নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশায় ভূতত্ত্ববিদ ।ভালো লাগে কবিতা পড়তে। একসময় ক্রিকেট খেলতে খুব ভালবাসতাম। এখন সময় পেলে কবিতা লিখি। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কার্জন হল ভালো লাগে খুব। ভালোলাগে রবীন্দ্র সংগীত আর কবিতা । সবচেয়ে ভালো লাগে স্বদেশ আর স্বাধীন ভাবে ভাবতে। মাছ ধরতে

সেলিম আনোয়ার

[email protected] Facebook-selim anwarবেঁচে থাকা দারুন একটা ব্যাপার ।কিন্তু কয়জন বেঁচে থাকে। আমি বেঁচে থাকার চেষ্টা করি।সময় মূল্যবান ।জীবন তার চেয়েও অনেক বেশী মূল্যবান।আর সম্ভাবনাময়।সুন্দর।ঢাকাবিশ্বদ্যিালয়ের পাঠ চুকিয়ে নিরস চাকুরীজীবন। সুন্দরতর জীবনের প্রচেষ্টায় নিবেদিত আমি সেলিম আনোয়ার।

সেলিম আনোয়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

মামা ভাগ্নে যেখানে পরাজয় নাই সেখানে(নির্ভেজাল অর্ধসত্য গল্প;))

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫১



ভূ-প্রাকৃতিক নিয়মে পাহাড়গুলো ক্ষয় হয়। আর গভীর খাতগুলোতে পলি জমে উঁচু হয়।সবাই সমভূমি হতে চায়।বনলতা আর জয়ন্ত।তাদের বিয়ের দিনই দুই পরিবারের ঝগড়া।জয়ন্তর বাবা মা আচ্ছা করে তুলোধুনা করে বনলতার ফ্যামীলিকে।যদিও জয়ন্তের চেয়ে যোগ্যতায় এগিয়ে বনলতা।জয়ন্তর পরিবার অনেক তেলপানি মেরে বনলতাকে তার ফ্যামিলিকে রাজি করিয়েছে।তাদের কোন দাবী দাওয়া নাই শুধুমাত্র পাত্রী চয়েস হলেই হলো।বনলতাকে তাদের খুব পছন্দ হয়েছে।তাদের আর কিচ্ছু চাই না।কিন্তুর বিয়ের দিন মাত্র তিন ভরি স্বর্ণ দেখে লোভি সুন্দর আলী আর থাকতে পারলেন না।বিবাদ লাগিয়ে বসলেন।





জয়ন্তর ফ্যামিলিতে বনলতা সুখী হলো না।শ্বশুড় শ্বাশুড়ি খুব বিরক্তিকর আচরণ শুরু করলো।বনলতা তার বাবা-মাকে কিছু কিনে দিলে তারা খুব নাখোশ হন।জয়ন্তের প্রতি ও তারা বিমাতাসুলভ আচরণ করে।মোটের ওপর শ্বশুর শ্বাশুড়ির পক্ষপাত দূষ্ট আচরণ তাদের প্রতি ঘৃণার জন্ম দিতে থাকলো। বনলতার দেবর ছেছরা কোয়লিটির অপদার্থ।বাবার ভাইয়ের হোটেলে খায় আর খবরদারী করে বেড়ায়।বেয়াদবের একশেষ্।এমন নাককাটা লোক বনলতার জীবনে দ্বীতিয়টি দেখে নাই।বনলতার কোলজুড়ে ফুটফুটে যমজ ছেলের জন্ম হয়।তার ছোট ভাই অর্কের খুশির সীমা নাই।সময় পেলেই তাদের নিয়ে মজাদার সময় কাটায়।দুই ভাগ্নে তার জানের টুকরো্।আলাল আর দুলাল।





