নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাট ইয়োর বডি এর্কোডিং টু ইয়োর ইমেজ

শরৎ চৌধুরী

তুমি তোমার ইমেজ মতইপ্রোফাইল বানাওকি ব্লগেকি জীবনে

শরৎ চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিদেশে এবং প্রিয়জনের মৃত্যুতে

৩০ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৮:২৪

বিদেশে সবচেয়ে বড় কষ্ট হল আপনজনদের মৃত্যুর খবর। আজ সকালে উঠেই জানলাম নানী আর নেই। আসার সময় দেখাও করে আসতে পারিনি। তার সবচেয়ে আদরের নাতি তার মৃত্যুর সময় তার কাছে নেই। বিদায় জানাতে পারলাম না। ছোট বেলায় কাদার মধ্যে যতবার আছাড় খেয়েছি ততবার ছুটে গিয়ে ধরেছেন। মা আমাকে একুশ দিনের রেখে ইন্দোনেশিয়া যেতে পেরেছিলেন এই নানীর কারণেই। ছোট বেলায় আমার একটা ছোট এলুমিনিয়ামের ট্রাংক ছিল। আমার ছোটবেলার অনেক কিছু তিনি সেটাতে যত্ন করে রেখে দিয়েছিলেন। একেবারে ছোট বেলার ক্রিকেট ব্যাট, মার্বেল, লাটিম, বই।



তিনি ভীষণ একচোখা ছিলেন যাকে আদর তাকে আদর এবং বাকীরা রীতিমত অনাদর, ম্লেচ্ছ। এরকম মানুষের আদর পাওয়াটা ভাগ্যের। স্বার্থপর আমি আর কষ্টটা এখানেই, আমাকে একচোখা আদরের মানুষটা আর নেই। পরবর্তীতে যাদের আমি ভালোবেসেছি যারা আবার পালিয়ে গেছেন। তাদের সাথে তুলনাটা চলে আসে সহজেই। ফলে একচোখা ভালোবাসাটার অভাব বুঝি খুব ভালোভাবেই। আমাকে ভালোবাসতেন কারণ তার বড় মেয়ের প্রতি তার অপরিসীম নির্ভরতা, ভালোবাসা এবং কৃতজ্ঞতা ছিল। আমাকে ভালোবাসতেন কারণ আমাকে তিনি পছন্দ করতেন।



তিনি স্বপ্নবাজ ছিলেন, রূপালী পর্দা খুব টানতো। উত্তম-সূচিত্রা বলতে অজ্ঞান, মিহি সুরে গান গাইতে পারতেন। নানা বিকেলে সিনেমা হলে ঢুকিয়ে দিয়ে আসতো আবার সিনেমা শেষ হলে বাড়ীও নিয়ে আসতো। তিনি তীব্র ছিলেন, ঝাঁঝালোও, অধিকাংশের কাছেই খটমটে। আমার নানা তার সন্তানদের কাছে জনপ্রিয় ছিল; নানী অজনপ্রিয় ছিলেন। নানা মোটেও স্বপ্নবাজ ছিলেন না। নানার শান্তি ছিল। নানীর কখনোই শান্তি ছিল না। নানী প্রতিদিন চাঁদ ভ্রমণ করতেন, প্রায়শই নবীজি তাঁর স্বপ্নে দেখা দিতো। তিনি লোক খাওয়াতে পছন্দ করতেন। তিনি স্বাপ্নিক ছিলেন। আর সেই স্বপ্নই তাঁকে ভীষণ অস্থির রাখতো। পান সুপারি সেই অস্থিরতা নিরসনের একটা উপায় ছিল তবে একমাত্র উপায় ছিল না।



