাদের আন্তরিকতায় যদি শুধু মিনিমাম নিজেদের মৌলিক শিক্ষা টুকু ধরে রাকথে পারতাম- আমরাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিনয়ী, আন্তরিক, অতিথিপরায়ন জাতি হিসেবেই পরিচিত হতাম। শত কষ্টের পরও কিভাবে সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে থাকতে হয়। ;)
আপনার এই কথায় +++++! :) নানা দেশের মানুষের সাথে মিশি প্রতিদিন। পক্ষপাত ছাড়াই বলছি আমরা অসাধারণ একটি জাতি। কিছু কিছু ভুল শুধরে নিলেই আমাদের দূত্যিতে বিশ্বকে আলোকিত করতে পারব!

বরাবরের মতোই দারুন সাবলীল, গতিময় আর বিষয় বৈচিত্রে ভরপুর সিরিজ পোষ্টে +++++

বাবাহ! এত প্রশংসা রাখি কোথায়!? হাহা। ভীষনভাবে অনুপ্রাণিত হলাম। কৃতজ্ঞতা!

সুখে থাকুন সখা! ভীষন সুখে!

৭| ২০ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:১২

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: সাবলীল লিখনশৈলীর কারণে এই পর্বটি আমার কাছে খুব আকর্ষণীয় মনে হলো। দিন দিন আমি তোমার লেখার ভক্ত হয়ে যাচ্ছি।

১) ডোর হোল্ড করার কালচার আমার কাছে ভালো লেগেছে। আমি ভাবতাম এটা অ্যামেরিকাসহ পাশ্চাত্যের প্রায় সব দেশেই আছে। মুভি দেখে আমার এরকম মনে হয়েছে। কিন্তু তোমার কানাডিয়ান বান্ধবী বি-এর অভিজ্ঞতা থেকে বুঝলাম আমেরিকা এখনো এসব ছোট খাটো ভদ্রতায় পিছিয়ে আছে।
২) হোমলেসদের এভাবে ভিক্ষা করা ইউরোপ আমেরিকার অন্যান্য দেশেও আছে বলে জানি। লন্ডনে আমার এক ডাক্তার বন্ধু আছে। সে ঠিক এই ধরনের একাধিক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়ে আমাকে ফোনে মজা করে বলে। তবে সেখানকার ভিক্ষুকরা গান বাজনা করে, ছোটখাটো যাদু দেখিয়ে, সাইকেল চালানোর নানারকম কসরত দেখিয়ে বা দড়ির ওপর হেঁটে মানুষকে বিমোহিত করে ভিক্ষা করে। মানে ওরা কিছু দেওয়ার বিনিময়ে কিছু নেয়। আমাদের দেশের মতো একেবারে শুধু ভিক্ষা করার ভিক্ষুক নয়। হাঃ হাঃ হাঃ।
৩) তোমার খাবার গ্রহনে অস্বস্তির কারণটা খুব সুন্দর ভাবে গুছিয়ে বলেছ। আসলে আনএ্যাডযাস্টেড পরিবেশে খাবার গ্রহনে আমারও কিঞ্চিত অস্বস্তি হয়। ঠিকমতো খেতে পারি না।
৪) কানাডায় লেখাপড়া করে নিজের ক্যারিয়ার গড়ার চেষ্টায় তোমাকে যে ভীষণ কষ্ট করতে হচ্ছে, সেটা এই সিরিজের লেখাগুলো থেকে পরিস্কার বুঝা যায়। অলওয়েজ আই উইশ ইওর সাকসেস ইন লাইফ। যে নিজেকে সাহায্য করে, আল্লাহ তাকে সাহায্য করেন। আমি বিশ্বাস করি, তুমি জীবনে সফল হবে।

ধন্যবাদ সামু পাগলা০০৭।

২০ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৮

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: দিন দিন আমি তোমার লেখার ভক্ত হয়ে যাচ্ছি।
ব্যাস, আমার ব্লগিং জীবন ধন্য হয়ে গেল। হাহা। যার লেখার আমি ভক্ত, সে এমন কমেন্ট করলে কতটা অনুপ্রেরণাদায়ক হয় তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়!

পাশ্চাত্যের সব দেশেই নেই। আর কিছু কিছু দেশে নিয়মটি আছে কিন্তু সবাই খুব সিরিয়াসলি ফলো করেনা! আমার সেই বান্ধবীসহ এমনটি অনেকের কাছেই শুনেছি। আমেরিকানরা খুব বিনয়ী নয়। আসলে কানাডিয়ানরা এত বিনয়ী যে অন্য কোন দেশের বিনয় ওদের মনমতো হয় না! হাহা।
আর পশ্চিমের অন্য দেশগুলোও বিনয়ী জাতি হিসেবে কানাডিয়ানদের আলাদা করে জানে। এটা ওদের স্পেশালিটি।

এখানে আমাদের দেশের মতো কোন কিছু না করা ভিক্ষুকও দেখেছি। তবে বেশিরভাগই আপনি যা বললেন তাই। ভিক্ষার মধ্যেও কাজ করে খাবার প্রবণতা থাকে ওদের!

হুমম, সেটাই। মন খারাপ থাকলে বা পরিবেশে স্বত:স্ফূর্ত না হলে ক্ষিদে মরে যায় আসলে। শান্তি করে খাওয়া যায়না। এটা আপনার আমার মতো বেশিরভাগ মানুষের জন্যেই সত্য!

অলওয়েজ আই উইশ ইওর সাকসেস ইন লাইফ। যে নিজেকে সাহায্য করে, আল্লাহ তাকে সাহায্য করেন। আমি বিশ্বাস করি, তুমি জীবনে সফল হবে।

আপনার প্রথম কথাটি শুধু ব্লগিং এর জন্যে অনুপ্রেরণাদায়ী ছিল। এই কথাটি পুরো জীবনের জন্যেই অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। আন্তরিক কৃতজ্ঞতা হেনাভাই। এমন সুন্দর মন্তব্যে আমি ভীষনই উদ্বুদ্ধ হয়েছি।

আমার সকল শুভকামনা রইল আপনার ও আপনার পরিবারের সবার জন্যে।
সুস্থ ও সুখী থাকুন।

৮| ২০ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৭

আলভী রহমান শোভন বলেছেন: দরজা ধরে রাখার ব্যাপারটা ভালো লেগেচে। কত বিনয়ী ওরা। আর আমরা বাংলাদেশে তো শুধু নিজের প্রিয়জনদের সাথে বের হলে দরজা ধরে রাখি। বাকি লোকজন চুলায় যাক টাইপ অবস্থা।

বরাবরের মত ভালো লিখেছো। তবে আজ একটু ফাঁকি মেরেছো। লেখা ছোট হয়েছে। তোমার বড় বড় লেখা পড়তে পড়তে এখন ছোট লেখা দেখতে কেমন জানো লাগে।

যাই হোক। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। অনেক ভালো থেকো তুমি, আপুনি। :)

২০ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৪

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হাহা, ভাইয়ু সত্যি বলি, এটা এত বড় বিষয় মনে হয়না আমার কাছে এখনো। এইটুকু বিষয়কে ধরে কানাডিয়ানদের অন্য জাতির বিনয় মাপাটা অদ্ভুত। আর আমাদেরও খারাপ বোধ করার কিছু নেই। আমি নিজের প্রিয়জনদের জন্যে দরজা ধরব। অন্যরা তাদের প্রিয়জনের জন্যে। ব্যাস সবাই কভারড হয়ে যাবে। হাহাহা।

নাহ নাহ, কোন ফাঁকি মারিনি। অন্য পর্বের মতোই তো মনে হলো সাইজে! কি জানি! তবে সবাই তো তোমার লক্ষ্মী পাঠক না। অনেকেই বড় লেখা পড়তে পছন্দ করেনা। আর আমি হলাম এক নাম্বার বকবকি! ;) লেখার ক্ষেত্রেও সেটা ফুটে ওঠে। সব ভেবে মাঝারি সাইজে রাখার চেষ্টা করি। :)

হুমম, তোমার জন্যেও একই কথা। অনেক ভালো থেকো!

