![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখতে, দেখতে প্রবাস জীবনের দুই বছর পার করলাম !
এই দুই বছরে না পাওয়ার চাইতে, পাওয়ার পাল্লাটাই ভারী। আমাদের ঘরে নতুন সদস্য যোগ হলো, নতুন চাকরী ইত্যাদি। উন্নত দেশের জীবন যাপনে সবই তো উন্নত। চিকিৎসা, শিক্ষা, অাইনের প্রয়োগ, ঝকঝকে রাস্তা-ঘাট ইত্যাদি, ইত্যাদি। কিন্তু এখানে নেই ছাদের ওপর বসে চাঁদের আলোয় রাতভর আড্ডা; মাস ধরে সব ভাই-বোন কাজিনরা মিলে বিয়ে বাড়ির আলপনা আঁকা , শপিং করা ; স্কুলের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যাওয়া ; নেই পহেলা বৈশাখ - বইমেলা ; নেই মায়ের হাতের রান্না ; নেই এমন আরো অনেক কিছু। যদিও দুধের সাধ অনেক সময়ই ঘোলে মেটানো হয়, কিন্তু সেগুলো কেন যেন আমাকে টানে না, মেকি মনে হয় । আমি অনেকের মতই অনেক কিছুতে গা ভাসাতে পারিনা , নিজেকে মানাতে পারিনা , ফলে কখনও কারো কাছে হয়ে যাই খ্যাত , কখনও হয়ে যাই অহংকারী। পাত্তা দেই না। এই দুই বছরে যাদের কাছের মনে করেছিলাম , দেখেছি তারা কেমন করে দূরের হয়ে গেলো ।
সবচেয়ে বেশি কষ্ট এই বিদেশ বিভূঁয়ে আপনজন কাছে না থাকা। বাচ্চাগুলোর যখন অসুখ হয়, হায় কি অসহায় লাগে ! মেয়েটা যখন পেটে, কি যে কষ্ট হয়েছে কাজ আর সংসার সামলাতে ! কত কিছু খেতে ইচ্ছে হয়েছে ! কেউ নেই , কেউ ছিলোনা । আবার দূরে থেকেও আপন মানুষগুলো ঠিকই সাহস দিয়ে গেছে , ভরসা দিয়েছে। ৮৬ বছর বয়সী আমার অস্ট্রেলিয়ান '' মা '' একটু, একটু করে জমানো টাকা দিয়ে মেলবোর্ন থেকে পার্থ এসেছে আমাদের কে দেখতে। মেয়ে হবার আগের-পরের ৬ টা মাস যেন বিদেশে থেকওে - দেশেই ছিলাম। শ্বশুর-শাশুড়ি , বাবা-মা , ভাইয়া , বড় মামা সবাই কে নিয়ে মনে হচ্ছিল এই সময়গুলো যদি শেষ না হতো।
দেশের ভালো খবরে হাসি, খারাপ খবরে কাঁদি, আতংকিত হই। স্বার্থপরের মত নিজের বা সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য দেশ ছেড়ে বিদেশে থাকি, কিন্তু মনটা পরে থাকে প্রাণের বাংলাদেশে। এই দুই বছরে দেশকে যতটা ভালোবেসেছি ততটা হয়তো জন্মাবধি বাসিনি। তবে একটা জিনিস শিখেছি একটা দেশ কেউ একা সুন্দর করতে পারে না। আমরা মুখে দেশকে ভালোবেসে উদ্ধার করে ফেলি কিন্তু কলার খোসাটা ঠিকই রাস্তায় ফেলি। এখানে আঞ্চলিক বা জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচনে কোথাও কোন মারামারি , গাড়ি পোড়ানো নেই , ব্যালট বাক্স ছিনতাই নেই। প্রতিটা মানুষ নিজের বুদ্ধি বিবেচনায় ভোট দেয়, নেতা নির্বাচন করে। নির্বাচিতরা প্রতিযোগিতা করে উন্নয়ন করে কারণ নইলে পরের বার আর ক্ষমতা পাবেনা। এখানে ক্ষমতা কারো পারিবারিক সম্পত্তি না। সরকারি টাকায় ভ্রমনের অপরাধে স্পিকার পদত্যাগ করেন। একটা দেশ এমনি এমনি উন্নত হয়না। এমনি এমনি হয়না। আমাদের লাখ, লাখ মেধা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে, এমনি এমনি যাচ্ছে না। যাক, এসব কথা আরেকদিন ।
এই তো বেশ কেটে যাচ্ছে আমাদের এই সব দিন রাত্রি !
১৪ ই মে, ২০১৭ দুপুর ১২:০২
সারিয়া তাসনিম বলেছেন: আমার অবস্থাটা হয়তো আপনার মত নয়, তাই ।
২| ১৪ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:০১
মানবী বলেছেন: নতুন সদস্যে শুভাগমনের অভিনন্দ্ন সারিয়া।
"এই দুই বছরে দেশকে যতটা ভালোবেসেছি ততটা হয়তো জন্মাবধি বাসিনি।" - :-)
ভালো লাগলো আপনার প্রবাস জীবনের অভজ্ঞতা পড়ে। অনেক ধন্যবাদ।
৩| ১৪ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:২৬
বাঁকখালির বাঁকে বলেছেন: ++++++++++++++++
৪| ০৮ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১১:১৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: "একটা দেশ এমনি এমনি উন্নত হয় না, এমনি এমনি হয় না! আমাদের লাখ, লাখ মেধা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে, এমনি এমনি যাচ্ছেনা" - আমার যখন জীবনের মধ্যকাল, তখন অনেক অফার পেয়েছিলাম বিশ্বের উন্নত একটি দেশের ইমিগ্র্যান্ট হতে। প্রগাঢ় দেশপ্রেমের কারণে তখন ফিরিয়ে দিয়েছিলাম সে অফার। এখন প্রৌঢ়ত্বে এসে মনে হয়, ভুল করেছিলাম। মেধাবী ছেলেরা চলে যাচ্ছে, মোটেই বাধা দিচ্ছিনা।
একটা দেশকে কেউ একা সুন্দর করতে পারেনা - ব্যক্তিকে নিয়ে সমষ্টি, সমষ্টিকে নিয়ে জাতি।
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৫০
সারিয়া তাসনিম বলেছেন: একাই বা আমি / আমরা নিজেদের দ্বায়িত্বটুকু কতটা পালন করছি ?
পার্থক্যটা এখানেই । এই দেশে একটা ছোট্ট শিশুর মধ্যে এই বোধটা ইন্সটিল করে দেওয়া হয় যে, দেশটা তার, আশেপাশের সবকিছু দেখে শুনে রাখার দ্বায়িত্বটাও তার। আমার ৭ বছরের ছেলে জানে কোন ময়লা টা কোথায় ফেলতে হয়, রাস্তায় বা পার্কে খেলা করার সময় যেখানে - সেখানে ময়লা ফেললে কেউ কিচ্ছু হয়তো বলবে না, কিন্তু দ্বায়িত্ববোধ থেকেই ময়লাটা ঠিক অনেক খানি হেঁটে গিয়ে বিন-এ ফেলে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ৯:৫৪
রক্তিম ভালবাসা বলেছেন: প্রিয় লেখিকা , আমিও দেশের বাহিরে গিয়েছিলাম পড়ালেখার জন্য, কিন্তু কখনো চিন্তা করিনি পরের দেশে থাকবো, যায় হোক আপনি যখন মেধা পাচারের কথা বললেন, তো আপনি কেন গেলেন??? দেশেই নিজেই কিছু একটা করতেন।