নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শাকিলআহমেদহ্যাপী

শাকিলআহমেদহ্যাপী › বিস্তারিত পোস্টঃ

দূর্নীতি ও সন্ত্রাস দূর করার উপায়

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫৯

দূর্নীতি ও সন্ত্রাস দূর করতে হলে দূর্নীতি ও সন্ত্রাসের কারণ খুঁজে বের করতে হবে। তবে আমি যতটুকু জানি দূর্নীতি ও সন্ত্রাসের মূল কারণ
হল দূনিয়ার মহব্বত। নারীর মহব্বত, মালের মহব্বত, ক্ষমতার মহব্বত(মোহ) ইত্যাদির কারণে মানুষ দূর্নীতি ও সন্ত্রাসের সাথে জড়িত হয়ে যায়। তাহা ছাড়া আল্লাহ যে মানুষের রিজিক দাতা এ বিশ্বাস অন্তরে না থাকার কারণে মানুষ দূর্নীতি ও সন্ত্রাসের সাথে জড়িত হয়। মানুষ যদি আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী ঠিকমত পালন করে তাহলে আল্লাহ তাকে না খাওয়ায়ে রাখবেন না। এ বিশ্বাস অন্তরে দৃঢ়মূল না হওয়া পর্যন্ত দূর্নীতি ও সন্ত্রাস দূর করা সম্ভব নয়। মানুষকে অাল্লাহ তাআলা হালাল জীবিকা উপার্জনের জন্য চেষ্টা করতে বলেছেন। হারাম ভক্ষণ করতে কঠোর ভাষায় নিষেধ করেছেন। হারাম খেলে তার কোন ইবাদত বন্দেগী কিছুই কবুল হয় না। তার নামাজ, জাকাত, হজ্ব, রোজা কিছুই কবুল হয় না। আমরা মুখে বলি ব্যক্তির চেয়ে দল, দলের চেয়ে দেশ বড়। কিন্তু আমরা কাজ করি তার উল্টা। আমরা ব্যক্তিগত সংকীর্ণ স্বার্থ চরিতার্থ করতে যেয়ে দেশের বৃহত্তর স্বার্থকে বিসর্জন দেই। কারও মধ্যে দেশপ্রেম থাকলে কি সে সুদ, ঘুষ খেতে পারে? কখনও না। আমাদেরকে দেশের সমষ্টিগত বৃহত্তর স্বার্থের জন্য ব্যক্তিগত সংকীর্ণ স্বার্থকে বিসর্জন দিতে হবে। ইসলাম মানুষকে অন্যের সুখের জন্য প্রয়োজনে নিজের সুখ বিসর্জন দিতে শেখায়। যে কাজে নিজের লাভ কিন্তু অন্যের ক্ষতি ইসলামে সেটা নাজায়েজ। সুতরাং নিজের লাভের জন্য যে অন্যের ক্ষতি করে সে স্বার্থপর, আত্নকেন্দ্রিক। এরূপ মানুষকে লোকেরা ঘৃণা করে। আজ আমাদের সমাজে প্রতিটি ক্ষেত্রে দর্নীতি।
কি শিক্ষা বিভাগ, কি পুলিশ বিভাগ, কি আদালত, কি ডাক্তার, কি ইঞ্জিনিয়ার, কি ব্যবসায়ী, কি সরকারী আমলা সর্বক্ষেত্রেই দূর্নীতি। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দূর্নীতি অনুপ্রবেশ করেছে। হারাম খেয়ে আমাদের রক্ত নাপাক হয়ে গেছে। আমরা দরিদ্র মানুষের রক্ত চুষে নিজেরা বড়লোক হচ্ছি। ফলে দেশের উন্নতি ব্যহত হচ্ছে। দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে দিচ্ছি। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশ এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে। এ অবস্থা দূর করতে হলে আমাদের সবাইকে এক সাথে কাজ করতে হবে। মানুষের মধ্যে ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধ জাগিয়ে তুলতে হবে। সুখ-শান্তির মালিক হলেন আল্লাহ। আল্লাহ তাকেই শান্তিতে রাখবেন যে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করে। যে আল্লাহর
আদেশ নিষেধ মানে না তাকে আল্লাহ শান্তি দিবেন না। হয়তো তাকে আল্লাহ মাল দিতে পারেন কিন্তু শান্তি দেবেন না। এমন অনেক লোক আছে যাদের রাত্রে ঘুম আসে না। এমনকি ঘুমের বড়ি খেয়েও তাদের ঘুম আসে না। অথচ তাদের অনেক টাকা। কিন্তু চোখে ঘুম নেই। কারণ
আল্লাহর নাফরমানীর কারণে আল্লাহ তাদের থেকে ঘুম নামক নেয়ামতটা ছিনিয়ে নিয়েছেন। সুদ, ঘুষ খাওয়ার কারণে আল্লাহ তাদের এই শাস্তি দিয়েছেন। আবার অনেকের আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন রোগ দিয়ে রেখেছেন সুদ, ঘুষ খাওয়ার কারণে। দেখা যাচ্ছে সুদ, ঘুষ খেয়ে এক দিনেই লাখ টাকা কামাই করেছেন। কিন্তু অাল্লাহ সুদ, ঘুষ খাওয়ার কারণে এমন রোগ দিয়েছেন তাতে তার চিকিৎসার পেছনে দুই লাখ টাকা
খরচ হয়ে গেল। তাহলে কামাই করলেন এক লাখ খরচ হল দুই লাখ। হাতে কিছু থাকল? সুতরাং লাভের চেয়ে ক্ষতি হয়ে গেল বেশি। এক হাদীসে আছে যখন মানুষ নামাজ, রোজা, হজ্জ, জাকাত সবই পালন করবে কিন্তু নিজের জীবন আল্লাহর হুকুম এবং নবীর তরিকা মোতাবেক চালাবে না, তখন আল্লাহ তাদেরকে তিনটা শাস্তি দান করবেন। প্রথম শাস্তি, টাকা পয়সা অনেক থাকবে কিন্তু সুখ থাকবে না। দ্বিতীয় শাস্তি, একটা জালেম সরকার নিযুক্ত করে দেওয়া হবে। তৃতীয় শাস্তি বেইমান হয়ে মারা যাবে। আর বেইমান হয়ে মারা গেলে অনন্তকাল জাহান্নামের আজাব ভোগ করতে হবে। মুসলমান যদি পাপীও হয় তবু পাপের পরিমাণ অনুযায়ী শাস্তি ভোগের পর একদিন না একদিন জান্নাতে প্রবেশ করবে। কিন্তু বেইমান হয়ে মরলে কোনদিন জান্নাতে যেতে পারবে না। অনন্তকাল জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে। অনেকে আছে যারা বায়তুল মাল তথা রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্নসাত করে। যে লোক রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্নসাৎ করে সে একসাথে অনেক লোকের সম্পদ আত্নসাৎ করে। সুতরাং অত লোকের সম্পদ ফিরিয়ে দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব হয় না। সুতরাং তার পক্ষে গুনাহ থেকে তওবা করে পবিত্র হওয়া সম্ভব হয় না। সুতরাং যে লোক রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্নসাৎ করে সে যেন একাই কোটি কোটি লোকের হক নষ্ট করে।
রাষ্ট্রের সম্পদ আত্নসাৎ করে নিজে গাড়ি, বাড়ির মালিক হচ্ছে। ফলে গোটা জাতি গরীব হচ্ছে আর মুষ্টিমেয় সরকারী কর্মচারী ধনী হচ্ছে।
সুতরাং এ অবস্থা দূর করা প্রয়োজন। তা না হলে দেশটা ফকীরের দেশে পরিণত হবে। দেশের এ অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার চেষ্টা করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন প্রথমত দূর্নীতি অর্থাৎ সুদ, ঘুষ, অর্থ আত্নসাৎ সহ যাবতীয় দূর্নীতি দূর করতে হবে। সরকারী কর্মচারীদের ন্যায্য বেতন নিশ্চিত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, জাকাত দিতে হবে। এর জন্য জাকাত তহবিল গঠন করতে হবে। এটা সরকারীভাবে করতে হবে। অর্থাৎ ধনীদের কাছ থেকে জাকাত নিয়ে গরীবদের মাঝে বিতরণ করতে হবে। আমাদের সমাজে এমন অনেক লোক আছে যারা হারাম মাল দান করে। হারাম মাল দান করলে কোন সওয়াব নেই। উল্টা আরো গোনাহ হবে। যদি কেউ হারাম
মাল কামাই করে থাকেন তাহলে তার কর্তব্য হচ্ছে যার হক নষ্ট করেছেন তার হক তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে। পরিশেষে বলতে চাই ইবাদত কবুলের পূর্ব শর্ত হচ্ছে হালাল রুজি। সুতরাং আমাদের সকলকে হালাল রুজি উপার্জন করতে সচেষ্ট হতে হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.