![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"চলো বদলে যাই"
স্থান: আঁখির বাসা।
কাল:
দড়জা নক করার শব্দে উঠে খুলে দেয়।
আঁখি: তোমরা এসছো? বস। আরো দুজন হলে ভালো হত। একটা বেজ করে পড়লে পড়া খুব দ্রুত শেষ করা যায়। ছন্দবদ্ধ কাজ আগায় বেশি। এক্ষেত্রে গ্র“প বা টিম মারাতœক ভাবে সফলতা পেতে পারে।
ষ্টুডেন্ট: আমরা আপনাকে মিছ বলবো না আপু?
আঁখি: যেটা খুশি বলতে পারো তবে আপু বললেই ভালোলাগবে বুঝছো? দেখি তোমাদের সিলেবাস।
স্থান: রাস্তায়-কুয়াশাঢাকা ভোরবেলা।
কাল: এক সপ্তাহ পর।
(গাফফার পত্রিকাগুরি ক্লাসিফিকেশন শুরু করে। কোথায় কয়টা যাবে। মাটিতে বসেই কাজটা করতে ভাল হয়। হালকা ফুরফুরে বাতাসে সে আপন মনে পত্রিকা বিলি করে যায় কখনো রেষ্টুরেন্টে কখনো অপিস, কখনো হোটেল, কখনো হাউজ কিংবা সরকারি ভবনে, কখনো একট কখনো পাচটা। এক সময় ওর হাতে দুইটা পত্রিকা অবশিষ্ট থাকে। সে ঝাঝালো কন্ঠে গান গায রানার ছুটেছে তাই ঝুম ঝুম ঘন্টা বাজছে রাতে..রানার ছুঁটেছে খবড়ের বোঝা হাতে..রানার রানার ছুটেছে রানার।)
স্থান: বৃষ্টি ও আসলাম।
কাল: মোবাইলে।
বৃষ্টি: এই আমার একটা মাইক্রো লাগবে যে..।
আসলাম: মাইক্রো লাগবে কোথায় যাবা?
বৃষ্টি: বিয়ে বাড়িতে যাবো। আমার এক ফ্রেন্ডের বিয়ে।
আসলাম: কে কে যাবা?
বৃষ্টি: আমরা তিন দোস্ত একসাথে যাবো। ব্যাবস্থা করে দাওনা প্লিজ।
আসলাম: আমি স্বপনকে পাঠিয়ে দিচ্ছি। আমাকে যেতে বলবেনা।
বৃষ্টি: না।
স্থান: বিয়ে বাড়ি।
কাল: সন্ধ্যা।
(তিন বান্ধবী লাল কালো সাদা শাড়ী পরে খুব সেজেগুঁজে বিয়ে বাড়িতে এস উপস্থিত। বিয়ে বাড়ি বলতে কাকরাইলে একটা চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট। সন্ধ্যা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। কত পরিচিত বন্ধু বান্দব! মিডিয়ার অনেক অভিনেতা অভিনেত্রির মুখও দেখা পাওয়া গেলো, যাদের কিনা প্রায় সময়ই টিভি চ্যেনেলগুলোতে দেখা যায়।
ওরা তিনজন একপাসে বসে ওদের ব্যাক্তিগত সমস্যা নিয়ে আলোচনা করছে।)
আঁখি: আমার বিরক্ত লাগছে।
প্রশ্ন: আমার ভালোই লাগছে।
বৃষ্টি: ভালো কথা তোদের দু’জনের জন্য দুটো ঘড়ি এনেছিরাম।
প্রশ্ন: কই দেখি দেখি।
(বৃষ্টি ব্যেগ থেকে খুলে বের করে দেয়।)
বৃষ্টি: এই নে এখানে ৭০০০-টাকা আছে। ফেরত দিবি কবে?
আঁখি: তোরা বড়লোক মানুষ তোদের আবার ফেরত দিতে হবে?
বৃষ্টি: এটা কোন কথা না, লোন নিচ্ছিস, লাভতো দিচ্ছিস না।
আঁখি: কিপ্টুস! বড়লোকরা কিপ্টুস হয় জনতাম কিন্তু..
প্রশ্ন: কিপ্টস না হলে বড়লোক হওয়া যায়না। এই তুই আমার হাতের কাজের কি করলি? কদ্দুর হলো কিচ্ছুইতো জানালিনা ফোনও করলিনা।
আঁখি: ৮০% কম্পিট। কাল পড়শু হয়ে যাবে নিয়ে যাস।
প্রশ্ন: তোর বাসায় গিয়ে আনতে হবে?
আঁখি: কেন দরিদ্র মানুষের বাসায় বুঝি ধনিদের যাওয়া নিশেষ!
বৃষ্টি: আমি প্রেমে পরেছি তোরা কেউ জানিস?
(ওরা দু’জন একসাথে অবাক কন্ঠে জিজ্ঞেস করে)
-ঃ- কি!?!
বৃষ্টি: ছবি দেখবি? এই যে দেখ, কেমন?
আঁখি: ডুবে ডুবে জর খাচ্ছিস..আর আমরা জানিনা।
প্রশ্ন: লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম কচ্ছিস অথচ আমরা জানিনা, ডাইনী কোথাকার!!
আঁখি: দেখি, দেখি, আমাদের বরেনি আমরা যদি আবার ভাগ বসাই, ইআল্লাহ এত রাজকুমরার মত দেখতে ।
বৃষ্টি: কি বল্লি চুন্নি? দে ছবি দে..ঐ দেখ দেখ ঐটা কে?
(আঁখি তাকিয়ে দেখে বিপাশা হায়াত আফছানা মিমি সমি কায়সার একসাথে দাঁড়িয়ে হেসে ঢুলে ঢুলে পরছে। এর মধ্যে বৃষ্টি ছো মেরে আঁখির হাত থেকে ছবিটা কেড়ে বেগে ঢুকিয়ে ফেলে বলে-)
বৃষ্টি: বিয়ের পর দেখিস।
আঁখি: ওমা! তলে তলে এত দূর?
বৃষ্টি: এই, তোরা একটু বোস,স্বপনকে একটু খাওয়ার ব্যাবস্থা করে দিয়ে আসি।
প্রশ্ন: স্বপনটা আবার কে?
আঁখি: ঐ ড্রাইভার ছেলেটা।
বৃষ্টি: হু। খুবই অমায়িক একটা লোক।
প্রশ্ন: তার মানে, তোর হবু বরই গাড়িটা পাঠিয়েছে?
আঁখি: কি ভাবে বুঝলি?
প্রশ্ন: আন্দাজ করে।
আঁখি: তার মানে বিয়ের আগে থেকেই কেয়ার টেক করা শুরু হয়ে গেছে?