৯| ২০ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১:১৪

বিপ্লব06 বলেছেন: পোস্টে প্লাস! বরাবরের মতই বেশ সুন্দর!
আর স্কুল ফাকি দেওয়াটা(পড়তে হবে ক্লাস ফাঁকি) এতদিনে শুরু হয়ে যাওয়ার কথা!

যদিও, সেইম এজের একটা বন্ধুর গ্রুপ না থাকলে এইদিকে ইদের দিনটা কাটতেই চায় না তারপরেও জাতি আপনার ঈদের অভিজ্ঞতা শুনতে চায়! ব্লগার সোহেলকে ধন্যবাদ ব্যাপারটা তোলার জন্য!

ভালো থাকবেন!

২০ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১০

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হায় হায়, সামুর লাইক বাটনটি বোধহয় আপনার জন্যে কাজ করছে না! প্লাস বললেন কিন্তু লাইক লিস্টে নাম নেই! হাহা। ব্যাস দুষ্টুমি করলাম। কষ্ট করে আবার লাইক দিয়ে যেতে হবেনা। বলেছেন, আমি খুশি। :)

হাহা, নাহ শুরু হয়নি। আমি এখনো সব ক্লাসে যাই নিয়ম করে। শরীর বা মন যদি খুব খারাপ থাকে কোন কারণে তাও নিজেকে টেনে নিয়ে ক্লাসে ফেলে দেই! আসলে সত্যিকথা, যে সাবজেক্টে পড়ছি ২ ঘন্টার লেকচার মিস করা মানে বাড়িতে ৫ ঘন্টা মাথা চুলকেও কিছুই না উদ্ধার করতে পারা। পড়া কমাতেই আরো বেশি নিয়ম করে নিজের গরজে ক্লাস করতে হয়। আর ল্যাবস ও প্রচুর থাকে যা মিস করলেই মার্ক কাটা! আমার অন্যান্য সহপাঠীদের জন্যেও ব্যাপারটি সত্যি। মোরাাল অফ দ্যা স্টোরি, ওয়ানস আ নার্ড অলওয়েজ আ নার্ড! ;) :)

হাহা। জাতি সব কাজ ফেলে আবার আমার পিছনে পরল কেন? হুমম দেখি জাতির দাবী মানার চেষ্টা থাকবে!

পাঠ ও মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা!
জ্বি আপনিও! ভালো থাকুন!

১০| ২০ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:০১

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো এবারের পর্ব। গল্পে অনেকটা সময় একাকীত্বের বিরহ চলেছে সেই অনুভূতি গুলোও ভালো লাগলো। মন খারাপ হলে ভাত মুখ দিয়ে নামতে চায় না, একদম সত্য কথা। ভিক্ষুক গল্পটুকো উপভোগ করলাম। সবচেয়ে গর্ববোধ করলাম আপনার-


কথাটি খারাপ লেগেছিল। মুখের ওপরে বলতে পারিনি তবে মনে মনে বলেছিলাম, তোমাদের মতো একাকীত্বের ভারে পোষ্যের সাহায্য নিতে হয়না আমাদের। কিছু না বলে চুপ হয়ে রইলাম।
এইসব উচ্চবিত্ত দেশের মানুষেরা সরল মনে অনেককিছু বলে ফেলে। ওদের এসব কথা যে আমাদের আবেগে লাগে সেটা যদি ওরা বুঝত! "- এই কথাগুলো তে। আপনার অনুভবে দেশ ভক্তি স্পষ্টত। আমি গর্বিত হলাম আপু।

সব মিলিয়ে খুব বেশি ভালো লাগা জানিয়ে গেলাম আপু। এই পর্বটিও প্রিয় তে থাকুক।

শুভকামনা জানবেন সবসময় আপু।

২০ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৯

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: নয়নসাহেব! ভালো আছেন আশা করি। আবারো আন্তরিক মন্তব্যে কৃতজ্ঞ করেছেন।

হুমম, পুরো পথে এত অনাবিল সৌন্দর্যের মাঝেও আমার একাকীত্ব ও মন খারাপ অনুভবে নেবার জন্যে ধন্যবাদ।

জ্বি এই কথাটি নিয়ে ওপরে একজনও বলেছেন। বেশিরভাগ প্রবাসীরই কষ্টের জায়গা এটা। অনেক বাংলাদেশীই বিদেশে বাংলাদেশকে নিয়ে নানা নেগেটিভ কথা শোনে। দেশ থেকে দূরে এমনিতেই দেশের জন্যে মন কাঁদে, তারপরে এসব কথাগুলো আসলেই কাঁটার মতো বিঁধে। এসব বিদেশীরা কাউকে হার্ট করার জন্যে বলেনা, কিন্তু মনের অজান্তেই আমাদের বিব্রত করে বা কষ্ট দিয়ে ফেলে।

ভালোলাগা ও প্রিয়তে নেবার জন্যে ধন্যবাদ।
আপনার ও পরিবারের সবার জন্যে রাশি রাশি শুভকামনা!

১১| ২০ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:২৮

পুলক ঢালী বলেছেন: হেনাভাই খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন । আপনার অনুভব গুলো খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখার মানও খুব সুন্দর হয়েছে। স্বাভাবিক সৌজন্যতায় মাঝে মাঝে দরজা খুলে ধরি কিন্তু ওটা যে অবশ্য পালনীয় জানা ছিলোনা আমেরিকানরা ভাল অনেক সিম্পল। কানাডায় বৃটিশ স্পেনিশ এবং ফ্রান্সের সংস্কৃতির আধিপত্য বেশী বলে আমার ধারনা। আমেরিকানরা অনেক অনেক আগে বৃটেন থেকে এসে স্ট্র্যাগল করে আমেরিকাকে গড়ে তুলেছে উদারনৈতিক ধ্যান ধারনা নিয়ে। :)

২০ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৬

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আরেহ পুলক ভাই! পোস্টে পেয়ে খুবই খুশি হলাম!

হুমম, হেনাভাই আসলেই সুন্দর ও অনুপ্রেরণাদায়ী মন্তব্য করেছেন। ওপরে সবাই অনেক সুন্দর মন্তব্যে করেছেন আসলে। সবার প্রতিই কৃতজ্ঞতা!

হুমম একদম ঠিক। কানাডায় অন্যদেশের প্রভাব অনেক বেশি। সবচেয়ে বেশি আমেরিকার। নিজের দেশের শো দেখুক না দেখুক আমেরিকান শো গুলো অবশ্যই দেখবে। তারপরে কিছু ব্রিটিশ ইনফ্লুয়েন্সও আছে। ইংল্যান্ডের রানীকে ওরা এখনো মানে! তবে কানাডিয়ানরা ধীরে ধীরে নিজেদেরকে জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ করেছে। আশেপাশের সকল শক্তিশালী রাষ্ট্রের প্রভাব কমিয়ে নিজস্বতা তৈরির চেষ্টা করেছে। তারা পুরোপুরি সফল কিনা? নাহ! একদমই না। তবে হয়ে যাবে জলদিই আশা করি। এ ব্যাপারে মজার একটি কথা মনে পরল। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে এক ব্রিটিশ জার্নালিস্ট প্রশ্ন করেছিল যে কানাডা কি কখনো আমেরিকার অংশ হতে চায় কিনা? স্বাধীনতার এত বছর পরেও এমন প্রশ্ন শ্রুতিকটু মনে হয়েছিল আমার। যাই হোক, ট্রুডো বলেছিলেন, "কানাডা কখনো আমেরিকার অংশ হবে না, তবে আমেরিকা কানাডার অংশ হতে চাইলে দে আর মোস্ট ওয়েলকাম টু!" হাহা।
নানা দেশের দ্বারা প্রভাবিত হলেও কানাডিয়ানদের সাথে অন্য জাতির পার্থক্য ভালোই বোঝা যায়। ওরাও অনেক স্ট্র্যাগল করে নিজেদের দেশকে উন্নত করেছে। সব প্রতিবেশী দেশের সাথে ভালো সম্পর্ক ওদের। পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র হবার জেদে সব ধ্বংস করার চেয়ে শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে দাড়িয়ে থাকতে পছন্দ করে। সকল দেশ ও জাতির মানুষকে সম্মান করে। কানাডিয়ানরা অনেক লাইকেবল! সিম্পল! এটা সবাই বলে। যারাই এখানে আসে তারাই!

