![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আব্দুল আলী নামে এক ব্যক্তি একটি মুদি দোকানে চাকরী করত। তার বেতন ছিল ৮০ টাকা। মাসের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খুব করে খাটুনি করত। কিন্তু মাস শেষে তাকে ৮০ টাকা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হত।
একবার একমাসে আব্দুল আলী ইচ্ছামত পরিশ্রম করল, মনযোগ দিয়ে খাটা-খাটুনি করে কাজ করল। তার মনের আশা ছিল এ মাসে মালিক তার পরিশ্রম দেখে হয়ত দয়াপরবশ হবেন। কিন্তু না, মালিক তার নির্ধারিত ৮০ টাকাই দিলেন।আব্দুল আলী মনে মনে খুব দুঃখ হল। কিছুটা রাগও হল্। শেষমেশ রাগে হোক আর দুঃখে হোক সে সিদ্ধান্ত নিল মালিকের কাছ থেকে দোকানটি কিনে নেবে।যেভাবেই হোক মালিকের কাছ থেকে সে দোকানটি কিনতে সক্ষম হল। এবং নতুন উদ্যমে ব্যবসা শুরু করল।খুব ভাল ব্যবসা হল। এক মাস শেষ। এবার হিসাব নিকাশ করে লাভ-ক্ষতি মেলানোর পালা ।সমস্থ হিসাব শেষ করে দেখল তার লাভ ৮০ টাকা।
আব্দুল আলী খুবই হতাশ হল। উদাস হয়ে দোকান বন্ধ করে বের হল। নদীর তীর দিয়ে হাটতে শুরু করল।এক যায়গায় এসে দেখল লোক জনের ভীড়।কৌতুহলবশত উঁকি দিল। দেখল কিছু ডুবুরী মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ডুব দিচ্ছে। প্রতি ডুব ২০ টাকা। ডুবুরী ২০ টাকা নিয়ে ডুব দিবে মনি মুক্তা যা পাবে সব যিনি টাকা দিয়েছেন তার। অনেকটা জুয়া খেলার মত। কেউ অনেক মনিমুক্তা পাচ্ছে। আবার কেউ অনেক টাকা খরচ করেও কিছু পাচ্ছে না। আব্দুল আলী ভাবল আমার কাছে আছে ৮০ টাকা। তার মানে ডুবুরী এই টাকা দিয়ে চারটি ডুব দিবে। মন্দ কী? প্রথম ডুবে না হোক, দ্বিতীয় ডুবে না হোক, তৃতীয় ডুবেও না হোক, চতুর্থ ডুবে তো হবে! সে সিদ্ধান্ত নিল ডুব দেওয়াবে।
শুরু হল আব্দুল আলীর ডুব। প্রথম ডুব গেল কিছুই নাই। দ্বিতীয় ডুব গেল কিছু নাই। তৃতীয় ডুব গেল কিছু নাই। চতুর্থ ডুবও গেল কিছু নাই।আব্দুল আলী দিশেহারা হয়ে গেল। একমাসের কামাই ৮০ টাকা হারিয়ে অসহায় হয়ে গেল। কান্নাকাটি শুরু করল। তার কান্নাকাটি দেখে আসপাশের সব লোকজন মিলে তাকে বলল তুমি এবার কান্না থামাও। আমরা সবাই মিলে তোমার জন্য আরেকটি ডুব দেওয়াব। যদি কিছু পাও তো ঠিক আছে। আর না পেলে নীরব হয়ে চলে যাবে।সে রাজি হল।
ডুবুরী ডুব দিল। সবাই অধীর অগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিল কী হয় দেখার জন্য। অবশেষে ডুবুরী বিশাল বড় মূল্যবান কিছু একটা পেল।কিন্তু এ বস্তুটি কেনার মত টাকাওয়ালা কেউ নেই। সবাই আব্দুল আলীকে পরামর্শ দিল তুমি অমুক যায়গায় অমুক ব্যক্তির কাছে চলে যাও। সবাই যে ব্যক্তির কথা বলছিল সে ছিল আব্দুল আলীর দোকানের আগের মালিক।আব্দুল আলী গেল তার কাছে। মূল্যবান এ বস্তুটি দেখে তিনি একটু অবাক হয়ে বললেন তোমার এটা কেনার মত টাকা আমার কাছে নেই, তবে (তিনি একটি ঘর দেখিয়ে আব্দুল আলীকে বললেন) তুমি ঐ ঘরে ঢুকে যা নিতে পার সব তোমার।সকালে সূর্য উঠার সময় তোমাকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হবে সূর্য ডুবে যাওয়ার আগ পর্যন্ত যা বের করতে পারবে সব তোমার।
আব্দুল আলীকে ঘরের ভেতর ঢুকানো হল। ঘরে ঢুকে তো সে অবাক! সারা ঘর রৌপ্য আর স্বর্ণের আসবাবপত্র দিয়ে ঠাসা। কী করবে কী করবে কয়েকমূহুর্তের জন্য সব ভুলে গেল।অবশেষে শুরু করল তার অভিযান। কিন্তু আসভাবপত্র গুলো এতই ভারী যে, সমস্ত শক্তি এক করে টেনেও সে কোন একটি আসবাবও নড়াতে পারল না। এদিকে তার সময় শেষ হয়ে গেল।সন্ধ্যার সময় তাকে বের হওয়ার জন্য ডাকা হল। সে বলল আমি এখনো কিছুই তো বের করতে পারিনি।তাকে বলা হল, তুমি বের করতে পারলে কি না আমাদের দেখার বিষয় না।আমাদেরকে বলা হয়েছে সন্ধ্যা হলে তোমাকে বের করে আনতে। এই বলেই প্রহরীরা আব্দুল আলীকে টেনে বের করে আনতে লাগল। টানা হেচড়ার সময় সে কোন মতে কিছু একটা আকড়ে ধরেছিল সেটাই ভেঙ্গে গেল।
আব্দুল আলী আবারো অসহায় হয়ে গেল। অনিচ্ছা স্বত্বেও হাতের বস্তুটির দিকে তাকিয়ে দেখল একটি রৌপ্যের দন্ড। দন্ডটি নিয়ে বাজারে গেল বিক্রী করার জন্য। অনেক দরদাম করল। কিন্তু শেষপর্যন্ত দাম পেল সেই ৮০ টাকা। যা ছিল তার মুদির দোকানে চাকরী থাকাকালীন মাসিক বেতন।
মাঝখানে এত হাহুতাস, এত লোভ, এত যন্ত্রনা কোন কিছুই সফল হল না। তার ভাগ্যের ৮০ টাকাই জুটল মাস শেষে।
২| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২০
মোঃ সাইদুল ইসলাম বলেছেন: এই কপালই তো আমাদের এগুতে বাধা দে
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৩
অন্তঃপুরবাসিনী বলেছেন: হায়রে কপাল!!