নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘুরে বেড়াতে ইচ্ছে করে। ঘুরে বেড়াতে চাই আর একটা মুক্তি...

সাদিকুর রহমান নয়ন

ঘুরে বেড়াতে ইচ্ছে করে। ঘুরে বেড়াতে চাই আর একটা মুক্তি...

সাদিকুর রহমান নয়ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘুরে আসুন বেহুলার বাসর ঘর...(পর্ব-২)

১৩ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৩৯

মহাস্থানগড়ের দর্শনীয় স্থানঃ
মহাস্থানগড়ের দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে রয়েছে, জয়ীতকুন্ড, বেহুলা লক্ষ্মীন্দরের বাসরঘর, হযরত শাহ সুলতান বখলি (র)-এর মাজার, গোকুল মেধ, গোবিন্দ ভিটা, শিলা দেবীর ঘাট, ভাসু বিহার এবং প্রাচীন মসজিদসহ নানান নিদর্শন।
হযরত শাহ সুলতান বলখীর (র) মাজারঃ মহাস্থানগড় বাসস্ট্যান্ড এ নেমে ঠিক পশ্চিমে তাকালেই চোখে পরবে হযরত শাহ সুলতান বলখীর (র) মাজার। কথিত আছে এ অঞ্চলের জনগণকে রাজা পরশুরামের অত্যাচার থেকে মুক্ত করতে আফগানিস্তানের অন্তর্গত বলখ প্রদেশ থেকে শাহ সুলতান বলখীর (র) এ এলাকায় আগমন করেন। ১২০৫-১২২০ খ্রিস্টাব্দে পরশুরামের সঙ্গে তার যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে পরশুরাম পরাজিত এবং নিহত হন।

গোকুল মেধ বা বেহুলার বাসরঘরঃ
হযরত শাহ সুলতান বলখীর (র) মাজার থেকে দুই কিলোমিটার দূরের গোকুল নামক গ্রামে ৪৫ ফুট উচ্চতার একটি স্তম্ভ রয়েছে। অনেকে এ স্থানটিকেই জানেন বেহুলার বাসরঘর নামে। ঐতিহাসিকদের মতে এটি আনুমানিক সপ্তম শতাব্দী থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যে নির্মিত। নির্মাণ করেন সম্রাট আসোক। স্তম্ভের পূর্বদিকে রয়েছে ২৪ কোণ বিশিষ্ট চৌবাচ্চা সদৃস গোসলখানা। নির্দিষ্ট ভাবে এই গোসলখানাকেই অনেকে জানেন বেহুলার বাসরঘর হিসেবে।

শীলা দেবীর ঘাটঃ
মহাস্থানগড়ের পূর্ব দিকে করতোয়া নদীর তীরে রয়েছে শীলা দেবীর ঘাট। শীলা দেবী ছিলেন পরশুরামের বোন। যুদ্ধের সময় আত্বশুদ্ধির জন্য এখানেই তিনি আহূতি দিয়েছিলেন। এখানে প্রতিবছর হিন্দুদের স্নান এবং একদিনের মেলা বসে।

জীয়তকুন্ডঃ
কূপের পানি দিয়ে মৃত মানুষ জীবিত করার গল্পটা মনে আছে না? শিলা দেবীর ঘাটের পশ্চিমেই রয়েছে জীয়তকুন্ড নামের সেই কূপ। কূপটিকে নিয়ে যে লোককথা রয়েছে তার অবশ্য কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি পাওয়া যায়নি।

মহাস্থানগড় জাদুঘরঃ
মহাস্থানগড় থেকে সামান্য উত্তরে গোবিন্দ ভিটার ঠিক বিপরীত দিকে অবস্থিত মহাস্থান জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৬৭ সালে। এ অঞ্চলে প্রাপ্ত নানান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রক্ষিত আছে এ জাদুঘরটিতে। এ জাদুঘরের গ্রীষ্মকালীন সময়সূচি হলো বেলা ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। দুপুর ১টা থেকে ত্রিশ মিনিট মধ্যাহ্ন বিরতি। আর শীতকালীন সময়সূচি, সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা। দুপুর ১টা থেকে ত্রিশ মিনিট মধ্যাহ্ন বিরতি। মহাস্থান জাদুঘর সপ্তাহের রোববার পূর্ণ দিবস, সোমবার অর্ধ দিবস এবং সরকারি ছুটির দিনগুলোতে বন্ধ থাকে।

