নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মহেরা

আরেফিন৩৩৬

একটি নেতৃত্বই পারে একটি জাতিকে পরিবর্তন করতে; আমি এ কথায় বিশ্বাসী।

আরেফিন৩৩৬ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণতূর্য

২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:২৮



শতকের সেরা উক্তির এই মহান মানুষটি এসেছিলো পরাধীন একটি পৃথিবীতে। বারবার হৃদয়ে ভালোবাসা,মমতা আর মানবিকতা দোলা দিলেও পরাধীনতা তাকে ব্যাঘ্রের মতো ক্ষেপিয়ে তুলতো। ক্ষেপিয়ে তুলতো অনাচার আর শোষণ। চিরপ্রেমের মানুষটি মানবিক প্রেম বাঁচাতে হাতে হাতিয়ার তুলে নিতে একটুও সংকোচবোধ করেনি। একদিকে প্রেম অন্যদিকে দ্রোহ। কী চমৎকার মিশ্রণ তাঁর। তিনি কাজী নজরুল ইসলাম। তোমার জন্ম দিনে দেশের মানুষের মানবিক মুক্তি চাই আর চাই বাংলাদেশীদের বিশ্বভুবনময় প্রেম। মহান কবির জন্ম দিনে কিছু কথা লিখার লোভ সামলাতে পারলাম না।

সাহিত্য বলতে আমরা সাধারণ ভাবে যা বুঝি তা হলো প্রেমের সম্পর্কিত নানা কথা বার্তা। এমন ধারণাটি তৈরি হওয়ার পেছনে নানা কারণ বিদ্যমান। জীবন এবং সাহিত্য সম্পর্কে কম জানা মানুষগুলো যখন সাহিত্য নিয়ে নাড়াচাড়া করে সাথে থাকে একটি বাণিজ্যিক বেনিয়া সম্প্রদায় যারা মানুষের রগরগে সুড়সুড়ি কাজে লাগিয়ে টাকা উপার্জন করে নেয়,তাহলে সাহিত্যের অর্থটুকু এমন বাজেই হবে। নাড়াচাড়া করে কথাটি ঠিক তেমন না, যারা নীতি নির্ধারণ করে দেয় যে আমাদের জীবন ও সাহিত্যের গতিপথ কেমন হবে, আমি ঠিক তাদের কথা বলছি। পৃথিবীর মহান মতাদর্শগুলো প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা,কল্যাণচিন্তা এবং সময়ের সাথে তাদের যুক্তিকতা নিয়ে। এর মাঝে বহু মতাদর্শ তাদের হীনতার কারণে হারিয়ে গেছে। আমি ঠিক কোথায় হাত দিয়ে চেয়েছি হয়তো এখনো কারো কাছেই স্পষ্ট হয়নি। আমি কতটুকু বুঝিয়ে বলতে পারি সেখানেও অনেকের অতৃপ্তি থাকতে পারে। সব দূর্বলতা মাথায় নিয়েই লিখছি। কেউ কিছু পেলে তার যোগ্যতা, আমি সেখানে খুবই নগণ্য।

সাহিত্যের মূল ব্যাপার দর্শনের মতোই জগত এবং জীবন নিয়ে নানা জিজ্ঞাসা। এখানে বড় ব্যাপার হলো দর্শনে সকলের সচেতন এবং অসচেতন দখল না থাকলেও সাহিত্যে যাপিত জীবন দিয়েই সকলের কিছু না কিছু দখল থাকে। বাস্তব জীবনের সত্য এবং শিল্পের সত্য দুটোই জীবন। কিন্তু শিল্পের সত্য অনেক ক্ষেত্রে বাস্তব সত্যের চেয়ে অনেক বড় সত্য হয়ে দাঁড়ায়। তাই যুগ যুগ ধরে মানুষ তাদের জীবনের অংশ হিসেবে সাহিত্যকে পাশাপাশি নিয়ে চলেছে। জিজ্ঞাসাগুলো ছিল, জিজ্ঞাসাগুলো আছে, থাকবে মানুষ যতদিন থাকবে। সাহিত্য জীবনের কথা বলে। সে জীবন হতে পারে সংগ্রাম,সফলতা, ব্যর্থতা, প্রেম এবং দ্রোহ। মোতাহের হোসেন চৌধুরীর বাস্তবিক উক্তিটি বলা যেতে পারে,-
''মনের দাবি না মিটলে আত্মা বাঁচে না''।

মানুষের আত্মা বাঁচলেই কেবল মানবিকতা বেঁচে থাকে। জীবনের স্পন্দন যেখানে আছে সেখানে জীবন স্পন্দিত হয়। তাইতো মানুষ কচি কিশলয়, নারী,পুরুষ,শিশু, ফুল, ভালো কাজ,মানবিকতা, প্রাণী এবং প্রকৃতি দেখে স্পন্দিত হয়। এগুলোই জীবনের সত্য। মানুষ এই সত্যে বিহোমিত। অপরদিকে অসুন্দরের হাতছানি লোভ,জিঘাংসা এবং অমানবিতা দেখে মানুষ ব্যাথিত হয়। সকলক্ষেত্রেই সত্য-সুন্দরের জয়গান এবং অসুন্দরের বর্জনই সাহিত্য।