বনলতার দেবর অন্তর বিয়ে করার পর জটিলতা বেড়ে যায়।লাবনী সুন্দরী শিক্ষিতা কিন্তু অন্তরের মহীলা ভার্সন।মারাত্মক ঈর্ষপরায়ণ ।অন্তর জয়ন্তের কাছে নানা ধরনের আবদার করে।অথচ বনলতাকে সামান্য শ্রদ্ধাও করে না।অর্ককে সামান্য পরিমান উপহার দিতে দেয় না অন্তর।অন্তর আর লাবনী যেন মানিক জোড়্ ।বনলতার শ্বশুড় শ্বাশুড়ি আর অন্তর লাবণী মিলে বনলতার জীবন হেল করে দিতে থাকে।বনলতা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক অনেক দূরে একটা স্কুলে তার যেতে হয়্।তারপরও জয়ন্তর পরিবার থেকে সে কোন সহায়তা পায় না।এমনকি জয়ন্ত আর বনলতার জন্য বাসী খাবার বরাদ্দ হতে থাকে ।

সকাল বেলা বনলতাকে না খেয়ে কর্মক্ষেত্রে যাওয়া লাগে। সুন্দর আলি প্রায়ই জয়ন্তকে বাড়ী অন্তরকে লিখে দিবে বলে শাসাতে থাকে।দুই পরিবারের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে।বোনের অসম্মান দেখে অর্ক আর বনলতার বাড়ী যায়না।বনলতার শ্বশুর বাড়ী সে অপছন্দ করে।জয়ন্তর ছোট বোনের আহলাদ সে দেখতে পারে না।আলাল,দুলাল আর অর্ক খুব আনন্দ করে।অর্ককে দেখামাত্র তারা খুশিতে নেচে ওঠে।





বনলতা অনাহারে অনিদ্রায় আর ভীষণ মনোকষ্টে কেমন যেন ফ্যাকাশে হয়ে ওঠে।তার মাথা ঘুরে ।পেটের মধ্যে ব্যথা অনুভব করে ।তলপেটে প্রচন্ড ব্যথা।জয়ন্তকে বললে সে কেয়ার করে না।অথচ জয়ন্ত তার খালাতো বোনদের কেউ অসুস্থ হলে তাদের সেবা কর্মে নিবেদিত প্রাণ ব্যক্তি। বাচ্চাদের একটা ভালো জামা কিনে দিতে ইচ্ছা করে না কখনো।এতে তার অর্থ নষ্ট হয়।বনলতার মনে অনেক দুঃখ।তার মৃত্যু হলে অলাল আর দুলালের কি হবে?অর্ক তাদের লালন পালন করবে?এসব ভেবে তার প্রচন্ড মনোকষ্ট হয়।তর পেটে প্রচন্ড ব্যথা ।শরীর দূর্বল।মাথা ঘুরে।এর মধ্যেও শ্বাশুড়ীর কর্কশ আচরণ।ভালো খাবার গুলো লাবণী আর অন্তর খেয়ে ফেলে বনলতা আর জয়ন্তের কপালে জুটে বঞ্চণা।জয়ন্ত দূর্বল চিত্তের মানুষ।দূর্বল চিত্তের পুরুষের বিয়ে করা উচিৎ নয়।বাবামার শত অনিয়মে কোন প্রতিবাদ জয়ন্ত করে না।তাই আলাল দুলাল বনলতা তারা নিরবে নির্যাতিত হতে থাকে।



মায়াবতি আর বনলতা ডাক্তারের কাছে যায়।ডাক্তার তাকে দেখে আতকে ওঠে।আলাল দুলাল জন্মের সময় সেই ডাক্তারই পরম স্নেহে বনলতার ফুটফুটে দুটি বাচ্চার জন্ম দেখেছে। বনলতার রক্তশূণ্যতা দেখা দিয়েছে।তাকে বেশ কিছু টেস্টের জন্য পরামর্শ দিলো ।বনলতার খুব জটিল টিউমার হয়েছে।ডাক্তার ক্যান্সার আশংকা করছেন।জয়ন্তকে জানানোর সঙ্গে সঙ্গে জয়ন্ত তাকে নিকটবর্তী এক সস্তা হসপিটালে ভর্তির কথা বলে।অর্ক তাকে ভালো ট্রিটমেন্ট করাতে চাই। এই নিয়ে দ্বন্দ্ব লাগে।





