নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন সুন্দর, তার চেয়ে সুন্দর বেঁচে থাকা

সারিয়া তাসনিম

জীবন সুন্দর , তার চেয়ে সুন্দর বেঁচে থাকা

সারিয়া তাসনিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

উন্নয়নের অংক

২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ৮:৩০

যে উন্নয়নের সাথে আমি নিজেকে রিলেট করতে পারিনা, সেই উন্নয়ন আমার বোধগম্য হয় না। আমি সাদামাটা মানুষ, তাই হয়তো সব পরিস্থিতি নিজেকে দিয়েই বিচার-বিশ্লেষণ করি। এই যেমন ধরুন, কোথাও শিশু ধর্ষণের খবর দেখলেই আগে নিজের মেয়ের মুখটা চিন্তা করি। আবার বাতাবি লেবুর ফলনে যখন দেশ ভেসে যায়, তখন চেক করি আমার ঘরে কয়টা বাতাবি লেবু আছে। যাই হোক, যেহেতু এখন আমি প্রবাসি, তাই যে কোন তুলনামূলক বিচার বিবেচনা করি একটু ভার্চুয়ালি। এই যেমন, যখন দেখি বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নিত হয়েছে, বিশ্বের অন্যতম দ্রুতগতির অর্থনৈতিক উন্নয়নশীল দেশ এবং দারিদ্র্য বিমোচনে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে ইত্যাদি, তখন আপন রান্নাঘরে ডিম ভাজতে, ভাজতে চিন্তা করি আম্মা সেদিন বললো ডিমের হালি নাকি ৯০ টাকা ! এখানে আমি ডিমের ডজন কিনি ২৪০ টাকা। ২৪০ টাকা ডজন ডিম আমাদের একেবারেই গায়ে লাগে না। অনায়াসেই সকাল বেলা ৫-৬ টা ডিম একসাথে নিয়ে মজা করে ভেজে সবাই নাস্তাটা সেরে ফেলি। গুরুর মাংস তো অনেকের জন্যই প্রতিদিনের মেন্যু, খরচ পরে বাংলা টাকায় ৪২০ টাকা কেজি, তাও মোটেই গায়ে লাগে না আমাদের সাধারন মধ্যবিত্ত জীবনে।

তারপর অংক করতে বসি। আমরা দু'জনে বাংলা টাকায় মাসে প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা আয় করি এবং এখানে আমরা অতি সাধারন মধ্যবিত্ত জীবন যাপন করি। মাস শেষে সব বিল, মর্টগেজ ইত্যাদি দিয়ে হাত শূণ্য, তারপরেও রাতে ঘুমটা হয় ভালো। বাংলাদেশের একটা সাধারন মধ্যবিত্ত দম্পত্তি কত আয় করে মাসে? কিংবা যে পরিবারে একজন আয় করে? একটা ঘরে যদি অন্তত চারজন সদস্য থাকে তারা কি একটা করে ডিম প্রতিদিন এফর্ড করতে পারে ? ঠিক কয়টা মধ্যবিত্ত পরিবার মাসে বা বছরে কয়দিন গরুর মাংস কিনে খেতে পারে ? অংক করতে, করতে মাথা কেমন করে, আমি আবার আমার নিজের রান্নায় মনোযোগ দেই। খেতে বসে ভাবি দেশে আমার ভাইয়ের দুইটা মেয়ে আছে ছোট, ছোট - ওরা কি প্রতিদিন একটা ডিম খেতে পায়? ওরা তো গুরুর মাংস খুব ভালোবাসে। সপ্তাহে বা মাসে একটু গুরুর মাংস কি ওরা খেতে পায়? আমার আর খাওয়া হয়না। অংকে গন্ডগোল হয়ে যায়। যে দেশে লক্ষ, লক্ষ মানুষ এখনও টিপসই দিয়েই নিজেদের সিদ্ধান্ত জানায়, তারা সূচক দিয়ে উন্নয়ন বোঝে না, তারা বোঝে ভাতের পাতে কি পরলো ?

