নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছু মানুষ অন্য মানুষকে মুগ্ধ করার অসীম ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়। আর কিছু মানুষের ভিতর এই ক্ষমতা কখনই আসে না। আমি দ্বিতীয় দলের মানুষ। কাউকে মুগ্ধ করার মত কিছু কখনই করতে পারি না। কেউ অনেক সুন্দর গান গায়, আমি শুধু শুনে যাই। কেউ অনেক সুন্দর নাচে, আমি শুধু হাত তালি দিয়ে যাই। কেউ অনেক সুন্দর লেখে, আমি শুধু ভেবে যাই, কী করে এত ভালো লেখে কেউ? আমিও লিখি। তবে তা কাউকে মুগ্ধ করার মত কিছু না। আমার লেখায় আমার ভালোবাসা ছাড়া কিছুই নেই। পড়াশুনা শেষ, বুটেক্স থেকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বের হয়ে চাকরি, বিয়ে, পেশা পরিবর্তন সব হয়েছে। লেখালেখির ধারাবাহিকতায় চারখানা উপন্যাস অমর একুশে বইমেলায় বেরিয়েছে। টুকরো ছায়া টুকরো মায়া (২০১৫) – সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার । একা আলো বাঁকা বিষাদ (২০১৬) – সামাজিক উপন্যাস । মধ্য বৃত্ত (২০১৮) – ডিটেকটিভ সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার । অভিসন্ধি (২০২০) – ক্রাইম থ্রিলার । দেশটাকে ভালোবাসি অনেক। অনেক মায়া কাজ করে। মাঝে মাঝে ভাবি, সব বদলে দিতে পারতাম। স্বপ্নের মত না, বাস্তবের মত একটা দেশ গড়তে পারতাম …………………………
ছাদের রেলিংটা একদম ভেজা। কিছু আগেই বৃষ্টি হল। ছাদের নানা জায়গায় এখনও পানি জমে আছে। ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি এখনও পড়ছে। নাকের উপর, চোখের উপর, গালের উপর, চুলের উপর, রেলিং ধরে রাখা তাহেরের হাতের উপর পড়ছে বৃষ্টির ফোঁটা। সাত তলা বিল্ডিংটার উপর থেকে নিচে দেখা যাচ্ছে না কিছু। অন্ধকার। একদম গুটগুটে অন্ধকার। একটু বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ চলে যায়। বৃষ্টি থামার পরও বিদ্যুৎ আসার নাম নেই। গালটা মুছল তাহের। গালের উপরের পানি। এই পানি চোখের পানি না। বৃষ্টির পানিই। চোখ দিয়ে এতো সহজে পানি পড়ে না তাহেরের। অনেক কষ্ট পেলেও না, অনেক ব্যথা পেলেও না, অনেক অপমানেও না। আজ আবার মরতে ইচ্ছা করছে তাহেরের। কয়েকদিন পর পর মনের ভিতর এই ইচ্ছা জাগে। নানা সময় নানা রকম ভাবে মরার চেষ্টা করলেও, প্রতিবার কেন যেন ব্যর্থ হয়। ঠিক মরে যাওয়া হয় না। এইতো গতমাসে এক বন্ধুর থেকে শুনল, ঘুমের ওষুধ এক পাতা খেলে সাবার। একেবারে শান্তির মরা। কিনে আনল এক পাতা ঘুমের ওষুধ। এনে রেখে দিল টেবিলে। রুমমেট এক বন্ধু সেখান থেকে,সর্দির ওষুধ হিসেবে ২ টা খেয়ে নিল। তাহেরের হাতে আর ৮ টা ট্যাবলেট। তাই এক এক করে খায়। ৬ টা খেয়ে মনে হল, ২ টা থাক। ৬ টা খেয়ে ঢলতে ঢলতে ঘুমিয়ে গেল। খানিক পর প্রচণ্ড অস্বস্তি। মরে নি তাহের। কেমন নেশা নেশা ভাব। শরীরের ভিতর কেমন যেন অস্বস্তি লাগে। রুমমেট বন্ধুরা এসে টানাটানি করে, উঠিয়ে বসায়। তাহের আবার ঢলে পড়ে, বিড়বিড় করে কি সব বলে। বন্ধুদের অশ্লীল ভাষায় বকা দেয়। তিন দিন অমন নেশা নেশা ভাব থাকে। ঘুমায়, আবার উঠে পাগলামি করে। ডাক্তার দেখানো হয়, ডাক্তার কি পচা একটা ওষুধ খাইয়ে দেয়, সাথে সাথে বমি। তিন দিন পর সুস্থ হয়ে, তাহেরের মাথায় কিছুই থাকে না, এই তিন দিন কি করেছে। তবে বেশ বুঝতে পারছিল, খুব কষ্ট হচ্ছিল। ঘুম হচ্ছিল না। আর কখনও ঘুমের ওষুধ না খাবার সিদ্ধান্ত তাই নিয়ে ফেলল তাহের।
