নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছু মানুষ অন্য মানুষকে মুগ্ধ করার অসীম ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়। আর কিছু মানুষের ভিতর এই ক্ষমতা কখনই আসে না। আমি দ্বিতীয় দলের মানুষ। কাউকে মুগ্ধ করার মত কিছু কখনই করতে পারি না। কেউ অনেক সুন্দর গান গায়, আমি শুধু শুনে যাই। কেউ অনেক সুন্দর নাচে, আমি শুধু হাত তালি দিয়ে যাই। কেউ অনেক সুন্দর লেখে, আমি শুধু ভেবে যাই, কী করে এত ভালো লেখে কেউ? আমিও লিখি। তবে তা কাউকে মুগ্ধ করার মত কিছু না। আমার লেখায় আমার ভালোবাসা ছাড়া কিছুই নেই। পড়াশুনা শেষ, বুটেক্স থেকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বের হয়ে চাকরি, বিয়ে, পেশা পরিবর্তন সব হয়েছে। লেখালেখির ধারাবাহিকতায় চারখানা উপন্যাস অমর একুশে বইমেলায় বেরিয়েছে। টুকরো ছায়া টুকরো মায়া (২০১৫) – সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার । একা আলো বাঁকা বিষাদ (২০১৬) – সামাজিক উপন্যাস । মধ্য বৃত্ত (২০১৮) – ডিটেকটিভ সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার । অভিসন্ধি (২০২০) – ক্রাইম থ্রিলার । দেশটাকে ভালোবাসি অনেক। অনেক মায়া কাজ করে। মাঝে মাঝে ভাবি, সব বদলে দিতে পারতাম। স্বপ্নের মত না, বাস্তবের মত একটা দেশ গড়তে পারতাম …………………………
রাত ৩ টা বাজে। এখনও মশার সাথে যুদ্ধ চলছে। যাক সময়টা খারাপ যাচ্ছে না। কাল পর্যন্ত চুরি করে সারারাত মোবাইল এ কথা বলা ছিল কাজ। আর আজ মশা মারা। মশারি টানিয়েই তো ঘুমিয়েছিল শুদ্ধ। হঠাৎ করে কানের কাছে মশার গানে ঘুম ভেঙ্গে গেল। সবই এভাবে ভেঙ্গে যায়। যাই ভালবাসে তাই ভাঙে। আজ দুপুরে হল রিলেশন ব্রেক আপ, আর এখন ঘুম। কিইবা দোষ ছিল শুদ্ধর? উপমার এমন করে ব্রেক-আপ করতে হবে? মেয়েগুলো না কেমন যেন। প্রেম করলেই ব্রেক-আপ করতে হবে। থাক এসব ভেবে লাভ নেই। তার চেয়ে মশা মারায় মন দিলে কাজে লাগবে। কি করে যে মশারির ভিতর মশা আসে? খুবই রহস্যজনক। যেমন রহস্যজনক শুদ্ধর প্রেমে উপমার পড়া, তার চেয়েও রহস্যজনক ব্রেক-আপ করা। আবার এসব? কোন দরকার নেই। শোয়ার সাথে সাথেই মশার গান কানের কাছে। আর উঠলে খুঁজে পায় না। আজ রাতটা না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেয়া যাক। এমনিতেও খুব মন খারাপ। শুদ্ধর মন খারাপ থাকলে খাওয়া হয় না, পড়া হয় না, ঘুম হয় না। কি আমার মন রে বাবা!!!!!
ডায়েরিটা বের করল শুদ্ধ। উপমা একদিন দিয়েছিল ডায়েরিটা।তাই অনেক যত্ন করেই রেখেছে শুদ্ধ। মাঝে মাঝে কবিতা লিখে ডায়েরিতে, প্রেমের কবিতা। সবগুলোই উপমাকে ভেবে লেখা। লেখার পর সবসময় সবার আগে উপমাকেই শুনায় কবিতা,নামহীন কবিতা, উপমা শুনে নাম দিয়ে দেয় কবিতার। আজও লিখতে বসল। কিন্তু অকারণেই খুব কান্না পাচ্ছে, কিছুই আসছে না লেখার জন্য। শুধু কয়েকটা শব্দ লিখল- কান্না, কান্না, কান্না.....
