নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আঁচলের ঘ্রাণে বিমোহিত হতে মনে প্রেম থাকা লাগে। চুলের গন্ধ নিতে দুহাত বাড়িয়ে দেয়া লাগে। হাহাকার থাকা লাগে। দুনিয়া ছারখার হওয়া লাগে। সবাই আত্মা স্পর্শ করতে পারে না।আমার সমস্ত হাহাকার ছারখারে তুমি মিশে আছো।

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার

এক জন নিভৃতচারী

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামের দৃষ্টিতে ধর্মনিরপেক্ষতা

২৬ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:৫০



আসাম্প্রদায়িকতা বিষয়ে ইসলামের শিক্ষাগুলোর দিকে নজর দিলেই বিষয়টি সহজেই স্পষ্ট হয়ে উঠবে।

প্রথমেই দেখা যাক ইসলাম সাম্প্রদায়িকতাকে কীভাবে চিহ্নিত করেছে। একজন সাহাবী রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন ‘আসাবিয়্যাত’ (সাম্প্রদায়িকতা) কী? জবাবে তিনি ইরশাদ করলেন, অন্যায় কাজে স্বগোত্র-স্বজাতির পক্ষে দাঁড়ানো।
(সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৫০৭৮)

অর্থাৎ অন্যায় ও জুলুমের কাজে কাউকে শুধু এ জন্য সমর্থন করা যে, সে তার নিজ দল, গোত্র, জাতি ও ধর্মের লোক-এটিই সাম্প্রদায়িকতা। আপনি কুরআনুল কারীমের সূরা নিসার শুরু থেকে পড়ুন, দেখবেন ইসলাম মানবতার বন্ধনকে কীভাবে দৃঢ় করেছে। আল্লাহ তাআলা কীভাবে সকল মানুষকে একই পিতা-মাতার সন্তান ঘোষণা দিয়ে তাদেরকে পরস্পরের আপন বানিয়েছেন।

হযরত হুযাইফা রা. বর্ণনা করেন যে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, সকল জাতি যেন তাদের বাপ-দাদা তথা বংশ নিয়ে গর্ববোধ থেকে ফিরে আসে অন্যথায় তারা আল্লাহর কাছে নাপাকির পোকামাকড় থেকেও নিকৃষ্ট গণ্য হবে।
(মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ২৯৩৮)

সুনানে আবু দাউদের অন্য বর্ণনায় আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি মানুষকে আসাবিয়্যাত (সাম্প্রদায়িকতা)-এর দিকে আহবান করবে (অর্থাৎ অন্যায় কাজে নিজ দল, গোত্র, জাতিকে সাহায্য করতে বলবে) সে আমাদের (মুসলমানদের) দলভুক্ত নয়। যে এমন সাম্প্রদায়িকতার কারণে মৃত্যুবরণ করবে সেও আমাদের দলভুক্ত নয়।
(সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৫০৮০)

এ হাদীস এবং এ বিষয়ে আরো একাধিক সহীহ হাদীসের মর্ম এই যে, যে ব্যক্তি জাতীয়তা বা ভাষার ভিত্তিতে অন্যায় হওয়া সত্ত্বেও পরস্পর সহযোগিতা করে এবং (কওমিয়্যত) দল, গোত্র, বংশের ভিত্তিতে অন্যকে সাহায্য করতে গিয়ে মারা যায় সে জাহেলিয়াতের মৃত্যু বরণ করল। যে উম্মতের বিরুদ্ধে অস্ত্র উঠিয়ে ভালোমন্দ সকলকে হত্যা করতে থাকে সে মুসলিম উম্মাহর অন্তর্ভুক্ত নয়।

আর বিদায় হজ্বের বিখ্যাত ভাষণের কথা তো সকলেরই জানা। যেখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেছিলেন, ভাষা, বর্ণ ও গোত্রের ভিত্তিতে কারো উপর কারো প্রাধান্য নেই। তিনি বলেছেন, কোনো আরব অনারবের উপর (শুধু ভাষার কারণে) প্রাধান্য পাবে না। কোনো সাদা (তার বর্ণের কারণে) কালোর উপর প্রাধান্য দাবি করতে পারবে না। প্রাধান্যের একমাত্র ভিত্তি হবে তাকওয়া।
-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৩৪৮৭

