![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
০১. আবু সাঈদ আমার ছাত্র। আমি যতটুকু ওকে চিনি ততটুকুই বলছি, ও খুব লাজুক ছিল।খুবই ভদ্র আর মার্জিত ব্যবহার করত। কোনদিন তাকে কারো সাথে ঝগড়া কিংবা সামান্য তর্কাতর্কিতেও দেখিনি। একদম নিষ্পাপ একটা চেহারার অধিকারী ছিল। যে কোন মানুষের মনে মায়া ধরাতে সক্ষম। কোন মানুষের দারা হত্যা ত দূরে থাক এ রকম ছেলের গায়ে একটা আচড়ও দেওয়া অসম্ভব। কিন্তু মানুষ নামের কলঙ্ক, মানুষরূপী পিশাচেরা বর্বর যুগকেও হার মানাল। নির্মমভাবে হত্যা করল আমার প্রিয় এক ছাত্র আবু সাইদ কে। একজন পুলিশ একটি বাচ্চাকে অপহরণ করেছে, মুক্তিপণ দাবী করেছে, তারপর হত্যা করেছে কি সাংঘাতিক একটা দেশে আমরা বসবাস করছি।
আমার একটা দূর্বল দিক হল আমি মানুষের দুঃখ সংক্রান্ত কোন দৃশ্য কিংবা খবর সহ্য করতে পারি না। চোখ দিয়ে সয়ঙ্ক্রিয়ভাবে পানি ঝরতে থাকে। তাই এসব থেকে পারতপক্ষে দূরে থাকি। আজ যখন সাঈদের বাবা মার বুকফাটা আর্তনাদ দেখলাম বরাবরের মত কোন ব্যতিক্রম হল না। চোখ দিয়ে অঝোর ধারা প্রবাহিত হতে লাগল। তার বাবাকে কী বলে সান্তনা দিব, খুজে পেলাম না।
০২. গত বেয়াল্লিশ বছরে দেশে মোট কতগুলি খুনের ঘটনা ঘটেছে আর তার বিপরীতে কতগুলি খুনের মামলা হয়েছে এবং কতগুলি খুনের ঘটনায় খুনীর (খুনীদের) যথোপযুক্ত শাস্তি হয়েছে? আমরা জানি, পরিসংখ্যান নিলে এটা প্রমাণিত হবে যে, মোট খুনের সংখ্যার বিপরীতে মামলার সংখ্যা কম আর শাস্তির সংখ্যা আরো কম। বিচারহীনতার সংস্কৃতি এই দেশে অনেক পুরনো। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গঠিত স্বাধীন দেশে এই অপসংস্কৃতির অবসান হওয়া উচিত ছিল।
এদেশে অসংখ্য চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনায় পুলিশ কোন কিনারাই করতে পারে না। এটা যতটা না পুলিশের পেশাগত অদক্ষতার জন্য ঘটে তারচেয়ে বেশি ঘটে পুলিশের কাজে ঊর্ধ্বতন মহলের (প্রশাসনিক-রাজনৈতিক নানাবিধ) অযাচিত হস্তক্ষেপের ফলে। এই হস্তক্ষেপের সংস্কৃতি বন্ধ না হলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। আজ যদি দেশে আইনের শাসন থাকত আবু সাঈদকে জীবন দিতে হত না। আবু সাঈদের খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হোক, সারা দেশবাসীর মত এটা আমারও কামনা
©somewhere in net ltd.