![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এমন একটা সম্পর্ক তূর্য্যের যদিও অতটা প্রয়োজন ছিল না অরুর প্রয়োজন ছিল হয়ত। দুজন দুজনকে খুঁজে নিয়েছিল ফেসবুক থেকে। এটা ন্যাকা ভালোবাসনা না। এখানে শরীর ছিল। অরু তার শরীর নিয়ে মোটামুটি বেকায়দায় ছিল। তূর্য্য আর অরুর সম্পর্কটা অরুই মুলত গড়ে তুলেছে। তূর্য্য শুধু সাপোর্ট করে গেছে।
অরুর স্বামী ইমনের বলার মত কোন সমস্যা না থাকলেও অরুর ভাষ্য হলো- “একটা মানুষ দশ বছর ধরে শুধু উঠল আর নামলো, অথচ কোন বিকার নেই“
অরু একবার বলেছিল তুমি ডাক্তার দেখাও। ইমন ডাক্তার দেখিয়েছিল ডাক্তার কয়েকটা টেষ্ট করে তেমন কোন সমস্যা খুজে পান নি। ডাক্তার চিকিসার স্বার্থে বলেছিলেন “স্ত্রীকে সাথে নিয়ে আসবেন“ অরু যায় নি। যাবেই বা কেন? ততদিনে তূর্য্যের সাথে কয়েকবার হয়ে গিয়েছিল। তূর্য্যের সম্পর্কে বলার মত কিছু নাই। জোয়ান একটা ছেলে, অরুকে পেয়েছিল যেন, কোন হাঙর মংশের গন্ধ পেয়েছে।
তবে আশ্চর্য প্রচ্ছন্ন একটা বিষয়ের পরও দুজনে সম্পর্কটাকে মুখরোচক করে রেখেছিল। এটা শুধু মাংশের থলথলে চাহিদা ছাড়া অন্য কিছু বলা যাবে কি?
***
অরুর একটা ছেলে আছে আট বছর বয়স। ছেলেকে খুব ভালোবাসে অরু। চেষ্টা করে সময় দেওয়ার। কিন্তু সময় দিতে পারে না। ছেলেকে বঞ্চিত করে। অরু ভুলে গেছে তূর্য্য ছাড়া তার আরও একটা জগৎ আছে।
তূর্য্যের ঐ মূহুর্তে মনে আলোড়ান বয়ে যাচ্ছিল তার কারণ- স্বাভাবিক রীতিতে যা হয় কিছুকাল চলার পর কোন মাধ্যমে যখন কেউ বুঝতে পারে বিষয়টা খারাপ হঠাৎ করে সততা সাধুতা এসে তখন ঘিরে ধরে। তূর্য্যের মনে আলোড়ন তৈরী করতে মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছিল অরুর বান্ধবী খাদিজা। খাদিজা প্রথমে অরুকে বুঝাইছে কাজটা খারাপ। অরু বুঝতে চায় নি। উল্টো অপমানের বর্শা দিয়ে বিদ্ধ করেছে। বাধ্য হয়ে খাদিজা তূর্য্যকে বুঝাতে গেছে। খাদিজা তূর্য্যকে প্রশ্ন করেছিল, এসব কেন করছেন? উত্তরে তূর্য্য বলেছে ভালো থাকার জন্য ও এসব করছে। অরুকে একই প্রশ্ন করেছিল খাদিজ অরুও এই ধাচের উত্তর দিয়েছিল। খাদিজা হাল ছাড়েনি , তূর্য্যকে বুজিয়েছিল- “কেন ভাল থাকার জন্য ঐ একটা কাজ আর সম্পর্ক এত জরুরী হবে? তোমার পুরো জগৎটাকে ছুঁড়ে কেন দুজনে একটা খোপের মধ্যে পড়ে আছ? এরকম ভালো থাকতে হবে কেন? ভালো থাকাটার মানে কি তাই? এরকম একটা সম্পর্ক ছাড়া ভাল থাকা যায় না?”
খাদিজা ঠিক এই কথাগুলো অরুকেও বলেছিল। বরং অরুকে আরো এক চামচ বাড়িয়ে বলেছিল- “তোমার বেচে থাকার জন্য আরেকজন অবধারিত কেন? তুমি কি নিজেকে মুক্ত করে নিতে পার না? একটা ছেলে আছে স্বামী আছে সংসার আছে তোমার আলাদা একটা জগৎ আছে তুমি কেন এভাবে নিজেকে বিকিয়ে দিচ্ছ?”
তখন খাদিজার এই কথাগুলো নিয়েই তূর্য্য ভাবছিল। ভাবছিল আর অরুকে নিজের কাছে ডাকবে না। কাছে আসতে চাইলেও পাত্তা দেবে না। তূর্য্য তার সিদ্ধান্তে অটল ছিল। ধীরে ধীরে সরিয়ে নিতে লাগল নিজেকে।
****
শুধু ভালো থাকার জন্য অরু সুন্দর একটা ভুবন ছেড়ে কুৎসিত এক রাস্তায় হাটছে। নিজের ভুবনকে জলাঞ্জলী দিয়ে তূর্য্যের দুয়ার থেকে ফিরে হাজির হয়েছিল সাদীর দরজায়। সাদী আগে থেকেই সতর্ক। তার দুয়ারের ছিটকিনি খুলাতে পারে নি। সাদীর দরজা থেকে অরুকে বিদায় নিতে হয়েছে।
শুধু শরীরের চাহিদা মেটানোর জন্য কৌশল, ফাঁকি আর মিথ্যার কাছে নিজেকে সমর্পণ কোন সুস্থ বিবেকের ভাবনায় পাওয়া দুষ্কর। নিজের ভেতরেই নিজেকে খুঁজতে হয়। আরেকজনের ভেতরে নিজেকে খুঁজে পাওয়া যায় না। অন্যের জীবনকে নিজের ভাবতে গিয়ে বিদায় জানাতে হয় নিজের হাতে সাঝানো গোছানো আপন ভুবন। অরুর জীবন থেকে এ শিক্ষা নিতে খুব একটা চালাক হওয়া লাগবে না।
(চলবে)
প্রথম পর্বের লিংকঃ Click This Link
©somewhere in net ltd.