নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার স্বপ্ন ছিল ঘাতক রাজাকারদের বিচার ও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার জীবদ্দশায় দেখার। আমার আর কোনো চাওয়া নেই তবে জামাতের সব ব্যবসা প্রতিস্ঠান অচিরেই বাংলাদেশে বন্ধকরা উচিত। না হলে ওরা আবার অঙ্কুর উদগম করবে এই মাটিতেই।

শাহীন ভূইঁয়া

বঙ্গদেশের জীবনযাত্রার মান ইওরোপীয় স্ট্যান্ডারডে পৌছতে চললেও পুলিশ পুলিশই রইয়া গেল মানুষ হইলো না

শাহীন ভূইঁয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই মৃত্যু উপত্যকা আমার নয়!

১৮ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:১০

কে বলল? এই মৃত্যু উপত্যকা আমার নয় ।



এই যে পরিমণ্ডলে আমার বাস, আমাদের দিনযাপন, সেখানে আরও একটু ভাল করে তাকান। আরও একটু গভীরে।



দেখবেন, আমরা যেন সেই মৃত্যু উপত্যকাতেই থাকি। শুধু আমাদের ঘরের একেবারে সামনে কিছু ঘটলে, তার আঁচ একেবারে আমাদের গায়ে এসে না পড়লে মনে হয়, সব কিছুই স্বাভাবিক! না কিছুই হয় নি । দেশতো ভালোই আছে , দেশের জনগণ ভালোই আছেন । চায়ের দোকানে চায়ের কাপে ঝড় আছে । সারাদিন কাজ শেষে গৃহীনিরা টিভি সিরিয়ালের সামনে পানের বাটা নিয়ে বসে আছে ।



অনেক বড় করে ভাবতে হবে না। আপাতত মনে করুন এক মহানগরের কথা– সে হতে পারে ঢাকা । হঠাৎ ঢাকা কেন? আসলে তার ‘মেগাসিটির তকমার আড়ালে আরও একটা শহর লুকিয়ে আছে, আরও গভীরে।



এই তো মাত্র কয়েকদিন আগে এ শহরের কয়েক বস্তিতে আগুন লাগল। সে বস্তির অলিন্দে মানুষ শুয়ে থাকে, দোকানে শুয়ে থাকে। প্রান্তিক মানুষ, দিন-রাত যাঁদের কাছে একাকার। গভীর রাতের সেই রাক্ষুসে আগুন শুধু বাজারের ইট-কাঠ-পাথরই পোড়াল না, লহমায় পোড়া লাশ বানিয়ে দিল নামনা জানা জন মানুষকে। টেলিভিশনের পর্দায়, সংবাদপত্রের পাতায় এতদিনে সে ছবি পুরনো। সেই জতুগৃহের বাইরে দাঁড়ানো আরও অনেক মানুষের অসহায়, অনন্ত শূন্যতা মাখা দৃষ্টির দিকে আরও একটিবার নজর দিতে বলব। মাত্র কয়েক হাত দূরে লেলিহান অগ্নিশিখা গ্রাস করে নিচ্ছে রুটি-রুজির শেষ ঠিকানা। কারও বা অতি প্রিয়জন সেই বিপণির অন্দরে অথবা গার্মেন্ট এ জীবন্ত দগ্ধ হচ্ছেন। কিংবা গভীর, ঘন ধোঁয়া শ্বাসরুদ্ধ করে দিচ্ছে আরও কারওর।



মৃত্যুর আগেও কেউ কেউ না কি মোবাইলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন বাইরে থাকা স্বজনদের। আর্ত চিৎকার করেছিলেন, ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে। না, স্বজনদের কিছু করার ছিল না। এ শহর অসহায় দেখেছিল, কীভাবে, মাত্র কয়েক হাত দূরত্বে থাকা মানুষগুলোকে চেষ্টা করেও সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে ধরা যায় না!



এই শহর তো ভোলেনি আমরি হাসপাতালের সেই মৃত্যুমিছিলের কথাও! অসহায়, মুমূর্ষু রোগীদের আরও অসহায় মৃত্যুর কথাও!