বিদেশে বসবাসের কিছু অমোঘ নিয়তি আছে। দূরত্ব এর মধ্যে সম্ভবত নিষ্ঠুরতম। কিন্তু জীবনের সবচেয়ে নিষ্ঠুরতম গল্পটার নাম মনে হয় বিচ্ছেদ। যেই মায়ায় আর অশ্রুতে তৈরি এই পৃথিবী সেটা একটা অপারেশনাল টুল মাত্র। প্রবঞ্চনাই মনে হয় বারেবার। যারা অনেক সংযোগ-বিচ্ছেদ, উত্থান-পতন, চড়াই-উৎড়াই পার করেছেন তারা যানেন এর যন্ত্রণাটা কেমন। কেনইবা এত তরঙ্গ কিসের জন্যই বা এই এত অস্থিরতা। আজ আমার মা তার মায়ের মৃত্যু সংবাদ তার সন্তানের কাছে দিলেন। চক্র বলে একদিন আমিও সেই কাজটাই করবো। আমার সন্তানও। কিন্তু আমার তো কোনকিছু ছাড়তেই ভালো লাগে না। সবাই একসাথে থাকতে পারে না কেন? কেন? কেন?

মন্তব্য ৩২ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৩২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৮:৪১

এহসান সাবির বলেছেন:
বিদেশে সবচেয়ে বড় কষ্ট হল আপনজনদের মৃত্যুর খবর, এটা আমারও একবার বোঝার মতো দূর্ভাগ্য আমার হয়েছিল।

নানীর জন্য দোয়া রইল।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৬:০৪

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: অশেষ কৃতজ্ঞতা। এই অভিজ্ঞতাটা খুব কষ্টকর।

২| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:০৪

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
বিদেশে বসবাসের কিছু অমোঘ নিয়তি আছে । দূরত্ব এর মধ্যে সম্ভবত নিষ্ঠুরতম ।
কিন্তু জীবনের সবচেয়ে নিষ্ঠুরতম গল্পটার নাম মনে হয় বিচ্ছেদ ।
যেই মায়ায় আর অশ্রুতে তৈরি এই পৃথিবী সেটা একটা অপারেশনাল টুল মাত্র ।
প্রবঞ্চনাই মনে হয় বারেবার ।



প্রিয় অন্যমনস্ক শরৎঃ উপরে হাই-লাইট করা আপনার কথাগুলি খুব ভালো লাগিল ।
আমার প্রিয়তমা ও শ্রদ্ধায়া নানুও আমি বিদেশে (USA) থাকা অবস্থায় পরলোক গমন করিয়াছিলেন । তিনিই ছিলেন আমার প্রেরনা ও ভালোবাসাময় পরম স্থান । আমার বাল্যকাল ধন্য হইয়াছিল তার স্নেময় ভালোবাসায় ও পরের জীবনে এতদূর আসিতে পারিয়াছিলাম তার প্রেরনায়ই । সে-ই ছিল আমার জীবনে পরম ভালোবাসা ও আশ্রয় স্থান ।

আপনার নানীর প্রতি রহিল আমার সশ্রদ্ধ সালাম ও সুভকামনা - পরকালে তার আত্মা পরম শান্তিতে থাক দোয়া করি । আর আপনার প্রতি রহিল আমার আন্তরীক সমবেদনা ।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৬:০৫

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: সমবেদনার জন্য অনেক ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা করিম।

৩| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৮

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:

আল্লাহ উনাকে বেহেশত নসীব করুক।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৬:০৫

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ বঙ্গ।

৪| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:১৩

এনামুল রেজা বলেছেন: মন খারাপ হয়ে গেল পড়তে পড়তে।
আমার দাদীর বেলাতেও এমন হয়েছিল। প্রবাসে ছিলাম না। দেশের মাঝেই, তারপরেও। :(

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৬:০৫

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: আহারে।

৫| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৩৯

আবদুর রব শরীফ বলেছেন: আবেগের মাঝে বাস্তবতার চার দেয়াল... :((

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৬:০৬

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: নিষ্ঠুর বাস্তবতা।

৬| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৪০

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:
:( :( :(

সমবেদনা জানানোর কোন ভাষা জানা নেই। মৃত্যু শব্দটা আমাকে ভীষণ নাড়া দেয়।

নানীর এই অজানার পথ সুখের হোক।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৬:০৬