সাহিত্যের মূল অর্জন এবং পরিণতির কথা বলা হয় তা হলো ভয়হীন চিত্ত। ভয়শূন্য চিত্তই মানুষকে নির্মোহ সুন্দর এবং সত্যের দিকে ধাবিত করে। নজরুল সেখানেই সরাসরি হাত দিয়ে বলে দিয়েছেন,
''মোরা বিধাতার মতো নির্ভয়''।
জীবনের নানামুখী তৎপরতায় নজরুল নিজেকে রেখেছেন ভয়শূন্য। সেজন্যে তিনি হিন্দুর বন্দনাও করেছেন মুসলমানের গীতও গেয়েছেন। কাউকে পরোয়া করে কিছু লিখেননি। পরাধীন জীবনে থেকে তিনি অনুভব করেছেন স্বাধীনতার অমৃতসুধা। তাই কোনদিনও তিনি ব্রিটিশ তোষণ করেননি। একাগ্রচিত্তে বলে দিয়েছেন,-
''আমি বিদ্রোহী ভৃগু,ভগবান বুকে এঁকে দেই পদ-চিহ্ন''
তিনি চিত্তের স্বাধীনতায় কাউকে ছাড় দেননি। আমাদের বর্তমান সাহিত্যিকগণ যে অর্থে নিজেদেরকে সাহিত্যিক মনে করেন,আমার কাছে একজন মানুষ হিসেবে সেখানে অনেক কষ্ট হয়। কোন মতাদর্শকে মোকাবিলা করতে গেলে সেই মতাদর্শের বিপরীতে যে মতাদর্শকে নিজের কাছে উত্তম মনে হয় সেটির ব্যাপক চর্চার মাধ্যমে মূল্যহীন মতাদর্শকে মূল্যহীন করে দেয়া যেতে পারে। বাস্তবক্ষেত্রে তাই হওয়া চাই। কিন্তু একটি দেশের মাটির গ্রাণ,জীবনের আহবান,প্রথা,রুচি এবং জীবনসত্যকে অস্বীকার করে যখন কেউ অন্য একটি ভূগোলিক জগতের সত্যেকে নিজেদের সত্য বলে ভাবেন তাহলে নিজেদের মৌলিকত্ব বলে কিছু থাকে না।

শত ফুল প্রোস্ফোটিত হোক
কারো কাছে নজরুল ভালো নয়,কেউ বলেন রবীন্দ্র ভালো নয়। তবে আপনি কিসের চর্চা করেন? আবার অনেককে দেখা গেছে স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে কবি আহসান হাবীব, ফররুখ আহমেদ, আল মাহমুদ এরকম অনেক কবিকে নিয়ে নাক ছিটকাতে দেখা যায়। আমাদের স্বাধীনতা তো হয়েছিলো আমাদের মতাদর্শের , আমাদের রাজনৈতিক কোন মূল্য ছিল না বলে। তবে কি আমাদের দেশে তাদের জন্যে আবার আলাদা স্বাধীনতা চাই। নাকি এত বিশাল একটি জনগোষ্টিকে বাইরে রেখে দেশকে চালাবো? সহনশীলতার চর্চা তবে কবে হবে ?

৪৭এর দাঙ্গার সময় নজরুলকে দেখা গেছে কি আঁটঘাট বেঁধে নেমেছিলেন মানুষগুলোকে বাঁচাতে। আমরা কি সেই নজরুলকে ভুলে যাই। আমাদের দেশের প্রগতিশীলতার একটি বিশেষ গোঁড়ামি আছে, পাশাপাশি আছে ধর্মীয় গোঁড়ামির একটি গোষ্টি। এদের কেউই যে সুন্দর ,সত্য এবং মননশীলতার সাথে নেই ,আছেন একটি অস্থিতিশীলতার সাথে তা তাদের ক্ষমতার ব্যবহার আর ভাষার প্রোয়োগের মাধ্যমে ধারণা করা যায়। নজরুল ছিলেন মমতা এবং প্রতিরোধের মূর্ত প্রতিক। তিনি যেমন সত্য এবং প্রেমকে গ্রহণ করেছেন পাশাপাশি দৃঢ়তার সাথে বর্জন করেছেন অসুরকে। তাঁর জন্মদিনে আমাদের ভেতরের স্বত্বা জেগে উঠুক
(রিপোস্ট- পূর্বে মহেরা ব্লগ থেকে প্রকাশিত)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৮

কামাল১৮ বলেছেন: নজরুল হাতিয়ার তুলে নেন নাই।তুলে নিয়েছিলেন কলম।

২৫ শে মে, ২০২৪ ভোর ৬:১৫

আরেফিন৩৩৬ বলেছেন: আপনি নজরুল নিয়ে আরো পড়াশোনা করেন। আপনি আমার ঐ ভাষাটুকু বুঝতে পারেননি। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্যে

২| ২৬ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:০৪

কামাল১৮ বলেছেন: কোন কোন বই পড়তে হবে যদি দয়া করে একটু বলে দেন।

২৬ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৫৬

আরেফিন৩৩৬ বলেছেন: ভাবটা এমন নিলেন যে আপনি নজরুল বিশারদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.