নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফেসবুকে আমি - রিয়াদুল রিয়াদ (শেষ রাতের আঁধার)

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার )

কিছু মানুষ অন্য মানুষকে মুগ্ধ করার অসীম ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়। আর কিছু মানুষের ভিতর এই ক্ষমতা কখনই আসে না। আমি দ্বিতীয় দলের মানুষ। কাউকে মুগ্ধ করার মত কিছু কখনই করতে পারি না। কেউ অনেক সুন্দর গান গায়, আমি শুধু শুনে যাই। কেউ অনেক সুন্দর নাচে, আমি শুধু হাত তালি দিয়ে যাই। কেউ অনেক সুন্দর লেখে, আমি শুধু ভেবে যাই, কী করে এত ভালো লেখে কেউ? আমিও লিখি। তবে তা কাউকে মুগ্ধ করার মত কিছু না। আমার লেখায় আমার ভালোবাসা ছাড়া কিছুই নেই। পড়াশুনা শেষ, বুটেক্স থেকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বের হয়ে চাকরি, বিয়ে, পেশা পরিবর্তন সব হয়েছে। লেখালেখির ধারাবাহিকতায় চারখানা উপন্যাস অমর একুশে বইমেলায় বেরিয়েছে। টুকরো ছায়া টুকরো মায়া (২০১৫) – সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার । একা আলো বাঁকা বিষাদ (২০১৬) – সামাজিক উপন্যাস । মধ্য বৃত্ত (২০১৮) – ডিটেকটিভ সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার । অভিসন্ধি (২০২০) – ক্রাইম থ্রিলার । দেশটাকে ভালোবাসি অনেক। অনেক মায়া কাজ করে। মাঝে মাঝে ভাবি, সব বদলে দিতে পারতাম। স্বপ্নের মত না, বাস্তবের মত একটা দেশ গড়তে পারতাম …………………………

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) › বিস্তারিত পোস্টঃ

পিচ্চিগল্পঃ না দেখা, বা দেখা

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২১

- কি কর?

- এইতো গল্প লিখি।

- গল্প লিখ? তুমি? তুমি আবার গল্প লিখতে পারো নাকি?

- না, ঠিক পারি না। তবে চেষ্টা করতেছি।

- এই ভুত কে ঢুকালো মাথায়?

- তেমন কেউ না। আমি নিজে থেকেই চেষ্টা করতেছি।

- আচ্ছা দেখাও কি লিখছ।

- গত ৩ দিন ধরে লিখতেছি।

- আচ্ছা বুঝলাম, পড়ে শুনাও।

- একটি টি শার্ট, তাহার উপর সোয়েটার, তাহার উপর আরও একটি টি শার্ট। পায়ে মুজো। দুটি কম্বল শরীরের উপর। এবং কোলবালিশ কেচকি মারিয়া, পায়ের মাঝে রাখার পরও, শীত অনুভব করিতেছি।





চুপ করে গল্প শুনছে নিধি। কিন্তু হঠাৎ করেই থেমে গেল আশিক। নিধি মুখে বিরক্তি ফুটিয়ে বলল, কি হল? থামলে কেন?

- এতোটুকুই লিখলাম।

- তিন দিনে এতোটুকু?

- হ্যাঁ। আসলে গল্প লেখা খুবই কঠিন কাজ। ভেবে ভেবে বের করতে হয়, কি লিখব। চিন্তার গভীরে যেতে হয়। অনেক চিন্তার পর এই লিখলাম।

- তা এটা কি ধরনের গল্প?

- এই ধর, রোমান্টিক, রহস্য, বিরহ সব থাকবে।

- ভাষা সাধু কেন?

-হয়ে গেছে। লিখতে বসলে ভাষা কিভাবে যেন সাধু হয়ে যায়।

- আহা, কি কথা। কেচকি কি জিনিস?

- আছে এক জিনিস। তুমি বুঝবা না।

- তাই?

- হ্যাঁ। জানো, গত তিনদিন ঘুমাই না। ২ দিন গেল, গল্পে কি লিখবো ভাবতে। আর একদিনে এই লিখলাম।

- কি বল? এসব করতে কে বলছে?

