![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন খাতার শেষের পাতায়, এঁকে দিলাম আলপনা, আমার স্মৃতি পড়বে মনে, যখন আমি থাকব না...! মানসিক ভাবে অসুস্থ একজন মানুষ নিজে ; অথচ বাকি সব অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করার দায়িত্ব নিয়েছি! তাদেরকে হাসি খুশি রাখার মাধ্যমে! বুঝেন অবস্থা! একবারেই বদ্ধ উন্মাদ, আবেগপ্রবন,ভীতু এক মানুষ...!চিন্তাভাবনা করে সাধারণত কিছু বলা বা করা হয় না, এজন্য ঝামেলাতেও বেশি পড়তে হয়! তারপরও - always try to listen to my heart !Simplicity জিনিসটা খুব ভাল্লাগে, নিজেও তাই!'হাসিমুখ','দেশ','দেশের মানুষ','বৃষ্টি','জোছনা','প্রিয় মানুষগুলোকে বিরক্ত করা','শিশির ভেজা ঘাসের উপরে হাঁটা','জীবন','নিঃশ্বাস নেয়া','বইপড়া'(অবশ্যই পাঠ্যবই নয়!),'বন্ধু','বন্ধুত্ব','আড্ডা দেয়া','পাহাড়','সমুদ্র','সিনেমা দেখা','শাহরুখ খান' প্রভৃতির প্রতি অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে! আমি নিম্নোক্ত জীবন দর্শনে বিশ্বাসী - "Live, Laugh and Love!" (বাঁচো , হাসও আর ভালোবাসো! ) :-D আর হ্যাঁ, নিজের প্রথম ও সবচেয়ে বড় পরিচয় "মানুষ" বলতে পছন্দ করি, আগে মানুষ, তারপর বাকি সব... :-) আমার রক্তের গ্রুপ- B (Be Positive!) আমার রাশি- কুম্ভ (কিন্তু আমি মোটেই কুম্ভকর্ণ নই!) নিজেকে একটি শব্দে প্রকাশ করতে বললে আমি সেই পুরনো অসাধারণ শব্দটি বলব--- "পাগল" :-P :-P আমার ফেসবুক ঠিকানা- fb.com/syed.n.sakib.3
সিনেমার নাম- Haider (হায়দার) (রিলিজ- ২০১৪)
যত ধরনের সিনেমা পৃথিবীতে তৈরি হয়, তার মাঝে সবচেয়ে কঠিন সম্ভবত সাহিত্য থেকে সিনেমা নির্মাণ। কারণ কি? কারণ মোটামুটি দুই ধরনের বলা যায় -
১- আপনি এক জগতের(সাহিত্য) জিনিস যদি আরেক জগতে(সিনেমা) বানাতে চান, "হুবুহু" করে, তখন প্রশ্ন উঠবে যে আপনি কতটা যথার্থভাবে সাহিত্যের মতো অনুরূপ করে বানাতে পেরেছেন।
২- "হুবুহু বাদ, আমি আমার মতো বানাব তবে সাহিত্যের ছাপ থাকবে"- এই যদি থাকে আপনের ইচ্ছা যাকে হয়তো "বিনির্মাণ" বলা যায়, তাহলে আপনাকে হয়ত সবচেয়ে বেশি শুনতে হবে- "তোরে এত মাতুব্বরি করতে কইছে কে?"
পরিচালক বিশাল ভারদ্বাজ দুই নাম্বার কাজটি করেছেন সাহস করে এবং বলা বাহুল্য তিনি ভালো করেছেন এক নাম্বার প্রসেসে না গিয়ে। কিছু না করে নির্ভুল থাকার চেয়ে মনে হয় সাহসিকতার সাথে কিছু ভুল করা ভালো। শেক্সপিয়ার এর হ্যামলেট কে অ্যাডাপ্ট করেছেন তিনি ভারতের কনটেক্সট এ। ভয় নেই, এই সিনেমা দেখার জন্য আপনাকে হ্যামলেট না পড়লেও চলবে। হ্যামলেট না পড়লে তো ভালো লাগবেই, হ্যামলেট পড়ে এই সিনেমা দেখলেও আপনি মুগ্ধ হবেন।
নিজে ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র হওয়াতে ভালো লাগা থেকেই হোক বা সিলেবাসে থাকার কারণে পরীক্ষায় পাশের অজুহাতেই হোক- হ্যামলেট আমাকে পড়তে হয়েছে- তাই লেখায় হয়তো কিছু সাহিত্য এর শব্দ(টার্ম) এর কথা থাকতে পারে। ভয়ের কিছু নাই- এগুলো ভয়ংকর কিছু না (পরীক্ষার আগের রাত ছাড়া!)