গোবিন্দ ভিটাঃ
মহাস্থানগড় জাদুঘরের সামনের প্রত্নস্থলটিই হল গোবিন্দ ভিটা। এটি মূলত একটি প্রাচীন মন্দির। এখানে সর্বপ্রথম ১৯২৮-২৯ সালে এবং পরবর্তীতে ১৯৬০ সালে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের ফলে খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতক থেকে শুরু করে বিভিন্ন যুগের নানান নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে।

ভাসু বিহারঃ
ভাসুবিহারের আরেক নাম নরপতির ধাপ। খননের ফলে এখানে দুটি মধ্যম আকৃতির সংঘারাম ও একটি মন্দিরসহ আরও অনেক নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়। অপেক্ষাকৃত ছোট সংঘারামটির আয়তন উত্তর-দক্ষিণে ৪৯ মিটার এবং পূর্বে-পশ্চিমে ৪৬ মিটার। এর চার বাহুতে ভিক্ষুদের বসবাসের জন্য ২৬টি কক্ষ এবং কক্ষগুলোর সামনে চারপাশে ঘোরানো বারান্দা এবং পূর্ববাহুর কেন্দ্রস্থলে প্রবেশপথ রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে খননের ফলে এখান থেকে প্রায় ৮০০টি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে।

কীভাবে যাবেনঃ
কি দেখবেন এসব তো জানা হল তবে এবার চলুন জেনে নেই মহাস্থানগড়ে যেতে হলে আপনাকে কিভাবে যেতে হবে। ঢাকা থেকে প্রথমে বগুড়া। আর এ জন্য আপনাকে বাসে ভ্রমণ করতে হবে। ট্রেনেও জেতে পারেন তবে সেটি সময়সাপেক্ষ।ঢাকা থেকে বগুড়া যাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো সার্ভিস হলো গ্রীন লাইন, টি আর ট্রাভেলস এবং এস আর পরিবহনের এসি বাস। ভাড়া জনপ্রতি ৬০০-৬৫০ টাকা। এছাড়া, এ পথে নন-এসি বাস চলে শ্যামলী, হানিফ, এসআর, কেয়া, টিআর, বিআরটিসি, শাহ সুলতান ইত্যাদি পরিবহনের বাস। ভাড়া জনপ্রতি ভাড়া ৩৫০-৩৮০ টাকা। ঢাকা থেকে বগুড়ার বাস সাধারণত ছাড়ে গাবতলি ও কল্যাণপুর থেকে। আর বগুড়া থেকে ঢাকার বাস ছাড়ে শহরের সাতমাথা এবং ঠনঠনিয়া থেকে। বগুড়া শহর থেকে অটোরিকশা, সিএনজি কিংবা লোকাল বাসযোগে যেতে পারেন মহাস্থানে।

কোথায় থাকবেনঃ
বগুড়া শহরে থাকার জন্য আছে বেশ কয়েকটি ভালো মানের হোটেল রয়েছে। বগুড়ার সবচেয়ে আধুনিক হোটেল হলো শহরের ছিলিমপুরের নাজ গার্ডেন, ওয়েবসাইট- হোটেল নাজগার্ডেন ডট কম। এ ছাড়া শহরের বনানী এলাকায় রয়েছে পর্যটন মোটেল। চার মাথার মোড়ে হোটেল সেফওয়ে, বনানী ফুলদিঘীতে হোটেল সিস্তা। এসব হোটেলে ৫০০ থেকে ৯০০০ টাকা ভাড়া মানের বিভিন্ন রকম কক্ষ রয়েছে। এছাড়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে স্বল্পমূল্যের আবাসিক হোটেল এন্ড মোটেল।

যেটি বাদ দেওয়া যাবে নাঃ
মহাস্থানগড় ঘুরতে যাবেন অথচ এখানকার বিখ্যাত কটকটি খাবেন না তা কি হয়! প্রায় পুরো মহাস্থানগড় এলাকা জুড়েই বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে কটকটির দোকান। তবে কটকটি কেনার সময় দরদাম করে নেওয়াটাই ভাল। এছাড়া আর যে জিনিস বাদ দেয়া যাবেনা তা হল দই। নিজে কেনার পাশাপাশি আত্বীয়-স্বজনকেও উপহার হিসেবে দিতে পারেন।







শেষ...

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.