আজ মনে মনে ঠিক করেছে, ছাদ থেকে লাফ দিবে। লাফ দিয়ে মরে যাবে। আজ অকারণে মরতে চাইছে না তাহের। খুব বড় একটা কারণ আছে মরে যাবার পিছনে। এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে, তাহেরকে দিয়ে আসলেই কিছু হবে না। কষ্ট হচ্ছে তাহেরের। আজ পরীক্ষার রেসাল্ট দিল। ৬ বিষয়ের সবকটাতে ফেল। ভাবতেই লজ্জা লাগছে। অবশ্য পাশ করার মত পরীক্ষা দিয়েছিল তা না। কোনদিন বই ধরেও দেখেনি। তাহেরের জীবনের লক্ষ্য কি তাহের জানে না। তাহেরের কি করতে ভাল লাগে তাও জানে না। তাহেরের রুমমেট শাকিল, ভাল ছাত্র। পরীক্ষায় বরাবর ভাল ফলাফল। ওর জন্মই হয়েছে মনে হয় পড়ালেখার জন্য। সারাদিন বইয়ের সাথে লেপ্টে থাকে। আরেক রুমমেট রেজা, সারাদিন টিউশনি করার। অনেক টাকা উপার্জন করে। বাকি সময় প্রেমিকা নিয়ে ঘুরে। সুন্দরী এক প্রেমিকা আছে, তার সাথে ঘুরে ঘুরে টাকা খরচ করে। অন্য একজন উজ্জ্বল। বাবার টাকা দিয়ে সমাজ সেবা করে। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে অসহায় মানুষকে টাকা দান করে। ছোট বাচ্চাদের, সপ্তাহে একদিন আজিমপুর গার্লস স্কুলের সামনে পড়ালেখা করায়। এই বাচ্চাদের পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ নেই। তাই পড়ালেখার বিনিময়ে তাদের খাবার দেয়া হয়। এতেই এরা ছুটে আসে। পড়তে না, খেতে। নিয়মিত থিয়েটার করে, আবৃতি করে। বাকি রইল তাহের। তাহের সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকে। কিছুই করে না। না করে ক্লাস, না পড়াশুনা, না প্রেম, না টিউশনি। সমাজ সেবা, তাও সম্ভব না। গরীব রকম কেউ হাত পাতলে, তাহেরের মনে হয়, এই লোক সত্যি গরীব তো? নাকি ভং ধরছে? ভেবে পায় না আসলে, তাহের বেঁচে আছে কি কারণে? একটা কাজ শুধু করে, একটার পর একটা সিগারেট ধরায়, আর সারাদিন তা টানে। মাঝে মাঝে শাকিলকে ডেকে বলে, বন্ধু, আমার কি মনে হয় জানিস? আমার তো জীবনের কোন লক্ষ্যই নাই। মাঝে মাঝে ভাবি, আমি পৃথিবীতে আসছিই শুধু সিগারেটের পাছা টানার জন্য।
শাকিল বিরক্ত ফুটিয়ে বলে, পড়ালেখা কর। আর আমি বলছি না, আমার সাথে পচা কথা বলবি না?
- কি পচা কথা বললাম?
- সিগারেট ভাল। সিগারেটের সাথে ঐটা বলার কি দরকার?
- কোনটা? সিগারেটের পাছা?
- হ্যাঁ।
- ঐটা তো তোমারও আছে, আমারও আছে। পচা কথা হইল কি করে?
শাকিল বিরক্ত নিয়ে পড়তে শুরু করে। তাহেরের মুখের পচা কথা শুনতে ভাল লাগে না। তাহের একটু পর আবার বলা শুরু করে, বন্ধু শাকিল, দিবা দুইটা টান?
- তাহের, তুই আমাকে এতো বিরক্ত করিস কেন? কত পড়া বাকি।
- এতো পড়ে বন্ধু কি হয়? এর চেয়ে একটু প্রেম কর। রাতের বেলা কথা বলবি, কোলবালিশ জড়িয়ে। আমি পাশে গিয়ে শুনব।
- ওহ। তুই চুপ করবি?
- চুপ তো করতেই চাই। এতো বার মরতে চাই, কিন্তু কেন যে মরতে পারি না।
- তুই এমন করিস কেন তাহের?