হ্যামলেট এ শেক্সপিয়ার দেখিয়েছেন ডেনমার্ক এর কাহিনী, সেটা হায়দারে এসে হয়ে গেছে কাশ্মির। ডেনমার্ক আর নরওয়ে এর যুদ্ধ এখানে হয়েছে কাশ্মিরের স্বাধীনতা বিতর্ক।কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামীদের চিকিৎসা করার অপরাধে হায়দারের ডাক্তার পিতাকে ভারতীয় সেনাবাহিনী গুম করে। বাবাকে খুঁজতে এসে হায়দার জানতে পারে, সেনাবাহিনী তার বাবাকে হত্যা করেছে। আরো জানতে পারে, এই ষড়যন্ত্রের পিছনে আছে স্বয়ং তার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষী চাচা। তার চাচা সেনাবাহিনীর সহায়তায় জনগণের সাথে বেইমানি করে ক্ষমতায় বসে, বিয়ে করে হায়দারের মাকে। এমন সময় সিনেমাতে আসেন একজন বিচিত্র ব্যক্তি। তার ব্যক্তিত্বের মত তার নামটাও বিচিত্র – “রুহদ্বার”। সে হায়দার এর সাথে দেখা করে তাকে জানায়- হায়দার এর বাবা আর নিখোঁজ নেই, তিনি এখন মৃত। যারা হ্যামলেট পড়েছেন। তারা জানেন যে এই চরিত্রে নাটকে একটি আত্মার কথা বলা হয়েছে, সিনেমাতেও আপনি এই আত্মার রেফারেন্স পাবেন নামের মাধ্যমে- রূহ মানে আত্মা বা soul.
ষোড়শ শতাব্দির ডেনমার্কের কাহিনী ২০১৪ তে কাশ্মিরে এসে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার প্রধান কারণ সম্ভবত Vishal Bhardwaj এবং Basharat Peer এর চিত্রনাট্য লেখনী। আর বিশালের ডিরেকশন নিয়ে বলার কিছু নাই নতুন করে, তার আগের দুইটি সিনেমা যেগুলো শেক্সপিয়ারের সাহিত্যের অবলম্বনে বানানো- ওমকারা আর মকবুল- সেই দুটোকে তিনি হায়দার দিয়ে ছাড়িয়ে গেছেন।
বিশাল ভারদ্বাজ এর সংগীত পরিচালনায় ছবির গান এবং আবহ সংগীত- দুটিই দারুণ। মূল নাটকে হ্যামলেট একটি মঞ্চ নাটকের আয়োজন করে- সাহিত্যের ভাষায় যাকে বলে- Play within a play (নাটকের ভিতরে নাটক)। জিনিসটা এমন- আপনার চোখের সামনে আপনার কৃতকর্ম একটি নাটকের মাধ্যমে দেখানো হবে- সেটা দেখে আপনার মুখের ও মনের অবস্থা কি হয় তা জানার জন্য। এই জিনিসটা সিনেমাতে এসে হয়ে গেছে "বিসমিল" নামের এক গান। ভারদ্বাজ এই গানের সংগীতায়োজনে মধ্যপ্রাচ্যের সংগীত এর আশ্রয় নিয়েছেন। এই কারণে গানটি লোকগানের একটি আবহ তৈরি করেছে। গুলজার লিখেছেনও "মাশাল্লাহ" লেভেলের। সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার হল এই গানের সাথে শহিদ কাপুরের নাচ- এরকম নাচ বলিউডের কোন সিনেমাতে এখনও দেখি নাই। গানটা কেমন জানি একটা দম আটকে যাওয়ার মতো অনুভূতি দেয়। বিখ্যাত “Grave-Digging Scene” এ গোরখুঁড়েদের গাওয়া “সো যাও” গানটি সম্ভবত প্রতিটা মানুষকে মৃত্যুর কথা আরেকবার মনে করিয়ে দিবে- গা ছমছমে একটা অনুভূতি দেয় গানটা।
শহিদ কাপুর সম্ভবত তার জীবনের সেরা অভিনয় করেছেন। ক্যারেক্টারকে তিনি যেন কার্পেটের মতো নিজের শরীরে মুড়িয়ে নিয়েছেন। হয়তো তিনি ঋত্বিক বা রনবিরের মতো এত বড় সুপারস্টার নন, কিন্তু অভিনয় তিনি যা করেছেন- তাতে বোঝা যায় তিনি আরেক বিখ্যাত অভিনেতা পঙ্কজ কাপুরের যোগ্য সন্তান। এই সিনেমার জন্য তিনি এক রুপিও পারিশ্রমিক নেন নাই, নট অ্যা সিঙ্গেল রুপি- ইহাই মনে হয় ডেডিকেশন।
সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন টাবু- এতটা অসাধারণ উপস্থিতি স্ক্রিনে তার- চোখ সরানো দায়। কে কে মেনন আধুনিক "ক্লডিয়াস" এর চরিত্রে- বেশি জোস। তবে সব মিলিয়ে স্ক্রিনে মাত্র ১০ মিনিটের মতো থেকে ইরফান খান প্রমাণ করলেন- তার তুলনা শুধু তিনি। বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাই তার অভিনয় প্রতিভা দেখলে। শ্রদ্ধা কাপুর বিশ্বাসযোগ্য অভিনয় করলেও কেন জানি মনে দাগ কাটেনি তেমন।