বৃষ্টি: এই তোরা থামবি? একটু চুপ কর।
স্থান: রিতুল এর বাসা।
কাল: বিকেলবেলা।
(মিজান ও গাফফার কতগুলি ম্যেগাজিন আর ফুলের গোছা নিয়ে গ্যেটের ভেতরে ঢোকে। ঢুকেই ওদের নজরে পরে রিতুল সাহেব বাগানে পানি দিচ্ছে। গাফফার সিকিউরিটির হাতে একটা মেগাজিন ধরিয়ে সেদিকে এগিয়ে যায়। রিতুল সাহেব বিন্দুমাত্র অবাক না হয়ে তাদের দিকে তাকিয়ে আবার বাগান পরিচর্যার কাজে হাত দেয়।)
গাফফার: ভাইয়া কেমন আছেন?
রিতুল: তুমি কেমন আছে গাফফার? ইনিই কি তোমার রিলেটেড?
মিজান: জ্বি স্লামুআলাইকুম। আপনার কথা অনেক শুনেছি ওনার কাছে। কি বলে যে আপনাকে ধন্যবাদ জানাবো? আসলে ঢাকা শহড়ে বাড়ি খুঁজে পাওয়া যে এত ঝামেলার আগে জানলে আমি ঢাকা সেটেল হতে আসতাম না, একবারে বিদেশেই চলে যেতাম।
রিতুল: তাই?
(রিতুল হেসে ওঠে বসতে বলে। সিকিউরিটিকে দুইটা চ্যেয়ার নিয়ে আসতে বলে। গাফফার দ্রুত বাধা দিয়ে বলে না থাক না থাক, আমিই নিয়ে আসি। রিতুল ধমকের সুরে হাত ইসারা করে বলে)
রিতুল: তুমি দাঁড়াও ওই দিয়ে যাবে।
রিতুল: কোন ঝামেলা হয়নিতো ওখানে।
গাফফার: না তেমন কোন ঝামেলা হয়নি । ভাইয়া পাসের ফ্লাটটাও কি আপনার?
রিতুল: হু, কেন?
গাফফার: না মানে এমনিই জানার জন্য।
রিতুল: নিজের মনে করে থাকো আর বেশিবেশি করে কাজ করো, পরিশ্রম কর যেন এরকম একটা ফ্লাট কিংবা জায়গা কিনে বাড়ি করতে পারো। এবং তা অবশ্যই সৎ ভাবে। আমাদের দেশে বড়লোক মানে ধনীদের প্রতি অন্যদের একটা প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা কি জানেন-“অনেকেই মনে করে যে ধনীরা সবাই বুঝি প্রতারক, জালিয়াত নয়ত স্মাগলার”এক কথায় অসৎ। কিন্তু আসলেই কি তাই ? অবশ্যই না। ধনীরা প্রচুর পরিশ্রমি আর মিতব্যায়ী। ওরা ক্ষিদে লাগলেও অনেক সময় কষ্ট করে খায়, টাকা আছে কিন্তু হেঁটে যাবে, ভাব দেখিয়ে চরাফেরা করে না, সিম্পল থাকার চেষ্টা করে।
মিজান: সম্ভবত আপনি ঠিকই বলেছেন।
রিতুল: সম্ভবত না আমি যেটা বলেছি সেটাই ঠিক।
(সিকিউরিটি এস দুইটা চ্যেয়ার দিয়ে যায়। গাফফার একটু এগিয়ে ফুলের তোরটা রিতুল এর হাতে তুলে দেয়। রিতুল গাফফারকে ধন্যবাদ দিয়ে মোটা লেন্সের চসমাটা খুলে রাখে।)
স্থান: রাস্তায়।
কাল:
(মিজান রিক্রাআলাকে জিজ্ঞেস করে)
মিজান: এই জসিমউদ্দিন যাবা?
রিক্রাআলা: ওঠেন স্যার, ১২-টাকা দিবেন।
মিজান: ১০-টাকা ভাড়া ১২-টাকা চাচ্ছ কেন?
(মিজান রিক্রায় উঠে পরে। এসে নামে একটা বিশাল বিল্লিং এর নিচে। এখানে গার্মেন্টস মার্চেন্ডাইজিং এর উপর একটা কোর্স করবে সে। রিসিপসনে এস এক ফি মেইল রিসিপসনিষ্ট এর সাথে কথাটা বলে ফর্ম টর্ম পূরন করে টাকা জমা দিয়ে দেয় । সপ্তায় তিনটা ক্লাস করতে হবে এখানে তাকে।)
স্থান: আঁখির বাসা।
কাল:
(আঁখির ছাত্র একজন বেরেছে। মোট দুজন ছাত্রি একজন ছাত্র, মোট তিনজন। আখি লেপটপে একটা সফটওয়্যার ডাউনলোড করতে দিয়ে ওদের সামনে এসে বসে।)
আঁখি: এই তোমাদের যে বলেছিলাম টেষ্ট প্যেপার আনতে এনেছো ?
ষ্টুডেন্ট: হ্যা, আপু।
আঁখি: তোমাদের খুব বেশি কষ্ট করতে হবেনা। আমি যেভাবে বলবো সেভাবে যদি ষ্টাডি কর তাহলে দেখবে অল্প পরিশ্রমে অধিক সাফল্য আসবে। প্রথমে প্রশ্নপত্র একবার পড়ে নিতে হয়। এত যে সময় নষ্ট হবে তা আসলে কাজে লাগবে। এরপর যেগুলি ভালো পারবে সেগুলি উত্তর আগে দেবে কারণ যে খাতাটা দেখে সে যদি দেখে যে প্রথম তিন চারটা প্রশ্নের উত্তর নিখুঁত মানে উন্নত হয়েছে তখন তার ভেতরে একটা ধারণা জ্মায় যে তুমি পড়াশোনা করেছো এক্রাম দেয়ার জন্য। এই পজিটিভ ধারণাই পরবর্তিতে থাকে ভালো নাম্বার পাওয়ার কিংবা পাস মার্ক কেরি করার সহায়তা করে বা করবে, বুঝতে পারছো সবাই। আর কোশ্চেন কমন। কিভাবে পেতে হয় সেটা আজ আমি তোমাদের ধরিয়ে দিচ্ছি ইচ্ছে করলে তোমরা এ পদ্ধতি এসএসসির পরেও এপ্লাই করতে পারবে। দিছ ইজ মাই অওন ক্রিয়েটিভ সিস্টেম।
স্থান: কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার।
কাল:
মিজান হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার শেখার জন্য একটি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার এ এডমিসন নেয়। সপ্তায় চার দিন। আসার সময় একটা পেইন ড্রাইভ কিনে নিয়ে আসে।
স্থান : আঁখিদের বাসা।
কাল:
আঁখি দড়জা খুলে দেয়। দুইজন লোক এসে সাতটা বক্র কার্টুন বুঝিয়ে দিয়ে যায়। আঁখির ছোট ভাই এসে জিজ্ঞেস করে)
ঃ এগুলি কি আপু?