নিজেকে পাগল প্রকৃতির কেউ বলে মনে হচ্ছে। প্রেম করলে ব্রেক আপ হবেই। এসব নিয়ে এতো মন খারাপ করার কি আছে? সেই দুপুর থেকে মন খারাপ। অনেক বার কান্নাকাটি করল শুদ্ধ।খুব রাগ হচ্ছে নিজের উপর, যতক্ষণ সামনে ছিল উপমা কান্না আসল না, চলে গেল আর টপ টপ করে পানি পড়া শুরু করল। অশ্রু বিসর্জনটা একটু আগে হলে কি ই বা হত? অন্তত দেখতে তো পারত উপমা যে শুদ্ধ ওর জন্য কাঁদছে। চোখের পানিও মন বুঝে না, অবস্থা বুঝে না, এখনও চোখ দিয়ে পানি পড়ছে, তবে তা কোন কাজে আসছে না। অকারণ অশ্রু বিসর্জন।কবিতাটা লিখেই ফেলল শুদ্ধ।
কাঁদবে তুমি, কাঁদবে জানি,
আমার বিদায় বেলা,
দূরে যতই রাখো তুমি,
কর অবহেলা।
চাইবে তুমি, চাইবে জানি,
একদিন আমায় কাছে,
হারিয়ে আমি যাব যখন,
রইব না আর পাশে।
বন্ধু যখন হবে সব,
অনেক অচেনা,
একা তখন চাইবে আমায়,
খুঁজে পাবে না।
মুখ ফিরিয়ে নিবে যখন
কাছের মানুষগুলো,
খুঁজে খুঁজে আমায় তখন,
পাবে কোথায় বল?
আমায় ছাড়া থাকবে তুমি,
থাকবে যাকে ঘিরে,
আমি তবু আছি দেখো,
তোমার চোখের নীরে।
কোথাও নেই আমি তবু,
দেখো তোমার বুকে,
জড়িয়ে থাক যাকে তুমি,
পাবে আমার ছোঁয়াটাকে।
এটাও নামহীন কবিতা, কিন্তু নাম দেয়ার মানুষটা নেই। ছোট খাটো বিষয় নিয়ে এতো রাগ করে? খুব একটা বড় অপরাধ ছিল না। যেতে মাত্র ৩০ মিনিট দেরী। আর যাবার সাথেই সাথেই উপমার ঝাড়ি- আমি আমার এক্সাম বাদ দিয়ে আজ তোমার সাথে দেখা করতে আসছি। আর তুমি কিনা আসছ ১ ঘণ্টা পর দেখা করতে?
- ১ ঘণ্টা না, ৩০ মিনিট।
- চুপ, ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে, দেখতাম কেমন পার। তুমি জানো আমার একটা ক্লাস মিস করলে, একটা এক্সাম না দিলে কত সমস্যা? পড় না তো মেডিকেলে বুঝবা কি করে? পরীক্ষা দাও ১০ মাস পর পর একটা। আর আমাদের প্রতিদিন পরীক্ষা থাকে। আমি ক্লাস, পরীক্ষা বাদ দিয়ে অপেক্ষা করতেছি আর তিনি আসছে ২ ঘণ্টা পর।মোবাইলটাও অফ করে রাখছ।
- ২ ঘণ্টা না, ৩০ মিনিট। আর চার্জ ছিল না মোবাইল এ।
- খুন করে ফেলব তোমাকে আমি। আর একটা কথা বলবে না।
- একটা কথা বলি শুধু?
উপমা কিছু না বলে রাগী মুখে তাকিয়ে আছে।
- বলেই ফেললাম। তোমার আমাকে এভাবে অপমান করা উচিৎ হয় নায়। সারাদিন শুধু এতো এতো পড়া সেই খোঁচা দাও। যেন ডাক্তাররাই শুধু মানুষ, তারাই শুধু পড়ে। আর আমরা গরু ছাগল। শোন তোমরা ডাক্তাররা ১ বছরে যা পড়, আমরা যারা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ি তারা ৭ দিনে তার চেয়ে বেশি পড়ি হুম।
- কি? এত্ত বড় কথা? আমি খারাপ ছাত্রী? আমার বইয়ের একটা পেজ মুখস্থ করে দেখাও তো।
- আমরা ক্রিয়েটিভ মানুষ, মুখস্থ করি না।
- তুমি আমার মুখে মুখে কথা বলতেছ? এতো সাহস কই থেকে পাইছ তুমি?
- তোমার থেকে।
উপমা উঠে দাঁড়াল। শুদ্ধর দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল- আচ্ছা, তাই না? তোমার মোবাইলটা দাও।
- মোবাইল দিয়ে কি করবা?
- দাও বলছি।
শুদ্ধ মোবাইলটা উপমার হাতে দিল। উপমা নিজের মোবাইলটাও বের করল, হাতে ভিতর মোবাইল ২ টা একসাথে নিল। তারপর ধরে সমস্ত শক্তি দিয়ে এক আছাড় মারল মোবাইল ২ টা।ভেঙ্গে চুড়ে শেষ মোবাইল ২টাই।শুদ্ধ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। এই অবস্থার জন্য প্রস্তুত ছিল না শুদ্ধ। হায় হায়, কি করল এটা!