সুন্দর মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানাই পুলক ভাই।
শুভকামনা রইল অনেক!

১২| ২০ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৬

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ্ আপু, আপনার দোআ'য় আল্লাহ্'র রহমতে বেশ ভালো আছি। আন্তরিক প্রতিউত্তরে কৃতজ্ঞতা জানবেন আপু।

শুভ হোক আপনার প্রতিটি প্রহর।

২০ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৮

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: পুনরায় এসে কেমন আছেন তা জানিয়ে যাবার জন্যে ধন্যবাদ।

ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম!

আপনারও প্রতিটি মুহূর্তে অনেক সুখ ও শান্তিতে কাটুক! :)

১৩| ২০ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২২

শুভ_ঢাকা বলেছেন: খুবই ভাল লিখেছেন। আউটস্ট্যান্ডিং! সময় সুযোগ করে বিস্তারিত কমেন্ট করবো।

২০ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:১৬

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ। জ্বি, সময় হলে বিস্তারিত কমেন্ট করে ফেলবেন। আমি অপেক্ষায় থাকলাম.... :)
শুভকামনা শুভসাহেব!

১৪| ২০ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:১১

জাহিদ অনিক বলেছেন: এইসব উচ্চবিত্ত দেশের মানুষেরা সরল মনে অনেককিছু বলে ফেলে। ওদের এসব কথা যে আমাদের আবেগে লাগে সেটা যদি ওরা বুঝত!

এই লাইনটা কেবল আমরাই বুঝব, ওরা বুঝবে না । সত্যি বলতে যতটুকু আমি জানি বা বুঝি, বিদেশিরা যা বলতে চায় সরাসরি বলে দেয়, ঘুরিয়ে পেচিয়ে এমন কিছু বলবে না যা ভাব অর্থ থেকে আমাকে বুঝে নিতে হবে।
আমাদের অবশ্য এই ক্ষেত্রে একটু উলটো , আমরা যা বলতে চাই সেটা না বলে অন্যকিছু আশেপাশে বলে ভা মেটাফোর ব্যবহার করে থাকি প্রচুর । এটা যেমন গান কিংবা সাহিত্যেও লক্ষণীয় তেমনি কথোপকথনেও দেখা যায় ।

আমি যখন বিদেশি বন্ধুদের আমার বাংলাদেশের কথা বলি , ওরা অবাক হয়। আমার বাসা থেকে ইউনিভার্সিটির দূরত্ব ৯ কিলোমিটার, এই টুকু পথ যেতে আমার ১ ঘন্টা কেন লাগবে, এতে ওরা অবাক হয় ।
ওদের মনে হয় নয় কিলোমিটার তো ৯ মিনিটে যাওয়া যায় ।

আর দরজা ধরে রাখার যেটা বললে সেটা আমি বাংলাদেশে দেখি নাই এখনো , যা আছে সব শপিং মল কিংবা অফিসে দাড়োয়ান , গার্ড এরাই দরজা খুলে দেয় ।


বাংলাদেশের ভিক্ষুকদের উপর আমি বিরক্ত । কিছুদিন আগে রাস্তায় এক কমন জেন্ডার ভিক্ষুক আমার কাছে এসে সাহায্য চাইল, আমি মানিব্যাগ বের করে টাকা বের করছি, অমনি সে ব্যাগ থেকে ১০০ টাকার ২ টা নোট নিয়ে দিল দৌড় !

আর , পেট রাখার ব্যাপারটাও ঠিক একদিক দিয়ে । একে একটা নাদুস নুদুস বিড়াল, কুকুর কিনতে বা পালন করতে টাকা নিশ্চয়ই লাগে । অনেক মধ্যবিত্তদের পেট পোষার সখ থাকলেও পেরে উঠেন না । তবে আমার এক বন্ধুর ৩২ টা বিড়াল আছে !! আমি ওদের বাসায় ভয়ে যাই না ।
তাই, উনি বললেন, "ইয়েস আই ফিগারড! এক্সপেন্সের ব্যাপার আছে তো! এসবে অনেক খরচ!" এই কথাটাকে একেবারে হেসে উড়িয়ে দেয়া যায় না ।

যাক, অবশেষে ৪র্থ পর্ব এলো । B-)

২০ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:৪৬

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হাই অনিক! ভালো আছো আশা করি।

হুমম, হয়ত তুমি ঠিক বলছ। তবে আমার মনে হয়েছে উল্টো। আমরাই বেশি স্ট্রেইট ফরওয়ার্ড ওদের চেয়ে। কোথায় যেন পড়েছিলাম, এক জাপানিজ প্রবাসি লিখেছেন, ৮ বছর জাপানে থেকেও ওদের হ্যা আর নায়ের পার্থক্য বুঝতে পারেন না! হাহা। মানে হচ্ছে, ওরা কোন কাজে না বললেও এত বিনয় দিয়ে বলে যে বোঝা যায় না। কানাডাও একদম তাই। কারো সাথে ঝগড়া করলে বা কটু কথা বললেও মুখি হাসি রেখে এমন ভাবে বলবে যে বোঝা যায় না! আমাদের দেশে মানুষ ঝগড়া করলে বোঝা যায় এটা ঝগড়া, মিষ্টি কথায় তিতা বিষ মিশিয়ে দিলে সেটাও সহজেই বোঝা যায় আর সত্যিই সুইট হলেও বোঝা যায়। ওরা বিনয়ের কারণে অনেককিছু বলতে পারে না। কোন বিষয়েই পুরো বিরক্তি দেখাতে পারেনা। মুখে হাসি যে রাখতেই হবে এমন নিয়ম! কিন্তু আমরা অনেককিছুই বলে ফেলতে পারি!

আর সাহিত্যেও মেটাফোর ভালোই ব্যবহার করে। বিশেষ করে ইংলিশ কবিতা বুঝতে আমি হিমশিম খেয়ে যেতাম এ কারণে। ওদের তুলনাগুলো সহজে বুঝতাম না। তবে সাহিত্যের ব্যাপারে আমার কাছে বাংলা সাহিত্যকে বেশি উঁচু দরের মনে হয়। এত কারুকার্য, আবেগ আর মায়া অন্য ভাষায় পাইনা!
ওপরের কথাগুলো অভিজ্ঞতা থেকে বললাম। তোমার এবং আমার অভিজ্ঞতা আলাদা! এজন্যে অবসারভেশনও বেশ আলাদা! :)

আমি বিদেশে থাকতে থাকতে বুঝে গিয়েছি বিদেশীদের সামনে কি বলতে হবে এবং কি বলতে হবে না? আমাদের দেশের রেপুটেশন উন্নত করার জন্যে একটু সুবিবেচকের মতো আচরণ ও কথাবার্তা ভীষনই জরুরি। বেশিরভাগ প্রবাসীই এটা মেনে চলে বা চেষ্টা করে।

বাংলাদেশ যে দরজা ধরে থাকার নিয়ম থাকতেই হবে তা নয়। এই পৃথিবীতে অনেক দেশ আছে যেখানে এমন নিয়ম নেই। প্রতি দেশের নিজের নিজের নিয়ম! এটার জন্যে বাংলাদেশ বা অন্যকোন জাতির বিনয় আমি মাপতে পারিনা। এটা ছোট একটা ব্যাপার যা কানাডায় অনেক বড় করে দেখা হয়।

বিরক্ত হয়ো না অনিক। অভাবে স্বভাব নষ্ট হয়। এখানেও যারা ক্রাইম করে, ড্রাগস নেয় তাদের একটা বড় অংশই হোমলেস। আল্লাহর কাছে ধন্যবাদ যে তিনি আমাদেরকে দেবার সামর্থ্য দিয়েছেন। হাত পেতে নেবার বা কেড়ে পালিয়ে যাবার অসহায়ত্ব নয়!