(আঁখি উত্তর দেয়)
আঁখি: এসিয়ান আইটি কম্পানী। ওদের প্রডাক্ট হচ্ছে সব নিত্য দৈনন্দিন ব্যবহারের প্রডাক্ট। যেমন বডি ¯েপ্র, লোসন,সাবান, হার্বল ক্রিম, অল কাইন্ড অফ কসমেটিকস্ ইত্যাদী জাতীয় পন্য। উৎপাদন থেকে সরাসরি ভোক্তা পর্যন্ত পৌছে দেয়াই এ ব্যবসার আসল প্রফিট এন্ড পলিসি। এত করে মধ্যস্ততাকারী যেমন দোকানদার, ডিস্টিবুটার বা দালালেরা পন্যের দাম বাড়াতে পারেনা ভেজালও করতে পারেনা, এগুলি খুলবিনা, দুজনে ধরে ঘড়ে ঢোকা।
স্থান :
কাল : ফোনে।
প্রশ্ন : হ্যালো পূর্বাশার আলো প্রকাশনি ?
ঃ-হ্যা বলন কে বলছেন ?
প্রশ্ন : জ্বি আমি একটা নোভেল পাবলিস করতে চাচ্ছিলাম।
ঃ-হ্যা, সেটা সম্ভব। আপনার মেইল এডড্রেস থাকলে এসএম এস কওে দিন এই নাম্বারে। বিস্তারিত সব তথ্য সেখানেই পেয়ে যাবেন। পছন্দ মত ফ্রম পূরন কওে পাঠিয়ে দিন আমাদেও ওয়েব সাইটে।
প্রশ্ন : আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে।
ঃ-ধন্যবাদ।
প্রশ্ন : আপনাকেও ধন্যবাদ।
স্থান: বারান্দা-বেলকনি।
কাল : ফোনে।
(বৃষ্টি এক তুতিয়াংশ জোৎস্না দেখছে। আকাশ পরিষ্কার। নীল জোছনায় তারাগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।)
আসলাম: জানো তোমাকে মাঝে মাঝে খুব কাছে পেতে ইচ্ছে করে।
বৃস্টি: তাই, এটাই স্বাভাবিক। নারীর প্রতি পুরষের এই আকর্ষণ জন্মমাত্র সেটা জানো?
আসলাম: তুমি আমার সাষর ঘড়ে কবে আসবে? আমার অপেক্ষা করতে একদম অসহ্য রাগে।
বৃষ্টি: সবুরের ফল মিঠা হয়।
আসলাম: মুখের কথায় চিড়া ভেজেনা।
বৃষ্টি: কবিতা শোনো মন ভালো হয়ে যাবে..
(সে রাতে আমার ঘড়ে এক ঝাক উৎফুল্ল জোনাকি বললো এস একটি কবিতা দিতে এসেছি তোমাকে। অন্তর্হিত জোনাকির পরে একটি বাদড় খুব আনন্দে ঘনিষ্ঠ হয়ে কড়ি কাঠে জানালো সন্সেহে একটি কবিতা দিতে এসেছি তোমাকে। অনন্তর একজন মহিলার মুখ জানালায় ফুটে ওঠে। নীলিমা নিমগ্ন সুর তার ভাসে, যেন সমুদ্রের ফেনাময়ের একটি কবিতা দিতে এসেছি তোমাকে। সেই স্বর ডুবে গেলে কতিপয় প্রাচিন কংকাল কবরের মাটি ফুড়ে, ঘড়ের দেয়াল ফুড়ে এসে বললো আরো একটি কবিতা দিতে এসেছি তোমাকে। অথচ শব্দের দূত ওড়ায়নি তখনো নিশান, তখনো অদৃশ্য ওরা প্রেতলোকে, জবিম্নের মতো স্তব্ধ, আমি পড়ে থাকি এক কোণে, ব্যার্থ অসহায়।)
{কবিতা শেষে বৃষ্টির চোখের কোণায় এক ফোটা অশ্র“ এসে জমা হয়। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে শব্দ আসে}
আসলাম: বাহ্! দারুন কণ্ঠ তোমার!
স্থান :
কাল :
(মিজান ক্লাসে যায়। ক্লাস থেকে ফেরার পথে একটা নাটকের ডিভিডি আর দুইটা পাঁচ কেজি ওজনের বারবেল কিনে নিয়ে বাসায় ফিরে আসে।
বাসায় এসে ওরা সাবাই একসাথে ড্রইংরুমে বসে নাটক দেখে।)
স্থান :
কাল :
(রিতুল ওর গ্যেরেজে পরে থাকা গাড়িটা নিজেই পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ধোয়। মিস্ত্রি ডেকে ব্যেটারী, হর্ন, ব্রেক, টায়ার এগুলি ঠিক করায়। এরপর ঘড়ের জিনিসপত্র কিছু উল্টাপাল্টা করে নতুন করে গোছায়। কিছু পুরান কাপড় চোপড় বের করে সিকিউরিটি, মিস্ত্রি এদের দিয়ে দেয়।
এরপর গাফফারকে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে বলে দেয়)
রিতুল : কিছু ফুলের চারা নিয়ে এসোতো আমি টাকা দিয়ে দেব।
(গাফফার অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই ফুলের চারা ভেনগাড়ি েিদয নিযে এস হাজির হয়। রিতুল অবাক হয়ে বলে।)
রিতুল: তোমাকে এতাতাড়াতাড়ি এক্ষুনি কে আনতে বললো? আমি বলেছি সময় করে কাল বা পড়শু আচ্ছা আচ্ছা এসো ভেতরে এসো। নিয়ে যখন এসেই পরেছো আমার সাথে হাত লাগাও। আর যাবার সময় অবশ্যই মনে করে আমার কাছ থেকে খড়চের টাকাটা নিয়ে যাবে।
গাফফার: কিযে বলেন ভাইয়া।
(রিতুল চশমা খুলে রাগান্নিত ভঙ্গিতে তাকিয়ে সিকিউরিটিকে ডেকে বলে এই ওকে আর গ্যেটের ভেতর ঢুকতে দিবানা। তোমাকে আমি কতটা পছন্দ করি সে টা তুমি বোঝনা?