- আমার কিছুই ভাল লাগে না। সব অসহ্য। দুনিয়াটাই অসহ্য।
তাহেরের খারাপ লাগা পৃথিবীটা আরও খারাপ লাগে, যখন পরীক্ষায় ফেল করে। না পড়লেও ঠিক পরীক্ষা দিতে যায়। সুন্দর করে খালি খাতা জমা দিয়ে চলে আসে। জানে ফেল করবে। খালি খাতায় শিক্ষকরা মার্কস দিবেন কেন? তবুও রেসাল্ট দিলে খারাপ লাগে। খারাপ লাগে এই ভেবে, তাহের সব বিষয়ে ফেল। বাসায় ফোন দিয়ে বলে, মা টাকা লাগবে। জরিমানা দিব।
- কিসের জরিমানা?
- ফেল করছি।
- আবার ফেল করছিস তুই? প্রাইভেটে ভর্তি করছি এমনিতেই কত গুলা টাকা খরচ করে। আবার ফেল করে করে জরিমানা। আমি টাকা দিতে পারব না। তোর আব্বুর কাছে বলে, তুই নে।
মায়ের কাছে এটা স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে গেছে। তাহের ভার্সিটিতে ভর্তির পর থেকে নিয়মিত ফেল করে। আসলে তাহের কেন যেন খুঁজে পাচ্ছে না, জীবনের আনন্দের উৎস। ঠিক এমন ছিল না তাহের। পড়ালেখায় ভালই ছিল। ইন্টার পরীক্ষার সময়, এক মেয়ের সাথে ভালবাসার সম্পর্ক হয়। মিমি নাম। ভালবাসায় ভালবাসা অনেক দূর চলে যায়। রাত জেগে কথা বলা, সপ্তাহে তিন চার দিন দেখা করা। রিকশা করে বাতাস লাগিয়ে ঘুরে বেড়ানো। কাঁধে মাথা রেখে বসে সময় কাটানো। দেখা হলেই একটা করে ছোট কাগজে, ভালবাসি লিখে দেয়া। একটু মান অভিমানেও ভালবাসা। এরপর হুট করে একদিন তাহেরের মনে হয়, মিমিকে আর ঠিক ভাল লাগছে না। মিমিকে ঠিক ভালবাসা যায় না। প্রেম ভালবাসা মানে সময় নষ্ট। প্রেম ভালবাসা অপ্রয়োজনীয় জিনিস। মিমিকে একদিন না করে দেয়। মিমি মেয়েটা কাঁদে অনেক। জানতে চায়, কেন ছেড়ে যেতে চায়? তাহের বলে, ভালবাসা সম্ভব না। মিমি কষ্ট নিয়ে চলে যায়। দূরে অনেক দূরে। তাহেরের সাথে আর যোগাযোগ রাখে না। কিছুদিন যেতে না যেতেই তাহেরের আবার শুন্য মনে হয় বুকের ভিতর। মনে হয় মিমিকে ছাড়া থাকা সম্ভব না। মিমিকে দরকার , অনেক বেশি প্রয়োজন। মনের কথাগুলো বলার জন্য, বন্ধু হিসেবে পাশে রাখার জন্য, ভালবাসার জন্য। কিন্তু মিমি হারিয়ে গেছে। মিমিকে খুঁজে পায় না তাহের। মিমিকে ছাড়া প্রচণ্ড হতাশা বোধে ভুগে। বার বার মনে হয়, মিমিই জীবনের সব। অনেক দিনের পরিচিত মানুষ গুলোকে প্রচণ্ড অসহ্য লাগে। কারও সাথে ভাল করে কথা বলতে ইচ্ছা করে না। কথায় কথায় খারাপ খারাপ বকা দেয়। খারাপ কথা বলে। কয়েকদিন পর পর মরে যেতে ইচ্ছা করে। জীবন মনে হয় অর্থহীন, একদম অর্থহীন। নিজেকে খুব অপরাধী লাগে। বার বার মনে হয়, মিমিকে কষ্ট দেবার শাস্তি পাচ্ছে তাহের।