- তুমি এটা কি করলা? এখন আমি তোমার মেসেজ পাব কই? তোমার মেসেজগুলো ঐ মোবাইলে।
- তুই মেসেজের কথা চিন্তা করতেছিস? তুই তো আমাকেই আর পাবি না। শয়তান যেন কোথাকার।
- আমাকে তুই তুই করে বলতেছ কেন? আর তুমি কই যাবা?
- জাহান্নামে যাব। মোবাইল ভাঙলাম যাতে আর কোনদিন যোগাযোগ করতে না পারিস। তুই তোর ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে থাক। আমি গেলাম।I hate you.
- এমন কর না। আমি তো দুষ্টামি করছিলাম। তুমি এতো রেগে আছ আমি বুঝি নায়।
- তোর আর কিছু বুঝতে হবে না। আমি আর তোর সাথে থাকব না।
বলেই হাঁটা শুরু করল উপমা। শুদ্ধ বলল- কই যাও? এই, কোথায় যাচ্ছ? দাড়াও না প্লিজ। আমার ভুল হইছে।
চারপাশের লোকজন তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে খুবই মজার কিছু দেখছে। লোকজনগুলো থাকার আর সময় পেল না। এরা না থাকলে গিয়ে হাত ধরে আটকাত উপমাকে। এতো লোকের মাঝে তা করা যায় না। শুদ্ধ দৌড়ে উপমার পাশে গেল। কিছু বলার আগেই উপমা একটা রিকশাতে উঠল। রিকশা চালক তাকিয়ে আছে শুদ্ধর দিকে। নিশ্চয় ভাবছে, উনি এখনও উঠে না কেন?
উপমা বলল- কি ব্যাপার ? আপনি দাঁড়িয়ে আছেন কেন? যান। মেডিকেল চলেন।
রিকশা চালক বললেন- ভাইজান উঠবে না?
- কিসের ভাইজান? কোন ভাইজান ফাইজান নেই। আপনি যান।
শুদ্ধর খুব খারাপ লাগছে, কষ্ট হচ্ছে। রিকশা ছাড়ার আগে আর একবার বলল- এভাবে যেও না।
উপমা চলে গেল। ফিরেও তাকাল না।
খুবই জেদী মেয়ে উপমা। এতো রাগ থাকা উচিৎ না। আর শুদ্ধ কখনও তর্ক করেনা কিছু নিয়ে, আজ কি হল? এতো কিছু না বললেও হত। আর বেশিই বা কি বলল?
খুব অসহায় লাগছে নিজেকে। মশা মেরে দুঃখ ভোলার বৃথা চেষ্টা করছে শুদ্ধ। মোবাইল টাও নেই। কিভাবে যোগাযোগ করবে? হাতে টাকাও নেই যে কিনবে। কিনেও বা কি হবে? উপমার মোবাইল টাও তো ভেঙ্গে ফেলল।
সকালের দিকে ঘুম আসল শুদ্ধর। ঘণ্টা খানেক ঘুমাল।কি যেন এক আজব স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙ্গে গেল। ঘুম থেকে উঠেই মোবাইল টা খুঁজল, পাবার কথা না। পরে মনে পড়ল মোবাইলটা ব্রেক আপের বলি হয়েছে। মাথাটা খুব ব্যথা করছে , কাল রাতে অকারণেই কাঁদল শুদ্ধ, কষ্ট ধরে রাখতে না পেরে। আর শুদ্ধ কেমন যেন খুব আবেগি ছেলে। এতোটা এমন হওয়া ছেলেদের মানায় না। তাই উপমা একটু কষ্ট দিলেই কান্না পায়, আর এখন তো একেবারেই ব্রেক আপ। আচ্ছা ব্রেক আপের বাংলা কি? হঠাৎ ই অর্থটা জানতে ইচ্ছা করছে।কিন্তু মনে করতে পারছে না। ঝিম ধরে বসে আছে কতক্ষণ থেকে। ব্রাশ হাতে চলে গেল ফ্রেশ হতে শুদ্ধ, আজ বাবার সামনে পরা যাবে না। আম্মুকে কোনমতে বুঝিয়ে বলেছে যে মোবাইল কাল হারিয়ে গেছে, আব্বুকে কোনভাবেই বলা যাবে না।তাহলে খবর আছে, সব কথা আব্বুকে বলা যায় না।
না খেয়ে বের হয়ে গেল শুদ্ধ।
-- --- ----- -----
অনি খুব বেশি কথা বলে। বাসায় এসেই চিৎকার শুরু করল- ঐ উপমা, তোর মোবাইল বন্ধ কেন? কতবার ফোন দিলাম। কী? দাম খুব বেড়ে গেছে? বান্ধবি বলে মনে হয় না? মোবাইল বন্ধ করে রাখা শুরু করছিস ইদানীং?
- আস্তে কথা বল। এতো চিৎকার করার কি আছে? মোবাইল হারিয়ে গেছে।
- কিভাবে রে? ছিনতাই হইছে মোবাইল? তোর কোন ক্ষতি হয় নায় তো?
