![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গুরজনরা চরিত্র গঠনের উপদেশ দেয়ার সময় সবসময় আয়নাকে উদাহরন হিসেবে রাখেন… “আয়নার মত নিস্কলুষ চরিত্রবান হও”
আবার স্বচ্ছতা, পরিচ্ছন্নতার উদাহরনেও আয়নাকে ব্যবহার করা হয়। কারন পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা আর পবিত্রতার দিক থেকে আয়না- ই একমাত্র অতুলনীয় বস্ত।
কিন্ত কখনও কখনও এই স্বচ্ছ আয়না-ই হতে পারে আপনার জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক এক কলংকিত বস্ত্ব !
আমরা সাধারণত ‘মিরর’ বা আয়না হিসেবে জানি যার সামনে দাঁড়ালে আমাদের হুবহু প্রতিবিম্ব সামনে ভেসে আসে।
কিন্ত আয়নার নাম, কোয়ালিটি এবং ধরনগুলো আমাদের অনেকেরই অজানা।
যেমন,
প্লেইন মিরর, রাউন্ড মিরর, ট্রান্সপারেন্ট মিরর, কনভেক্স মিরর, ম্যাগনিফাইং মিরর, ম্যাজিক মিরর, নরম্যাল মিরর, টেম্পারড মিরর, প্লাস্টিক মিরর, সিঙ্গেল ওয়ে মিরর, টু-ওয়ে মিরর... ইত্যাদি।
এতোসব মিরর বা আয়নার ধরন দূর হতে চিনতে পারা সবার জন্য সহজ কাজ নয়।
শুধুমাত্র আয়না না চেনার কারনে খুব সহজেই আপনি অথবা আপনার স্বজন কিংবা আপনার সবচেয়ে প্রিয়জনও হতে পারেন ভয়ানক নোংরামীর শিকার!
প্রযুক্তির হাত ধরে এগিয়ে চলেছে সবকিছু। বাড়ছে জীবনমান।
কেনাকাটায় যোগ হয়েছে দারুণ সব সুযোগ। দেশের আনাচে কানাচে তৈরী হচ্ছে অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধাসহ বড় বড় শপিং মল। আর প্রত্যেক শপিং মলের বড় একটা অংশজুড়ে রয়েছে কাপড়ের দোকান।
আজকাল প্রায় বড় সব কাপড়ের দোকানেই থাকছে ট্রায়াল রুম। পছন্দের পোশাকটি ঠিকঠিক গায়ের মাপে ফিট হচ্ছে কি না, তা দোকান থেকেই দেখে নেয়া যাচ্ছে।
প্রযুক্তির অপব্যবহার করে কিছু অসাধু ব্যক্তি সেসব ট্রায়াল রুম, শপিং মলের ওয়াশরুম কিংবা পাবলিক টয়লেটে সেট করছে গোপন ক্যামেরা। আর গোপনে ভিডিও করা হচ্ছে অভ্যন্তরীণ দৃশ্য। এমন পরিস্থিতিতে আপনি বা আপনার পরিবার কতটুকু নিরাপদ? তাই দরকার আগেই গোপন ক্যামেরা শনাক্ত করা।
আমার গতপোস্টটি ছিলো শপিং মল, হাসপাতাল কিংবা রেস্টুরেন্টের ওয়াশরুমে গোপন ক্যামেরাযুক্ত ইলেকট্রিক বাল্বগুলো চেনার উপায় এবং সাবধানতা বিষয়ে।
আজকের বিষয় টু-ওয়ে মিরর... অর্থাৎ দ্বিমুখী আয়না।
এই আয়নায় আপনি আপনার চেহারা দেখতে পাবেন, কিন্তু কোনোভাবেই বুঝতে পারবেন না যে অন্য পাশ হতে কেউ আপনাকে দেখছে !