স্থান: কম্পিউটার সো রুম।
(আসলাম গাফফারকে নিয়ে গিয়ে কম্পিউটার কিনে নিয়ে সিএনজি তে করে চলে আসে।)
স্থান:
কাল :
(বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে। প্রশ্ন প্রচু অস্থিরতায় ঘড়ের এপাস ওপাস পায়চারি করছে। বিভিন্ন বই ঘটছে, ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে। বিভিন্ন ক্যাসেট এর নাম খুঁজছে কাভার খুলে মেঝেতে ফেলে দিচ্ছে।)
স্থান: রিতুল এর বাসা।
কাল :
রিতুল গভির ধ্যানে মগ্ন হয়। ৪৫-মিনিটের ধ্যান শেষ। গোসল শেষে বেক ব্রাষ করে গাড়িটা নিয়ে বাইরে বেরিয়ে পরে। পুরাতন লেন্স আর চশমা চেঞ্জ করে নতুন ফ্রেমের চশমা আর কণ্টাক লেন্স নিয়ে বাসায় ফিরে আসে।
স্থান:
কাল :
আঁখি ওর ষ্টুডেন্টদের কার্টুনগুলো দিয়ে দেয়। ওর ষ্টুডেন্ট সংখ্যা বেড়ে এখন ৮-জন হয়েছে। আখি প্রশ্নের লেপটপটা ফেরত দিয়ে আসার পথে নিজেই একটা সিপিইউ অর্ডার দিয়ে আসে।
এক সময় কোম্পানীর দুইজন লোক এস কম্পিউটার সিপিউটা বাসায় সেট করে দিয়ে যায় ।
স্থান: গাফফারের বাসা।
কাল:
আসলাম: আমি বাড়িতে যাব। তোরা ঠিকঠাকমত থাকিস।
শাপলা: মারে নিয়া আসবেন ভাইজান?
আসলাম: হু। আরো কিছু কাজ আছে। আমার ষ্টুডেন্টগুলো একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। দুই ঘন্টার জন্য হলেও ঐখানে উপস্থিত থাকতে হইবো। টাকা পয়সা লেনদেনেরও কিছু কাজ আছে। আগিমিকাল রাত্রেই চলে আসবো।
স্থান:
কাল:
আসলাম ওর গ্রামের বাড়িতে একটা শিক্ষামূলক বিতর্ক প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানের সহ সভাপতি হিসেবে ভাষন দেবার জন্য ষ্টেজে ওঠে বক্তৃতা শুরু করে।
মিজান: যুদ্ধ বিধস্ত বাংলা মা আমাদের। এদেশের মানুষ ১৪১৭ বছড় ধরে বাংলী হিসেবে পরিচিত। আর ৪০-বছড় হল দেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু এখনো আমাদের দেশের জনশক্তির সঠিক ব্যবহার আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। আমাদের এখন ভূতের মতোন খাটতে হবে। বর্তমান প্রতিযোগিতা মূলক বিশ্বে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ন যেটা সেটা হল “যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলা”। যেখানে যেই বাও সেইখানে ঐ ভাবে নাও বাউ। বর্তমান বিশ্ব বিশ্বের মানুষ এর মধ্যে তারাই সবচেয়ে উন্নত যারা কিনা ইংরেজী ভাষায় লিখতে বলতে ও পড়তে পারে আর যারা কম্পিউটার টেকনোলজীতে পারদর্শি। একটার সাথে আরেকটা উৎপ্রেতভাবে জড়িত যেমন মুদ্রার এ পিঠ আর ও পিঠ। সুতরাং আমি বলব আপনারা প্রত্যেকেই নিজেকে সেল্প হেল্প করুন। নিজেরা নিজেদেও ভাগ্র উন্নয়নের জন্য এই আইটি অর্থৎ ইনফরমেশন টেকনোলজি আর জেনারেল ইংলিশ, স্পেকেন ইংলিশ, বিজনেছ ইংলিশ এগুলোর সাথে সম্পৃক্ত হোন। আপনি নিজে শিখুন এবং আপনার পরিবারের অন্যান্য সদস্য এমনকি নিকট আতিœয় স্বজন প্রতিবেশিদেরও স্বতস্ফুর্তভাবে উৎসাহিত করুন।
আমি এ গায়ের সন্তান। আমার দায়িত্ব এ গােেমর কাছে মাথা উঁচু করে গর্ব করতে পারে আমাদের এ গ্রাম। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন, আমি আপনাদের সকলের সাহায্য সহযোগিতা একান্তবাবে কামনা করছি।
স্থান:
কাল:
আঁখি ওর বাসায় ইন্টারনেট ব্রড বেন্ড কানেকসন লাগায়।
মিস্ত্রি: যে কোন হার্ডওয়ার, সফ্টওয়্যার রিপেয়ার অথবা রিপ্লেস এর জন্য আমাদের এই কণ্টাক নাম্বারে যোগাযোগ করবেন। আমরা ১৮ ঘন্টা কাষ্টমার সেবা প্রদান করে থাকি।
স্থান: লেকসিটি।
কাল:
মিজান ইন্টারনেটের জন্য মডেম ইউজ করে মেইল বক্র ওপেন করতেই যুবরাজ নামের একটা মেইল চোখে পড়লো। মেইলটা ওপেন করে দেখে এখানে কতগুলি লেডিস ড্রেছ এবং কিড্স এর কিছু ডিজাইন দেওয়া আছে ফর সেল। প্রাইছ ডিমান্ড, সাইজ, কালার, কোয়ালিটি, রেট ইত্যাদী সব ডিটেইলস দেওয়া আছে। সে এখান থেকে কিছু টিকমার্ক দিয়ে চয়েজ করে রাখে।
স্থান: প্রশ্নের ছাদে।
কাল: পড়ন্ত দুপুর।
(প্রশ্ন একা একা ছাদের ওপর পায়চারি করছিল। কাজের মেয়েটি এস চা আর মোবাইল ফোনটা দিয়ে যায়। কিছুক্ষন পায়চারির পর খেয়াল করলো পাসের ছাদ থেকে একটি ছেলে কঞ্চি দিয়ে কবুতর ওড়াচ্ছে। সে মোবাইলটা চেয়ারের উপর রেখে সে দৃশ্য দেখতে থাকে। প্রায় দুই তিন’শ কবুতর একসাথে বৃত্তিকারে ঘুড়ছে। পরন্ত রোদ্রের আলোয় দেখতে চমৎকার লাগছে। বৃষ্টি মুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে দেখে। এর মধ্যে মোবাইল ফোনটা পরপর দুইবার বেজে ওঠে। প্রশ্ন দেদিকে ভ্র“ক্ষেপ না করে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। তৃতীয়বার রিং হওয়ার পর সে এগিয়ে এসে রিসিপ করে।)