হাহা, আমিও কিছু বন্ধুর বাড়িতে এই পেটের ভয় যাই না। বিশেষ করে বিশাল সব কুকুর যদি থাকে কারো। এই কথাটিকে হেসে উড়িয়ে কেউই দিচ্ছেনা। আমার খারাপ লেগেছিল সেটা তো বলেছিলামই। আমরা যে শুধু সামর্থ্যের কারণেই পোষ্য রাখিনা তা নয়। সেটা একটা ব্যাপার। অনেক বাড়িতেই আসলে পশুপাখি অপরিচ্ছন্নতার জন্যে ঘৃণা করে এবং ভয়ও পায়। যেমন আমাদের বাড়ির গল্পই তো বলেছি। ভুল করে বিড়াল ঢুকে পরলে কি হতো! সবমিলে এই কালচারটি আমাদের এখানে ওয়াইডলি নেই।

হুম এলো ৪র্থ পর্ব, আর তুমিও এলে! :)
সময় নিয়ে কষ্ট করে বড় মন্তব্য করেছ বলে কৃতজ্ঞতা।
শুভেচ্ছা রইল অনেক!

১৫| ২০ শে জুন, ২০১৭ রাত ১০:১৪

জাহিদ অনিক বলেছেন: হ্যালো পাগলী, তোমার এই পাগলী নামটা বেশ ভালো । পাগল ছাড়া দুনিয়া চলে না । হা হা হা

আমি ভাল আছি, নিশ্চয়ই তুমিও ভাল আছো ।

হুম এটা অবশ্য তুমি ঠিকই বলেছ, কনভারশেসনে অবজারভেশনের উপর অনেক কিছুই নির্ভর করে । তোমার আর আমার অবসারভেশন গুলো আসলেই আলাদা, আমি সামনা সামনি বিদেশীদের খুব একটা পর্যবেক্ষন করতে পারি নি, পেলেও খুবই কম সময়ের জন্য । আমার পর্যবেক্ষন সব দূর থেকে, দূর থেকে কথোপকথনের মাধ্যমে। তোমার গুলো সব সামনা-সামনি। তোমার তাই ওদের সম্পর্কে বেশি অবিজ্ঞতা। তাই বলা যায় তোমার এই অবসার্ভেশন গুলোর একটা মনিটরিং ভ্যালু আছে।

আচ্ছা, সেই ছোট বেলার এই এত গল্পগুলো এত নিখুতভাবে মনে রাখা সম্ভব না। নিশ্চয়ই লিখে রাখতে ?

২০ শে জুন, ২০১৭ রাত ১০:৩১

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হাহা। তুমি হচ্ছো কবি মানুষ। কবিরা পাগলই হয়। তুমি ছাড়াও দুনিয়া চলবে না তাই। ;) :D

হুম আছি ভালোই।

হ্যা অভিজ্ঞতার তারতম্য, পরিমাণ এবং ভাবনার ধরণে আমরা আলাদা সব অবজারভেশনে এসে পৌঁছেছি। সবার অবজারভেশনেরই নিজস্ব ভ্যালু আছে। :)

নাহ আমি লিখে রাখতাম না। তবে সেই স্মৃতিগুলো একদম ৪/৫ বছর বয়সের নয়। আরো বড় বয়সের। আমি কানাডায় এসেছি কিশোরি বয়সে। একদম বাচ্চাকালে নয়। এজন্যে দেশের স্মৃতি ভালোই মনে আছে। আর সত্যি বলতে যখন একটা টপিক নিয়ে লিখতে শুরু করি আমার মনে হয় কি আর লিখব? এ নিয়ে তো বেশি স্মৃতি নেই। আজকের ভ্রমণ পর্বটি লেখার টাইমেই মনে হচ্ছিল যে কিছুই তো হয়নি। লাইব্রেরী থেকে রেস্টুরেন্ট, এবং তারপরে স্কুল। ব্যাস। আর কি লিখব? কিন্তু লিখতে লিখতে অনেককিছু মনে পরে গেল। লেখা শেষে দেখি এতকিছু লিখে ফেলেছি। আমি লেখার মাধ্যমে টাইম মেশিনে ট্রাভেল করে সেই কিশোরি বয়সে চলে যাই। সেভাবেই হাসি বা দুঃখ পাই! আর আমার মনটাই এমন, যেকোন কিছু দাগ কাটে। মনে থেকে যায়। টিচারের সাহায্য থেকে শুরু করে দেশকে নিয়ে বলা সেই সব কথাই আমাকে এফেক্ট করেছে। এজন্য আমি কিছুই ভুলিনি!

১৬| ২০ শে জুন, ২০১৭ রাত ১০:৪৫

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ভাল পোষ্ট।

২০ শে জুন, ২০১৭ রাত ১০:৪৯

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যে ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছা রইল!

১৭| ২১ শে জুন, ২০১৭ রাত ১২:৩৬

উম্মে সায়মা বলেছেন: খুব ভালো লাগল আপু এ পর্বটিও।
কানাডিয়ানরা আমেরিকানদের রূড বলার ঘটনা শুনে খুব হাসি পেল। তারা আসলেই বেশি নিয়মকানুন মেনে চলে। খুব সুন্দর স্মৃতিচারণ করেছেন। আমার মনে হচ্ছিল আমিও আপনার সাথে ঘুরছি। পরের পর্বের অপেক্ষায়.....

২১ শে জুন, ২০১৭ রাত ১:০১

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: সায়মা আপু! ভালো লাগায় অনুপ্রাণিত হলাম।

হাহা, অনেক কানাডিয়ানই আমেরিকানদের নানা কারণে রুড মনে করে। আমেরিকানরাও কানাডিয়ানদের বিদ্রুপ করে অনেক ব্যাপারে। দুই প্রতিবেশি দেশের হালকা রেষারেষী আরকি। খুব সিরিয়াস কিছু যদিও নয়।

মনে হবার কি আছে? আসলেই তো ঘুরেছেন আমার সাথে। লেখার প্রথমেই বলেছি সবাইকে নিয়ে স্কুলের বাইরে বেরিয়ে পরব! ;) :D

পাঠ ও মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা!
সকল শুভকামনা রইল!

১৮| ২১ শে জুন, ২০১৭ রাত ১:৩৯

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ভালই লাগে আপনার লেখা পড়তে।। আটকায় না কোথাও।। বেশ সাবলীল।। মনে হচ্ছে লেখালেখির হাতও আছে।।
গেট ধরে রাখার ব্যাপারটা আমি এখানেই এসে শিখেছি।। যদিও সবাই করে না।। আর তাই প্রকারান্তরে দেশের সাফাই গাইতে দেখে, হাসছিলাম।।
ভিক্ষুকের ব্যাপারটা পশ্চিমে এমনটাই দেখা যায়।। জীবনযাত্রার তাল মেলাতে যেয়ে অনেকেই খেই হারিয়ে ফেলে।।
ভাল লেগেছে, মাতৃভাষায় বকবক না করতে পারায়।। তবু শান্তনা যে, ব্লগে তো কররততে পারছেন =p~

২১ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৪:৩৭

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: লেখনীর প্রশংসায় অনুপ্রাণিত করেছেন। কৃতজ্ঞতা রইল সেজন্যে।

জীবনযাত্রার তাল মেলাতে যেয়ে অনেকেই খেই হারিয়ে ফেলে।।
একদম ঠিক বলেছেন। ওরা ভিক্ষুক হলে সাধারণত নিজের দোষেই হয়। জীবনটাকে এনজয় করতে গিয়ে এলোমেলো করে ফেলে অনেকেই!