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:০৮

করুণাধারা বলেছেন: পোষ্টের বিষয়বস্তু ভালই লাগলো। ভেবেছিলাম এর উপরে আলোচনা মূলক মন্তব্য করবো। কিন্তু আপনার ব্লগে দেখলাম, আপনি মন্তব্যের উত্তর দেন না। গত কয়েকটি পোস্টে মন্তব্য, প্রতিমন্তব্য এরকম: (২,০), (৪,৩), (৬,১), (৭,১)....

আপনি খুবই ব্যস্ত মানুষ বলে মনে হচ্ছে। তাই মন্তব্য করে আপনাকে আর প্রতিমন্তব্য করার ঝামেলায় না ফেলাই ভালো।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:৪৮

সারিয়া তাসনিম বলেছেন: আপনি ঠিক ভেবেছেন, দৈনন্দিন ব্যস্ততায় হয়তো উত্তরটা খুব জলদি দিতে পারবো না। তবুও আলোচনামূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনুরোধ জানাচ্ছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে 'আলোচনামূলক মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য' তো হয়না বললেই চলে। বেশিরভাগ সময়-ই মন্তব্যগুলো হয় আক্রমনাত্মক অথবা অপ্রাসঙ্গিক, রাজনীতি বা ধর্ম নিয়ে টানাটানি। তাই চেষ্টা করি এড়িয়ে চলতে, কারণ আমি ভিতুদের দলে আর তর্ক খুব ভয় পাই।

উন্নয়ন তো অবশ্যই হয়েছে। এই যে আমি হাজার মাইল দূরে বসে আপনাদের সাথে বাংলায় কথা বলছি, এটাও উন্নয়ন। তবে বিষয়টা নির্ভর করে সার্বিক উন্নয়ন কতটা সার্বজনিন এবং এটা সাধারনের জীবন যাপন কতটা পরিবর্তন করেছে, ভবিষ্যত প্রজন্মকে কতটা নিরাপদ করেছে এইরকম আরো অনেক এসপেক্ট এর উপর। যারা বলছে উন্নয়ন হয়েছে তারা ভুল নয়, আবার যারা বলছে হয়নি তারাও খুব সঠিক নয়। বিষয়টা জটিল। আমি শুধু আমার অনুভূতিটুকু লিখি, তাও আবার ভয়ে, ভয়ে।

অপেক্ষায় রইলাম। ভালো থাকবেন।

২| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি মানুন আর না মানুন দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে।

আমাদের এখানে ডিমের হালি ১২০ টাকা। মানুষ এখন প্রচুর ডিম খায়। ভারতের চেয়ে আমাদের দেশের লোকজন বেশি ডিম খায়।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:৩৭

সারিয়া তাসনিম বলেছেন: হাহাহা, ভালোই বলেছেন, ভালো লাগলো। বলিনি তো উন্নয়ন হচ্ছে না, হচ্ছে তো :)
ভালো থাকবেন।

৩| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১২

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনার ভাবনা ঠিক আছে, বাংলাদেশে যারা বলছে যে, দেশের উন্নয়ন হয়েছে, তারা নিজেরাই অদক্ষ

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:৪২

সারিয়া তাসনিম বলেছেন: উন্নয়ন তো অবশ্যই হয়েছে। এই যে আমি হাজার মাইল দূরে বসে আপনাদের সাথে বাংলায় কথা বলছি, এটাও উন্নয়ন। তবে বিষয়টা নির্ভর করে সার্বিক উন্নয়ন কতটা সার্বজনিন এবং এটা সাধারনের জীবন যাপন কতটা পরিবর্তন করেছে, ভবিষ্যত প্রজন্মকে কতটা নিরাপদ করেছে এইরকম আরো অনেক এসপেক্ট এর উপর। যারা বলছে উন্নয়ন হয়েছে তারা ভুল নয়, আবার যারা বলছে হয়নি তারাও খুব সঠিক নয়। বিষয়টা জটিল। আমি শুধু আমার অনুভূতিটুকু লিখি, তাও আবার ভয়ে, ভয়ে।