বড় কোম্পানীগুলোর অফিসের প্রাইভেসির জন্য ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে এই টু-ওয়ে মিরর বাংলাদেশের বিভিন্ন ছোটখাটো দোকান, শপিং মলের টয়লেট কিংবা ট্রায়ালরুমে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হচ্ছে।
স্বাভাবিকভাবে দেখতে এগুলো সাধারণ আয়নার মতোই। কিন্তু আয়নার পেছনে যে আছে তাকে দেখা যায় না। অথচ সে আপনাকে স্পষ্ট দেখতে পাবে।
ট্রায়াল রুমে আপনি যে আয়নার সামনে পোশাক পাল্টাচ্ছেন সেই আয়নার মধ্য দিয়েই হয়তো আপনাকে দেখে নিচ্ছে অন্য কেউ। আর সেখান থেকেই তৈরি হচ্ছে গোপন মুহূর্তের ভিডিও।
তো,
কিভাবে বুঝবেন টু ওয়ে মিরর ব্যবহার করা হয়েছে কি না?
ওয়াশরুম কিংবা ট্রায়ালরুমে প্রবেশের পর সেখানে কোন আয়না থাকলে নিচের দেখানো ছবির মত আপনার আঙ্গুল তির্যকভাবে রাখুন। আপনার আঙ্গুলের ছবিতে এভাবে যদি গ্যাপ দেখতে পান (ছবিতে লক্ষ্য করুন) তাহলে ঠিক আছে।
আর যদি দ্বিতীয় ছবিটির মতো দেখতে পান অর্থাৎ আয়নায় কোন গ্যাপ নেই তাহলে বুঝবেন ওপাশ থেকে কেউ ঠিকই আপনাকে দেখতে পাচ্ছে!
কাজেই,
ওয়াশরুম কিংবা ট্রায়ালরুমে ঢুকেই আপনার সর্বপ্রথম কাজটি হবে রুমের বৈদ্যুতিক বাল্ব, আয়না ভালোভাবে চেক করে নেয়া।
এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মেয়েরা।
অসাধু ব্যক্তিরা বস্ত্রবিতানের ট্রায়াল রুমে, পাবলিক টয়লেটে এবং আবাসিক হোটেলগুলোর বাথরুমেও এমন আয়না এবং ক্যামেরা বসিয়ে রাখতে পারে।
খুব সহজেই তারা মেয়েদের কাপড় বদলানোর নগ্ন ভিডিও ধারন করে তা বিভিন্ন পর্ন পেইজে ছড়িয়ে দিয়ে তা থেকে তা থেকে টাকা আয় করছে। কেউবা ভিক্টিমদের ব্ল্যাকমেইল করছে।
আবার কেউ স্রেফ বিকৃতির কারনেই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিচ্ছে এসব নগ্ন ছবি। যার ফলশ্রুতিতে এখন ইউটিউব এবং বিভিন্ন পর্ণ সাইটে লাখ লাখ হিডেন ক্যামেরার ফুটেজ!
রুমে গোপন ক্যামেরার অস্তিত্ব নির্ণয় করা যায় খুব সহজে।
কাজটি আপনিও করতে পারেন মাত্র এক মিনিটে। এজন্য ট্রায়াল রুমে (যেখানে কাপড় বদল করবেন) ঢুকে আপনার মোবাইল থেকে কাউকে কল দেয়ার চেষ্টা করুন। যদি কল করা যায় এবং নেটওয়ার্ক ঠিক থাকে, তাহলে বুঝবেন গোপন ক্যামেরা নেই। আর যদি কল করা না যায় ও নেটওয়ার্ক হঠাৎ করে একদম ডাউন হয়ে যায়, তাহলে বুঝবেন সেখানে অবশ্যই গোপন ক্যামেরা রয়েছে।
গোপন ক্যামেরার সঙ্গে ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল থাকে। সিগন্যাল ট্রান্সফার করার সময় এর ইন্টারফিয়ারেন্স হতে থাকে। যার জন্য মোবাইল নেটওয়ার্ক সেখানে ঠিকমতো কাজ করেনা।
নিজে সচেতন হউন... পরিবারের সদস্যদের সচেতন করুন...
©somewhere in net ltd.