সিনেমার সবচেয়ে ভালো দিক সম্ভবত এর ভারসাম্যতা- চিত্রনাট্য থেকে শুরু করে প্রতিটা ক্ষেত্রে। সব জিনিস অনেক মাপা- যতটুকু দরকার, ঠিক ততটুকু- এক ইঞ্চি বেশি না, কমও না। নমুনা দেই একটা, হ্যামলেট নাটকে "ইডিপাস কমপ্লেক্স" নামক একটা জিনিস আছে। "এইটা আবার কি সাকিব ভাই?!" বলে হা হুতাশের কিছু নাই, সহজ ভাষায় বলার চেষ্টা করছি- বিখ্যাত মনস্তাত্ত্বিক ফ্রয়েড এর মতে- মায়ের প্রতি ছেলের যে আকর্ষণ, বিপরীত লিঙ্গ হওয়ার কারণে, তাকেই ইডিপাস কমপ্লেক্স বলে। ("আস্তাগফিরুল্লাহ"- বলে লাফ দেয়ার কিছু নাই, এটাকে জাস্ট একটা পড়ার বিষয় হিসেবে নেয়ার চেষ্টা করেন, আর এমন না যে এটা আপনাকে মানতেই হবে!) মজার ব্যাপার হল এই জিনিসটা পরিচালক তার সিনেমাতে দেখিয়েছেন- কিন্তু অনেক নিয়ন্ত্রিতভাবে- কারণ বিশাল জানেন- তার সিনেমার দর্শক কারা, তারা কতটুকু সহ্য করতে পারবে। সিনেমেটোগ্রাফি দারুণ সিনেমার- কাশ্মিরের সৌন্দর্য নতুন করে আবিষ্কার করা যায়।
কাশ্মিরের অবস্থা দেখে অনেক খারাপ লাগে, সিনেমাতে যা দেখেছি- বাস্তবে না জানি কতটা খারাপ অবস্থা। স্বার্থের জন্য "দুনিয়ার ভূস্বর্গ" নামের এই অসাধারণ রূপের জায়গাটার কি অবস্থা করেছে স্বার্থপর আর "সৃষ্টির সেরা জীব" খ্যাত(!) মানুষ! মন থেকে চাই এই হানাহানি কেটে যাক, স্বজন হারানোর কষ্টের সাথে পৃথিবীর অন্য কোন কষ্টের তুলনা হয়না। আশার ব্যাপার হল- হায়দার হিট হয়েছে। আইএমডিবি রেটিং এখন পর্যন্ত কোন হিন্দি সিনেমার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি- 8.8- এবং এটা প্রাপ্য। হায়দার ব্যবসাসফল না হলেও মনে হয় খুব একটা সমস্যা হত না- যেই জিনিস মন জয় করে নেয়, সেটা বক্স অফিস জয় না করলেও খুব একটা সমস্যা নেই। ইটস অ্যা মাস্টারপিস- কোন যুক্তিতেই মিস করার মতো সিনেমা হায়দার না।
১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৫
শাহরুখ সাকিব বলেছেন:
২| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৩
ভুল্কিস বলেছেন: মন দ্রবীভূত হয়ে গেলো, দেখতে হবে মুভিটা
প্রথম ধনাত্মক চিন্হ দিয়ে গেলাম।
১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৫
শাহরুখ সাকিব বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:১৪
রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: দেখব।
বিছমিল গানটা পারফেক্ট
১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৫৯
শাহরুখ সাকিব বলেছেন:
৪| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৭
অবাধ্য সৈনিক বলেছেন: অসাধারন একটা মুভি....রিভিউও অনেক ভালো হইসে
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৪২
শাহরুখ সাকিব বলেছেন:
৫| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:২২
হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার রিভিউ।
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪৭
শাহরুখ সাকিব বলেছেন: ধন্যবাদ হামা ভাই
৬| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:৪২
মাহবু১৫৪ বলেছেন: দারূণ রিভিউ
++++
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪৮
শাহরুখ সাকিব বলেছেন: ধন্যবাদ
৭| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৫:৩৪
অনিকেত-সুকন্যা বলেছেন: আপনি বোধহয় সাহিত্যের ছাত্র। ভাল লিখেছেন। তবে সিনেমার খুঁটিনাটি বিষয়গুলিও ছুঁয়ে গেলে আরো ভাল হতো। ভাল থাকবেন। অনুরোধ আমার পাতায় - সিনেমা কি ও কেন পড়ার জন্য।
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:১৮
শাহরুখ সাকিব বলেছেন: জি হ্যাঁ, জাহাঙ্গীরনগর ভার্সিটি, ইংরেজি সাহিত্য
৮| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:২১
শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: দেখবো..............
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:১৮
শাহরুখ সাকিব বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:২৪
সুমন কর বলেছেন: রিভিউ ভাল হয়েছে। দেখার লিষ্টে আছে।