নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কোন এক সময় লেখালেখি শুরু করবো। এখন যা লিখছি তা সেই সময়ের জন্যে প্রস্তুতি আসলে। আর লেখার জন্যে নতুন নতুন তথ্য যোগাড় করছি আপাতত।

ফায়েজুর রহমান সৈকত

মুক্ত সকল চিন্তা করি, নিজের সাথে নিজেই লড়ি।

ফায়েজুর রহমান সৈকত › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবিতা- ছোটলোক

০২ রা আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৭

ছোটলোক

ছোটবেলায় আমার কোন ক্রিকেট ব্যাট ছিলোনা।
তাই যাদের ব্যাট ছিল, বল ছিল, স্ট্যাম ছিল তারা
একটু ভাল খেললেই আমায় ডাকতো ছোটলোক।
আমি ভাবতাম ভাল খেললে বুঝি ছোটলোক হয়।
কিন্তু যেদিন আমি ভাল খেলি নাই সেদিন যখন তারা
আমায় ছোটলোক ডাকলো আমি ভীষণ ভয় পেলাম।
খেলা ছেড়ে দৌড়ে গিয়ে মাকে জিজ্ঞেস করলাম,
মা, মা ছোটলোক কি?
যারা ভাল খেলে তারা বুঝি ছোটলোক হয়?
আমার কথা শুনে মা ও ভয় পেয়ে গেলেন।
এই প্রথমবারের মতো আমার কথা শুনে মা ভয় পেলেন।
তাই দেখে মনেমনে আমি একটু খুশিও হলাম বৈকি।
মা আমায় জড়িয়ে ধরে কাঁদোকাঁদো হয়ে বললেন,
তুই আর ওদের সাথে খেলতে যাসনা বাবা।
ছোটলোক হওয়া থেকে মা যেন আমায় আগলে ধরতে চাইলেন।
যেন আরেকটু হলেই আমি ছোটলোক হয়ে যাচ্ছিলাম।
ছোটলোক বুঝি দুষ্টু হয়?
আমিও বুঝি তাদের মতো দুষ্টু হয়ে যাবো?
ভীষণ ভয় পেয়ে আমি মায়ের কোলে লুকাতে চাইলাম।

সেদিনের পরে আমি কোনদিন ক্রিকেট খেলতে যাইনি।
আমাদের বাসায় কোন টিভি ছিলোনা কিন্তু
খয়েরি রঙ্গের একটা ফুটফুটে রেডিও ছিলো।
সেই রেডিওতে আমি কত সুন্দর সুন্দর গান শুনতাম!
মাঝেমাঝে সেখানে সিনেমাও হতো।
সুধী শ্রোতাবৃন্দ, এখন শুরু হবে পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা চলচ্চিত্র পরেনা চোখের পলক।
অভিনয় করেছে বাংলার নায়ক রিয়াজ আর বম্বের নায়িকা রাভিনা!

ছোটবেলায় টিভিতে শক্তিমান দেখাতো।
শক্তিমান আমার প্রিয় নায়ক ছিলো।
সবাই বলতো গঙ্গাধরের সামনের দুটো দাঁত নাকি আমার মতো।
তাই প্রতি বৃহস্পতিবার আমি হারুনদের বাসায় শক্তিমান দেখতে যেতাম।
একদিন শক্তিমান দুষ্টু শয়তানটাকে মারছিলো এমন সময় হারুনের আম্মা টিভি বন্ধ করে দিলেন।
বন্ধ করার সময় তিনি কাকে যেন ছোটলোক বললেন।
সেখানে হারুন আর আমিই ছিলাম শুধু।
অনেকদিন পরে আবার আমি ছোটলোক শব্দটি শুনলাম।
শুনে আম্মা ভয় পাবে হয়ত তাই এবার আমি আম্মাকে কিছু বলিনি।
আমি এক দৌড়ে মতিন ভাইয়ের কাছে চলে গেলাম।
মতিন ভাই ভাল গান গাইতে পারতেন।
সবাই বলতো তিনি নাকি অনেক কিছু জানেন।
তাই আমি তাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, মতিন ভাই ছোটলোক কি?
আমার কথা শুনে মতিন ভাই হাসতে লাগলেন ।
আমি অবাক হলাম, আম্মা ভয় পেলেন কিন্তু মতিন ভাই হাসলেন কেন?
আমার রাগ লাগলো তাই সেখান থেকে চলে আসলাম।
একটু পরেই আমি ছোটলোকের অর্থ বুঝতে পারলাম।
যারা বয়েসে ছোট তারাই সম্ভবত ছোটলোক।
আম্মা হয়ত আমায় বড় হতে দেখতে চান তাই সেদিন আমায় জড়িয়ে ধরে কেঁদেছিলেন।
আমায় বড়লোক হতে হবে, মনেমনে প্রতিজ্ঞা করে আমি খুশিমনে হাঁটতে লাগলাম।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.