- কেউ বলে নি।কিন্তু আমি তোমার কাছে একটু স্পেশাল হতে চাই। আমার ভিতর স্পেশাল কিছুই নেই। আমার খুব কষ্ট হয়। আমি তোমাকে অবাক করে দেবার মত, কিছুই করতে পারি না কখনও।





আশিক,মাথা নিচু করে বসে আছে। হাতের ভিতরে নিজের লেখা, গল্পটার শুরু মুচড়ে মুচড়ে বলের মত বানিয়ে ফেলছে। চোখটা কারণ ছাড়াই ভিজে আসছে।মনে মনে খুব করে চায়, নিধিকে চমকে দেবার মত কিছু করতে পারত। মাঝে মাঝে বেসুরো গলায় গান শুনায়। নিধি মুগ্ধ হয়ে শুনে। তবু আশিক জানে, মুগ্ধ করার মত কিছু আশিক গায় না। অনেক বড় বড় কবিতা , রাত জেগে মুখস্থ করে, নিধিকে শুনায়। ঠিক আবৃতি না। আশিক তা পারে না। তাই নিধির মুগ্ধতাও আসে না, আশিক জানে। নিধি ভালবেসে মুগ্ধ হবার অভিনয় করে। একটু খুশি করতে চায়, আশিককে।

নিধি আলতো করে আশিকের হাত ধরল। আশিকের নিচু মাথা, উপরে উঠিয়ে তাকাল।চোখগুলো এখনও ছলছল করছে। নিধি নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে, আশিকের চোখের দিকে তাকাল।

- আমি কখনও বলছি তোমাকে, যে আমাকে অবাক করে দাও। চমকে দাও। স্পেশাল কিছু কর?

- না বল নি। তবুও আমার তো ইচ্ছে করে। তোমাকে ভালবেসে কিছু করতে।

- কত কিছুই তো কর। দেখো, যদি শিল্পী হত, শুধু গান শুনাত। যদি আবৃতি পারত তবে শুধু কবিতা শুনাত। যদি লেখক হত তবে শুধু গল্প শুনাত। আর তুমি আমাকে সবগুলোই দিচ্ছ। হোক, একটু আবল তাবোল।তাতে কি? অন্য কারও ভাল লাগার তো দরকার নেই। আমার এসব কত ভাল লাগে তুমি জানো? এসবে যে তোমার ভালবাসা আছে। এই ভালবাসাই তো আমি চাই। গান ছুঁয়ে ভালবাসা, ঐ কবিতা ছুঁয়ে ভালবাসা, ৩ দিন ধরে এক পাতা জুড়ে ভালবাসা। আর এই হাত ছুঁয়ে ভালবাসা।





আশিক অপলকে তাকিয়ে আছে নিধির দিকে।দু চোখের জল, নাকের পাশ বেয়ে পড়ছে। এই জল আনন্দের না কষ্টের আশিক জানেনা। নিধি হাতটা আর একটু জোরে চেপে বলল, হইছে, আর বাবুদের মত কাঁদতে হবে না। বুড়ো গাধা। এখন একটা গান শুনাও। নূপুর গানটা। এই গানটা তোমার গলায় অনেক সুন্দর লাগে।

- এখন?

- হ্যাঁ এখন।

- হাসবা না কিন্তু।

- হিহি। না, হাসব না বাসব। ভালবাসব। গান শুনাও।





আশিক গান গেয়ে শুনায়। এক পায়ে নূপুর গানটা। নিধি আশিকের চোখের দিকে তাকিয়ে, হাত ধরে শুনে। আশিকের এই প্রথম মনে হচ্ছে, মুগ্ধতা আনতে পেরেছে। নিধি সত্যি মুগ্ধ হয়ে শুনছে। সবার কাছে যা, ভালবাসার মানুষের কাছে তা হয় না। কিছু অগোছালো ভাবনায়, এলোমেলো সুরে, শব্দে, ভালবাসায় মুগ্ধতা আসে। শুধু হৃদয় থেকে এই সুর শব্দে ভালবাসা থাকতে হয়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২১

স্বপনচারিণী বলেছেন: ভালবাসা হয়তো এমনই, সহজ-সরল। খুব ভাল লেগেছে।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৩

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: ভালবাসায় অনেক জটিলতাও আছে। তবুও সহজ সরল ভালবাসায়, ভালবাসা পূর্ণতা পায়। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.