- ওহ, আস্তে বল। বাসায় শুনলে সমস্যা হবে। চল আজ মোবাইল কিনব নতুন।
অনি আর উপমা মোবাইল আর সিম কিনে দোকান থেকে বের হবার সময় অনিকের সাথে দেখা হল। অনিক, উপমার ছোট বেলার বন্ধু আর শুদ্ধর ক্লাসমেট।
- আরে কারা রে? কি অবস্থা তোমাদের? কতদিন পর দেখা। শুধু শুদ্ধর থেকে গল্পই শুনি কতদিন ধরে। দেখা আর হয় না।
- এইতো ভাল। তুমি কেমন আছ?
- হ্যাঁ ভাল। নতুন মোবাইল কিনলে? শুদ্ধকে গিফট করবে?
- না শুদ্ধর সাথে আমার ব্রেক আপ হয়ে গেছে।
- কি বল? কবে? গত পরশুও তোমার কথা বলল।
- কাল। এসব নিয়ে আর কথা বলতে ইচ্ছা করছে না। আমরা আসি। একটু কাজ আছে তো।
- আচ্ছা যাও। নাম্বারটা দিয়ে যাও। বন্ধুদের মাঝে মাঝে মনে কইর। আমি তোমাকে আর শুদ্ধকে অনেক ভাল বন্ধু ভাবি। কিন্তু তোমরা বুঝ না।
উপমা নাম্বারটা দিয়ে বলে বলল- শুদ্ধ কে দিও না কিন্তু নাম্বার। আর আমার সাথে দেখা হইছে এটাও বলবে না। যতদিন রিলেশন ছিল বলছ ওকে। কিন্তু এখন ব্যাপারটা আলাদা। আচ্ছা বাই, আসি তাহলে।
অনিক নাম্বারটা সেভ করল, " shuddho gf" নাম দিয়ে। ভার্সিটির দিকে যাচ্ছে অনিক। শুদ্ধর থেকে পুরো ব্যাপারটা জানতে হবে। এতো সুন্দর সম্পর্ক দুজনের।ব্রেক আপ হয় কি করে? ভার্সিটিতে অনিক অনেক খুঁজল শুদ্ধকে।অবশেষে পাওয়া গেল একটা চা সিগারেটের দোকানে।খুব মনোযোগ দিয়ে হা করে তাকিয়ে বড় ভাই আর ক্লাসমেটদের সিগারেট খাওয়া দেখছে শুদ্ধ। নিজে খায় না, তবে খাওয়া শুরু করতে হবে, তাই এতো মনোযোগ সহকারে সিগারেট খাওয়া দেখা। ধূমপায়ী গুণীজনদের বাণী, এক টানেই মনের সব দুঃখ কষ্ট দূর হয়ে যায়। শুদ্ধ এখন কষ্টে আছে। তাই এটা করতে হবে। আচ্ছা সত্যি যদি এক টানে সব দুঃখ ভুলে যাওয়া যায় তাহলে তো এক কাজ করা যায়, যারা সুইসাইড করে তাদের সামনে একটা করে সিগারেট নিয়ে বলতে হবে, ভাই একটা টান দিন, তারপর মরার ইচ্ছা থাকলে মইরেন।
শুদ্ধর এসব ভেবে কাজ নেই। ওকে খাওয়া শিখতে হবে। অনিক এসেই শুদ্ধর শেখার মাঝে ব্যাঘাত ঘটাল।
- কিরে পাগলা, কি করিস এখানে?
- শিখতেছি।
- কি শিখিস?
- সিগারেট খাওয়া। ধূমপান করা। আগে দেখব তারপর ধরব।
- মাথা খারাপ হইছে তোর? ঘুষি দিয়ে নাক থেতলে দিব। তুই করবি স্মোকিং? আমারে গাধা পাইছিস?
- সিরিয়াসলি। আমি তো ছ্যাকা খাইছি। তাই মনে খুব কষ্ট। তুই কাছের বন্ধু তাই বললাম। অন্য কাউরে বলিস না।
-আমি তো আগে থেকেই জানি।
- মানে?
- মানে হল, তুই আমার বন্ধু না? তোর মনের খবর আমি রাখি।
- বল তো ধূমপান করার সিদ্ধান্ত টা ঠিক আছে না? তুই তো ভাল জানিস, এক টানেই সব কষ্ট ধোঁয়া হয়ে বের হয়ে যাবে।
- কইসে তোরে? উঠ চল তো। তোরে দিয়ে স্মোকিং হবে না। তুই হাবাগোবা, সহজ সরল ছেলে, তোরে দিয়ে এসব হবে না।আমার সাথে চল, আমি সব ঠিক করে দিচ্ছি।
- এক টান দিয়ে যাই না?