হ্যা একদম ঠিক। ব্লগে এলে একটা দেশী পরিবেশ পাই। নিজের ভাষায় ভাবের আদার প্রদান করতে পারি। এর জন্যে সামু ব্লগের কাছে যতোই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিনা কেন কম হবে।

পাঠ ও সুন্দর মন্তব্যে ধন্যবাদ।
আমার সকল শুভকামনা রইল!

১৯| ২১ শে জুন, ২০১৭ রাত ২:১০

র‍্যাশ বলেছেন: পোষ্ট পড়ে মনে হল বাংলাদেশের রাস্তায় ঘোরাফেরা করা কুত্তা বিড়ালগুলোকে কানাডায় রপ্তানী করতে মন্দ হত না। তিনারা পশু প্রেমী মানুষ, আমাদের দেশের কুত্তা-বিড়ালগুলো আবার মানুষের নিঃসঙ্গতা দূর করতে ওস্তাদ। ইদানীং দেশে রেমিটেন্স প্রবাহ কমে গেছে। এই কুকুর বিড়ালগুলোকে রপ্তানীর সুবাদে যদি দেশের রেমিটেন্স প্রবাহ আবার বাড়ে!! কানাডার প্রধান মন্ত্রী যেন কে ? জাষ্টিন ট্রুডো? ওনার অর্থনৈতিক উপদেষ্টাদের সামনে আমাদের দেশের এই মুল্যবান সম্পদের একটা উপযুক্ত ব্রান্ডিং করা দরকার।
তবে পশ্চিমাদের পশুপ্রেম ইদানীং এক শ্রেণীর বাংলাদেশীদের মধ্যেও বেশ ভাল আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। দেশের হাজার হাজার মানুষ যেখানে প্রতিদিন অভুক্ত অবস্থায় ঘুমাতে যায় সেখানে পোষ্য প্রাণীর প্রতি বিলাসি অর্থের অপচয় যে কোন মানদণ্ডে জাষ্টিফাই হয় তা এক রহস্য বটে।

২১ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৪:৪৩

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: জ্বি কানাডার প্রধানমন্ত্রীর নাম জাস্টিন ট্রুডো! আপনার সাথে অনেকাংশেই একমত। পুরো পৃথিবীতে অনেক মানুষ যেখানে ঠিকমতো খেতে পারে না সেখানে পশুপাখির জন্ম ও মৃত্যুদিন পালন করার জন্যে বিপুল সম্পদ অপচয় জাস্টিফাই করা সম্ভব না। পৃথিবীর বাইরের কোন গ্রহের প্রানীর কাছেও নিশ্চই এটি দৃষ্টিকটু মনে হবে। তবে এটাও ঠিক যে একজন ইনডিভিজুয়াল নিজের সম্পদ নিয়ে কি করবে সেটা তার ব্যাপার। বেআইনি কিছু না হলে তা সমালোচনা করার অধিকার সমাজ ও রাষ্ট্রের থাকে না। তবুও মানবতার খাতিরে কিছু বিবেচনাবোধ প্রত্যেকটি মানুষের কাছেই কাম্য!

পাঠ ও মন্তব্যে ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছা!

২০| ২১ শে জুন, ২০১৭ রাত ২:২৬

জাহিদ অনিক বলেছেন: সময় নিয়ে কষ্ট করে বড় মন্তব্য করেছ বলে কৃতজ্ঞতা। দয়াকরে এই অতি ভদ্রতা টি তোমার কানাডিয়ান বন্ধুদের জন্য রেখে দিও । আমার সামনে এই কথা ফের বললে আমি তোমার ঠ্যাং ভেঙে দিব ! B-)


হুম ! বুঝলাম তোমার স্মৃতি শক্তি অত্যন্ত প্রখর । আমার মত আপনভোলা তুমি নও । তুমি লিখতে গেলে চলে যাও টাইম মেশিনে করে অতীতে , সেখান থেকে সব খুঁজে খুঁজে নিয়ে এসে তারপর লিখ, আর আমি লিখতে গেলে পিছনের কিছু তো মনে আসেই না, তাই টাইম মেশিনে করে সামনে যাই। সামনে কি কি দুর্যোগ হবে সেটা নিয়েই যা তা ব্যাঙের মাথা একটা কিছু লিখে ফেলি ।

সে যাই হোক, আবু হেনা ভাইএর সাথে একদম একমত হয়েই বলছি, আমিও তোমার লেখার ফ্যান হয়ে যাচ্ছি।

বই-টই বের করে ফেল। ভাল কাটতি হবে । হা হা হা,
না, মজা না। সত্যি তোমার বই বের করার কথা ভাবা উচিত ।

শুভ রাত।

২১ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৪:৫৪

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: অনিক, তুমি আমার ঠ্যাং ভেঙ্গে দেবে? আচ্ছা কাছে এসে ভাঙ্গার চেষ্টা করোত! আমি তোমার হাত দুটো সফ্টলি ধরে মট করে ভেঙ্গে দেব! ফাজিল ছেলে! ;) :D

হাহা, তোমার লেখা একদমই ব্যাঙের মাথা নয়। সেগুলো তো ব্যাঙের পা। হিহি। সিরিয়াসলি, ইউ আর আ গুড রাইটার, স্পেশালি আ গুড পোয়েট! তুমি ব্লগিং নিয়মিত করো, ধরে রেখো লেখার অভ্যাস। তোমার লেখা উন্নত হয়ে অসাধারণ একটি জায়গায় যাবার সম্ভাবনা আছে।

এই মারাত্মক গরমে ফ্যানের বেইল নাই। পারলে এসি হবার চেষ্টা কর। আমার একটু উপকার হয়! ;)

ব্লগে অনেকেই বই বের করার কথা বলেছে। তবে সত্যি সত্যি বই বের করলে অন্য মানুষের কথা বাদ দাও তোমারাই টাকা খরচ করে কিনবে কিনা সন্দেহ। হাহাহা।
তোমার কথাটি প্রশংসা ও অনুপ্রেরণা হিসেবে ধরে নিচ্ছি!

শুভ রাত? না শুভ মধ্যরাত? (যদিও আমার এখানে দুপুর)। তবে দেশের টাইম অনুযায়ী বলছি। শোন অনিক, আমার পরিচিত কিছু শখের কবি রয়েছে যারা অনেক ভালো লেখেন। আর নিয়ম করে খান ও ঘুমান। কবি হতে এতো অগোছালো, অনিয়মের জীবন লিড করতে হবে তেমন কোন কথা নেই। হাহাহা। নাহ সিরিয়াসলি, যে কারণেই অনিয়মের অভ্যাস থাকুক না কেন, জীবনে একটু টাইম মেইনটেইন করার চেষ্টা করো। অনিয়মকে নিয়ম বানিয়ে ফেলো না! তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে লেকচার দিলাম। কিছু মনে করো না! :)

আমার সকল শুভকামনা রইল।
ভালো থেকো অনেক!

২১| ২১ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:২৫

সামিয়া বলেছেন: দরজার ম্যানার কিন্তু আমরা দেখাই, এরকম রুলস কোথাও নেই কিন্তু ঠিক যেভাবে বললে যে একজন আসছে তাকে দেখে ডোর ধরে রাখিনি কিংবা আমার জন্য রাখেনি কিংবা কেউ আমার জন্য দরজা ধরে রেখেছে যা দেখে আমি দৌড়ে যায়নি বা তারা জলদি আসেনি এরকমটা মনে পড়ছেনা। ঠিক একী রকম লিফটের ক্ষেত্রেও।। আমরা ও কিন্তু দরজা ধরে না রাখলে খুব রুড ভাবি । এটা অলিখিত রুলস।।
বর্ণনা সব সময়ের মত নিখুত। কিন্তু একটা ব্যাপার! তুমি এতগুলো কানাডার স্কুল পর্ব লিখলে কিন্তু তোমার প্রিয় পথ প্রিয় স্কুলের কিংবা প্রিয় কোন শিক্ষকের কখনো কোন ছবি শেয়ার করনি, করলে আমরা পাঠকরা আরও খুশি হতাম।

২১ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৫

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপু! অপেক্ষায় ছিলাম পড়ে কমেন্ট করবেন বলে। আপনার কমেন্ট দেখে ভালো লাগল তাই!