ঃ-হ্যেলো মেডাম, দু’হাজার কপি ছাপানো হয়ে গেছে। আপনি বকেয়া পরিশোধ করে ডেলিভারি নিয়ে যেতে পারেন।
প্রশ্ন: আচ্ছা আচ্ছা, শোনেন ভাইয়া আপনার কোম্পানী থেকে লোক মারফত কি বইগুলো আমার ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া সম্ভব। আমি সম্পূর্ন পেইড করে দিচ্ছি। আর ভালো কথা সিডি ড্রাইভ করে আরেকটা ডকুমেন্ট দিয়ে পাঠাচ্ছি। ডিজাইন টাইপ সব কম্পিট শুধু ইডিটিং মানে কারেকসন করে নিলেই চলবে।
(একটু থেমে।)
মেডাম এ বইটা আমি পরেছি। ফাটাফাটি লিখেছেন। প্রচ্ছদটাও সেই রকম হইছে। আনেক রকমের ম্যেসেজ সেট করেছেন। পাঠক পরে মজা পাবে।
প্রশ্ন: কিভাবে বুঝলেন? সবার কাছে ভাল নাও লাগতে পারে।
ঃ- মেডাম এ সম্পর্কে আমাদের খুব ভাল অভিজ্ঞতা আছে। আমি মালগুলো পাঠিয়ে দিচ্ছি আপনি যে যাবে ওকে এক্রটা কিছু যাতায়াত খড়চ মানে বকসিস দিয়ে দিবেন।
প্রশ্ন: অভিয়াছলি..টোটাল পেইড করে দিচ্ছি। টাকা কোন সমস্যা না, কাইন্ডলি পাঠিয়ে দিন।
স্থান :রিতুল সাহেবের বাড়ি।
কাল:
রিতুল গভীর মগ্ন। ঘড়ের মেঝেতে পদ্ম আসনে বসে সিনা টান টান করে আছেন। গাফফার এসে নিঃশব্দে একটু দূরে মেঝেতে বসে পরে। কিছুক্ষন পর রিতুল চোখ বন্ধ অবস্থায় জিজ্ঞেস করে-
রিতুল: গাফফার এসেছো?
(গাফফার ডানে বামে তাকায়, প্রথমে বুঝতে পারেনা কে কথা বলল। তারপর ইতস্তত ভঙ্গিতে বলে)
গাফফার: জ্বি জ্বি ভাইজান আমি,
(ঘড়ের মধ্যে অল্প কিছুক্ষনের জন্য আবার রিবতা নেমে আসে।
হঠাৎ রিতুল জোরে জোরে নিঃশ্বাস নেওয়া এবং ছাড়া শুরু করে। গাফফার ভ্র“ কুচকে সেদিকে মনোযোগ দিয়ে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে। এক সময় রিতুল ধীরে ধীরে চোখ খুলে সমনের দেয়ালের দিকে তাকিয়ে থাকে।)
গাফফার: ভাইজান আপনে বুঝলেন কেমনে যে আমি আইছি ?
রিতুল: দুইভাবে এক তোমার ঘামের গন্ধে, দুই তুমি ছাড়া এ ঘড়ে হঠাৎ করে কেউ আসেনা।
গাফফার: ধ্যান করলে কি লাভ অয়? আমিতো বুঝিনা ।
রিতুল: ধ্যান করে মানুষ শান্তির জন্য। শরির মন দুই ভালো রাখার জন্য, অবশ্য এর আরো অনেক শাখা প্রশাখা রয়েছে!
গাফফার: আগের দিনের সাধু সন্যাসীরা ধ্যান করতো, শুনছি হেরা নাকি অনেক ক্ষমতার অধিকারী হইতো, ধ্যান করলে কি কিছু পাওয়া যায়?
রিতুল: হু, আসলে অলৌকিক বলে কিছু নাই, সবই লৌকিক। তবে সাধারন জ্ঞ্যান দিয়ে প্রাকৃতিক কিছু নিয়মকানুন কামিয়াব করে মানুষ কিছু তত্ব সাধন করে। দিনে দিনে এই জ্ঞ্যান তার চর্চা ও পরিচর্যার মাধ্যমে বৃদ্ধি করে। শিশু বাচ্চা থেকে যেমন একজন পরিপূর্ন মানুষ হয় তেমনি। তবে ধ্যানের কিছু বৈশিষ্ট আছে সেগুলো এপ্লাই করতে জানতে হয় মানে কাজে লাগাতে হয়। যেমন: ধ্যান এর চারটি লেভেল আছে এক আলফা দুই বিটা তিন থিটা চার ডেলটা লেভেল, এখন তুমি আমি বিটা রেভেল মানে বাস্তবে আছি। দুই বিটা লেভেলে যখন তুমি যাবা তখন তোমার তন্দ্রা সম্মহন বা ঘুম ঘুম ভাব থাকবে। তিন যখন তুমি এই দুই লেভেল পার হয়ে থিটাতে যাবে তখন তুমি ঘুমালে যেমন অনুভব কর জেগে থেকেও তেমনটি অনুভব করবে। শান্তি আর শান্তি। কোন দুঃখ, কষ্ট লোভ হিংসা, তোমাকে প্রভাবিত করতে পারবেনা।
গাফফার: আর চাইর?
রিতুল: চার নাম্বার লেভেলে গেলে সৃষ্টির সাথে স্রষ্টার যে সম্পর্ক তা অনুভব করা যায়। অধ্যাতিকতার এ লেভেলে মানুষ জীবিত না মৃত কেউ ধরতে পারবেনা। বিষধোর সাপও যদি গায়ের উপর ফনা তুলে থাকে কিংবা মানুষখেকো বাঘও যদি থাবা মারতে আসে তার ইহজগত সম্পর্কে কোন অনুভুতি তকন তার কাজ করবেনা।
গাফফার: ধ্যান জিনিসটা আমি আগে ভন্ডামী মনে করতাম।
রিতুল: ধ্যানের এই রেভেলগুলোর মাধ্যমেই আজকের বিজ্ঞ্যানীরা বিভিন্ন জিনিস আবিষ্কার করতে পারছে।
গাফফার: বুঝলাম না ভাই।
রিতুল: ধরো তোমার প্রচন্ড জ্বর। তোমার কাজকর্ম সব বন্ধ । এখন কোন একজন লোক এসে তোমার মাথায় হাত দিয়ে বিরবির করে কিছু একটা মন্ত্র পাঠ করলো আর ১০-মিনিটের মধ্যে তুমি ভালো হয়ে গেলে তখন তোমার কাছে কি মনে হবে? লোকটা আসলেই কিছু জানে নয়তো যাদুকর, তাইনা?