৪| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:০৪

বিজন রয় বলেছেন: উন্নয়ন কি হচ্ছে তা তো দেখতেই পাচ্ছি।

তবে কোন সুফল পাচ্ছি না।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৪:২০

সারিয়া তাসনিম বলেছেন: 'সুফল' তো আসলে এক, একজনের কাছে এক, একরকম। তবে 'উন্নয়ন' এর সাথে 'সার্বিক সুফল'এর একটা বিরাট সম্পর্ক রয়েছে। যতক্ষন 'সার্বিক সুফল' নিশ্চিত না হচ্ছে, ততক্ষন 'উন্নয়ন' কেবলমাত্র কিছু মানুষকে 'সুফল' দিবে।

ভালো থাকবেন।

৫| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:১৬

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: আপনার পোস্টটি পড়ে মনে হল মননে আপনি একজন উচ্ছ মর্গীয় মানুষ। আপনি যে চিন্তাটা করেছেন সে যেনো সার্বিক মানুষের অবস্থার উপর, এমনটা করে কয়জন।

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:১৪

সারিয়া তাসনিম বলেছেন: আমি খুব সাধারন একজন মানুষ। তাইতো আমার চিন্তা দৈনিক ডিম খাওযার মধ্যে সীমাবদ্ধ :)

৬| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৫২

খায়রুল আহসান বলেছেন: একেবারে শেষের কথাটি মোক্ষম।
উন্নয়ন হয়তো হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তাতে কার বা ক'জনার কপাল খুলছে, সেটাই দেখার বিষয়। বিত্তহীন ও নিম্নমধ্যবিত্তের ভাতের পাতে তো মাছ জুটছেনা, জুটলেও টুকরোটা দিনে দিনে ছোট হয়ে আসছে। সেক্ষেত্রে গরুর মাংসের প্রশ্নটা অবান্তর।

৭| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:৩১

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: বাংলাদেশ নিয়ে অংক কষতে গেলে কখনোই হিসাব মিলবে না, বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ম্যাথমেটিশিয়ানও পারবে বলে মনে হয় না ! বাংলাদেশে সম্পদের বন্টন এতই ধোঁয়াটে যে, যতই উন্নয়নের মহাসড়কে দ্রুত গতিতে চলুক না কেন, সাধারণ পাবলিকের নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা থেকে উত্তরণের কোনো উপায় আছে বলে মনে হয় না। উন্নয়নের সিংহভাগই চলে যায় আমলা-রাজনীতিবিদদের পাতে - আর সেখান থেকে মালয়েশিয়া বা কানাডার বেগমপাড়ার বিবি সাহেবদের ভ্যানিটি ব্যাগে। এই ভাগ্যবান গোষ্ঠী দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে তথাকথিত উন্নয়নের সুবিধা ভোগে ব্যস্ত।

৮| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৫০

মহিউদ্দিন হায়দার বলেছেন: বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে উন্নয়ন শব্দটার সংজ্ঞা আপনি অন্য কোন দেশের উন্নয়নের সংজ্ঞার সাথে মিলাতে পারবেন না। এখানে নিজের পকেট ভাড়ী থাকা মানে অন্যের পকেটও ভাড়ী।, যেটা উন্নয়ন অগ্রগতি হচ্ছে সেখানে জনগণ নিজেদের কে ঠিকিয়ে রাখার জন্য নিজেরা উদ্যোগ নিয়েছে। হয়তো কেউ বলবে সরকারের সহযোগীতা আছে। পৃথিবীর বিভিন্ন গবেষণা পত্রে মাঝেমধ্যে উঠে আসে উন্নয়নে সুচকে ইন্টারনেট গতিতে বিশ্ববিদ্যালয় রাংকিংয়ে আমাদের উন্নয়নের মহাসড়ক কতটা ভংগুর। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.