![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বঙ্গদেশের জীবনযাত্রার মান ইওরোপীয় স্ট্যান্ডারডে পৌছতে চললেও পুলিশ পুলিশই রইয়া গেল মানুষ হইলো না
বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের মানুষ টিভি পর্দায় কাঁদতে দেখেছে ১৩ নবেম্বর ২০১০। এর আগে কেউ কখনও বেগম জিয়ার চোখের পানি দেখেছেন এমনটি বলতে পারবেন না। বেগম জিয়া ক্যামেরার সামনে যেভাবে কাঁদলেন, বার বার চোখ মুছলেন তাতে মনে হতে পারে তিনি খুবই বেদনাহত। এমন বেদনাহত তাঁকে এর আগে কেউ কখনও দেখেছেন এমনটি বলতে পারবেন না।
বেগম জিয়া এই চোখের পানি ফেলেছেন, অবৈধভাবে দখলে থাকা একটি বাড়ি থেকে তাঁকে উচ্ছেদের জন্য। এ ধরনের উচ্ছেদের কান্না টিভি পর্দায় মাঝে মাঝে দেখা যায়। যারা কাঁদে তারা আসলে গৃহহীন, তারা অসহায় অবস্থায় অবৈধভাবে কোন না কোন সরকারী জমিতে বাস করে। তাদের সিটি কর্পোরেশন, ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বা অন্য কোন অথরিটি উচ্ছেদ করলে তারা অসহায় সংসারের সামান্য জিনিসপত্র বুকে আঁকড়ে ধরে বেগম জিয়ার থেকে অনেক বেশি কাঁদেন। কিন্তু সে কান্না কখনও মিডিয়ার খবর হয় সামান্য সময়ের জন্য, কখনও খবর হয় না। অন্যদিকে বেগম জিয়ার ঢাকা শহরের গুলশান এলাকায় এক বিঘার ওপর জমিতে বিশাল প্রাসাদসম বাড়ি আছে। যে বাড়ি সরকার তাঁকে মাত্র এক শ' এক টাকা মূল্যে দিয়েছে। তারপরও তিনি ক্যান্টমেন্টের ১৬৫ কাঠা জমির ওপর নির্মিত একটি বাড়িতে বাস করতেন। আদালতের রায় অনুযায়ী তাঁর এ বাড়িতে থাকা অবৈধ। এই অবৈধ বাড়িতে থাকা নিয়ে বেগম জিয়া ১৩ নবেম্বর টিভি পর্দায় কেঁদেছেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে বেগম জিয়া দোষারোপ করেছেন, তাঁকে টেনেহিঁচড়ে বাড়ি থেকে বের করা হয়েছে। এ জন্যও তিনি কাঁদছেন। বেগম জিয়ার অভিযোগ, তাঁকে টেনেহিঁচড়ে বাড়ি থেকে বের করা হয়েছে অন্যদিকে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের পৰ থেকে আনত্মঃবাহিনী জনসংযোগ বিভাগ বলছে বেগম জিয়া স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে বের হয়ে গেছেন। জনকণ্ঠে প্রকাশিত বেগম জিয়ার বাড়ির মালামালের প্যাকিং করা ছবি অবশ্য প্রমাণ করে তিনি নিজেই বাড়ি ছেড়ে দেবার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। এবং আনত্মঃবাহিনী জনসংযোগ বিভাগের কথা সঠিক। তিনি স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়েছেন। তাছাড়া একটি দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, বর্তমানের বিরোধীদলীয় নেত্রীকে টেনেহিঁচড়ে বার করার মতো বর্বরতা দেখাতে অনত্মত একটি গণতান্ত্রিক সরকারের সময় কোন বাহিনী বা কোন কতর্ৃপৰ সাহস পাবে এমনটি ভাবা যায় না। তাছাড়া বেগম জিয়া যেটা বলছেন, তাঁকে কোলে করে তুলে আনা হয়েছে, এ বিষযটিও কিন্তু তাঁর সাজসজ্জা প্রমাণ করে না। বরং পরদিন হরতাল ডাকার ভিতর দিয়ে বেগম জিয়ার এই চোখের পানির মূল কারণ অনেকখানি বেরিয়ে গেছে। বেগম জিয়া আসলে চোখের পানি ফেলেছেন, মানুষের সহানুভূতি নিজের দিকে নেবার জন্য। এটাকে তিনি একটি রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছেন।