গাফফার: জ্বি। এরকম অনেক আছে আমি শুনছি।
রিতুল: আসলে কাজ কিন্তু হয়েছে কিন্তু আসল ব্যাপারটা কি? এই যে ধরো ফোনে তুমি কথা বল এটা কি? আজ থেকে ৫০-বছড় আগে যদি চিন্তা করো তাহলে এটা একটা যাদুর যন্ত্র বরেই তোমার কাছে মনে হত। তুমি কিছুতেই বিশ্বাস করতে না যে বাতাসের তরঙ্গ ওয়েভে তোমার কাথা ভেষে পৃথীবির এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে মাত্র সেকেন্ডের মধ্যে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে। এখানে মানুষ তার উৎসাহ, কৌতুহল আর কল্পনাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে এরকম সফলতা অর্জন করেছে।
এক কাঠ মিস্ত্রি ৪০-বছড় ঘড়ে বসে কাঠের কাজ করেছে। আধুনীক বিজ্ঞ্যানের এরাপ্লেন আবিষ্কার করার প্রায় ৪০০-বছড় আগের কথা! সেই লোক কাগজে পেন্সীলে বর্তমান বিশ্বের ব্যাবহৃত প্লেন হেলিকপ্টার সাবমেরিন এগুলির ডিজাইন মানে নকসা তৈরী করে রেখে গেছিলো। যদিও তখন তার এই নকশা বা ডিজাইন কেউ মূল্যায়ন করেনি। কিন্তু এগুলি আবিষ্কার হওয়ার পর তার সেই তত্ব তথ্যের সাথে মিলিয়ে দেখা গেলো সেই ব্যাক্তি আরো ৪০০-বছড় আগে এগুলোর বাস্তব ডিজাইন তৈরী কওে রেখে গেছিলো।
গাফফার: তার মানে পৃথিবী ৪০০-বছড় পিছায়ে গেলো?
রিতুল: এ সবই সম্ভব হয়েছে ধ্যান এর মাধ্যমে। এ ধরনের মানুষ বস্তবে কাজ করছে ঠিকই কিন্তু তার ধ্যান জ্ঞ্যান মনের অন্য কোন স্তরে বা লেভেলে গিযে আধুনীক এই বিজ্ঞ্যানের মত মোবাইল টেলিফোন কম্পিউটার ইন্টারনেট গাড়ি বাড়ি অস্ত্রপাতি নভোজান রকেট সাবমেরিন পারমানবিক শক্তি এগুলো আবিষ্কার করছে। এ সবই সম্ভব হচ্ছে মানুষের মনের গোপন মহাশক্তির পরিচর্যা বা অনুশীলনের মাধ্যমে। আর এর একমাতত্র মাধ্যমই হচ্ছে ধ্যেন। সাধারনভাবে এ ধরনের ক্ষমতা সম্পন্ন মানুষকে দেখে কেউ বুঝতে পারবেনা।
গাফফার: আপনেতো অনেক কিছুই জানেন, এই যে মানুষ এত টাকা পয়সা খড়চ করে, বাড়ি গাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করেতেছে আর অন্য দিকে দেহেন মানুষ না খাইয়া কষ্ট করতাছে! কি লাভ? সবাই মায়ের পেট থাইকা হইছে, সবার ভেতরেইতো দুঃখ-কষ্ট আনন্দ বেদনা আছে। তাইলে ধনী মানুষ কেন গড়িবের হক ছিনায়ে নেয়?
রিতুল: এক কথায় সবই রসাতলে যাচ্ছে। এই পার্টিতে কতো হাজার হাজার টাকা পয়সা খড়চ হচ্ছে । অথচ রাস্তার পাসের একজন ছিন্ন বস্ত্রে অর্ধাহারে অসুকে কাতরাচ্ছে। এ সবই অন্ধকার এক গহ্বরের দিকে পতিত হচ্ছে। কারো কোন নিয়ন্ত্রন নেই এর বিরুদ্ধে। আর তুমি যদি ধনী হতে চাও বর্তমান অবস্থা থেকে সেটাও সম্ভব! কিন্তু অন্যের পেটে লাথি মেরে, অন্যের কাধে বন্দুক রেখে, অন্যের মাথায় কাঠাল ভেঙ্গে এককথায় অসততা করে বড় লোক হতে হবে এটা ভাবলে অসম্ভব। এটাই বাস্তব এটাই সত্যি।
গাফফার: মানুষ কেন পৃথিবীতে আসে? বলতে পারেন ভাইজান?
রিতুল: এ প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই। এটা জানা বড় শক্ত!
গাফফার: মানুষ কেন মরে?
রিতুল: জন্ম মৃত্যুর রহস্য মানব কর্তিক জানা এখনো অসম্ভব ব্যাপার ! এক্ষেত্রে আমরা কতোটা অসহায় তা ভাবলে মাথার চুল টেনে ছিড়ে ফেলতে ইচ্ছে করে। নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে পৃথিবীতে এসেছি আবার ইচ্ছের বিরুদ্ধে চলে যেতে হবে..“দেয়ার ইজ নো ল”। জীবাণু থেকে যার উৎপত্তি জীবাণুই যার শেষ পরিনতি! ঘায় আল্লা কি নিষ্ঠুর নিয়তি দিয়ে পাঠালে আমাদেরকে !!!???
গাফফার: আমাগো পায়ের নিচে মানে মাটির নিচেও নাকি আকাশ আছে?
রিতুল: গলাটা শুকায়ে গেছে।
গাফফার: আমি দিতেছি। ঠান্ডাপানি মিসায়ে দেই।
(গাফফার নিজের খায় এবং রিতুলকেও পানি দেয়।)
রিতুল: গ্রাভিটিসন ল বুঝো? ধরো একটা ফুডবলের ওপর দিয়ে যদি একটা পিপরা হেঁটে যায় পিপরাটা কি বুঝবে বলটা যে গোল?
গাফফার: না বুঝবেনা।
রিতুল: ঠিক এরকম আমরা যেদিকেই যাই যেদিকেই হাঁটি পৃথিবীটার চার পাসেই সমান মনে হয়। আর ফুডবলটার চার পাসেই কিন্তু খালি জায়গা অর্থাৎ ফাকা খোলা আকাশের মত।
গাফফা: কিন্তু বলটাতো মাটির উপরে বইসা আছে না? একটা জাগায়তো ঠেইকা আছে, তাইনা?