ও ওয়াও! তাই? আমি দেশে থাকতে বা যখনই ছুটিতে গিয়েছি কখনোই অপরিচিত মানুষের জন্যে ডোর ধরার কালচারটা ওয়াইডলি দেখিনি। বেশিরভাগ জায়গায় দাড়োয়ান থাকে যারা এই কাজটি করে। আমাদের দেশে তো অনেক লিফটে পর্যন্ত মানুষ ঢোকানো ও বোতাম টেপার লোক থাকে! তবে অপরিচিতদের কাজটি করতে দেখিনি। আমার সাথে তো হয়নি! ওপরেও সবাই তাই বললেন। দেশে এমনটা হয় না। কি জানি আপু! একেকজনের একেক অভিজ্ঞতা। হয় দেশে এদিকটা চেইন্জ হয়েছে। বা আপনার অফিসে সবাই এই ভদ্রতা ধরে রাখে। অবশ্য যদি আপনি সব জায়গায় এমন কালচার দেখেন তবে বলব ভালো একটা ব্যাপার। আমার কানাডিয়ান বন্ধুরা বাংলাদেশে আসলে আমাদেরকে রুড ভাববে না! হাহাহা! দেশে ছুটিতে কোনবার গেলে এই ব্যাপারটি আমি অবশ্যই লক্ষ্য করব আপু! বলার জন্যে অনেক থ্যাংক্স!

ছবি না দিয়েও সবকিছু চোখের সামনে ভাসানোই তো লেখার চ্যালেন্জ! হাহা। দেখি ভাবব বিষয়টা নিয়ে। :)

সময় বের করে পড়েছেন ও কমেন্ট করেছেন এজন্যে কৃতজ্ঞতা!
ভালো থাকুন আপু, অনেক ভালো!

২২| ২১ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৩

জাহিদ অনিক বলেছেন: আমি তোমার হাত দুটো সফ্টলি ধরে মট করে ভেঙ্গে দেব! এত সফট করে ধরে হাত ভাঙা যায় না ।

হ্যালো পাগলী,
তুমি বই তো আগে বের কর, তারপর দেখে নিও টাকা খরচ করে বই কিনি কি না ! না কিনলে মূল্য ফেরত । হা হা

যাইহোক, কবি হতে গেলে আগোছালো জীবন লিড করতে কি না জানি না, তবে আমি বড্ড আগোছালো । B-)

তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে লেকচার দিলাম। কিছু মনে করো না! :) - হুম্মম !! সুযোগে লেকচার দিয়ে দিয়েছ। অগত্যা কি আর করা আমিই না হয় বাধ্য ছাত্রের মত তোমার লেকচার হজম করে নিলাম ।
তবে অপেক্ষায় রইলাম এরকম লেকচার দেয়ার সুযোগ আমারো আসবে। ;)

ভাল থেকে অনেক অনেক । শুভ সন্ধ্যা ।

২১ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৭

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হাই অনিক! ভালো আছো আশা করি।

শুভ সন্ধ্যা!

ছেলের সবই উল্টো! মানুষ প্রথমে শুভ সকাল/দিন/রাত বলে, হাই/ হ্যালো এসব বলে। সে মাঝেখানে হাই বলে শেষে শুভ সন্ধ্যা জানাচ্ছে! :)

যায়, আমি সফট করে ধরেই হাত ভাঙ্গতে পারি, আমার সাথে বেশি টাল্টিমাল্টি করলে কি অবস্থা হবে তোমার ভাবো! ;)

তুমি অগোছালো সেটা ঘোষনা দিয়ে বলার কিছু নেই। তোমার সাথে কথা বললে সহজেই বোঝা যায়!

হাহাহা, না তোমার সে সুযোগ আসবে না। আমি খুবই গোছালো একজন মানুষ। তোমাকে কেবল লেকচার হজম করেই যেতে হবে মনে হয়। হাহা।

আচ্ছা থাকব ভালো। তুমিও ভালো থেকো।

২৩| ২৩ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৫:২৩

জাহিদ অনিক বলেছেন: আমার সাথে বেশি টাল্টিমাল্টি করলে কি অবস্থা হবে তোমার ভাবো! ;) তাহলে কি ভয়ে ভয়ে থাকব ??

যদি অভয় দাও তাহলে বলি, তোমার সফটলি ধরা আর মট করে ভেঙে দেয়াকে আমি ভয় পাই না ।

শুভ সকাল । আবারো উলটা পালটা B-)

তুমি যতই গোছালো হও না কেন, সুযোগের অপেক্ষায় থাকলাম, সুযোগ নিশ্চয়ই আসবে , ঝোপ বুঝে কোপ দিতে হবে । B-)

ভাল থেক পাগলী ।

২৩ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:৩৪

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: শুভ সকাল! (তোমার সকাল এতক্ষনেও শুরু হয়েছে কিনা কে জানে! লেইট করে ওঠো, না?) ;)

অভয় তো দেইনি! তবুও সাহস দেখালে কেন? ধুর খেলব না! :)

জানো ঠিক জায়গায় বীরত্ব দেখনোকে সাহস বলে আর ভুল জায়গায় দেখানো হলে তাকেই আবার বলে বোকামি! সফটলি ধরাকে কেন ভয় পাবে? ওটা তো ভয় পাবার মত বিষয় না। পরে যখন মট করে ভাঙ্গব হাত তখন বুঝবে! ;)

শোন আমি তোমাকে কোন সুযোগ দেব না। তোমার মতো অগোছালো ছেলে আমার গোছালো জীবনে উপদেশ দেবার মতো কিছু পাবে না! তাই সেই সুযোগের আশায় না থেকে লক্ষ্মী ছেলের মতো আমার উপদেশ মানো। হাহা। কিডিং!

তুমিও ভালো থেকো অনিক!

২৪| ২৩ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:৩০

সারাফাত রাজ বলেছেন: আপু, অনেক ধন্যবাদ। এই পর্বটার জন্য অপেক্ষা করে ছিলাম।

আপু, কোন ছবি কি দেয়া যায়? সেই সময়ের না হলেও বর্তমানের।

শুভকামনা জানবেন।

২৩ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:৪৭

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপনাকেও মন্তব্যে ধন্যবাদ। যার কথায় স্টাডি ট্যুর নিয়ে লিখলাম তার মন্তব্য পাবার অপেক্ষা করছিলাম। :)

সেই সময়ে কোন ছবি তুলিনি। আগেও বলেছি ছবি তোলার শখটা আমার নেই। আর এখন নেট থেকে সার্চ করে সেসব জায়গার ছবি দিতে আমার ভালো লাগবে না। কেমন যেন আর্টিফিশিয়াল হয়ে যাবে ব্যাপারটা।

যাই হোক, আপনার শরীর এখন কেমন? জড় পরবর্তী ঝড় কি থেমেছে? দূর্বলতা কেটেছে?
শুভেচ্ছা!

২৫| ২৩ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১১:০৩

সারাফাত রাজ বলেছেন: জ্বী আপু, আল্লাহর রহমতে এখন অনেক সুস্থ।

আপু, আপনার লেখাটা আগেই পড়েছি মোবাইলে। কিন্তু কম্পিউটারে না বসলে মন্তব্য করা যায় না। দেরী করে মন্তব্য করার জন্য সরি।

আর্টিফিশিয়াল ব্যাপারের দরকার নাই। আপনার লেখা এতোটাই অসাধারণ যে দৃশ্যপট মানসপটে ভেসে ওঠে।

ভালো থাকবেন আপু।
:)

২৩ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১১:৪৬

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ! দোয়া করি এভাবেই সুস্থ থাকুন এবং মজার সব জায়গা ভ্রমণ করতে থাকুন! :)

নো নো ইটস ওকে! আমিও মোবাইলে বাংলা টাইপ করতে একদমই কমফরটেবল ফিল করিনা। লেইট ইজ বেটার দ্যান নেভার। আপনি সময়, সুযোগ করে মন্তব্য করেছেন এজন্যে ধন্যবাদ।

অনেক ধন্যবাদ। অনুপ্রেরণা পেলাম আপনার কথায়।

আপনিও অনেক ভালো থাকুন!