সেই অধ্যায় বহু আলোচিত। অন্য এক প্রসঙ্গে আসি। এই দেশের আরেক মহানগরে, মাত্র ক'দিন আগে উদ্বোধন হওয়া উড়াল পথের একটা অংশ একেবারেই আচমকা যেভাবে ভেঙে পড়ল, সেই মুহূর্তে ওই গার্ডারের সঙ্গেই যেভাবে ১০/১২জন মানুষকে পিশে দিলো , তাতে রক্ত ছলাৎ করে ওঠে না? জানি, অনেকেই বলবেন, সেখানে তো কারও মৃত্যু হয়নি? তা হলে মৃত্যুর প্রসঙ্গে ওই ঘটনার উল্লেখ কেন? উল্লেখ এই কারণেই যে, কীভাবে একটি অতি ব্যস্ত, প্রায় নতুন এক উড়ালপথ এভাবে ভেঙে পড়ে, সেই প্রশ্ন আমাদের কুরে কুরে খায়। প্রাণহানি যে ঘটেনি, সেটা নেহাতই দুর্ঘটনা। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আরো অনেক মানুষের যে কেউই এই ঘটনায় প্রাণ হারাতে পারতেন। ক্ষয়ক্ষতি হতে পারত আরও অনেক বেশি।



আর এর থেকেও যা মারাত্মক, তা হল গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে যাওয়া। কোন আমলে এই সেতু তৈরি হয়েছে, কাদের আমলেই বা এর রক্ষণাবেক্ষণ করার কথা ছিল, তাই নিয়ে শুরু হয়েছে চাপান-উতোরের সেই চিরকালীন খেলা। আশা করা যায়, আগামী বেশ কয়েকটি নির্বাচনে এই সব ঘটনাকে তুলে তুলে আনবে শাসক ও বিরোধী দলগুলি।



কিন্তু তাতে কী প্রমাণ হয়? আর কী-ই বা যায়-আসে সাধারণ মানুষের? একটা শহরে, এভাবে একের পর এক ছোট-বড় ঘটনা ঘটে চলে। আমার চারপাশে। আমরা যেন একটা বৃত্তের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি। বৃত্তটা যেন ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসছে।



নানা ঘটনা। হাসপাতালে হাসপাতালে বারে বারে বিনা চিকিৎসায় বা ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ। এই শহরে। সরকারী-বেসরকারি বাস /ট্রাক কোনও নিয়ম না মেনে স্রেফ রেষারেষি করার জন্য রাজপথের মাঝখানে চাপা দেয় অসহায় যাত্রীকে। এই বাংলার বিভিন্ন শহরে সামান্য রাজনিতিক রেষারেষিতে প্রাণ দিতে হচ্ছে প্রজাতন্ত্রের পুলিশ সহজ-সরলা ধর্মবিশ্বাসী জনতা কে । সন্ত্রাসীদের গুলিতে প্রাণ হারাচ্ছে স্কুল বালক থেকে শিক্ষক পর্যন্ত।



এই সব পুতুলনাচের সুতো থাকে যাঁদের হাতে, অনেক সময়েই দেখা যায় তাঁরা রাজনীতির কারবারি তারা থাকে ধরা ছোয়ার বাইরে। এইতো সেদিন ্কজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কি করে গ্রামের মহিলা-পুরুশদের প্রতিজ্ঞা করালেন । "দেশের স্বার্থের জন্য জীবন দিতে হবে । তাই না যাবেন না আপনারা ?" উনি কি পারবেন তার প্রিয় দুই সন্তানকে এই কথা বলতে .....? এই হলো আমাদের রোজের জীবনে এত রাজনীতি! আর তার সাথে যদি ২৫০ গ্রাম ধর্মত্ত্ব মিশিয়ে দেয়া যায় তাহলে তো .....আর কথাই থাকে না । একেবারে ছক্কা । ভাবুন ... কী রকম শ্বাসরোধ করা বৃত্তের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি বলে মনে হয়। বার বার।



মৃত্যু কি শুধু মরে গেলেই আসে? এভাবে ধুঁকতে ধুঁকতে বেঁচে, প্রতিবাদহীনতার মধ্যে বেঁচে, সুশাসনের আশা না করে বেঁচে থাকাটাও কি মৃত্যু নয়?



এই মৃত্যু উপত্যকা এখনও আমার নয়!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.