- বললাম না তোরে দিয়ে হবে না। তুই জাতির ভবিষ্যৎ, তোরে পুড়ে ছাই করলে, দেশেই আগুন লেগে যাবে। ওসব আমার মত ফাতরা পোলাপানের জন্য। চল তো আমার সাথে।
শুদ্ধ উঠে আসল। আর ধূমপায়ী হওয়া হল না।
একটা মরা গাছের গুড়ির উপর বসে আছে অনিক আর শুদ্ধ। সব বলল অনিককে। শুদ্ধ আবারও কাঁদছে। কান্নার উপর মানুষের কোন হাত নেই। ইচ্ছা হলেই থামিয়ে রাখা যায় না। কান্না একটি অনৈচ্ছিক পেশী,যাকে ইচ্ছা করলেই নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। ডাক্তাররা শুনলে রাগ করবে, তাই নিজের মনেই নিজের আবিষ্কার রেখে দিল শুদ্ধ। এভাবে কারও জন্য কাউকে কখনও কাঁদতে দেখেনি অনিক। অনিকের নিজেরও খুব খারাপ লাগছে। কি বলে সান্ত্বনা দিবে বুঝছে না। কাউকে সান্ত্বনা দেয়া পৃথিবীর কঠিন কাজগুলোর একটা। কারও কষ্ট দেখলে খুব কষ্ট লাগে। কিন্তু কি বলে সান্ত্বনা দেওয়া উচিৎ, খুঁজে পাওয়া যায় না।
অনিক শুদ্ধর কাঁধে হাত রেখে বলল- এই পাগলা, কাঁদিস কেন? একেবারে ভুঁড়ি ফুটা করে দিব। যাহ, তোর তো ভুঁড়িই নাই। শুটকি মাছ একটা। খাওয়া দাওয়া করে একটু মোটা হ। একে তো খাস না, তার উপর আবার রাত জেগে কান্নাকাটি করে বডি বিল্ডার হইতেছিস। আরে বলদ, বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড হল লোকাল বাসের মত, একটা মিস তো তা নিয়ে মন খারাপ করার কোন দরকার নেই । পিছনে আর একটা আসতেছে, শুধু একটু অপেক্ষা কর। একজন চলে গেছে তাই কেঁদে টেদে এক করে ফেলতেছে। তুই তো লেডিস একটা। কান্নাকাটি করিস।
-হইছে। খালি বকস তোরা। আমার কষ্ট লাগলে আমি কি করব? আমি ভালবাসছি না? ছেড়ে দেবার জন্য ভালবাসছি নাকি? আমাকে ছেড়ে যাবে তো ভালবাসছিল কেন? আর কান্না অনৈচ্ছিক পেশী, ইচ্ছা করে কেউ কাঁদতে পারে না, থামাতেও না।
- মানে কি? তোর মাথা পুরাই শেষ। এতক্ষণ ধরে তোরে কি বুঝালাম? আরে উপমা কি কাঁদতেছে?দিব্বি শপিং করে বেড়াচ্ছে গিয়ে দেখ। এরা মেয়ে, বেশি বুঝতে গেলেই,সব কিছু ভাবলেই পাগল হয়ে যাবি। ঐ মেয়ে তোকে ছাড়া থাকতে পারলে, তুই অ পারবি। তুই কম কিসে? দেখিয়ে দিবি তুই। আমি তোকে সাহায্য করব।
- কি করতে বলতেছিস?
- আমি অনেক ভেবে দেখলাম তোর এই কষ্ট থেকে বাঁচার একটাই উপায়। নতুন প্রেম করা।
- কি বলিস? আমি? সম্ভব না। আমি উপমাকে ভালবাসি।
- যেই মেয়ে তোরে বকা দিয়ে তাড়িয়ে দিছে, তারে তুই ভালবাসিস এখনও? তুই তো দুনিয়ার সবচেয়ে বড় বেহায়া। তুই উপমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে প্রেম করবি। তুই একা কষ্ট পাবি, আর ও পাবে না,এটা হতে দেয়া যায় বল? এটা পুরো ছেলে জাতির মান সম্মানের ব্যাপার।
- দোস্ত, আমি পারব না।
- আরে পারবি। মেয়েটার একটু শাস্তি হওয়া দরকার।তুই কষ্ট পাবি আর সে শপিং করবে, তা তো হবে না। আমি সব ব্যবস্থা করতেছি। তোরে আমি ১০ মিনিটের মধ্যে রিলেশন করাইয়া দিতেছি।
- এতো তাড়াতাড়ি ভালবাসব কি করে? ভালবাসতে সময় লাগে তো।
- মেয়ে সুন্দর। সে তোরে ১০ মিনিটের মধ্যে বাসতে পারলে তোর সমস্যা কি?
- যদি উপমা দেখে ফেলে?