জয়ন্ত তার নির্ধারিত হসপিটালে চিকিৎসা না করালে টাকা দিবে না।অর্ক তার বোনের চিকিৎসা ভালো হসপিটালে করাবে।বনলতার রক্তে হিমোগোলবিনের পরিমান কম ।মাত্র ৪।তার ছয় ব্যগ রক্ত লাগেবে।অর্ক শুরু করে দৌড়ঝাপ রক্ত সংগ্রহে।পেয়েও যায় একের পর এক।জয়ন্ত সঙ্গে থাকে না।টাকা পেয়েন্টের সময় লাপাত্তা।তার পরও সংগ্রাম চালিয়ে যায় অর্ক।ডাক্তারদের অর্ক ড্রাকুরলার মতোই ভাবে।টাকা ছাড়া তারা কিছুই ভাবে না।এমনকি রোগী সিজার করতে গিয়ে মারা গেছে আগে টাকা নিয়ে তারপর দাত বের করে বলে সরি আপনার রোগীকে বাঁচাতে পারলামনা। এত হারামী।অর্কের হিসেবে ডাক্তাররা ঠান্ডা মাথার খুনি।



বনলতা ঢাকা শহরে বদলী হওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন।মহাজোট সরকার আইন করে মফস্বল শহর থেকে ঢাকা সিটিতে বদলী রদ করেছেন।তাই বনলতার দুঃখের সীমা নাই।বনলতা এটাকে সরকারের নারী নির্যাতন ভাবে।কারণ যে অবস্থা তাতে সে চাকরি ছাড়লে একটা বিহিত হয়।সরকার একটা মেয়ের চাকরি ছাড়তে বাধ্য করছে।এরা নাকি ঘরে ঘরে চাকরি দেবে!এদেশে নারীর ক্ষমতায়ন নয় তাদের শোষণ চলেছে।বনলতার পেটে প্রচন্ড ব্যথা সে বোধ হয় বাঁচবে না।মারা গেলে জয়ন্ত আলাল দুলালদের রাস্তায় ফেলে দিতে পারে এই আশংকায় চোখে জল আসে।জয়ন্তের আচরণে বনলতা সংশয়ে পরে হয়তো জয়ন্ত তাকে মেরে ফেলতে চায়।নাহলে তার পরিচিত বস্তাপচা হসপিটালের প্রতি এত আগ্রহ কেন। রক্ত নেয়ার সময় জয়ন্ত একদিন একটা মেয়ের ছবি নিয়ে আসে। অর্ক ব্যাপারটা জানলে ফোনে অর্ক জয়ন্ত কে চার্জ করে।জয়ন্ত বলে তোমরা যা শুরু করেছো।তখন অর্ক বলে শুরু তো আমরা করিনি শুরু করেছেন আপনি। বিয়ে করার মস্করা করেন রোগীর সামনে।আমি তো এখনো শুরুই করিনি।চিকিৎসা কার পরামর্শ মতো হবে আপনার, আমার নাকি ডাক্তারের?



