![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দিন বদলের সনদ শিরোনামে প্রচারিত আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতিহারে অগ্রাধিকারের পাঁচটি বিষয়ের মধ্যে ৫.১ অঙ্গকারটি ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করা। দিন বদলের সনদে এরকম জাতীয় এবং জনগুরুত্বপূর্ন বিষগুলোই প্রধান্য পেয়েছিল। জনমনে তা ব্যাপক সাড়াও জাগিয়ে ছিল এবং আপামর জনসাধারনের শতস্ফুর্ত অংশগ্রহনে গত নির্বাচরন আওয়ামী লীগ মহাবিজয় অর্জন করে। আওয়ামী লীগের মহাবিজয়ের মধ্য দিয়ে নির্বাচনী ইশতিহার তথা দিন বদলের সনদে উল্লেখিত অঙ্গীকার গুলো বাস্তবায়নের দায়িত্বভার গ্রহন করে। অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়নে একের পর এক ব্যর্থতার পরিচয় দেয় মহাবিজয়ের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসা বর্তমান সরকার। বিভিন্ন ধরনের কেলেংকারী, হত্যা এবং গুম ইত্যাদির কারনে যখন সরকার কোনঠাসা হয়ে পড়ে, ঠিক তখনি যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত আব্দুল কাদের মোল্লার অপরাধ প্রমানিত হওয়ার পরেও কেন তার ফাঁসি না হয়ে যাবৎজীবন কারা দন্ড হল এ নিয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে। যার ফলশ্রুতিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারী থেকে শাহবাগের আন্দোলনের ডাক দেয় তরুন প্রজন্মের সাধারন নাগরিক। দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে এ আন্দোলনের জনপ্রিয়তা বিদেশেও পৌছায়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় না এমন বক্তব্য কারো মুখেই শুনা যায় না। তবে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের নামে যেন কোন প্রহসনের অবতারনা না হয়। সচেতন মহল সেটাই আশা করছে।শাহবাগে তরুন প্রজন্মের নেতৃত্ব দানকারীদের একজন ছিল ব্লগার রাজীব হায়দার শোভন। তিনি গত ১৫ ফেব্রুয়ারী আততায়ীর হাতে নিহত হন। শুরু হয় শাহবাগ নিয়ে ধুম্রজাল। রাজীব হায়দার শোভন এর বাড়ীতে যেয়ে হত্যার জন্য জামাত-শিবিরকে দায়ী করে বিবৃতি দেন প্রধানমন্ত্রী। উঠে আসে "থাবা বাবা" নামের রাসুল (সা.) কে অবমাননাকারী ব্লগরে নাম। এ নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। নিহত রাজীব হায়দার শোভন যে খাবা বাবা ছদ্ম নামে লিখতেন সেটা পত্র পত্রিকা এবন্দোইলেকট্রনিক মিডিয়ার বদৌলতে সবাই অবগত হয়েছেন। অতি উৎসাহী জনতা খাবা বাবা ব্লগের প্রতি নজর দেওয়া শুরু করে। এখন থাবা বাবা আমাদের মাঝে নেই। থাবা বাবা নামের ব্লগগুলো এখনও আছে, যেখানে আমাদের রাসুল (সা.) কে নিয়ে ব্যঙ্গ করা হয়েছে। রাসুল (সা.) কে নিয়ে ব্যাঙ্গ করা ব্লগটি কি নিহত রাজীব হায়দার শোভন'র নাকি অন্য কারো? অথবা এমনও হতে পারে রাজীব হায়দার শোভন শাহবাগ নিয়ে যখন ব্যস্ত ছিলেন, ঠিক তখনি কোন কুচক্রী মহল তার ব্লগ হ্যাক করে রাসুল (সা.) কে এসব আজে বাজে পোস্ট প্রকাশ করেছেন, শাহবাগের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য। আসল ব্যাপারটা কি? এ রহস্যের দ্বার উম্মোচন করা কার দায়িত্ব? নিশ্চয় ক্ষমতাসীন দলের। রাসুল (সা.) কে নিয়ে কটাক্ষ করবে, এটাতো হতে পারে না। ইসলামী সমমনা দলের আহবানে রাসুল (সা.) কটাক্ষকারীদের বিরুদ্ধে গত ২২ ফেব্রুয়ারী বিক্ষোভ করতে যেয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া সহ মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। সরকারতো ইচ্ছা করলেই এ ধরনের ঘটনা এড়িয়ে যেতে পারতেন। থাবা বাবা বা যেকোন ছদ্ম নামেই হোক রাসুল (সা.) কে যে অবমাননা করা হয়েছে, সেটা নি:সন্দেহে অপরাধ। ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। কেউ যদি ইসলাম ধর্ম গ্রহন না করে অন্য ধর্ম গ্রহন করে অথবা কোন ধর্মই বিশ্বাস না করে তাতে কারো কিছু যায় আসে না। কিন্তু কোন ধর্মকে কটাক্ষ করা অবশ্যই অপরাধ। ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দেয়া কখনই সমর্থনযোগ্য নয়। যে সকল ব্লগে রাসুল (সা.) নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছে, সেসব ব্লগ চিন্নিত করে সরকার কর্তৃক অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্তা করলেইতো সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে- এত সহজ একটা কাজ সরকার কেন করছে না? আর কত রক্ত ঝরলে সরকারের বোধদয় হবে? শুধু তাই নয়, এ কটাক্ষকারীদের কারনেই আজকে তরুন প্রজন্মের শাহবাগ আন্দোলন প্রশ্নবিদ্ধ। শাহবাগে লাখো জনতার সমাবেশ হয়, রাসুল (সা.) কে কটাক্ষকারী ব্লগার যদি শাহবাগেরও কেউ হয়ে থাকে তাকে বিচারের আওতায় আনতে সরকারের অসুবিধা কোথায়? হয়তবা দু-একজন ব্লগার শাহবাগে আন্দোলনকারীদের কেউও হতে পারে। দু-একজন ব্লগারের জন্য শাহবাগের আন্দোলন ভেস্তে যাবে, তাতো হতে পারে না। আবার এ কটাক্ষকারীদের বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ এবং হরতালের মত ধ্বংসাত্মক কর্মসুচীতে প্রান হারাচ্ছে অনেকেই। সরকার যদি কটাক্ষকারীকে খুজে বের করে কাঠ গড়ায় দাড় না করায়, তবে কি এর জন্য কোন কর্মসূচীর নামে মানুষ হত্যার দায়ভার সরকারের উপর বর্তায় না?
©somewhere in net ltd.