বেগম জিয়া প্রায় তিন দশক এ দেশের রাজনীতিতে অন্যতম এক নেতা। তিনি তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। দু'বার বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি যখন একটি বাড়ি অবৈধ দখলে রাখার জন্য চোখের পানি ফেলেন তখন বোঝা যায়, রাজনৈতিকভাবে তিনি অনেক অসহায় হয়ে পড়েছেন। তাই এমন সসত্মা বিষয়কে রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। কারণ, তাঁর তিন দশকের রাজনীতির অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা উচিত, অসহায়ের কান্না দিয়ে কখনও রাজনীতিতে কোন ভাল ফল পাওয়া যায় না। কারণ, রাজনৈতিক নেতা মানে একজন হিরো। মানুষ তার হিরোকে দেখতে চায় সাহসী হিসেবে। বীর হিসেবে। মহান হিসেবে। সে যদি সাধারণ মানুষের মতো নিজের স্বার্থ নিয়ে চোখের পানি ফেলে তাহলে মানুষ ধরে নেয় সেও তাদের মতো একজন। তাঁর ভেতর কোন বীরত্ব নেই, মহানুভবতা নেই। তাছাড়া এমন যদি হয়, দেশের মানুষের দুর্দশায়, মৃতু্যতে তিনি কেঁদেছেন তাহলে সেটা মানুষ অন্যভাবে দেখে। তখন তাঁকে মহান হিসেবে চিহ্নিত করে। যেমন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে বাংলার মানুষ ষাটের দশকে এসে একক নেতা হিসেবে বরণ করেছিল একটাই কারণে যে, ওই সময় তাঁর থেকে সাহসী কেউ ছিলেন না। কোন অবস্থাতে তাঁকে টলাতে পারেননি, কোন নির্যাতন তাঁর চোখে পানি আনতে পারেনি। তাই মানুষ তাঁকে নেতা মেনেছিল। কিন্তু এই বঙ্গবন্ধু লাখ লাখ মানুষের সামনে হু হু করে কেঁদেছিলেন। মানুষও তার সঙ্গে কেঁদেছিল। সেটা তাঁর নিজের কোন স্বার্থে নয়, কোন অসহায়ত্বে নয়, তিনি কেঁদেছিলেন তাঁর দেশের মানুষকে যে পাকিসত্মানীরা হত্যা করেছিল ওই শহীদদের জন্য ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে। ১০ জানুয়ারি ত্রিশ লাখ নিহত মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধু কেঁদেছিলেন। মানুষও তাঁর সঙ্গে কেঁদেছিল। আবার বঙ্গবন্ধু ১৯৭০ সালে ঘূর্ণিঝড়ে নিহত ১০ লাখ মানুষের জন্য কেঁদেছিলেন। ঘূর্ণি বিধ্বসত্ম এলাকা ঘুরে এসে রোদে পোড়া, তামাটে রঙের শরীর নিয়ে বিধ্বসত্ম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব উপস্থিত হয়েছিলেন সাংবাদিকদের সামনে। সেখানে তিনি তাঁর দেশের নিহত মানুষের জন্য কেঁদেছিলেন।
১৯৭০-এ ইয়াহিয়ার শাসন আমলের পর এ দেশে সব থেকে বেশি লোক ঘূর্ণিঝড়ে ও জলোচ্ছ্বাসে মারা যায় ১৯৯১ সালে। বেগম জিয়াকে সেদিন অনেকে টেলিভিশনে দেখেছেন। পেশাগত কারণে আমরা তাঁকে সেদিন কাছ থেকে ঘূর্ণিবিধ্বসত্ম এলাকা চট্টগ্রামে দেখেছি। ওই ঘূর্ণিঝড়ে বিদেশীদের হিসাব মতে পাঁচ লাখের ওপর মানুষ মারা যায়। বেগম জিয়া যখন চট্টগ্রামে সে সময়ে আমরাও চট্টগ্রামে ঘুরেছি। সাগরে তখন মাছের ঝাঁকের মতো লাশ ভেসে চলেছে জোয়ারে, ভাটায়। শোকাহত মানুষের মাতম চলছে তখন সাগর পারে। সনত্মান হারিয়ে বেঁচে থাকা