ঠিক কোন কিছুই ভাল লাগে না। কোন কিছুতে আগ্রহ নেই। ছন্নছাড়া জীবন চলছে। তাহেরের পাগলামিতে বন্ধুরা এক দিন তাহেরকে নিয়ে যায়, এক সাইকোথেরাপিস্ট এর কাছে। সব দেখে শুনে, সাইকোথেরাপিস্ট বলেন, তাহের ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডারে ভুগছে। হতাশার কারণে আনন্দ কমে যাচ্ছে। আনন্দের জায়গা দখল করে নিচ্ছে বিরক্তি। ইচ্ছে করছে মরে যেতে। কিছু ওষুধ দিয়ে দেন তিনি। লুডিওমিল, লেটজিল কিসব ট্যাবলেট। সাথে অনেক সময় নিয়ে বুঝান তাহেরকে। আসতে বলেন আবার, এক মাস পর। তাহের রুমে এসে জানালা দিয়ে ফেলে দেয় ট্যাবলেট গুলো। আর যায় না দেখা করতে। দেখা করে লাভ নেই। এর চেয়ে মরে যাওয়া ভাল। মরে গেলেই সব দুঃখ কষ্ট থেকে একদম মুক্তি। চিরতরে মুক্তি। মনের মধ্যে আর উঁকিঝুঁকি দিবে না, কষ্ট গুলো। বাবার আর খরচ করতে হবে না, এমন অপদার্থের পিছনে, লাখ লাখ টাকা। মিমিও খুব শান্তি পাবে, যখন শুনবে ওকে কষ্ট দেয়া মানুষটা মরে গেছে। সবচেয়ে বড় কথা, তাহেরের আর এই অসহ্য পৃথিবী দেখতে হবে না। সহ্য করতে হবে না, অসহ্য মানুষগুলোকে। তাহেরের মনের ইচ্ছা, অনেক দিনে ইচ্ছা , মরে যাওয়া পূরণ হবে। তাহেরের মনে মনে ভাবতেই ভাল লাগছে। এবার আর বেঁচে থাকার কোন, সম্ভাবনা নেই। ছাদ থেকে লাফ দিবে। পড়ে যাবে। সাথে সাথে মৃত্যু। মরার আগে একটা সিগারেট খাওয়া দরকার। জীবনের একমাত্র আপন জিনিসটা। তাহের একটা সিগারেট ধরিয়ে টান দিল। ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছে ধোঁয়া। আর আস্তে করে বলল, একজন ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার রুগি মারা যাচ্ছে। হাহা।
শব্দ করে হাসছে তাহের। চারপাশে অন্ধকার। খুব অন্ধকার। এই অন্ধকারে হারিয়ে যাবে তাহের। এই অন্ধকারে একটু আলো জ্বলে উঠল, তাহেরের জিন্সের পকেটে। কে যেন কল করেছে। মরে যাবার আগে কারও সাথে কথা বলা উচিৎ না। মোবাইলটা বের করল ফেলে দেবার জন্য। নাম্বারটা অপরিচিত। ধরার প্রশ্নই উঠে না। তবুও কেন যেন রিসিভ করল তাহের। ওপাশ থেকে শান্ত কণ্ঠে কেউ বলল, কেমন আছ?
কণ্ঠটা অনেক পরিচিত। অনেক মায়া কণ্ঠটায়। তাহের বলল, ভাল আছি।
- কি করছ?
- মারা যাব তো। ছাদে উপর দাড়িয়ে আছি। সিগারেটটা শেষ হলেই, ছাদ থেকে লাফ দিয়ে মরে যাব।
- তাই? তা মরে যাবার কারণ শুনি?
- পরীক্ষায় ফেল করছি। ৬ বিষয়ের সব গুলায়।
- ভার্সিটিতে ফেল করতেই পার। ফেল না করলে, ছাত্র কিসের? এতে মরে যাবার কিছু নেই।
- আমার জীবন অসহ্য লাগছে। ভাল লাগছে না। আমার কাউকেই সহ্য হয় না। আমার জীবনের কোন অর্থ নেই।
- কে বলছে তোমাকে?