বনলতা চোখে অন্ধকার দেখে তার আপন বলতে অর্ক মায়াবতী বাবা মা আর আলাল দুলাল। অর্ক ডোনার খুঁজতে থাকে। তিন ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করতে হবে।টাকাও।সারাদিন দিকবিদিক ছোটার পর রাতের বেলা সেই আলাল আর দুলাল।তাদের উচ্ছল আর প্রানবন্ত উপস্থিতি।বনলতাকে ভর্তি করা হলো ইবনে সিনাতে।ভাগ্নেদের সাথে রাতে অর্ক হিন্দি সিনেমা দেখে যেহেতু বনলতা হসপিটালে।অর্কের দায়িত্ব বেড়ে যায়।আলাল নিজেকে আমীর খান আর দুলাল নিজেকে সালমান খান দাবী করে।অর্ক ব্যাপারটা খুব উপভোগ করে।।ব্যথার সাগরে আলাল আর দুলালই তাকে আনন্দ দেয়।উপভোগ করা মুহুর্ত দেয়।সাহস দেয় শক্তি দেয়।বনলতা নির্যাতিতা নারীর প্রতিকৃতি।তাকে বাঁচিয়ে তুলতে হবে।এটা তার জন্য চ্যালেঞ্জ।চারিদিকে বাধা প্রতিবন্ধকতা।তার পরও জিততে হবে।আলাল,দুলাল আর অর্ক মিলে যুদ্ধ জিতবে।কারণ মামা ভাগ্নে যেখানে আপদ নাই সেখানে।





অর্ক সাহেবের কথার দাপটে।সব কলিগ বিরক্ত।বঙ্গদেশে যতগুলো সিংহ ছিলো সব গুলোই অর্কসাহেবেরে কথারদাপটে নিশ্চিহ্ন।রয়েল বেঙ্গল টাইগারও প্রাণের ভয়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়।হাতি ঘোড়া মরে সাফ।তার চাপার তোরে বন্যার পানির মত ভেসে যায় সব।তাই কলিগরা তাকে দেখতে পারে না।



বাস্তবতা নির্দয়।কঠিন।সামান্য একটি কাজ বাস্তবায়ন করতেও হিমসিম করতে হয়।অর্ক পড়েছেন অথৈ সাগরে কলিগরা সমব্যথি হলেও খোঁচা মারতে ছাড়েন না।এই বিপদে তাকে রক্ষা করবে কে?



অর্ক তিন ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে ফেলেন্। বনলতাকে একটা ভালো হসপিটালে ভর্তি করে। একজন প্রখ্যাত শল্য চিকিৎসক ও পেয়ে যান।কিন্তু নার্স থেকে শুরু করে হসপিটাল কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালী ভাব। চিকিৎসা বিলম্ব কারার পায়তারা!যতদিন যাবে ততপয়সা হবে।অথচ দ্রুত অপারেশন না করলে দুর্ঘটনা হয়ে যেতে পারে।অর্ক তখন অথৈ সাগরে।ইবনে সিনা হাসপাতাল শঙ্কর।যুদ্ধ অপরাধী কিংবা মৌলবাদীদের হসপিটাল।মায়বতীর জন্য কমলা কিনতে গেলে ফলের দোকানদার পাকিস্তানী আনার দেখান।অর্ক বলেন স্বাধীনতা বিরুধী আনার।দোকানী বলেন সেরা আনার।যুদ্ধাপরাধী বলেইতো বেশি করে খাবেন।দাত দিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে তাই না?আনার গুলো অনেক সুন্দর বড় বড় ২৫০/ট কেজি।চাইনিজ আর ভারতীয় গুলা লো কোয়ালিটি ।খাওয়া দাওয়া চিকিৎসা খেলার মাঠ এইসব জায়গায় রাজনীতি আনা যাবে না।বেঁচে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।



মায়াবতীর পরীক্ষা মা হসপিটালে আলাল দুলাল বাসায়।অর্কের এখন বাসায় থাকতে হবে।আলাল দুলাল পায়খানা করলে তাদের শুচো করিয়ে দেয়া লাগবে।অর্ক খুব খুত খুতে টাইপের পরিচ্ছন্ন।অন্যের গ্লসে সে পানিও পান করে না।তাই মহা ঝামেলায়।রান্না করতে হবে ।ওদের খায়ানো গোসল সব করতে হবে।অফিস ছুটি নিয়েছে। সেগুলো না হয় করা গেল।কিন্তু শুচো করানো।দুৎসাধ্য কাজ।স্রষ্টার কাছে তার আকুতি এই কাজটা যেন তার করতে না হয়।এদিক দিয়ে হসপিটাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা।





অর্কের সামনে আলাল আর দুলালের মায়াভরা মুখ ভেসে ওঠে।চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পরতে থাকে।পানির ঢল।কেবিনের ওয়াশরুমে।অঝোরে কাঁদতে হবে কিন্তু কাউকে দেখানো যাবে না।মা বনলতা ওরা ভেঙে পড়বে।এইবার টেলিপেথিক ক্ষমতা প্রয়োগ আক্কেল আলীর ।মুঠোফোনটা ধরে "খুব সমস্যায় আছি স্যার ।হসপিটাল কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিচ্ছে না।আপনি একটু দেখবেন স্যার?" আক্কেল আলী স্পষ্ট শুনতে পায় "কক্ষ নম্বর কত?রুগির নাম কি?"স্যার ইবনে সিনা হসপিটাল।আওয়াজ আসে ওটাতো জামাতের ।জি স্যার।



অর্ক বাসায় আসে রাত এগারোটায়।তারপর আলাল দুলাল আর অর্ক নো ড্যাঞ্জার জোনে। দা গুড দা ব্যাড এন্ড দা আগলী দেখতে থাকে্ ।আলাল দুলাল প্রতিযোগিতায় লেগে যায় তারা দুজনই ব্লন্ডি।অর্ক হয়ে যান টুসো।রাত বাড়লে কি হবে আলাল দুলাল প্রানবন্ত অর্কের উপস্থিতিতে।মামাবাড়ী মধুর হাড়ি।জয়ন্ত একবার ফোনও দেয় না।সেই সৎসাহস তার নাই।

পরের দিন সকালে যথারীতি ইবনে সিনায় বনলতার পাশে।একজন মহিলা ডাক্তারের প্রবেশ।আপনার কেউ পরিচিত আছে বনলতা?অর্ক বলেন হ্যা বন্যা নামে এ্ই হসপিটালের একজন নার্স।ডাক্তার বলেন বড় কেউ।নাগিব উদ্দিন স্যার আমাদের ট্রাস্টি বোর্ডে সবচেয়ে ভাইটাল লোক।অর্ক বুঝলো তার টেলিপ্যাথিক ক্ষমতায় এটা হয়েছে। ডাক্তার আরো বললো তিনি বনলতাকে তার আত্নীয় বলেছেন।অর্ক ফ্লোর নিয়ে নিল উনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর।হ্যা তিনি আমার খুব ঘনিস্ঠ।ডাক্তার বিদায়ের পর মা বলল।খোকা তুই যাওয়ার পর হঠাৎ করে মনে হলো আমাদের গুরুত্ব বেড়ে গেছে।ডাক্তার নার্স সব একযুগে এই কেবিনে।অর্ক বলে মা আমি তো অলুক্ষণে তাই আমার বিদায়ের পরে বনলতা অপুর উপর লক্ষী ভর করেছে।মনে মনে অর্ক আল্লাহর প্রতি শোকরিয়া করতে থাকে।শেষ সময়ে টেলিপ্যাথিক পাওয়ার দারুন কাজে লেগেছে।



আজ রাত দশটায় অপারেশন ।বিকাল চারটা বাজে। এখন থেকে বনলতা আর খেতে পারবে না।তার অপারেশন প্রস্তুত্।অর্ক অর্কের মা আর বনলতা আবেগঘন এক পরিবেশ।জয়ন্ত আসে না্ই।অর্কের বুকটা হুহু করে ওঠলো।অর্ক নামাজ পরার ঘরে যান্।নামায পড়ে হাত তোলেনঅঝোরে কাঁদতে থাকেন।বনলতার জন্য।শাহরুখখান ডিডিএলজেতে কাজলের কামনায় গডের কাছে প্রর্থনা করেন।গড তার প্রার্থনা শুনেন।আর আক্কেল আলী জীবনে একবারও তা করে না নাই।এই মুহুর্তে তার প্রার্থণা।বনলতার জীবন।তার বোনের মঙ্গল কামনায়।তাই হয়তো অর্কের ভাগ্যে বউ নাই। প্রেমিকা নাই।মাগরিব নামাজের পর তার পূর্ব পরিচিত আক্কাস মিয়ার সঙ্গে দেখা আরে অর্ক কেমন আছেন?আক্কাস তাকে সোজা জিএম এডমিনের কাছে নিয়ে গেল।পরিচয় করে দিল আনিস ভাই ইনি আমার বস আর্ক্ সাহেব।ক্ষমতাবান আদমী তার কাজ গুরুত্ব দেয়া লাগবে।



সেখান থেকে চা নাস্তা শেষে জি এম এডমিন বলে দিলেন ভালো ডাক্তার পেয়েছেন।কোহিনূর বেগম।বাংলাদেশে সেরা তিনের একজন।কোন সমস্যা নাই।বনলতাকে ওটি তে নিয়ে যাবে।জয়ন্ত এসেছে।অর্ক জয়ন্ত বুলু দুলাভাই তার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছেন্ ।তাকে ওটিতে নেয়া হলো। আর বাইরে অর্কের পাইচারি অনেক টেনশন আশঙ্কা আর বোনের মঙ্গল কামনায়।জয়ন্ত বাসায় চলে যায়।অর্কের দুঃখে বুক ফেটে যায়।ঘন্টাখানেক পর।বনলতাকে বের করা হয়।অপারেশন শেষ। অর্ক বনলতার গালে হাত দেয় বলে আপা আপা ।বনলতা একটু করে তাকায়। এনেসথেসিয়া দিয়ে তাকে দূর্বল করা হয়েছে।ডাক্তার কোহিনূর বেরিয়েই বলেন অপারেশন খুব ভালো হয়েছে।ইউটেরাস অক্ষত আছে।কোহিনূর বেগমকে স্বর্গের দেবীর মতো মনে হচ্ছে।স্বয়ং জীবন দাতার ছায়া তার অবয়বে।তাকে প্রাণভরে ধন্যবাদ দেয় অর্ক।কিছুক্ষণ পর টিউমারটি বের করে দেখায়।বিশাল আকৃতির টিউমার ।প্রাণঘাতি টিউমার পরাস্ত হয়েছে।অর্ক মাকে সুসংবাদ দিয়ে রাত ১ টায় বাসায় রওনা দেয়।অর্ক জানে হি ইজ এ বস।বাসায় আসলে গভীর রাতে আলাল আর দুলাল দরজা খোলে।কতটা প্রাণবন্ত।অর্ককে ঘিরে নাচতে থাকে।

এই ধরণের সেলিব্রেশন অর্ক তার ভাগ্নেদের কাছ থেকে প্রায়ই পায়।তবে আজকে সেটি অন্য রকম মনে হচ্ছে। আনন্দের মহাউৎসব ।অর্ক দুজনকে বুকে জড়িয়ে নেয়।তার চোখে অশ্রু।সুখের অশ্রুপাত।বিজয়ের অশ্রু পাত।প্রাণীকূলে একমাত্র মানুষই বোধ হয় অত্যন্ত দুঃখ আর সুখ দুই অনুভূতিতেই অশ্রু ঝরায়।এই মুহুর্তে সুখসাগরে ভাসছে অর্ক।মামা ভাগ্নে যেখানে পরাজয় নাই সেখানে।



বসন্তের ফুলবাগানে

রঙের বর্ষা আসলো নেমে

প্রাণটি জুড়ায় মুগ্ধ তানে

কি অপরূপ রূপের আধার

হেরি আজ অম্রকাননে

ভ্রমর সেথা গুণগুণিয়ে

প্রজাপতিরা রঙ ছড়িয়ে

অম্র মুকুলের মধুর ঘ্রাণে

বসন্তেরই মাতাল সমীরণে

মন ছুটে যায় তোমার পানে

তোমার কোমল ছোয়ার টানে

আমার মনের স্বপ্ন কাননে

মুগ্ধ কোকিল মধুর গানে

এমন মনভুলানো রঙের নেশায়

সবুজ ঘাসের অবুঝ মায়ায়

তোমায় কাছে পাওয়ার আশায়

কামনা হেরি ব্যাকুল হাওয়ায়।



--------------------------সমাপ্তি----------------------

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৬

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

ভালোলাগল +++

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২৩

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ধন্যবাদ শুভকামনা থাকলো।ভালো থাকবেন সবসময়।

২| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২০

প্রিয়তমেষূ বলেছেন: শেষ টা ভালো হলেই ভালো। গল্পটা সত্য তাই ...


শুভ কামনা রইল।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২৩

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আপনার প্রতিও শুভকামনা থাকলো

৩| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৩১

ইখতামিন বলেছেন: দারুণ লেগেছে।
শুভেচ্ছা রইল..

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২৪

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: শুভকামনা ।পাঠে ধন্যবাদ।

৪| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৮

চ।ন্দু বলেছেন: বাংলায় ছোটগল্পের সম্রাট হচ্ছেন বরি ঠাকুর। তার গল্পগুচ্ছ সংকলনটা একবার পড়ে দেখতে পারেন, তাতে আপনার লেখার মান আরও ভাল হবে বলে আমার বিশ্বাস।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২৬

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ধন্যবাদ সুন্দর উপেদশ দেয়ার জন্য।গল্পগুচ্ছ আবার পড়েত হবে এটি ছোঠগল্পের মাস্টারিপস।সময় পেলে অবশ্যই পড়ব।


শুভকামনা থাকলো।

৫| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৩

মেহেরুন বলেছেন: ২য় ভালো লাগা রইলো। বোনের ব্লগ এ গল্প করার দাওয়াত রইলো। আসবেন কিন্তু :)

+++++++

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৮

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আপু অবশ্যই আপনার দাওয়াত কবুল করলাম।

শুভকামনা থাকলো।ভালো থাকবেন সবসময়।

৬| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৬

অনীনদিতা বলেছেন: শুভ কামনা রইল।
সুন্দর লেখা।:)
কবিতাতাও ভালো লাগলো।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৯

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ধন্যবাদ শুভকামনা থাকলো।ভালো থাকবেন সবসময়।

৭| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৮

আশিক মাসুম বলেছেন: +++

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৫৮

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ছবিটা লোভাছড়া নদীর তীরে বাংলাদেশ সীমান্তের পাথর মহলের মধ্যে জন্মে থাকা একটি অজানা ফুল।পাথরে ফুল ফোঁটে! ধন্যবাদ শুভকামনা থাকলো।

৮| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৩৮

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ৪র্থ ভালোলাগা ভ্রাতা ।

ভালো লিখেছেন +++++

ভালো থাকবেন :)

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৫৩

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কবি ধন্যবাদ শুভকামনা ভালো থাকবেন সবসময়।

৯| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৫৫

ঘুড্ডির পাইলট বলেছেন: কেউ বুঝলো না এই অর্ক সাহেব আসলে কে ? :D

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:০০

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: মানুষ রহস্যজনক প্রাণি ।বোঝা যায় না। :)

১০| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৫৬

প্রিন্স হেক্টর বলেছেন: বড় পোষ্ট। সময় নিয়ে পরে পড়বো। :)

১১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১৮

নীলসাধু বলেছেন: ভালো লাগা রইল।
বাস্তবতার মিশেলে সুন্দর লিখেছেন।


সতত শুভকামনা জানবেন।
আমি বেশ কদিন পর আপনার মন্তব্য দেখেছি। মধ্যে কদিন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম।


ভালো থাকুন। লিখুতে থাকুন।
নিরন্তর মঙ্গল কামনায়

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.