- তুই আসলেই বলদ,ওকে দেখানোর জন্যই তো করবি।
- আমার ভয় লাগতেছে।
- চুপ চাপ বসে থাক। আমি একটু ঐদিক থেকে নীলার সাথে কথা বলে আসি। এসে তোকে ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।
- নীলা কে?
- যার সাথে তুই প্রেম করবি, সে।
অনিক মোবাইল নিয়ে গাছের আড়ালে গেল। কি করছে এসব অনিক? মাথা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে শুদ্ধর। আবার কান্না পাচ্ছে। কিন্তু এবার চোখ দিয়ে পানি বের হল না।
অনিক কিছুক্ষণ পর এসে বলল, সব হয়ে গেছে। মেয়ে রাজি। তোকে উপমাকে দেখিয়ে দিতেই হবে। আমি এখন তোদের কথা বলিয়ে দিচ্ছি। ঐ মেয়েকে বলবি না তোর আগে প্রেম ছিল, তাহলে কিন্তু সব শেষ। মেয়ে খুবই সুন্দর। কথা বলার মাঝখানে বলবি যে,তুই ওর সাথে দেখা করতে চাস, কণ্ঠটা অনেক সুন্দর।ওর নামটা সুন্দর, আর কেঁদে দিস না আবার কথা বলতে গিয়ে।
অনেক কিছু বুঝিয়ে শিখিয়ে দিল শুদ্ধকে। মোটামুটি মুখস্থ করিয়ে দিল।
- আমার না ভয় করে দোস্ত।
- চুপচাপ আমি যা যা বলছি বলবি। আমি তোর বন্ধু, আমি তোর খারাপ চাইব না কখনও। শোন পারলে ওকে একটা রোমান্টিক কবিতাও শুনিয়ে দিবি।
অনিক ফোন করে ধরিয়ে দিল শুদ্ধকে। শেখানো কথা সব বলল শুদ্ধ। নিজের কষ্ট থেকে বাঁচতে হবে, তার জন্য সব করা যাবে।
কথা শেষ হলে অনিক বলল- সাবাস, অসাধারণ বলছিস। নীলা তো পাগল হয়ে গেছে তোর জন্য, আমি নিশ্চিত। দেখা করতে রাজি হইছে?
- হ্যাঁ বলল তো কাল দেখা করবে।
- আরে বাহ, কালকে দেখা হলে প্রপোজ করবি। তারপর একসাথে রিকশা করে ঘুরে বেড়াবি উপমাকে দেখিয়ে। তোকে একজন কম বয়স্ক রিকশা চালকের সামনে অপমান করছে। তোর প্রতিশোধ নিতে হবে না? তোকে ভাইজান, ফাইজান বলছে। কত বড় অপমান। এই সুযোগ আর আসবে না।
শুদ্ধ কিছু বলল না। মাথা নিচু করে চলে গেল অনিকের সামনে থেকে।
অনিক বলল- কাল অবশ্যই দেখা করবি। উপমা তোকে ছাড়া থাকতে পারলে তুই ও পারবি।
--- ---- ----- -----
উপমার মোবাইলে একটা নাম্বার থেকে কল এসেছে। অপরিচিত নাম্বার থেকে।নতুন নাম্বারে কল। উপমা কল ধরল।
- হ্যালো, উপমা? আমি অনিক।
- হ্যাঁ অনিক। কি খবর? বল।
- খবর খুবই খারাপ। তুমি এতোদিন একটা চিটারের সাথে প্রেম করছ। কাল তোমাদের ব্রেক আপ হল আর আজ ই ও একটা মেয়ের সাথে শুরু করে দিছে। ছিঃ ছিঃ।
- বুঝতেছি না তুমি ঠিক কি বলতেছ।
- আরে আমাদের শুদ্ধ, নীলা নামে একটা মেয়ের সাথে প্রেম শুরু করছে। কাল হল ব্রেক আপ। আর আজেকেই। ভাবা যায় ব্যাপারটা কত মারাত্মক?
কথাটা শুনে উপমার বুকের ভিতর কেমন যেন মোচড় দিয়ে উঠল। তবুও নিজেকে সামলে বলল- কি বলতেছ পাগলের মত? শুদ্ধ ওরকম ছেলে না। তোমার ভুল হচ্ছে কোথাও।
- আমিও তো তাই জানতাম। ও কত ভদ্র একটা ছেলে, কিন্তু ভিতরে ভিতরে যে এতো শয়তানি তা কি জানতাম? ও দুনিয়ার বদ।
- থাম। ওকে বদ বলবা না। আন্দাজে একটা কথা বললেই হল? ব্রেক আপ হইছে তো কি? আমি কি মরে গেছি? তুমি ওকে নিয়ে একটা খারাপ কথা বলবা না।
- আমাকে বকে কি হবে? বন্ধু হিসেবে বললাম, যদি বিশ্বাস না হয় কাল সকাল ১০ টায় সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে এসো, দেইখো নিজের চোখে।
উপমা ফোন কেটে দিল। রাগে হাত পা কাঁপছে। কি কারণে এমন হচ্ছে? ব্রেক আপ তো হয়ে গেছে। এখন এমন লাগার মানে কি? উপমা তো এখন আর শুদ্ধকে ভালবাসে না।
শুদ্ধর খুব অস্থির লাগছে। কি করবে? উপমার সাথে কেন যেন কথা বলতে ইচ্ছা করছে খুব। বাহিরে গিয়ে একটা দোকান থেকে কল করল উপমার বাবার নাম্বারে অনেক সাহস করে। উপমার বাবাও উপমার মত রাগী।
- হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল। ভাল আছেন?
