নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কোন এক সময় লেখালেখি শুরু করবো। এখন যা লিখছি তা সেই সময়ের জন্যে প্রস্তুতি আসলে। আর লেখার জন্যে নতুন নতুন তথ্য যোগাড় করছি আপাতত।

ফায়েজুর রহমান সৈকত

মুক্ত সকল চিন্তা করি, নিজের সাথে নিজেই লড়ি।

ফায়েজুর রহমান সৈকত › বিস্তারিত পোস্টঃ

চট্টগ্রাম দেখতে যাই (১ম পর্ব)

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৫৭

ভ্রমণে যাইবার এক বছর হইল আজকে। ২০১৬ সালে ডিসেম্বরের তিন তারিখে কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি অনুষদ ২য় ব্যাচ ভ্রমণে গেছিলাম। স্নাতক শেষে এই ভ্রমণকে যদিও দেশ ভ্রমণ ডাকা হয় কিন্তু আসলে এটি ছিল চট্টগ্রাম বিভাগ ভ্রমণ। এর আগে চট্টগ্রাম ঘুরা হয় নাই বইলা চট্টগ্রাম দেখার সাধ ছিল। অবশেষে সাধ পূরণ হতে চলছে ভেবে সবাই বেশ উত্তেজিত।

ভ্রমণের প্রথম দিনের গল্প,
আমাদের ভ্রমণটি শুরু হইছিল রাতে। সন্ধ্যায় একে একে সবে ব্যাগ পত্তর নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসস্ট্যান্ডে হাজির হইল। বড় ভাইয়া আপাদের বিদায় দেবার জন্য ছোটরাও আসলো। সবাই মিলে হই হুল্লোর করে বাজি পুড়াইলো। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস আমাদেরকে রেল স্টেশনে পৌঁছাই দিলো। সেখানে গিয়ে যে যার মতো খেয়ে নিয়ে নির্দিষ্ট কামরায় গিয়ে সিট দখল করলো। ঠিক দশটায় ট্রেন ছাড়লো।

ট্রেন চালু হতে না হতেই একদল ঠিক করলো মুখে চাদর মুড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়বে। তারা তাই করলো। আর বাকিরা দুই দলে ভাগ হয়ে গানের কলি খেলতে শুরু করলো। গানের কলি এদেশে বেশ পরিচিত একটা খেলা। এই খেলার নিয়ম হইল, দলের একজন একটা গান ধরবে আর তার সাথে সেই দলের সবাই মিলে গানটি গাইবে। তাদের গাওয়া শেষ হইলে সেই গানের শেষ অক্ষরটি দিয়ে আরেকটি গান ধরবে আরেক দল। আরেক দলের জন্যে নির্দিষ্ট সময় দশ সেকেন্ড। এইভাবে ট্রেনের সাথে পাল্লা দিয়ে গান গাওয়া চলতে থাকে।

গান গাইতে গাইতে যারা ক্লান্ত হয়ে পড়ে তারা নিজের আসনে গিয়ে বিশ্রাম নেয় কিন্তু বাকিরা গাইতে থাকে। তারপর রাত বাড়তে থাকলে এক সময় একে একে সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। ট্রেন চলতে থাকে। আমি আর দেবু মিলে বুদ্ধি করেছিলাম ট্রেনের চলার পথে যতগুলো বড় স্টেশনে থামবে ততগুলো স্টেশনে নেমে স্টেশনের নামফলক সহকারে সেলফি তুলবো। বেশ কয়েকটি স্টেশনে তুলছিলাম ও। কিন্তু কোন একটি স্টেশনে গিয়ে যেন নামফলক বের করতে করতে ট্রেন ছেড়ে দিছিল। শেষে কোনমতে দৌড়ে গিয়ে চলতি ট্রেনে উঠে এই চিন্তা মাথা থেকে ঝেরে ফেলে দিলাম আর সুবোধ বালকের মতো নিজের আসনে বসে বাকী পথ ঝিমাতে লাগলাম।

যখন ভোর হতে চললো তখন ট্রেনের জানালা খুলে বাইরে চেয়ে দেখি চারদিকে কি আশ্চর্য কুয়াশা জমাট বেঁধে আছে। একটা হিম শীতল হাওয়া গায়ে লাগতেই সারা গা শিওরে উঠলো। পাশেই কোন গ্রাম থেকে আজানের ধ্বনি ভেসে আসলো। গাঁয়ের আজানের একটা বৈশিষ্ট হইল, মুয়াজ্জিন ঘুম ঘুম চোখে আজান দেন । এই আজান শুনলেই আমার ছোটবেলার নানাবাড়ির কথা মনে পড়ে যায়। আজান চলতে থাকে আর সেই স্মৃতি একঝাক বিষণ্ণতা সহকারে আমায় জড়িয়ে ধরে। আমার খুব বিষণ্ণ লাগে। আর বড় হতে ইচ্ছে করেনা। ছোটকালে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে। নানাবাড়িতে যেতে ইচ্ছে করে। আম্মার পাশে ঘুমাইতে ইচ্ছে করে।

আজান শেষ হয়, ধীরেধীরে আলো ফুটে উঠে। বিরান প্রান্তর কুয়াশা দিয়ে ঢাকা। তার উপর আলো এসে পড়ে। মুগ্ধ হয়ে সেই দৃশ্য দেখতে থাকি। পাশেই মোতাহের ঘুম থেকে উঠে। অথবা সে হয়ত ঘুমায় নি। চোখ বুজে ছিল। দুইজনে বাইরের দিকে চেয়ে থাকি। মোতাহের বিড়ি ধরায়। একেকটা সুখটান দিয়ে কুয়াশাতে সেই ধুঁয়া ছেড়ে দেয়। বিড়ির গন্ধ তখন আমার খারাপ লাগেনা। ফোনের ভিডিও চালু করে সেই ভোরের দৃশ্য আমি ধারণ করি। খুব দ্রুত সকাল হতে থাকে। উজ্জ্বল আলোতে গ্রামগুলো আরো পষ্ট দেখা যায়।
ট্রেন চট্টগ্রাম স্টেশনের থেকে এক স্টেশন দূরে। একটু পরেই নামতে হবে তাই যারা ঘুমিয়ে ছিল তাদের জাগানো হয়। যে যার যার ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে নামার প্রস্তুতি নেয়। বিকট হুইসেল দিয়ে ধীরেধীরে ট্রেন থামে। আমরা ট্রেন থেকে নামি।

(চলবে)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:০২

মোঃ খুরশীদ আলম বলেছেন: চলতে থাকুক, পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩১

ফায়েজুর রহমান সৈকত বলেছেন: কালকেই লিখবো । :)

২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৭

কালীদাস বলেছেন: ভোর হওয়া থেকে লেখার বাকি অংশটুকু ভাল লাগল খুব।

চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, সেন্টমার্টিন এই জোনটা হল বাংলাদেশের সব ইউনির কমন ট্রাভেল জোন। মাঝে মাঝে মনে হয় এটাই বাংলাদেশের একমাত্র শিক্ষণীয় জায়গা কিনা :(( নিজের স্টুডেন্ট লাইফেও সেইম রুটে গেছি /:)

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩২

ফায়েজুর রহমান সৈকত বলেছেন: আমিও তাই বলি। কমন ট্রাভেল জোন। এবং জায়গাটিও বেশ সুন্দর কিন্তু।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.