নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চারুশিল্পী , লেখক

শাহ আজিজ

চারুশিল্পী , লেখক

শাহ আজিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রসের পায়েস

০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:০৮





ভোর বেলায় গায়ে মোটা চাদর চড়িয়ে উঠোনে দাঁড়ালাম । কয়েকটি তাফলে রস জ্বাল দিচ্ছে কিষাণেরা । পুরা বাড়িটা ব্যাস্ত । আমায় কিষাণেরা হেসে জিজ্ঞাসা করল কাচা রস খাবা সাহেব ? মাথা নাড়লে আমায় ঠিলা থেকে খেজুর গাছের মুচি দিয়ে বানানো ছাকনির মধ্যে গ্লাসে রস ঢেলে দিল । ঠাণ্ডা রস দারুন মজার । আরাক গিলাস খাও , না করলাম মাথা নেড়ে , বললাম গুড় তৈরি হলে খাব । রান্না ঘরের বাইরের বড় চুলায় পায়েস তৈরি হচ্ছে । খৈলেনে চলে এলাম । উচু করে পাকা ধান স্তুপ করে রাখা । ঘুম কাটেনি , শুয়ে পড়লাম নিচুতে রাখা ধানের গোছার ওপরে । চাদর মুড়ে দিলাম সারা শরীরে । সূর্য উঠেছে আর তার ক্ষীণ আলো খেলা করছে আমার চাদরে ঢাকা চোখের সামনে । চাদর সামান্য সরিয়ে কয়েক ইঞ্চি দূরে সোনালি ধানের মধ্যে ওষের ফোটায় ভোরের সূর্যের ঝিলিক প্রথম দেখলাম । একটা মুক্তো দানা হয়ে আমায় দারুন উজ্জীবিত করল । ধানের গন্ধ আমায় পাগল করে দিচ্ছিল , আমিতো ধানের ওপর শুয়ে , আমায় আর ধানের গোছায় কোন পার্থক্য নেই নেই ব্যাবধান । সূর্য বাড়ছে আর ওষের মুক্তো দানার উজ্জলতা মিলিয়ে যাচ্ছে ক্রমশ । তন্দ্রা ভাব কেটে গেল কাজের মেয়েটির ডাকে । সে বলল আব্বা, আসেন আপনারে ভিতরে খাতি বোলাচ্ছে । ভিতরে গেলাম । রান্না ঘরের মাটির বারান্দায় মাদুর পেতে তাতে বসলাম । একটা কাচের থালায় অর্ধ গোলাকার আকারের ভাতের ওপর চকচকে কুসুমের হাসের ডিম পোঁচ । কি দারুন ধোঁয়া উঠছে নতুন চালে । খেতে খেতে চলে এলো কাসার বাটিতে পায়েস , নতুন চালের , কিছুক্ষন আগে ধানের গোছার ওপর শুয়েছিলাম । প্রতিদিন ধান মলবে , দুটো ঢেঁকি ব্যাস্ত থাকবে ধান ভানায় । ডাল , মাছ কিছুই আর ছুলাম না সোজা নতুন চাউলের পায়েস খেজুরের রসের কাঁসার বাটি তুলে হাপুস হুপুস খেতে শুরু করলাম । চকিত তাকিয়ে দেখি আমাদের কিষাণরা তাফলের পাশে বসে , আত্মীয় স্বজন , গৃহকর্মীর দল স্থির হয়ে আমার হাভাতের খাওয়া দেখছে । কিষাণদের একজন শুধাল সাহেপ কিরাম হইছে শিন্নি ? আমি বললাম সেইরাম অইছে , দেহি আরাক বাটি । কাকী’মা শুধালেন বিকেলে কি কি পিঠে খাতি চাও ? আমি বললাম গুড় আর নারকেলের পুর দেওয়া কুলি পিঠা ভাজা । আমার প্রিয় পিঠা । অর্ধ শতাব্দী পরে এখনও ঢাকা শহরে কুলি পিঠা খুজি কিন্তু সেই মজা নেই ।

শাহ আজিজের গল্প

কপিরাইটঃশাহ আজিজ

ছবি - নেট

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৩৪

সোনাগাজী বলেছেন:



সাম্প্রতিক ঘটনা?