২৬| ২৩ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:০৫

নিওফাইট নিটোল বলেছেন: শুক্কুরবারের অাগে পোষ্টিয়ে ভালোই করেছেন.......হালকা চালে ভারিক্কী নাস্তা করতে করতে দুলে দুলে লেখা পড়ার মজাই অালাদা.......অাহা, ছুটির দিন........বৈদেশের মানুষরা এরূপ অালস্যভরা ছুটির সকাল এনজয় করতে জানে কিনা জানিনা.......তবে অালস্য উপভোগে অামার মোটেও ক্লান্তি লাগে না :D

উপরের কমেন্টে যেমন বলেছেন- "ওয়ানস অা নার্ড অলওয়েজ অা নার্ড".....অাপনি অাসলেই মনে হয় একটু অাঁতেলই ছিলেন!!........অাঁতলামি দুই চোক্ষে দেখতে পারি না- কারণ নিজে জ্ঞানের অত্ত ভার কখনো অালগাতে পারিনি.......কলেজে উঠে অামিও প্রথম বর্ষে সব ক্লাস একদম সব ক্লাস করতাম, পোলাপান খ্যাপাইতো........তাদে প্রতি শুধু দু'চারটা মা-বাপ সম্বন্ধীয় অম্ল-মধুর বাক্যব্যয় করতাম মনে মনে- কারণ অামি ক্লাসগুলো করতাম সদিচ্ছায়........বাংলা-ইংলিশ-ফিজিক্স.......একেবারে মন থেকে ভাল লাগত বলেই করতাম.......জ্ঞানের প্রতি অার্থিক লোভ তখনও জন্মায়নি মনে :P

এই সাধারণ কাজটিকে না করা ওরা লিটারেলি ক্রাইম মনে করে!
বিড়ির কসম........গত পর্বে অামিও মিনিট দশেক ভাবতেছিলাম- শেষে এসে এমন কী শেখানো জিনিস ভুলে গেলেন? মাঝপথে অনুমানের তদন্ত থামিয়ে দিয়েছিলাম........তবে হ্যাঁ, অন্যের খোলা রেখে যাওয়া দরজায় ঢুকতে গিয়ে যদি বাড়ি খাওয়া লাগে, তাহলে ইচ্ছা করে সামনের জনের কলার চেপে ধরে ঘুষাই, ইচ্ছামত কিলাই.......সিরিয়াসলি........
এখন কেউ কেউ যেটা করে, দরজা খুললেও অনেক কষ্টে অতি তাচ্ছিল্যের সাথে হলেও অাড়চোখে দেখার জন্য পর্যাপ্ত কৌণিক দূরত্বে ঘাড়টা ঘুড়িয়ে দেখে যে তার করুণাভরা ঠেলা মারা দরজা কারো গায়ে অাবার লাগে কিনা!! B:-/ কেউ যখন একেবারে ভ্রূক্ষেপ না করেই দরজাটা দুম করে ছেড়ে দেয়, সেটা কিন্তু যথাসময় পিছনের জনকেই ঠিকসময়ে ধরতে হয়.....না হলে বেঅাক্কেলের মতো বাড়ি খাবার রিস্ক থাকে........সোস্যাল এই ক্রাইমের ব্যাপারে অামি কিন্তু অন্নেক সতর্ক অার বিনয়ী ;)

".........আমেরিকানস আর সো রুড!"
সেদিন এক প্রবাসী অাম্রিকানের খোমাখাতার ষ্ট্যাটাসে লেখতে দেখলাম যে, অাম্রিকার যেসব ষ্টেইটে মনুষ্য অাবাদ কম, সেখানে দরজার বিনয় বেশী দেখা যায়.......অাগে নিউইয়র্কেও নাকি এমন বিনয়ের অাতিশয্য ছিল......কিন্তু যখন নাকি মানুষের অাতিরেক্য ঘটল তখন অার দরজার পিছনে কেউ নাকি ফিরেও তাকাল না..........অাম্রিকায় বসবাস করতে না পারার দুর্ভাগ্যে ষ্ট্যাটাসটির সত্যতা যাচাই করা অামার পক্ষে সম্ভব হয়নি |-)

"আমি মনে মনে ভাবলাম বাবাহ! কি দেশ! ভিক্ষুকও ইংলিশ বলে!"
অজপাঁড়াগায়ের অাবুল লন্ডনে কয়েক বছর থেকে যখন দেশে অাসল, তখন সবাই জানতে চাইল বিদেশীরা কতখানি স্মার্ট/শিক্ষিত?
তখন অাবুল বলল- "অার কইয়েন না, সেইখানে কামের মাইয়ারা পর্যন্ত ইংলিশে কথা কয়!!" #:-S

"হালাল এবং হারাম মাংসের ইংলিশ আমি জানতাম না"
অাচ্ছা, বিদেশ জুড়ে এত যে নামী ইন্ডিয়ান রেষ্টুরেন্ট, সেখানে কি তাহলে মুসলিমরা যায়না খুব একটা? সত্যি-মিথ্যা জানি না, প্রবাসী ব্লগগুলোতে পড়েছি যে- বিদেশে মুসলিমদের খাবার নিয়ে যত এলার্জি, নামাজ নিয়ে নাকি ততটা মাথাব্যথাও নাই!! কাহিনি সত্যি? :P

"স্কুলটি আমার জ্ঞান ও ভাবনার ভিতকে মজবুত করে আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে"
খুব ভালো লাগল লাইনটা.......ভালোবাসা-শান্তি ছড়িয়ে অাছে শব্দগুলোতে.......ঢাকায় প্রথমদিকে, কলেজে পড়ার সময় অামারও এরকম একটা শান্তির জায়গা ছিল- অামার কলেজ হোস্টেল!!

ঈদ বা ইদ- যেটাই মানেন.......অগ্রিম শুভেচ্ছা থাকল :)

২৯ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৬:১০

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: কিছু কারণে মন্তব্যের জবাব দিতে দেরি হলো। মাফ করবেন।
কষ্ট করে, সময় নিয়ে এত বড় ও সুন্দর একটি মন্তব্য করেছেন বলে ধন্যবাদ!

ওদের ছুটির সকাল আলস্যভরা হয়না। ওরা শনিবার সকাল সকাল বেরিয়ে পরে। টানা দুইদিন ঘোরাঘুরি ও আনন্দ করে রবিবার রাতে ফেরে। আমাদের দেশে যেমন কোন বিশেষ উৎসব ছাড়া বেড়ানো হয়না, ওদের তা নয়। প্রতি উইকেন্ডেই ঘুরতে যায়। সবাই না হলেও বেশিরভাগই তা করে।

ওনাকে নার্ডের ব্যাপারটা মজা করে বলেছিলাম। আমি আঁতেল কখনোই ছিলাম না। বরং পছন্দের মানুষ পেলে ভীষনই ফান করি। পড়ুয়া, তবে সেই মোটা চশমা লাগিয়ে, সারাক্ষন বই মুখের ওপরে দিয়ে থাকা টাইপ মানুষও না আমি। আমি যেকোন কাজই মন দিয়ে করি। হোক সে ক্লাস করা বা বৃষ্টিতে ভেজা! আমার ফ্রেন্ডরা আমাকে নার্ড বলে ক্ষেপায় না। স্মার্ট বলে! :) ;)

বিড়ির কসম? হাহাহা। আপনি পারেনও! যাক আপনার রহস্যপ্রেমী মাথাও ধরতে পারেনি ব্যাপারটা!

হ্যা, ক্ষেপান। সুযোগ পেয়েছেন যখন ক্ষেপান! আমি অনেক পরে সেই ঘটনাটিকে জোক হিসেবে শুনেছিলাম। তখন নিজের সেদিনের কথা মনে করে আরোই হাসি পাচ্ছিল! আসলে একাকীত্ব ও মন খারাপের কারণে এত এবসেন্ট মাইন্ডেড ছিলাম যে এমন ভাবনা মাথায় সেকেন্ডের জন্যে উঁকি দিয়ে গিয়েছিল!