- আমিই বললাম।
- নিচে যাও তো। সিগারেট ফেলে দাও। রুমে গিয়ে কথা বল।
তাহের হাতের সিগারেট ফেলে দিল। কেন যেন ওপাশের মেয়েটার কথা শুনতে ইচ্ছা করছে। পায়ের নিচে বৃষ্টির পানি মাড়িয়ে, তাহের আস্তে আস্তে চলে যাচ্ছে। রেলিং থেকে দূরে। রুমে চলে যাবে। ওপাশের পরিচিত কণ্ঠটার মায়াময় কথাগুলো শুনবে।
ওপাশ থেকে বলে যাচ্ছে, তুমি কি আমার জন্য একটা, ছোট চিঠি লিখতে পারবে? এমন হবে, যে তুমি অনেক ভুল করেছ, ভুল গুলো যেন আমি শুধরে দেই।
- হুম পারব।
তাহেরের হুট করে মনে হল, জীবনের মানে আছে। অর্থ আছে। বেঁচে থাকার কিছু আছে। মরে যাওয়া মানে হেরে যাওয়া। বেঁচে থাকা মানে, কাউকে নিয়ে বাঁচা মানে, জীবনের অর্থ পাওয়া। তাহেরের কেন মনে হচ্ছে এসব, জানে না। তবুও মনে হচ্ছে। বাঁচতে ইচ্ছা করছে। সুস্থ হতে ইচ্ছা করছে। হয়ত কারও জন্য। কিংবা নিজের জন্য। ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার রুগি হয়ে নয়, মানুষ হয়ে। সুখী মানুষ হয়ে।
জীবনে দুঃখ কষ্ট থাকে। হতাশা থাকে, বেদনা থাকে। অল্প কিছু পাওয়ার ভিড়ে, হয়ত অনেক না পাওয়া থাকে। তাই বলে জীবনে হেরে যাওয়া নয়। খুব একা মানুষটারও অনেক কাছের কেউ থাকে। জীবনে অমন কাছের কেউ বলে, মনে হয় কাউকে। তাদের আশায়, তাদের সাহসে, জীবন গুলো চলতে থাকে। অনেক হতাশার মাঝেও একটু আশা, সুখ হয়ে ধরা দিতে পারে। সুখ খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত মানুষগুলো , ঠিক একদিন ভাবতে শিখে, দুঃখ নিয়ে থাকা যাবে না। যখন চারপাশটা অনেক অন্ধকার, মেঘে ঢাকা আকাশ, চাঁদের আলো নেই। তখনও হয়ত অমন করে জ্বলতে উঠতে পারে মোবাইলের বাতিটা। একটু আশা হয়ে, বদলে দিতে পারে জীবনটা। বৃষ্টিতে ভিজলে ঠাণ্ডা লাগে, সর্দি জ্বরে মানুষ ভুগে। আবার এই বৃষ্টিতে হুট হাট মন থেকে চায়, আকাশের দিকে তাকিয়ে ভিজতে। নাক, চোখ ভিজিয়ে বলতে, বৃষ্টি অনেক ভালবাসি। শুধু ভাবনার পার্থক্য। শুধু সুখ খুঁজে নেয়ার তারতম্য।
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:২৭
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: ধন্যবাদ।
ভাল লাগা মন্তব্যে।
২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৩১
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: +++
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:২৯
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৩৭
হাসান বিন নজরুল বলেছেন: একজন উদ্ভ্রান্ত পথিকের পথচলা ভালো লেগেছে
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:২৯
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন:
ধন্যবাদ।
৪| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৩১
এনামুল রেজা বলেছেন: গল্পের টপিক খুব বাস্তব। ভাল লাগলো..
অফঃ টঃ কিছু টাইপো আছে। ঠিক করে নিয়েন। গল্পে +
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:৩০
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: ধন্যবাদ।
জ্বি আচ্ছা।
৫| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৫৭
শুঁটকি মাছ বলেছেন: সেইদিন প্রথম একজনের কাছে এই রোগের নাম শুনেছিলাম। তার দাবী অনুযায়ী সেও এই রোগে আক্রান্ত। আচ্ছা আমাকে বলতে পারবেন এইটা আসলেই এরকম সিম্পটমের কিনা?
০১ লা মে, ২০১৪ বিকাল ৩:১১
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: হ্যাঁ সমস্যা গুলো এমনই হয়। ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা থেকে পরে ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার হয়। এই রোগে আক্রান্ত মানুষগুলোর গল্পের নায়কের মত, সব অসহ্য বোধ হয়। ভিতরে কাজ করে অপরাধবোধ, হতাশাবোধ, সিদ্ধান্তহীনতা। মাঝে মাঝে বড় পর্যায়ে নিজের জীবন অর্থহীন লাগে। মনে হয় আমাকে দিয়ে কিছু হবে না। মরে যেতে ইচ্ছা করে।
লুডিওমিল, টেলাজেন, রিভোট্রিল ট্যাবলেট খেলে কিছুটা উন্নতি হয়। তবে সময় লাগে। এ ক্ষেত্রে কাউন্সিলিং দরকার সব চেয়ে বেশি।
আর আমি কিন্তু ডাক্তার না। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি। আগ্রহ বশত, মানসিক রোগ গুলো নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করি। আর লেখা গুলোও থাকে অমন, মানসিক সমস্যা বা দ্বন্দ্ব নিয়ে বেশীর ভাগ।
ধন্যবাদ।
৬| ০১ লা মে, ২০১৪ রাত ১:৪৩
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভাল লাগল গল্পটা।
০১ লা মে, ২০১৪ বিকাল ৩:১২
রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৪৯
আমি সাদমান সাদিক বলেছেন: ভাল লাগা রইল চালিয়ে যান ।।