মায়ের আর্তনাদে সাগরের বাতাস ভারি হয়ে উঠছে। ওই শোকার্ত বাতাসের ভিতর কখনও কেউ বেগম জিয়ার চোখের পানি দেখেনি। কেউ দেখেননি টিসু্য পেপার দিয়ে তিনি চোখ মুছেছেন। তিনি তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী, তিনি দেশের নারী শিশুসহ পাঁচ লাখ লোকের জীবন রৰা করতে পারেননি। সেই মৃতদেহের পাশে দাঁড়িয়ে, সেই মৃতদের স্বজনের কান্নায় ভারি হওয়া বাতাসের ভিতর গিয়েও বেগম জিয়ার চোখে কোন পানি আসেনি। অথচ আজ তাঁর চোখে পানি এসেছে, রাজধানীর শত শত কোটি টাকা মূল্যের ১৬৫ কাঠার জমির ওপর একটি বাড়িতে অবৈধভাবে বাস করার আকুতি থেকে। একদিকে পাঁচ লাখ লোকের মৃতু্য অন্যদিকে ১৬৫ কাঠার একটি বাড়ি দখলে রাখার ইচ্ছা। মানুষ যদি এ দুটি বিষয় পাশাপাশি মেলায় তাহলে বেগম জিয়ার এ চোখের পানির অর্থ কী দাঁড়ায় সেটা বলা মনে হয় খুব কষ্টের নয়।
তবে বেগম জিয়া যদি নিজে থেকে এই চোখের পানি ফেলে থাকেন তাহলে বুঝতে হবে তিনি সত্যিই রাজনৈতিকভাবে অসহায় হয়ে পড়েছেন। আর যদি তাঁর পরামর্শকরা তাঁকে এইভাবে সাংবাদিক সম্মেলনে চোখের পানি ফেলতে পরামর্শ দেন তাহলে তাঁরা ভুল করেছেন। কারণ, অন্যায় কোন কিছুর জন্য চোখের পানি ফেলে কখনই সহানুভূতি পাওয়া যায় না।
সেই কান্নার পর থেকে দেশে হাজার দূর্ঘটনা ঘটলে ও তাকে আর কাদতে দেখা যায় নি ....বরং মৃতদের বাড়ীতে গিয়ে তাদের আরো প্রাণ দেবার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন । সাভার ট্রাজেডীতে সর্বশেষ ১০০০ হাজারের বেশী মৃত্য হয়েছে ...একবার ও চোখের পানি ফেলেন নি । অথচ টিভি কভারেজ যারা দেখেছেন তারা একবার না একবার নিজের অজান্তে অশ্রুবিসর্জন করেছেন । বরং মৃত্যুদের নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছেন ...মৃত্যেুর সংখ্যা বাড়িয়ে গুম করার প্রচার চালিয়ে সাধারন মানুষকে দিক ভ্রান্ত করতে চেষ্টা করেছেন যার শেষ নজির মতিঝিলের হেফাজতের হাজার হাজার মানুষ কে হত্যা করা হয়েছে প্রচার চালিয়েছে । লাভ কী ? উনিই বলতে পারবেন । যারা দেশের পতাকা, জাতীয় সংসদ, বঙ্গভবন কে উপহাস করে কথা বলেন তাদের সমর্থন করে জনগণ কী আশা করতে পারে তা আগে ভাগে বুঝে নেয়াই ভালো । যারা বাংলাদেশ স্বাধীনের বিরোধীতা করেছিল তাদের সমর্থন করে দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাওয়াই কী উনার দেশপ্রেমের র পরিচয় । বাংলাদেশের সচেতন মানুষের বোঝার আর বাকী নেই ," যার মনে যা ফাল দেয় তা" ।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই মে, ২০১৩ দুপুর ২:৪৬
ধৈঞ্চা বলেছেন: আপনার কাছে বেগম জিয়াকে বাড়ী থেকে তাড়ানোর পরের ঘটনা জানতে আগ্রহী। তখন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট ভাবে বলছিলেন এই বাড়িটি ভেঙ্গে এখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে, সেই ভবনের ফ্ল্যাটগুলো বরাদ্ধ দেওয়া হবে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারকে। তাওতো প্রায় ৩ বছর হতে চলল, আমি জানিনা এই প্রকল্পের আগ্রগতি কতদূর।