০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৩৬

শাহ আজিজ বলেছেন: পাকিস্তানের শেষ দিকের ঘটনা ।

২| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:৩৬

কামাল১৮ বলেছেন: ৬২/৬৩ পর আর যশোর যাওয়া হয় নাই তেমন করে।এসব ঘটেছে ৬২/৬৩ আগে।তবে স্মৃতি এখনো সতেজ।এসব স্মৃতি ভুলবার নয়।

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:০২

শাহ আজিজ বলেছেন: কিছু ঘটনা এমনভাবে মনে গেথে থাকে যাকে ঝেড়ে ফেলা যায় না ।

৩| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৫:১৭

হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: এসব পিঠা খাওয়ার জন্য দেশ থেকে খেঁজুর গুড় আনিয়েছিলাম, সে পিঠা মুখে দিতে পারিনি। ভেজাল গুড়ে কি যে বাজে স্বাদ হয়েছিলো তা বলার মতো না।

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:০৭

শাহ আজিজ বলেছেন: বাঙ্গাল ভেজালকারিদের দৌরাত্ন এত যে গুড় কিভাবে ভেজাল করতে হবে তাও শিখে গেছে । আমরা এবার কিশোরগঞ্জ থেকে বাড়িতে তৈরি গুড় আনিয়েছি । ফরিদপুর থেকে আসছে কদিন বাদেই ।

৪| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:২৭

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
আমাদের বাড়িতে ৫টা খেজুর ছিল। রসের সময় ওই গাছ একটা লোক নিতো রস বানানোর জন্য। ওখান থেকে আমরা রস খেতাম। ঠান্ডা সুমিষ্ট সুস্বাদু রস খেয়ে কনকনে শীতের সকালে কাঁপতে থাকতাম !!
আহারে দিন।

ভালো খেজুরের পাটালি পাচ্ছি না। গতবার বাড়িতে ছিলাম। কুষ্টিয়া থেকে বেশ ভালো গুড় পেয়েছিলাম।
ছোটবেলার সব কিছুই হয়তো ভালো ছিল। খেজুরের পাটালি , খেজুরের রস , সকাল কিংবা দিন।

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:১৪

শাহ আজিজ বলেছেন: আমাদের গ্রামের বাড়ির সরকারী গাছ ইজারা বন্দোবস্ত নেয়া ছিল প্রায় ৫০ টি । ইনশাল্লাহ এখন একটাও নেই । শহরের বাড়িতে ১ টা এখন ধুঁকে ধুঁকে মরছে । তবে আমাদের সোর্স আছে যাদের তৈরি খাটি জিরান রসের গুড় পৌঁছে যায় বাড়িতে । দামও বেশি নেয় ।

৫| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৮

ঢাবিয়ান বলেছেন: খেজুরের গুড়ের পায়েশ আমার অসম্ভব প্রিয় । ফসলের মাঠ থেকে তুলে আনা নতুন চালের ভাত কখনও খাওয়া হয়নি। আলুভর্তা ও ডাল দিয়ে মনে হয় দুর্দান্ত লাগবে।

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৪৭

শাহ আজিজ বলেছেন: নতুন চালের সাথে অনেক কিছুই ভাল লাগে ।

৬| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: আমি দুটা জিনিস কেন জানি খাই না। এক, পায়েস। দুই, পুডিং।

করোনার আগে একবার এক গ্রামে গিয়েছি। বিয়ের অনুষ্ঠান। ব্যাপক খানাদানা। খাওয়া শেষে পায়েশ দিলো। একজন আমাকে বলল খেয়ে দেখেন। দূর্দান্ত। সেই প্রথম পায়েশ খেলাম এবং মুগ্ধ হলাম। এরপর থেকে পায়েস পেলেই খেয়ে নিই।
আমার মাকে দেখতাম ১০ কেজি দুধকে জাল দিতে দিতে দুই কেজি করতো। সেই দুই কেজি দুধে পায়েস রান্না করতো। চিনি দিতে হতো না।

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:৪৯

শাহ আজিজ বলেছেন: আমার জন্য নিষিদ্ধ তবেও শীতে একবার খাই । সুস্থ শরীরে পায়েস দারুন মানায় ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.