নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কথা ছিল ধান কাটা হলে সারা পৌষের আঙ্গিনায় রোদ্দুর পোহাতে পোহাতে হুক্কায় মৃদু টান দিয়ে পাকা ধানের শিষে তুলবো মাতম গাজন ওঠা খেজুরের রসে চুমুক দিয়ে। কিন্ত কি এক আলোড়ন উঠলো পেশীতে , ঝলকে উঠলো বিপ্লব , ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায় , ওরা কথায় কথায় শিকল পরায় আমার দুটো পায় । অসহ্য এই নির্মমতার বিরুদ্ধে বলতে কথা সদ্য যুবক আমিনুদ্দিন শুরু করে তার দৌড় পাকিস্তানী শাসকের বিরুদ্ধে । সদ্য কাটা ধানের মাঠে নাড়া মাড়িয়ে যুবক দৌড়াতে থাকে দিকবিদিক। আকাশের মেঘের চলমানতা থামিয়ে , মাঠের ধুলা উড়িয়ে আমিনুদ্দিন ছুটে চলছে সূর্যাস্তের পানে , সে টেনে ধরবে সূর্যের রথ । পালটাবে ইতোমধ্যে লেখা মিথ্যা ইতিহাস , তার আরও স্বাধীনতা চাই । ক্ষিপ্র ব্রাশের টানে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আমাদের শুনিয়েছেন এক মুক্তিযুদ্ধের গল্প । এই যুদ্ধের নায়ক আমিনুদ্দিনের পায়ের নখ থেকে মাথার চুল সবই আগুন ঝরানো এক ইতিহাস । কি গতিময় সেসব রেখা , ছলকে ওঠা রঙ , সাথে শিল্পী আমিনুদ্দিনের হাতে ধরিয়ে দিলেন বাংলাদেশের পতাকা । পৌষের শীতল হাওয়ায় উড়ছে পতাকা , উড়ছে যুবকের কেশ , শরীরের প্রতিটি পেশী হৃদ স্পন্দনের সাথে স্পন্দিত ।
শিল্পী শাহাবুদ্দিন ঢাকার চারুকলা থেকে গ্র্যাজুয়েট , ফ্রান্স থেকে উচ্চশিক্ষা । ১৯৭১ সালে বাংলা মায়ের দুঃসময়ে দেশ ছেড়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধের কারনে । রণাঙ্গনের যোদ্ধা শাহাবুদ্দিন যুদ্ধের প্রতিটি স্তর বুকে ধারন করেছিলেন , একজন মুক্তিযোদ্ধার স্বপ্ন যুদ্ধ শেষ হলেই কার্যত শেষ হয়ে যায় । কিন্তু শাহাবুদ্দিন তার রণাঙ্গনের স্বপ্ন মস্তিস্কের আভরনে রাঙ্গিয়ে নিয়ে নেমে পড়লেন আরেক যুদ্ধে । যুদ্ধের গতিময়তা যুবকের শরীরে , পেশীতে , মাঠ ঘাট , আকাশের মেঘে ছড়িয়ে কার্যত একধরনের দুর্দান্ত প্রকাশে সারাটি জীবন ব্যয় করলেন ।
৫২ টি বছর পেরিয়েছে , বাংলাদেশ নামক যুদ্ধ যুবক এখন বৃদ্ধ । তাকে কার্যত বাচিয়ে রেখেছেন শিল্পী শাহাবুদ্দিন , একান্তে - নিরবে । স্বাধীনতা অর্জনের পর সেই পেশী বহুল যুবক বেচে আছে শাহাবুদ্দিনে ক্যানভাসে , ব্রাশের ক্ষিপ্রতায় সাদার উল্লেখযোগ্য ব্যাবহারে কিছু জীবনের রঙ্গিন স্বপ্ন নিয়ে । যুবকের কাঙ্খিত স্বপ্নকে বাধাগ্রস্থ করেছে রাজনিতিক, সামরিক - বেসামরিক আমলা আর আশ্রিত পাকি পন্থিরা । শাহাবুদ্দিন দীর্ঘ প্রবাস জীবনে পলে পলে অনুভব করেছেন যুদ্ধ আর উদ্দেশ্যের কথা , জীবন যুদ্ধে পরাজিত মুক্তিযোদ্ধাদের কথা আর একান্তে নিঃশব্দে হাতের তুলিতে ক্ষিপ্র প্রতিবাদ - আমারতো তাই মনে হয় । ওই যে দৌড় শুরু করেছেন তিনি আর থামেননি । এখন ঢাকাতে থিতু শিল্পী শাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রের সরবোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পেয়েছে ।
২৪/১১/২০২২ ঢাকা
---------------------------------------------------------------------------
লেখাটি আমার মৌলিক লেখা । কারো কোন অনুকরন করা হয়নি ।
ছবিঃ সময়ের আলো , পিনটারেস্ট , আর্টসপের ।।
২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:৪২
শাহ আজিজ বলেছেন: ধন্যবাদ , এক্ষুনি বসে টাইপ করলাম ।
২| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৮
নেওয়াজ আলি বলেছেন: চমৎকার ছবি ও লেখা
২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৪
শাহ আজিজ বলেছেন: ধন্যবাদ নেওয়াজ আলী ।
৩| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:০০
ঈশ্বরকণা বলেছেন: শিল্পী শাহাবুদ্দিনের ‘দৌড় ‘- দেখে কেন যেন মিকেলেঞ্জেলোর ‘ক্রিয়েশন অফ এডম ’-এর কথা মনে হলো। শিল্পী যে ফ্রান্স উচ্চশিক্ষার জন্য থেকেছেন তার একটা ছায়া আছে মনে হয় আঁকাতে । দৌড় - এর ব্যাকগ্রাউন্ডের কথা জেনে ভালোনলাগলো। লেখাটা যদিও শিল্পীর আঁকার ধরণ বা স্টাইল নিয়ে না তবুও সেই নিয়ে কিছু কথা থাকযে মনে হয় আরো ভালো লাগতো। আর সেটা ব্লগে আপনার চেয়ে ভালো করে কেউ বলতেও পারতো না।
২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:০৭
শাহ আজিজ বলেছেন: আমি আমার ভাবনার কথা লিখেছি । সবাই গৎবাঁধা বাক্যে স্টাইলের কথা লিখে , আমি ব্যাতিক্রম , পাঠক কেন আমার দুর্দশায় ভুঘবে , তাদের নিজস্ব নির্মাণ আছে - তাদের ভাবতে দিন ।
ধন্যবাদ ।
৪| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৫৪
জুল ভার্ন বলেছেন: শিল্পী শাহাবুদ্দিন আমার অন্যতম পছন্দের একজন। ❤️
২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:১০
শাহ আজিজ বলেছেন: আমারও । ৭৭ সাল থেকে জানাশোনা ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:৪০
সোনাগাজী বলেছেন:
লেখার ষ্টাইলটা ভালো লাগলো।