উপরোক্ত হাদীসগুলো এবং কুরআন-সুন্নাহর সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আয়াত ও হাদীস-আসারগুলো অধ্যয়ন করলে যে কোনো বিবেকবান মানুষ সুস্পষ্টভাবে দেখতে পাবে ইসলামের ব্যাখ্যায় সাম্প্রদায়িকতার আওতা কত বিস্তৃত এবং কত কঠোরভাবে ইসলাম এর নিন্দা ও বিরোধিতা করে। ইসলামপূর্ব জাহিলিয়াত-যুগে মানুষ বিভিন্ন গোত্রে তাদের জাতীয়তাকে বিভক্ত করে ফেলেছিল। শুধু জাত-গোষ্ঠির নামে কথায় কথায় যুদ্ধ হত। হত্যা-লুণ্ঠন হত। ধনাঢ্য লোকজন, নেতা-সর্দারগণ থাকত সকল বিচারের ঊর্ধ্বে। বিচারের সম্মুখীন হত কেবল সাধারণ অসহায় মানুষ। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুরু থেকেই এসবের মূলে আঘাত করেছেন।


উপরের যে কয়টি উদাহরণ পেশ করা হল তার সবই ইসলামের দৃষ্টিতে সাম্প্রদায়িকতা এবং কঠোর নিন্দনীয় এবং ইহ ও পরকালীন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অথচ বর্তমান সময়ের প্রচারমাধ্যমগুলো এখন এগুলোকে সাম্প্রদায়িকতা হিসেবে দেখতেই চায় না।

আর ইসলামী রাষ্ট্রে বসবাসকারী অমুসলিম সংখ্যালঘুদের জানমাল তো মুসলমানদের মতোই। কোনো মুসলমানের জন্য যেমন তার দেশের আইন মেনে বসবাসকারী অমুসলিমের উপর কোনো ধরনের নির্যাতনের সুযোগ নেই তেমনি অন্য কোনো মুসলিমকে এমনটি করতে দেখলে সাধ্যানুযায়ী এ অন্যায় কাজ থেকে তাকে নিবৃত্ত রাখার চেষ্টা করাও তার দায়িত্ব। তা না করে উল্টো জালেমকে সমর্থন করলে সেটি হবে চরম সাম্প্রদায়িকতা।



মন্তব্য ৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৪

বিজন রয় বলেছেন: আসাম্প্রদায়িকতা বিষয়ে ইসলামের শিক্ষাগুলোর দিকে নজর দিলেই বিষয়টি সহজেই স্পষ্ট হয়ে উঠবে।


কেউ তা করবে না।

২| ২৬ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৭

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: ঠিক বলেছেন

৩| ২৬ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৯

আকদেনিজ বলেছেন: ভাল লাগল। তাহলে তো ধর্মনিরপেক্ষতার কোন দরকার নেই। সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ধর্ম অর্থাৎ ইসলাম কে মূলনীতি হিসেবে আইন পাশ করা উচিত।

২৭ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:০৮

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: আপনি বুঝতে ভুল করেছেন,আপনি আমার আগের পোষ্ট টা দেখুন,অনেকেই বলছে ইসলাম ধর্মনরপেক্ষতা সমর্থন করে না ওটা নাস্তিক্যবাদ।আমি ওটার ব্যাখ্যা দিলাম রাষ্ট্র চলবে রাষ্ট্রের মূলনিতী দিয়ে,মানুষ মানুষের ধর্ম তার ইচ্ছায় পালন করবে,দুটাকে মিক্সড করা যাবে না

৪| ২৬ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:২৪

অেসন বলেছেন: আকদেনিজ, সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ধর্মকে পৃথিবীর সব দেশে মূলনীতি হিসাবে গ্রহন করা হয়, আপনি সমর্থন করবেন তো?
অবশ্য পৃথিবীর কোন সভ্য দেশ ধর্মকে মূলনীতি হিসাবে নিয়ে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার হরণ করে না।

২৭ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:১১

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: রাষ্ট্র কোন বাক্তি নয় যে এর ধর্ম থাকবে,রাষ্ট্র একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান যেখানে সব ধর্মের উপস্থিতি থাকবে,সম মর্জাদা থাকবে

৫| ২৬ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:৪৬

সোজোন বাদিয়া বলেছেন: সুন্দর গঠনমূলক পোস্ট। ধন্যবাদ লেখককে।
৩নং মন্তব্যের প্রসঙ্গে বলি: যখন রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম করা হবে, তখন আর এই সুন্দর আদর্শের মধ্যে সীমিত থাকবেনা শিয়া-সুন্নি, হানাফি-কাদিয়ানি রক্তারক্তি বেধে যাবে। মুসলিম বিশ্বের দিকে তাকান, ইতিহাসের দিকে তাকান। কেন বাধবে জানেন, রাষ্ট্রের ব্যাংকে সোনা থাকে, আর হাতে বন্দুক থাকে। আর ধর্মের নামে কোনো জিনিস চাপাতে পারলে মানুষ আর হা করতে পারে না।

২৭ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:১৩

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: রাষ্ট্র কোন বাক্তি নয় যে এর ধর্ম থাকবে,রাষ্ট্র একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান যেখানে সব ধর্মের উপস্থিতি থাকবে,সম মর্জাদা থাকবে।অনেক হুজুর ধর্মনিরপক্ষতা কে নাস্তিক্যবাদের সাথে তুলনা করেছেন তাই আমি ইসলাম ধর্মের দৃষ্টিতে ধর্মনিরপেক্ষতার ব্যাখ্যা দিলাম

৬| ২৭ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৩:৫১

আকদেনিজ বলেছেন: ৫নং মন্তব্যের প্রসংগে বলি: বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলের সংখ্যা কত বলতে পারেন? তাদের মাঝে পরস্পর সম্পর্ক কেমন বলতে পারেন? বাংলাদেশের দিকে তাকালে দেখতে পাবেন একটা যুদ্ধ ক্ষেত্র। যেখানে দেখতে পাবেন রাজপথে প্রতিপক্ষের লাশের উপর কি ভয়ংকর উন্মাদনা। ক্যাম্পাস গুলোতে অস্ত্রের ঝনঝনানি। বাবা-মায়েরা আতঙ্কে দিন যাপন করে এই চিন্তায় যে তার সন্তান আদৌ ঘরে ফিরবে কি ফিরবে না। ক্ষমতায় গেলে রাষ্টকে নিজের বাপ-দাদার সম্পত্তি মনে করে আর যারা ক্ষমতার বাইরে তারা এমন কোন নিচ কাজ নেই যা তারা করে না বা করতে পারে না। আর এ সবই করছে অর্থের জন্য।
এখন হয়ত আপনি বলবেন, এটা তো আর রাজনীতির দোষ না। এটা যার যার দল বা ব্যাক্তির দোষ। আমিও আপনার সাথে একমত এটা দল বা ব্যাক্তির দোষ। মুসলিম ইতিহাসে ঠিক এটাই ঘটেছে। কিন্তু আপনি শুধু খারাপ ইতিহাসটা দেখছেন কেন ভাল দিকটা দেখুন। বরং মুসলমানরা যতদিন সঠিক ইসলামের পথে ছিল ততদিন পর্যন্ত সারা বিশ্ব দাপটের সাথে শাসন করেছে। আর যখনই ইসলামের মূল আদর্শ থেকে সরে গিয়ে শিয়া-সুন্নি, হানাফি-কাদিয়ানি বা অন্যান্য দলাদলিতে মেতে উঠেছে তখনই তাদের পতন হয়েছে। আমরা মূল আদর্শের ইসলাম কে এদেশের আইন হিসেবে চাই। (৫নং মন্তব্যের জন্য)

আপনার(লেখকের জন্য) আমার ব্লগের একটি লেখার লিংক: Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.