রিতুল: ভুল। নান ব্যাপারটা এরকম না। পৃথিবী আকাশের কোথাও ঠেকে নেই। পুরোটা আকাশই খালি। এই ধরো চাঁদ, চাঁদকে দেখে কি মনে হয় যে নিচে কিছু আছে। শূণ্য আকাশে ভাষছে না? ঠিক চাঁদ থেকে পৃথিবীকে দেখলে এরকম মনে হবে, শূন্যের মধ্যে ভাষছে। এজন্য পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকেই পৃথিবীকে সমান্তরাল বনে হয়। মনে হয় সব দিকেই খোলা আকাশ আসলেই তাই। পৃথীবির নিচে বা মাটির নিচে আছে খনিজ পদার্থ যেমন:-গ্যাস, পানি, কয়লা, লাভা ইত্যাদী।
গাফফার: ভাই একটা অনুরোধ করি?
রিতুল: হঠাৎ! কি অনুরোধ?
গাফফার: ভাই আপনে যেমনে আছেন তেমনেই থাকেন। জ্ঞ্যানী গুনিদের কথা। যে যেমনে আছো তেমনেই থাকো। তেমনেই মঙ্গল। আপনে আর এফডিসিতে যাইয়েন না। সব হারামখোরের দল। মদ জুয়া নষ্টামি ছাড়া ভালোকিছু নাই। সব নষ্ট হইয়া গেছে। আপনি আর নষ্ট মানুষদের ভীড়ে পাও দিয়েন না। আপনের মত বালোমানুষ পৃথিবীতে কমই আছে..আপনে বাইচ্চা থাকলে আপনের আসেপাসের মানুষগুলা বালো থাকবো সুখে থাকবো। আমি কইকি আপনে আরেকটা বিয়া করেন। সুন্দরী লাল টুকটুকা অল্প বয়সী কন্যা ঘড়ে আসলে ঘড় আলো হইবো। নিজের আবার নতুন কইরা আবিষ্কার করতে পারবেন..জীবন যে কোনো সময় যে কোন জায়গা থেইক্কা শুরু করন যায়..ছোট মুখে বড় কথা বইলা ফালাইলাম কিছু মনে কইরেন না।
(রিতুল মেঝে থেকে সোফায় উঠে বসে টিভি রিমোট হাতে নেয়। টিভি মিউট করে চ্যেনেল চেঞ্জ করতে করতে বলে)
রিতুল: আমার বোধ হয় এজীবনে আর নারী সহবাস হবে না। কি দেইনি আমি ওকে। গাড়ি বাড়ি ,ব্যাংক বেলেন্স, মান-সন্মান, সেক্রচুয়াল ডিমান্ড সব কিছুই আমি তাকে দিলাম। আমি কি পেলাম ? প্রেম ভালোবাসার জন্য নিজের অস্তিত্ব বিলিন হয়ে যাবার উপক্রম। আমার সব শেষ। বেঁচে থাকার জন্য যতটুকৃ পাবার আমি তা পেয়েগেছি। এখন আমি ভালো আছি-একা আছি।
গাফফার: আমি আপনার মুখের উপর কোন কিছু বলতে চাইনা। যেভাবে আপনি শন্তি পান, ভালো থাকেন সেভাবেই জীবন-যাপন করেন।
রিতুল: বাদ দাও এসব। তুমি আমাকে কিছু লজ্জাপতি গাছের চাড়া এনে দিতে পারবা?
গাফফার: পারবো।
(গাফফার ফিসফিস করে নিজে নিজে বলে)
গাফফার: কেন পারবো না, মানুসের কাছে অসম্ভব বলতে কিছু আছে নাকি?
(সে মাথা নিচু করে কথাগুলো বির বির করতে করতে দড়জা দিয়ে বেরিয়ে যায়।)
স্থান: লেকসিটি এলাকার নিচের রাস্তায়।
কাল:
আগুন্তুক: ভাইয়া আপনার এখানে একটু বসি?
মিজান: বসেন, বসেন।
আগুন্তুক: আপনাকে প্রায় সময় এখানে বসেত দেখি, মনে হয় গভীরভাবে কি যেন ভাবেন।
মিজান: হ্যা, এদিকটা একটু নিরিবিলি মনে হয় তাই এখানে এস প্রায়ই বসি। তা কি করেন আপনি?
আগুন্তুক: আগেতো এখানকার লিফট্ ম্যেনের চাকরি করতাম এখন ব্যাবসা করি।
মিজান: কিসের ব্যাবসা?
আগুন্তুক: সেকেন্ড হ্যেন্ড কম্পিউটার ক্রয় বিক্রয়। ভালই প্রফিট হয়। আপনার নামটা জানা হলনা।
মিজান: মিজান, আপনার?
আগুন্তুক: জয়, আপনি কি করেন পড়াশোনা?
মিজান: হ্যা, গার্মেন্টস সেক্টরে কিছু একটা করতে চাচ্ছি। মানুষ হাজার হাজার কোটি টাকা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে রেখেছে দেখি ওখান থেকে নিজের জন্য দু এক কোটি টাকা আহরন করতে পারি কিনা, তা ভালোকথা সেকেন্ড হ্যেন্ড একটা কম্পিট কম্পিউটার কতোটাকার মধ্যে আপনি বিক্রি করেন?
জয়: সবতো আর একই মানের হয়না। তবে এভারেজে তা থেকে আট হাজার টাকা পরে। কোন কোন ক্ষেত্রে আরো বেশি বিক্রি করি।
মিজান: তাহলেতো ভালোই। আপনি একসাথে ২০-টা সিপিও ওইথ মনিটর আমাকে এই দরে পাইকারি দিতে পারবেন? আমি এগুলি গ্রামের স্কুল কলেজের ষ্টুডেন্টদের হাতে পৌছে দেবো। লাভ প্লাস সুনাম দুটোই হবে।
জয়: নিঃসন্দেহে এটা একটা ভাল উদ্যোগ । কিন্তু আমাকে সময় দিতে হবে। পারবো। আমার কাজই হলো এটা। তবে সিপিইউগুলি অবশ্যই পেন্টিআম থ্রি অথবা ফোর এর মধ্যেই থাকবে।
মিজান: সেটাও চলবে। তবে রানিং থাকতে হবে। এগুলোর হার্ডওয়্যার প্রবলেম হলে সেগুলোর কাজও তো আমার কাছে আসবে তাইনা?
