নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলা আমার অহংকার

স্বপ্নছায়

স্বপ্ন দেখি বাংলা কে নিয়ে। বলতে চাই "মা তোমায় ভালোবাসি".......

স্বপ্নছায় › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোট গল্পঃ শেষ দেখা

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৪

তোমার বাস ক’টায়? ১০ টায়। ... উমমম তারমানে ৫টায় জাহাঙ্গীরনগর ক্রস করবে। আচ্ছা, দেখা হবে নে, ৫টায়।

প্রতি মাসে নাবিল একবার করে ঢাকা আসে, দুই এক দিন থাকে, বরিশাল থেকে ঢাকা আসতে জাহাঙ্গীরনগরের উপর দিয়ে আসতে হয়, স্বপ্ন তখন ডেইরি গেটে এসে দাঁড়ায়, হয়তো ২/৩ সেকেন্ডের জন্য দেখা, তাও তো দেখা হলও। অবশ্য নাবিল যে দুই দিন ঢাকায় থাকে তখন স্বপ্ন ঠিক’ই ক্লাস ল্যাব ফাঁকি দিয়ে হলেও নাবিলের সাথে দেখা করে অথবা নাবিল’ই চলে এসে ঘণ্টা খানেকের জন্য জাহাঙ্গীরনগরে। পেশায় নাবিল ডাক্তার, তাই ঢাকাতে যে দুইদিন থাকে প্রচণ্ড বাস্ততার মাঝেই থাকে, কিন্তু ওর থেকে ৮ বছরের ছোট স্বপ্ন নামক মেয়েটাকে সময় দিতে এবং নাবিলের জন্য ক্লাস মিস দিতে স্বপ্নের এতটুকু বাঁধে না, ভালোবাসা তো এমনই।

সেইদিন ৩০শে অক্টোবর, নাবিল আসছে জেনে স্বপ্ন বরাবরের মতন ডেইরী গেটে এসে দাঁড়ালো। অই তো বাসটা দেখা যাচ্ছে! বাসটা আসতে আসতে স্পিড কমালো, অইতো নাবিল! কতদিন পর দেখা............ একটু মনে হয় শুকিয়েছে, নাকি কাল রাতে নাইট ডিউটি ছিল?

নাবিল!! তুমি?? তুমি জেইউ তে নামলা যে? স্বপ্ন বুঝতে পারছিল না ব্যাপারটা স্বপ্ন কিনা? ৬ মাস হয়ে গেলো নাবিল বরিশালে বদলী হয়ে গ্যাছে, কিন্তু আগে কখন এমন হয় নাই নাবিল নিয়মের ব্যাতিক্রম করে। মানে নাবিল ঢাকায় থাক্তেও কখন আবেগের বসে কিছু করে নাই। হটাৎ করে জাহাঙ্গীরনগর চলে আসা, বা হটাৎ ফোন করা এগুলা নাবিলের স্বভাবে নাই।

একবার হটাৎ স্বপ্ন ক্লাস ফাঁকি দিয়ে চলে গিয়েছিল নাবিলের সাথে দেখা করতে, কিন্তু নিয়মের মাঝে থাকা নাবিল ঠায় তিন ঘন্টা স্বপ্নকে দাড়া করিয়ে রেখেছিল ফার্মগেটের প্রচণ্ড রোদে। তারপর এসেছিল।

যাইহোক, নাবিল এর আগে স্বপ্নকে আত খুশি হতে দেখে নাই, দেখবে কেমন করে, নাবিল তো এর আগে কখন নিয়মের ব্যাতিক্রম করে নাই। স্বপ্ন সবার সামনেই নাবিলকে জড়িয়ে ধরে। অপ্রস্তুত নাবিল, স্বপ্নকে বলতে পারলো না, গতক’দিন ধরে যা বলতে চেয়েছিল। চল একটু রিক্সায় ঘুরি, নাবিল চুপ করে দেখছে, মেয়েটা কত খুশি হয়েছে ওকে দেখে! এর আগে ও কখন বুঝার চেষ্টা করে নাই যা। মেয়েটা হড়বড় করে এলোমেলো কথা বলেই যাচ্ছে........................।

স্বপ্ন আমার যেতে হবে। এখনি? মাত্র তো ১২ মিনিট হল, আচ্ছা তাহলে আর ৫ মিনিট, একটা কাপ চা খেয়ে যাও। আচ্ছা, চলো।

নাবিল চা খেতে খেতে বলে, আজ ক্লাস করছ? হুম, করছি তো। বিকালের ল্যাব?

স্বপ্ন চুপ করে থাকে। নাবিল বিরক্ত হল না, প্রথমবারের মতন, স্বপ্ন, যা কিছু হোক না কোন, যত সমস্যাই হোক না কেন, তুমি পড়াশোনাটা খুব ভালো ভাবে করবে, কোনকিছু করবে না যাতে নিজের পড়াশোনার ক্ষতি হয়। আচ্ছা, স্বপ্ন দম ছেড়ে বাঁচল, যাক বাবা বকাতো খাইতে হল না। স্বপ্ন আবার শুরু করলো তার ম্যারাথন কথা বলা।

বাসের জন্য অপেক্ষা করতে করতে নাবিল চুপ করে স্বপ্নর কথা শুনেই যাচ্ছে, মেয়েটা এত কথা বলে, অবশ্য নাবিল ওকে কথা বলার সময়ই দিয়েছে কবে? বুঝলা নাবিল অই যে মেয়েটা দেখছ অই রকম একটা নীল শাড়ি আর তুমি নীল পাঞ্জাবী পড়বা, তারপর একদিন আমরা ঘুরবো......... নাবিলের চোখে পানি চলে এলো। কাল রাতেও মেয়েটাকে অনেক বকেছিল, অকারনেই, মেয়েটা কখনই ওর বকাগুলো মনে রাখে না। নাবিল সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারে না, মেয়েটা দিনের পর দিন ধৈর্য্য ওর ঘুম ভাঙ্গতো, নাইট ডিউটিতে ওর সঙ্গ দিতো...............।

নাবিলের চোখে এক ফোঁটা পানি কি এলো, হয়তোবা, স্বপ্ন তা খেয়ালও করলো না। যাই স্বপ্ন, ভালো থেকো, পড়াশোনা কর।

এইটাই ওদের শেষ দেখা ছিল, নাবিলের দুইদিন পর বিয়ে হয়ে যায়, কোন এক বড়লোক বাবার ডাক্তার মেয়ের সাথে, যাকে নাবিলের বাবার পছন্দ।

আর স্বপ্ন, ওর কথা নাই বা বললাম, দারিদ্রতা স্বপ্নর মতন মানুষদের অনেক কিছুই দেখায় এবং শিখায়। জীবনটা ধনী দরিদ্র সবার জন্যই সমান ভাবেই এগিয়ে যায়।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:৫০

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: :)

২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:০৫

েমাঃ মামুনুর রশীদ (রাজীব) বলেছেন: :'( :'(

৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:১৭

বাতায়ন এ আমরা কজন বলেছেন: স্বপ্নরা তাদের স্বপ্নের মতই বিশাল। তারা ঠিকই মাথা উচু করে টিকে থাকে। নাবিলরাই বরং জীবনের শেষপ্রান্তে এসে নীরবে নিভৃতে হারানো সে দিংুলোর কথা মনে করে আফসোস করে আর ভাবে তার জীবনটা অন্যরকম ও হতে পারতো।

ভালো থাকুক সব স্বপ্নরা।

৪| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৭

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: প্রথম প্লাস।

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:০০

স্বপ্নছায় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.