- হ্যাঁ, কে বলছ? কাকে চাই?
গর্জন টাইপ একটা আওয়াজ হল ফোনে। বাপ মেয়ে একই রকম। ভয়ে ফোন রেখে দিল শুদ্ধ। পরিবার সুদ্ধ সবই এক রকম নাকি? এটা জিন-গত সমস্যা হতে পারে। সবাই রাগী। আবার মেডিকেলের ভাষায় চলে যাওয়া হচ্ছে। উপমার সাথে থেকে সব কিছুকে মেডিকেলের ভাষায় প্রকাশ করার রোগ পেয়েছে। আবার মেডিকেল? ধাৎ। এর চেয়ে রুমে চলে যাওয়া ভাল। গিয়ে শুয়ে পড়ল শুদ্ধ। বুকের উপর উপমার দেয়া ডাইরি টা নিয়ে আবার কিছুক্ষণ কাঁদল। নিজেকে পুরুষ ভাবতেই লজ্জা লাগছে। পুরুষের মন হবে ইস্পাত কঠিন, আর শুদ্ধর কিনা হাওয়াই মিঠাই এর মত।
---- ---- ----- ----
সকালে ঘুম ভাঙল অনিকের ডাকে। আরে বাসায় অনিক আসল কই থেকে? শুদ্ধকে টেনে উঠিয়ে বলল, রেডি হয়ে নে।
- আমি যাব না।
- একদম বেশি কথা বলবি না। নতুন ড্রেস থাকলে পরে নে, ঐ ছেড়া জুতা পরে যাস না আবার।
শুদ্ধ রেডি হয়ে বের হল অনিকের সাথে। সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে এসে অনিক বলল- শোন, এখানেই আসবে নীলা। ভাল করে কথা বলবি। এই ধর, এই গোলাপ গুলো ওকে দিবি। আর ভয় পাবি না একদম।
নীলা হয়ত আসবে একটু পর। তার আগে উপমাকে ফোন দেয়া দরকার। উপমাকে অনিক ফোন দিয়ে বলল- উপমা, আসো না একবার। দেখে যাও, তোমার এক্স বয়ফ্রেন্ড কি করছে।
উপমা তার কিছুক্ষণ পরেই আসল সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে। শুদ্ধ এখনও দাঁড়িয়ে আছে নীলার জন্য। হায় আল্লাহ, ওটা কে আসতেছে? শুদ্ধ লুকানোর জায়গা খুঁজছে। উপমা এখানে কি করছে? নিশ্চয় কারও সাথে প্রেম করতে আসছে। না, ছিঃ ছিঃ, উপমা এমন মেয়ে না। উপমা শুদ্ধর দিকেই আসছে। এসে ঠোঁট কামড়ে রাগী রাগী মুখে দাঁড়াল শুদ্ধর সামনে।
- এই, এই জায়গায় কি তোমার?
- মানে, কিছু না তো।
- প্রেম করতে আসছ? একদিন হয় নায় ব্রেক আপের আর তুমি কিনা আজই প্রেম শুরু করে দিছ? ছিঃ ছিঃ। হাতে কি দেখি তো?
হাত থেকে গোলাপ গুলো টেনে নিল উপমা। নিয়ে বলল- আমাকে তো জীবনে একটা ফুল দাও নায়। আর এতগুলা গোলাপ আনছ ঐ মেয়ের জন্য?
-মানে আমি....আমি না অনিক......
- হ্যাঁ, অনিক। আমি তো ওর কথা বিশ্বাসই করি নায়। ও না বললে তো আমি জানতামই না। প্রেম করা ছুটিয়ে দিব একেবারে। আমাকে চিন তুমি?
- হ্যাঁ, চিনি। তুমি উপমা।
- চুপ, নাম ধরে ডাকে আবার? পা ভেঙ্গে হাতে ধরিয়ে দিব তোমার। কত বড় সাহস, আসছে কিনা অন্য মেয়ের সাথে প্রেম করতে। তোমাকে এতো বড় সাহস কে দিছে? ব্রেক আপ হইছে তো কি হইছে? তুমি জানো না আমি তোমাকে ভালবাসি? আমি তো অভিমান করে চলে গেছিলাম। অভিমান কি সারাজীবন থাকে? আমি প্রতিদিন কাঁদছি তোমার জন্য, আর তুমি আসছ এখানে প্রেম করতে। একবারও ভাবলে না আমার কথা?