বেশিরভাগ ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টগুলোতে হালাল মাংস পাওয়া যায় যেহেতু ওদের কাস্টমারদের একটা বড় অংশ পাকিস্তানি ও বাংলাদেশী। হুমম, নামাজী হোক না হোক খাবার ব্যাপারে অনেককেই বেশি সতর্ক থাকতে দেখা যায়। তার কারণ হতে পারে যে দেশে নামাজ পরেন না নিয়মিত এমন অনেকেই রয়েছেন। তবে হারাম খাবারের অভ্যাস মেজোরিটর থাকেনা। এজন্যে বিদেশে এসে এই বিষয়টিতে বেশি আনকমফর্টেবল ফিল করেন। তবে দেশেও মদ খায় এমন মানুষ আছেন। আবার প্রবাসে এসে হুট করে বিদেশী কালচারে অভ্যস্ত হবার ব্যাপারটিও আছে। পুরোপুরি খাঁটি বাংলাদেশী ও মুসলিমও দেখা যায় প্রবাসে। মানে প্রবাস হোক আর দেশ স্টেরিওটাইপ করাটা আসলেই কঠিন! ডিপেন্ডস মোর অন দ্যা ইনডিভিজুয়াল, লেস অন দ্যা এনভায়রনমেন্ট!

হ্যা, একদম ঠিক বলেছেন। ভালোবাসা, শান্তি, সম্মান, কৃতজ্ঞতা বোধ সবই ছড়িয়ে সেই লাইনটিতে। এখনো পিছে ফিরে তাকালে নিজের হাই স্কুল লাইফটাকে অনেক সুন্দর মনে হয়। যখন এখানে এত কষ্টের কথা লিখি, প্রথমদিকের স্ট্র্যাগলের কথা লিখি অবাক হয়ে যাই। অবাক হই মনে করে যে কত কষ্টই না করেছি একসময়ে। আর শেষের দিকে তো বাড়ির কমফর্টেবল স্কুলে ছিলাম! তাই স্কুলটির কথা মনে পরলে খারাপ লাগা নয় হাজারো ভালো লাগা ভীর করে মনে!

আপনাকেও ঈদের শুভেচ্ছা, বেশ লেইটে হলেও!

বরাবরের মতোই অসাধারণ মন্তব্যে কৃতজ্ঞ করেছেন। আবারো ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
শুভেচ্ছা!

২৭| ১৪ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১:২০

শুভ_ঢাকা বলেছেন: স্ক্রুটিনিঃ

অসম্ভব সুন্দর ও বৃহৎ লাইব্রেরীটি ঘুরে আমরা বেরিয়ে আসছিলাম। টিচার বাইরে দাড়িয়ে ছিলেন।


আপনার এই পর্বটি ছিল আগের পর্বের সাথে ক্যান্টিনিউয়েশন। তাই পূর্বের পর্বের একটা পুরানো একটা লাইন দিয়ে এই পর্বটি শুরু করেছেন। লাইনটি উল্লেখ করে পাঠকদের আরও একবার মনে করিয়ে দিয়ে লেখা শুরু করেছেন। চমৎকার কৌশল।

আগের পর্বে একটা চমক দিবেন এমন একটা অবস্থায় এসে লেখা শেষ করেছিলেন। আমরা পাঠকরা সেই চমকের অপেক্ষায় ছিলাম। তারপর আবার মাঝে অন্য বিষয় নিয়ে ব্লগে লিখে পাঠকদের উৎকণ্ঠ বাড়িয়ে দিয়ে পরিশেষে আপনার লেখা আসলো।

"ইউ ফরগট টু হোল্ড দ্যা ডোর ফর আদারস হানি!"

ইয়েস! চমক ছিল। পাঠক হিসাবে চমকিত হয়েছি। হতাশ করেননি।

তার শান্ত গিটারের সুর ব্যস্ত নগরীতে ছন্দপতন ঘটিয়ে অন্যরকম এক আবহ তৈরি করছিল!

চমৎকার বাক্য শৈলী। ভিক্ষুকের বর্ণনা বা আক্ষরিক অর্থে বলতে গেলে ভিক্ষুকের উপর এই পুরো প্যারাটি আমার কাছে দারুণ লেগেছে।

"লাভলি ওয়েদার হেই!"
"লাভলি আউটফিট!"
"আজ মাছ রান্না হয়েছে না? গন্ধ পেয়ে ঠিকই চলে এসেছে বদের বদ!"


এই জাতীয় খুঁটিনাটি মজার বিষয়ে লিখে পড়ার আনন্দ অনেক বাড়িয়ে দিয়েছেন।

খামতি:

যেতে যেতে বাসের জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখছিলাম সবকিছু। আশেপাশের স্থাপত্যকর্ম দেখে অবাক হচ্ছিলাম। মনোরম, চোখে ধাঁধা লাগিয়ে দেওয়া ডিজাইনের একেকটি টাওয়ার। দেখতে গেলে চারিপাশে অনেক বিল্ডিং, মার্কেট, রেস্টুরেন্ট। কিন্তু ঘিঞ্জি মনে হয় না। সবকিছু এত পরিকল্পিত এবং সুবিন্যস্ত যে চোখে না দেখলে বিশ্বাস হয় না! সবকিছুর মধ্যেই পর্যাপ্ত দূরত্ব। প্রশস্ত রাস্তা এবং ফুটপাত! মনে হচ্ছিল রাস্তায় গাড়ির জ্যামও প্ল্যানড! যেন ঠিক করে রাখা হয়েছে এই গাড়িটার পরে এই গাড়িটা থাকবে! কোন বিশৃংক্ষলতা নেই কিছুতেই। আর সবকিছুকে ছাপিয়ে যখন আকাশ পাহাড় উঁকি দিয়ে ওঠে মনে হয় পুরোটাই শিল্পীর তুলির আঁচড়! এভাবে লোকালয় দেখতে দেখতে বাস রেস্টুরেন্টের কাছাকাছি এলো।


আপনার এই লেখাটা আর পাঁচটা কানাডার ডাইরির মত লেখা ছিল না। এই লেখায় একটা ভ্রমণযুক্ত করেছেন। লেখার আঙ্গিক যদি ভ্রমণ কাহিনী দিকে রূপ নেয়, সেক্ষেত্রে লাইব্রেরী একটা ছবি থাকলে বা উল্লেখিত শহরের নাম উল্লেখ করলে পাঠক সোয়াস্তি পেত। আমার হয়ত মনে হচ্ছে শহরটা টরেন্টো অন্য পাঠক হয়ত মনে করবে ভেঙ্কুয়েভার এটসেটর‍্যা এটসেটর‍্যা।

স্কুলে পা রাখামাত্র আমার মনে হলো আমি আমার নিজ আঙিনায় দাড়িয়ে! এই স্কুলের মতো আপন জায়গা আমার আর নেই!
নিজ দেশ হতে এতদূরে আমার একটা ঠিকানা আছে সেই অনুভবে। হাজারটা নাই নাইয়ের মধ্যে কিছু একটা থাকার বিশ্বাসে।


এই বাক্যদ্বয়ের সাথে আমি ভীষণভাবে রিলেট করতে পারি। সারা দিন ব্যস্ত বড় শহরে কাজ শেষ করে সন্ধ্যার দিকে সাব আরবানে ফিরে আসতাম আমার স্টুডিও এপার্টমেন্টে, তখন আমার সেইম ফিলিংস হতো।

সার্বিকভাবে লেখার খুব ভাল ছিল। পড়ে আনন্দ পেয়েছি। সময়টাও ভাল কেটেছে।

এই মতামত জানানোর জন্য আর একবার পড়তে হল। আর একবার মুগ্ধতা গ্রাস করলো।

খুব ভাল থাকবেন প্রিয় লেখিকা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.