নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলা আমার অহংকার

স্বপ্নছায়

স্বপ্ন দেখি বাংলা কে নিয়ে। বলতে চাই "মা তোমায় ভালোবাসি".......

স্বপ্নছায় › বিস্তারিত পোস্টঃ

পোকা বৃতান্তঃ জোনাকী পোকা

২০ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৭





জোনাকী এক প্রকারের পতঙ্গ। এই পতঙ্গের তলপেটে স্বয়ংপ্রভ নীলাভ-সবুজ দ্যুতি থাকে। রাতের অন্ধকারে এদের তারার মত মিটমি ট করতে দেখা যায়। এরা সমবেতভাবে এক ছন্দে মিটমিট করতে পারে।

জোনাকি পোকার আলোর এই উৎস হল তার তলপেটের নিচের ঠিক মাঝখানের অংশটি।জোনাকির বা Firefly [বিজ্ঞানসম্মত নাম: Lampyris noctiluca] জোনাকি পোকার দেহের পিছনের অংশে Luminescent organ থাকে । এই Organ থেকে লুসিফারেজ (Luciferage) ও লুসিফারিন (Luciferin) নামে দুটি রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয় । লুসিফারিন তাপ প্রতিরোধী যা আলোকে ঠান্ডা রাখে, এ ধরণের আলো উৎপাদনকে বলা হয় বায়োলুমিনিসেন্স। বায়োলুমিনিসেন্ট এনজাইম লুসিফেরাজ এর উপস্থিতিতে অক্সিজেন ক্যালসিয়াম, এডিনোসিন ট্রাইফসফেট বা এটিপি ও লুসিফেরিন এর সাথে বিক্রিয়া করে আলো উৎপন্ন করে। এ আলোয় উত্তাপ হিসেবে কোন শক্তি ব্যয়িত হয় না, তা না হলে শক্তি খরচের ফলে জোনাকী পোকা মারা যেত। অক্সিজেনের উপস্থিতিতে হালকা অঙ্গাণুগুলো আলোকিত হয়ে ওঠে। সাধারনত এদের শুককীটও luminescent হয়। প্রতি মিনিটে জোনাকী পোকা ১২০ বার জ্বলে এবং নেভে। একটি বাতি থেকে উৎপন্ন শক্তির শতকরা ১০ ভাগ আলো আর ৯০ ভাগ উত্তাপ। কিন্তু জোনাকিদের উৎপন্ন শক্তির শতকরা ১০০ ভাগই আলো। একটি জোনাকির শরীরের ওজনের অর্ধেকটাই বাতির ওজন। জোনাকিরা দিনের বেলায়ও জ্বলে-নেভে। সূর্যের আলোর জন্য আমরা দেখতে পাই না।

জোনাকির খাদ্য: সর্বভুক ,গড় আয়ু: প্রায় 2 মাস, আয়তন: 1 থেকে 2.5 সেমি।

এদের পাখা আর মাথায় হলুদ লম্বা দাগ আছে। ছয়টা পা, দু’টো অ্যান্টেনা, অক্ষিগোলক আর শরীরটা তিন ভাগে বিভক্ত। প্রতিটি জোনাকি শরীরের শেষ ভাগে একটা করে বাতি নিয়ে ঘোরে। প্রত্যেক প্রজাতির জোনাকি পোকার আলো কিন্তু এক রকম নয়, আলাদা। কোনো কোনো জোনাকি পোকার আলোর রং সবুজ, কারো আলো হলুদ আবার কারো বা কমলা। শুধু রঙই আলাদা নয়, ওদের আলোর সঙ্কেতও ভিন্ন ভিন্ন। এক প্রজাতির পোকার সাথে অন্য প্রজাতির আলোক সঙ্কেত হুবহু মেলে না। তাই নির্দিষ্ট প্রজাতির জোনাকি পোকারাই সেসব আলোক সঙ্কেত চিনে তার স্বজাতির পুরুষ পোকাদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে। সঙ্কেত ঠিক মতো না চিনতে পারলেই বিপদ! এক প্রজাতির মেয়ে জোনাকি পোকা কখনো অন্য প্রজাতির ছেলের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে পারে না, এটা ওদের সমাজে অন্যায়। যদি নেহায়েত এমন দুর্ঘটনা কখনো ঘটে যায়, তাহলে কাছে আসার পর মেয়েটো ছেলে জোনাকিকে ফাঁদে ফেলে মেরে ফেলে।



আত্মরক্ষা, যোগাযোগ ও বিপরীত লিঙ্গকে আকৃষ্ট করার জন্যে তারা আলো জ্বালায়। গোটা পৃথিবীতে প্রায় ৬০০ মতভেদে ২০০০ প্রজাতির জোনাকি আছে। এদেরকে দেখা যায় নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে, গ্রীষ্মকালের সন্ধ্যায়। জোনাকি আর্দ্রতা ভালবাসেন এবং এদের আবাস প্রধানত এশিয়া ও আমেরিকা এর আর্দ্র অঞ্চল। জোনাকিরা সাধারণ ভেজা জায়গা পছন্দ করে। তাই জলাশয়ের ধারে ওদের বাড়ি বানায়। এর মানে এই নয় যে, ওদের খুব পানির দরকার। পুকুর, ডোবা, নালা, খাল, বিল, নদী একটা কিছু হলেই হলো। ওরা তার পাড় ধরে গজিয়ে ওঠা ঘাস ও ঝোপ-ঝাড়ে বাসা বাঁধে। লম্বা ঘাস ওদের পছন্দ। সেসব ঘাস বা ঝোপের গাছেই ওরা থাকে, গাছই ওদের ঘরবাড়ি। তবে ওদের সবসময় গাছে দেখা যায় না। দিনের বেলায় লুকিয়ে থাকে গাছের বাকলের তলে, গাছের গর্তে বা ফাটলে, শুকনো পাতার নিচে, ঘাসে। রাত হলেই বেরিয়ে আসে। শীতেও ওদের তেমন দেখা যায় না। ওরা স্যাঁতসেঁতে জায়গা পছন্দ করে। কোনো কোনো প্রজাতির জোনাকি পোকার বাচ্চারা জলে থাকে এবং সেখানে মাছের মতোই তারা প্রায় বছর খানেক বেঁচে থাকে। এন্টার্কটিকা মহাদেশ ছাড়া পৃথিবীর আর সব মহাদেশেই জোনাকি দেখা যায়।

নারী জোনাকি মাটিতে তাদের ডিম বা শুককীট জমা রাখে। এবং শুককীটকে একটি numbing fluid এর মাধ্যমে খাওয়ায়। একাজে বড়রা বা পূর্ণবয়স্ক জোনাকিরা সাহায্য করে। এছাড়া অনেক পূর্ণবয়স্ক জোনাকিরা আছে যেগুলো কোন কিছুই খায় না।

জোনাকিদের শত্রু এদেরও শত্রু আছে। তারা এদের শিকার করে খায়। এ জন্য জোনাকিরাও কম চালাকি জানে না। ওদের কেউ শিকার করতে এলে ওরা এক ফোঁটা রক্ত ছেড়ে দেয়। সেই রক্তবিন্দু যেমন তিতা তেমনি বিষাক্ত। তাই ওদের আর কেউ শিকার করতে আগ্রহ দেখায় না। এমনকি টিকটিকি, সাপও ওদের শিকার করতে সাহস পায় না। তাই বলে ভেব না যে ওরা দুর্বোধ্য, কেউই ওদের বধ করতে পারে না। বাদুড়ের সঙ্গে ওরা পেরে ওঠে না। রাতে বাদুড় বেশ ভালোই দেখতে পায়। তার ওপর আবার জোনাকিরা যখন আলো জ্বেলে চলাফেরা করে তখন বাদুড় ওদের শিকার করে খায়।



Reference

http://bn.zero2inf.com/

http://bn.wikipedia.org/wiki/

http://animals.nationalgeographic.com/

http://www.somewhereinblog.net/

http://www.news-bangla.com/

http://environmentmove.com/

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাপরে... এ দিখা এলাহি কান্ড!!!!!!!!!

প্রেম কইরা কুতাও শান্তি নাই :P

ওদের সমাজে একজন লালন জোনাকি দরকার যে জাত-বেজাতের জন্য ফাদে ফেলে মারবে ছেলে জোনাকিকে;) =p~ =p~

অনেক কিছু জানলাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

২৪ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:২২

স্বপ্নছায় বলেছেন: :) শান্তি নাই এইটা ঠিক না, তাইলে কেউ প্রেম করতো না। তবে বিষয় হল, যার সাথে সব শেয়ার করা হয়, বা বেশি থাকা হয় তার সাথেই তো বেশি ঝগড়া লাগবে, তাই না। ধন্যবাদ আপনাকে

২| ২০ শে মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০০

মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেছেন: ভয়ানক ব্যাপার দেখছি, এখানেও মেয়েরা ফাঁদে ফেলে পুরুষ মারে...

৩| ২০ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:০৬

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: দারুন পোষ্ট! কিছু ছবি টবি দিতেন!!!

২৩ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:৫৮

স্বপ্নছায় বলেছেন: সামু এরর দেখাচ্ছিলো আপলোড এর সময় :(

৪| ২০ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:১৭

এহসান সাবির বলেছেন: চমৎকার পোস্ট!!!

দারুন।

++++++++++++++

ছবি মিস করছি।

২৪ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:১৭

স্বপ্নছায় বলেছেন: ছবি দিয়ে দিয়েছি :)

৫| ২১ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৫২

বটবৃক্ষ~ বলেছেন:
ওয়াও!! চমৎকার পোস্ট!!
:)

জোনাক! আমার অন্নেক অন্নেক ফেভারিট!!! ^_^

আগে ছোট বেলায় যখন বাড়ি যেতাম তখন ভাইয়াদেরকে শুধু বায়না ধরতাম রাতের বেলা জোনাক হাতের মুঠোয় ধরে দেয়ার জন্যে! মনে হ্ত সাত রাজার ধন আমার হাতে বন্দি!! আর রাতে ঘুমোনোর সময় শুয়ে শুয়ে গুনতাম ঘহরে কয়টা জোনাক ঢুকেছে!! হাহাহ!! :) :)
কি সব দিন ছিলো!! আহা!!


অনেক কিছু জানলাম!! ধন্যবাদ!! ছবি দিলে ভালো হত!

২৪ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:২৪

স্বপ্নছায় বলেছেন: আমি কিন্ত আপনার মন্তব্য পড়েই ছবি অ্যাড করেছি, কফি পোস্টটা এডিট করেছি।
সময়ের সল্পততার দরুন উত্তর দেয়া হয় না।
ধন্যবাদ আপনাকে

৬| ২১ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১:০৪

আমিনুর রহমান বলেছেন:




দিলেন তো জোনাকী পোকার কথা মনে করাইয়া। এখন মন যাচ্ছে জোনাকী পোকা দেখতে আর ধরতে। এই ঢাকা শহরে কোথায় পাই এখন :/



পোষ্টে +++

২৪ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:২৫

স্বপ্নছায় বলেছেন: আমার বাসা ঢাকা'র একটু বাইরে, আমি রোজ জোনাক দেখতে দেখতে বাসায় ফিরি :)

৭| ২১ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১:১২

অদ্বিতীয়া আমি বলেছেন: জোনাকী পোকা অনেক ভালো লাগে । আগে আমাদের বাসায় জোনাকি আসলে আমি আর আমার বোন ধরে রেখে দিতাম ।

ভালো লাগলো পোস্ট টা ।

৮| ২১ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ৭:০১

উদাস কিশোর বলেছেন: বাহ !
চমত্‍কার পোষ্ট ।
নতুন কিছু জানলাম :)

৯| ২১ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ৯:১৩

না পারভীন বলেছেন: প্রিয় জোনাক পোকার উপর লেখা পেয়ে পড়ে ফেললাম । অনেক ভাল লাগলো ।

১০| ২১ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:২৪

টুম্পা মনি বলেছেন: প্রিয়তে রাখলাম। পোকা সমাচার ভালোভাবে পড়তে হবে।

১১| ২৩ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৮

ধলা বিলাই বলেছেন: ভাই পোষ্ট ভাল লাগলো.. ;) :) :) :)

কিন্তু রাতে বাদুড় বেশ ভালোই দেখতে পায়, আমি তো জানি বাদুর চোখে দেখতে পায় না। :-* :-* :-*

২৪ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:০৪

স্বপ্নছায় বলেছেন: বাদুড় নিয়ে এখনও বিষদ পড়ি নাই ভাই। তবে অদের চোখের রড কোষ আর কোন কোষ আমাদের মানে মানুষের উল্টা কাজ করে। একটু পড়ে দেখতে হবে :(

১২| ২৪ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:২৭

আমিনুর রহমান বলেছেন:




আপনি তো ভাগ্যবান মানুষ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.