রাগী মুখটায় হঠাৎ একটা মায়া চলে এসেছে উপমার। চোখ ভিজে আসছে। কাজল দেয়া চোখগুলো পানিতে টলটল করছে। রাগের মধ্যে এই মায়াময় চেহারায় দেখতে অন্য রকম লাগছে উপমাকে।শুদ্ধর বুকের ভিতর কেমন যেন করছে।এই উপমাকে চিনে না শুদ্ধ, এই রূপ উপমার দেখেনি কখনও। চোখে কখনই পানি দেখেনি উপমার। তাই মনে মনে ভেবে নিত, কষ্ট শুধু শুদ্ধর একা হয়, উপমা কষ্ট দিয়ে আর কষ্ট পায় না। ঐ রাগের আড়ালেও যে কত ভালবাসা ছিল, শুদ্ধ হয়ত কখনই তা বুঝতে পারে নি।উপমার চোখের দিকে তাকিয়েই বলল-আমি কিছু করি নায়। অনিক আমাকে উল্টাপাল্টা বুঝিয়ে নিয়ে আসছে। আমিও তো তোমাকে ভালবাসি এখনও। আর তুমি খালি একা কাঁদছ না? আমিও কাঁদছি, অনিক সাক্ষী।
- অনিক? ও তোমাকে প্রেম করিয়ে দিয়ে আবার আমাকে খবর দিছে? কি রকম বেয়াদব।
উপমা মোবাইল করল অনিককে। অনিক ধরে বলল- শুধু শুধু অভিমান করে লাভ কি বল? যাকে ছাড়া থাকতে পারবে না, তাকে দূরে ঠেলে দেবার কি দরকার? তার হাত ধরেই থাক না সারাজীবন। ঐ বদ শুদ্ধটা অনেক ভাল একটা ছেলে, অনেক সহজ সরল। তোমাকে অনেক ভালবাসে, তুমি একটু কষ্ট দিলেই ভেউ ভেউ করে কাঁদে। ওকে কষ্ট দিও না।আর শোন, নীলা হল আমার গার্লফ্রেন্ড। আমরা ২ জন মিলেই এই কাজটা করলাম। বুদ্ধিটা নীলার আর কাজগুলো আমার। ধন্যবাদ দিও না, বকা দিতে পার। আমি ভাল মানুষ না, অনেক বদ অভ্যাস আমার। শুদ্ধর মত এতো শুদ্ধ আমি না কিন্তু আমার বন্ধুদের আমি অনেক ভালবাসি। শুদ্ধর মুখ থেকে তোমাদের লাভ স্টোরি শোনা মিস করব, তাই কাজটা করলাম। পাগলাটাকে কষ্ট দিও না, বাচ্চা বাচ্চা একটা ছেলে, একটু ভুল করছে মাফ করে দাও। রাখি রাখি আমি, আমার ডেটিং আছে আজ নীলার সাথে।
উপমার রাগী মুখটা পুরোপুরি শান্ত। উপমা গিয়ে শুদ্ধর হাতটা ধরল। শুদ্ধ তো অবাক চারাপাশে এতো মানুষের মাঝে!!!!
উপমা বলল- আর এমন করবে না তো?
- কেমন?
- আমাকে রাগিয়ে দিবে না। আমার রাগ বেশি জানো না তুমি? রাগাও কেন আমাকে?
- আর কখনও রাগাবো না। আচ্ছা আমাদের সব কিছু কি ঠিক হয়ে গেল?
- কেন খুব কষ্ট হচ্ছে নীলার জন্য?
- না না। কি বল এসব? আমি তো তোমাকে ভালবাসি।
- হ্যাঁ মনে থাকে যেন। আর এমন বন্ধুর কথা শুনে দৌড়ে প্রেম করতে চলে এসো না। তাহলে কিন্তু পা ভেঙ্গে সারাজীবন তোমার ডাক্তারি করব।
- আচ্ছা।
- তুমি বস, আমি তোমার কোলে মাথা রেখে শুব।
- এতো লোকের ভিতর?
-কিছু হবে না।
শুদ্ধর কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে উপমা। একবার আকাশ আর একবার শুদ্ধর মুখ দেখছে। দুইটায় অনেক মিল আছে। কিন্তু কোথায় তা খুঁজে পাচ্ছে না উপমা।থাক খুঁজে পেতে হবে না, কিছু জিনিস অজানা থাকলেই ভালবাসা বাড়ে।
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫১
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১২
সহন বলেছেন: