নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছু মানুষ অন্য মানুষকে মুগ্ধ করার অসীম ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়। আর কিছু মানুষের ভিতর এই ক্ষমতা কখনই আসে না। আমি দ্বিতীয় দলের মানুষ। কাউকে মুগ্ধ করার মত কিছু কখনই করতে পারি না। কেউ অনেক সুন্দর গান গায়, আমি শুধু শুনে যাই। কেউ অনেক সুন্দর নাচে, আমি শুধু হাত তালি দিয়ে যাই। কেউ অনেক সুন্দর লেখে, আমি শুধু ভেবে যাই, কী করে এত ভালো লেখে কেউ? আমিও লিখি। তবে তা কাউকে মুগ্ধ করার মত কিছু না। আমার লেখায় আমার ভালোবাসা ছাড়া কিছুই নেই। পড়াশুনা শেষ, বুটেক্স থেকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বের হয়ে চাকরি, বিয়ে, পেশা পরিবর্তন সব হয়েছে। লেখালেখির ধারাবাহিকতায় চারখানা উপন্যাস অমর একুশে বইমেলায় বেরিয়েছে। টুকরো ছায়া টুকরো মায়া (২০১৫) – সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার । একা আলো বাঁকা বিষাদ (২০১৬) – সামাজিক উপন্যাস । মধ্য বৃত্ত (২০১৮) – ডিটেকটিভ সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার । অভিসন্ধি (২০২০) – ক্রাইম থ্রিলার । দেশটাকে ভালোবাসি অনেক। অনেক মায়া কাজ করে। মাঝে মাঝে ভাবি, সব বদলে দিতে পারতাম। স্বপ্নের মত না, বাস্তবের মত একটা দেশ গড়তে পারতাম …………………………
অনেকক্ষণ ধরে ছেলেটাকে দেখছিলাম।৭-৮ বছর বয়স হবে। হাতে একটা বড় পলিথিন নিয়ে ছুটছে।পেটের দায়ে। আর বলে যাচ্ছে,
" এই রিং চিপস, পপ কর্ণ, আলুর চিপস। এই বিট লবণ দেয়া চিপস।"
খুবই স্বাভাবিক দৃশ্য ঢাকা শহরে। জ্যামের সময়টাতে। আমিও জ্যামে বসেছিলাম। বনানীতে। কানে হেডফোন লাগিয়ে, ফুল ভলিয়মে গান শুনছি। R...Rajkumar মুভির Gandi Baat. জ্যামের সময়টা গানের তালে তালে ভালই কাটছে। আমার পাশের সিটে ১০-১২ বছরের এক পিচ্চি মেয়ে। আমার কানের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। হেডফোন দেখছে খুব আগ্রহ নিয়ে।আমার গানের সাথে সাথে, চিপস বিক্রি করা ছেলেটার দিকে চোখ আছেই। কি কারণে জানিনা। আমি ঐ ছেলেকে দেখছি। জ্যামে গাড়ি আটকা। নড়াচড়া একদম নেই। ছেলেটা একটা প্রাইভেট কারের দিকে হাত উঁচু করল। দুই গাড়ির মাঝ দিয়ে আমাদের বাসের দিকে আসবে। তাই পিছনের কারটাকেই হাত উঁচু করে থামতে বলল। জ্যামে এমনিতেও গাড়ি আগাবে না, তবুও। কিন্তু ছেলেটা কারের সামনে আসতেই, কারটা হালকা একটু টান দিল।কারের হালকা ধাক্কায়, ছেলেটা রাস্তায় পড়ে গেল। পিচের রাস্তা। পড়ার সাথে সাথেই নানা দিকে চিপস গুলো ছড়িয়ে গেল। ছেলেটা আস্তে করে উঠে দাঁড়াবার চেষ্টা করছে। ব্যথা বোধহয় একটু বেশিই পেয়েছে। হাতের কনুই ছিলে গেছে। রক্ত পড়ছে। ছেলেটা তা দেখছে। হাত দিয়ে রক্ত মুছছে। আর প্রাইভেট কারের ড্রাইভার হোক আর মালিক হোক, গ্লাস নামিয়ে ছেলেটাকে কয়েকটা ধমক দিল।দোষ কিন্তু ছেলেটার ছিল না। তবুও ধমক হজম করল।গরীব হলে এমন একটু আধটু হজম করতেই হয়। ছেলেটা উঠতে না উঠতেই, কোথা থেকে যেন এক খোঁড়া লোক হাজির। এক পা নেই। স্ট্রেচারে ভর করে হাঁটছে। হয়ত বাসে বাসে, গাড়িতে গাড়িতে ভিক্ষা করে। এসে ছেলেটাকে সাহায্য করছে ওঠার জন্য। চিপস খুঁজে দিচ্ছে।গাড়ির নিচ থেকে স্ট্রেচার দিয়ে চিপস বের করে দিচ্ছে। সব চিপস ব্যাগে ভরে, ছেলেটা আবার দৌড় লাগাল। পেটের দায়ে, চিপস বেচতে।
" এই রিং চিপস, পপ কর্ণ, আলুর চিপস। এই বিট লবণ দেয়া চিপস।"
আর খোঁড়া ব্যক্তি , খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে প্রাইভেট কারে কারে হাত পাতছে। ভিক্ষার জন্য।
আমি কানে হেডফোন লাগিয়ে gandi baat শুনে যাচ্ছি। ফুল ভলিয়মে।আমার পাশের পিচ্চি মেয়ে তাকিয়ে আমার হেডফোন দেখছে আগ্রহ নিয়ে। আর প্রাইভেট কারের মালিক বা ড্রাইভার ছেলেটাকে বকা দিয়ে যাচ্ছে। সব আগের মতই আছে। কিন্তু মাঝখান দিয়ে একটা ঘটনা ঘটে গেল। ছেলেটা পড়ে যাবার পর, আমরা কেউ ই যাই নি তুলতে, চিপস খুঁজে দিতে। গেল একজন ভিক্ষুক। পা খোঁড়া ভিক্ষুক।যে যার কষ্ট বুঝে আর কি। ভিক্ষুকের ঐ ছেলের কষ্টে মততা এসেছে। আমাদের আসেনি। আমরা আমাদের নিয়ে অনেক ব্যস্ত। চারপাশের মানুষের কষ্ট দেখার সময় কই? অনুভব করার মত শক্তি আমাদের নেই।মানুষের কষ্ট অনুভব করার শক্তি।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২৩
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: এমনই হয়, এমনই হবে, এমনই হয়েছে।যার ক্ষমতা আছে সে দুর্বলের উপর নিজের ক্ষমতা দেখাবেই।
আর আমি সচেতন হলে এমন করতাম না।ঠিকই চলে যেতাম পিচ্চিটাকে সাহায্য করতে। আমার মাথায় চিন্তা ছিল, বাসের সিট হারানোর, বাস থেকে নেমে আবার বাস ধরতে পারার। আমার খারাপ লেগেছে , কিন্তু খারাপ লাগা পর্যন্তই তা রেখে দিয়েছি অন্য মানুষগুলোর মতন। আমরা অনেক স্বার্থপর। নিজের ব্যাপারটাই বুঝি শুধু।
২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২২
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: এমনই হয়, এমনই হবে, এমনই হয়েছে।যার ক্ষমতা আছে সে দুর্বলের উপর নিজের ক্ষমতা দেখাবেই।
আর আমি সচেতন হলে এমন করতাম না।ঠিকই চলে যেতাম পিচ্চিটাকে সাহায্য করতে। আমার মাথায় চিন্তা ছিল, বাসের সিট হারানোর, বাস থেকে নেমে আবার বাস ধরতে পারার। আমার খারাপ লেগেছে , কিন্তু খারাপ লাগা পর্যন্তই তা রেখে দিয়েছি অন্য মানুষগুলোর মতন। আমরা অনেক স্বার্থপর। নিজের ব্যাপারটাই বুঝি শুধু।
৩| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৫১
নতুন বলেছেন: অনুভুতি গুলি ভোতা হয়ে যাচ্ছে..
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২৭
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: আর আমরা দিন দিন পশুদের সমতুল্য হচ্ছি। মানুষের কষ্ট আমাদের আর কষ্ট দেয় না।
৪| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২৩
বেকার সব ০০৭ বলেছেন: আমরা মোবাইল ফোনে ১০ টাকা খরচ করতে ৫ মিনিট সময় লাগে, আর একটি ক্ষুধাত পথচারী শিশুকে ১০ টাকা দিতে হাত কাপে। হায়রে আমার স্বাধীন বাংলাদেশ
একজন সচেতন নাগরিক(যুবক) হিসেবে আপনার উচিত চিল ছেলেটাকে সাহায্য করার।
আমার মাথায় চিন্তা ছিল, বাসের সিট হারানোর, বাস থেকে নেমে আবার বাস ধরতে পারার।
আপনার মত যুবক এই কথা বললে হবে
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২৫
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: হাহা কথাটা আমি কোন হিসেবে বলেছি আপনি বুঝেননি। আমি আমাদের নিজেদের অবস্থা বুঝাবার জন্য কথাটা বলেছি। আমি এতোটা অমানুষ নই যে একটা ছেলে রাস্তায় পরে কাতরাবে আর আমি সিটের আশায় বসে থাকব। ছেলেটা পরে যাবার ১ মিনিটের মধ্যেই খোঁড়া লোকটা চলে এসেছিল। আমি নিজে গরীব ঘরের ছেলে, গরীব মানুষের কষ্ট আমি বুঝি।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫৯
বাংলার দামাল সন্তান বলেছেন: ভাইয়া লেখাটা পড়ে সত্যিই কেন যেন নিজেকে অপরাধী মনে হল, ধরীরা কি সবসময় গরীবদের শোষন করেই যাবে।
আর ভাইয়া আপনিতো একজন সচেতন লোক আপনার উচিত চিল ছেলেটাকে সাহায্য করা।