জয়: হ্যা, এই ক্ষেত্রে দুজন হার্ডওয়্যার মেকার আপনি নিজের আন্ডারে নিয়োগ দিতে পারেন। অবশ্য যদি প্রফেশনাল চিন্তা থাকে।
মিজান: আপনার সাথে পরিচিত হয়ে ভালোই হল। নাইছ টু মিট ইউ।
(ওরা দুজন আবার নতুন করে হ্যান্ড শেক করে সম্পর্ক উন্নয়ন করে।)
স্থান: ডাচ বাংলা ব্যাংক।
কাল :
( আঁখি ওর সাথে ওর পরিচিত ফার্মেসির কম্পাউন্ডারকে সাথে নিয়ে গিয়ে ডাচ বাংলা বেংক এ ক্রেডিট কার্ড এর জন্য একাউন্ট খোলে।
ব্যাংক থেকে বেরুবার সময় সে বৃষ্টিকে দেখতে পায় একটা প্রাইভেট কারের ভেতর। যে লোকটি ড্রাইভীং সিটে বসে আছে সে লোকটিকে সে চিনতে পারে।
এরপর দ্রুত পায়ে আঁখি রাস্তা পার হয়ে যায়।
স্থান :
কাল:
আসলাম বই এর মার্কেটে ঢুকে এক ডজন কম্পিউটার এর উপর বই কেনে। আট দশটা সফটওয়্যার এর সিডি এবং কিছু টিউটরিয়াল সিডি ক্রয় করে। দোকান থেকে বেরিয়ে সিএনজি তে ওঠে জয় এর নাম্বারে ফোন দেয়।
মিজান : হ্যালো জয় ভাই? কেমন আছেন? চিনতে পেরেছেন? আমি মিজান ।
জয় : হ্যা, হ্যা কেমন আছেন? ভালোআছেন আপনি?
মিজান : হ্যা, এইতো আছি, তা আমার জন্য কোন খবড় আছে?
জয় : হ্যা, খবড় এখনো হয়নি, প্রসেসিং চলছে। দুই একটা দিন আমি খুব বিজি আছি। কারণ চায়না থেকে কিছু রেম ইম্পোর্ট করছিতো । তো এখানে একটু ঝামেলায় আছি।
মিজান: টাকা পয়সা লাগলে আমাকে বলবেন।
জয়: ওটাতো লাগবেই তবে এখন না। আমার হাতে বর্তমানে ১১-টি সিপিইউ আছে আর আটটি মনিটর। তো আমি লোক লাগিয়ে রেখেছি..এদিক ওদিক থেকে টেনে ওরা আগামি সপ্তায় মিলিয়ে ফেলবে জানিয়েছে। একটা সাইবার ক্যেফে বিক্রি হবে। তো আপনি ৮০% সিউর থাকতে পারেন। আর ভাইয়া মালগুলি অবশ্যই আপনি যেমন চ্যেক করে নেবেন তেমন টাকাটাও ক্যেশ করে দেবেন। আমি চ্যেক বিশ্বাস করিনা।
মিজান: আমার দিক থেকে আমি কমিটমেন্ট বজায় রাখব। এতে যদি আমার লস বা ক্ষতি হয় তাও বাকিটা বিশ্বাস আর লাক এর উপর ছেড়ে দিতে হচ্ছে এই আরকি।
জয়: ঠিক আছে এই কথাই রইল, আই ওইল রিপোর্ট ইউ, স্লামাইকুম।
স্থান: মেইন রাস্তা।
কাল: ভোর বেলা।
(প্রচুর বর্ষণ হচ্ছে। সেই সাথে দমকা হাউয়া। কিন্তু কোন উপায় নেই। গাফফার রেইনকোট পরে সাইকেল নিয়ে বের হযে পরে। ভিজতে ভিজতে গিয়ে প্যেপার ওঠায়। এটা তার পেশা। জীবিকা অর্জনের মাধ্যম। পাশাপাশি নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব দ্বারে দ্বারে সংবাদ পৌছে দেওয়া। সে চলতি পথে দেখে কোথাও গাছ ভেঙ্গে রাস্তায় মাঝে পরে আছে, কোথাও রাস্তায় পানি জমে আছে, কোথাও বিদ্যুতের তার ছিড়ে পরে আছে। তবু সে ভ্র“-ক্ষেপ করে না। সামনের দিকে এগিয়ে যায় কারণ সে জানে চলার নামই জীবন!)
স্থান: বাসাবাড়িতে
কাল: রাত্রে বেলা মুষল ধারে বৃষ্টির সময়।
(আঁখি প্রশ্ন কে ফোন দেয়।)
আঁখি: কিরে কি করছিস?
প্রশ্ন: ঘোরার ডিম করছি। কারেন্ট নেই লেপটপ খুলে বসে আছি। দু’দিন যাবৎ বৃষ্টির জন্য বের হতে পারছিনা।
আঁখি: ভালোইত হলো। বৃষ্টির মধ্যে দুনিয়ার মানুষ ঘুমাচ্ছে, তুইও ঘুমা; কি আরাম তাইনা।
প্রশ্ন: তোর ফেসবুক আইডি কয়টা?
আঁখি: কেন কয়টা থাকবে? একটাই।
প্রশ্ন: এই প্রথম একটা বই ছাপিয়েছি, আঘাতে নারী জয়।
আঁখি: আমি যেটা টাইপ করে দিলাম! রোমান্টিক কাহিনী, ভালোই চলবে।
প্রশ্ন: ২০০০-কপি বই বুঝছিস, ডিস্ট্রিবুট করার জন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়া দরকার।
আঁখি: আমাকে বললেই পারিস। আমার পরিচিত রোক আছে। ওর কাজই হল পুরাতন বই কেনা আর নতুন বই বিক্রি করা।
প্রশ্ন: তোর ষ্টুডেন্ট এখন কেমন?
আঁখি: তিনটা বেজ করেছি, তিন ছয় আঠারো। ওদেরকে দিয়েই প্রথমে তোর বই চালানো শুরু করবো। তুই চিন্তা করিস না। আর শোন বৃষ্টিকে গত পড়সু দেখলাম ওর প্রেমিকের সাথে দামি একটা প্রাইভেট কারে করে ঘুরতে।
প্রশ্ন: ভালইতো । যে যেভাবে পারুক সুখি হোক, ভালো থাকুক। তুইও ঐ ডাক্তারটার সাথে ঝুলে পর।
আঁখি: দেখ খারাপ আতœা ডাইনী! তোর চুলের মুঠি ছিরে ফেলব বলে দিলাম। ওটা একটা হাতুরে ডাক্তার। গ্রাম্য চাষা। হোমিও পেথিকে পড়াশোনা করে এলোপেথিক ঔষধ বেচতে বসেছে। ওকে পারলে আমি পুলিশে দিতাম। কিন্তু গ্রামের ছেলে সহজ সরল বলে কিছু বরছি না।
প্রশ্ন : দাড়া তুই লাইনে থাক আমি বৃষ্
©somewhere in net ltd.