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ শোভন।

৭| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৪১

সুমন কর বলেছেন: একদম সঠিক কথা বলেছেন।

অাপনার নানীর অাত্মার শান্তি কামনা করি।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৬:০৭

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ সুমন।

৮| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:২২

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: নানীর জন্য দোয়া করছি ---

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৬:০৮

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: অশেষ কৃতজ্ঞতা আর ধন্যবাদ লাইলী।

৯| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:২৩

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ইন্না লিল্লাহে ও ইন্না ইলাইহি রাজেউন। আল্লাহ তায়ালা ওনাকে বেহেশত নসীব করুক ।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৬:০৯

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: অশেষ কৃতজ্ঞতা সেলিম।

১০| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৫৯

তোমোদাচি বলেছেন: আপনার অনুভুতিটা ছুয়ে গেল। জাপান থাকতে আমি কয়েকজন স্বজন কে হারিয়েছি; সেষ দেখাটা আর হইনি ...

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৬:১০

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: এত মর্মান্তিক বেদনার এই উপলব্ধি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। ধন্যবাদ অনেক।

১১| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:১২

সুলতানা রহমান বলেছেন: এতে 'কেন 'র উত্তর মনে হয় পাওয়া যাবে না। কষ্ট টা সময়ের সাথে ফিকে হয়ে যাবে। আল্লাহ তায়ালা উনাকে বেহেশত নসীব করুন

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৬:১১

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: হয়ত তাই। অনেক শুভেচ্ছা।

১২| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৯

কলমের কালি শেষ বলেছেন: মন ভারী করা অনেক কথাই বলে গেলেন । কিন্তু জন্ম মানেই মৃত্যু অবধারিত । সবাইকেই তা মেনে নিতে হবে ।

মহান আল্লাহ তায়ালা আপনার নানীকে বেহেস্ত নসিব করুক ।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৬:১১

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ কলম।

১৩| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:২৪

জ্যামিতিক লাভ বলেছেন: আল্লাহ্‌ উনাকে বেহেস্ত নসিব করুন।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৬:১২

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: কৃতজ্ঞতা জানবেন।

১৪| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:০৩

মিন্টুর নগর সংবাদ বলেছেন: আমি আন্তরীক ভাবে দুঃখিত শরৎ দা আপনার এখানে অবিযোগ জানানোর জন্য ।

আমাকে ব্যন করে মনে হয় আমার লেখা বন্ধ করতে পারবেন না ।
সূতারাং দয়া করে আমার ফ্রন্ত পেজে লেখার অধিকার ফিরত দিন ।

১৫| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:২১

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: হৃদয় ছোঁয়া লেখনিতে যেন আপনার নানিকে দেখতে পাচ্ছিলাম। আপনার এই ঘটনায় আমার বড় মামাকে মনে পড়ে গেল। উনি টিনএজ শেষ করার পরপরই বিদেশ পাড়ি জমান ভাগ্যান্বেষণে, আজও বিদেশ বিভূঁইয়েই উনার জীবন কাটছে পঞ্ছাশ ছুইছুই বয়সে। এই সময়ে উনি বাবা, নানা-নানিসহ কোন কাছের কাউকেই শেষ দেখা দেখতে পারে নাই। সবচেয়ে খারাপ লাগার ঘটনা হল যখন উনার নান মারা যান, উনি তখন নানার বাসায় ছিলেন। সেদিন সকাল আটটার দিকে উনি টাঙ্গাইলে এক বন্ধুর বাসায় যান বন্ধুর সাথে দেখা করতে, নানা মারা যান দশটার দিকে, জানাজা হয় মাগরিবের পর, উনি বাসায় আসেন রাত দশটায়। নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকের ঘটনা, তখন কোন মোবাইল বা অন্যকিছুর চল ছিল না। কেউ সেই বন্ধুকেও চিনতো না। দেশে থেকেও পরবাসীর মত নানাকে শেষ দেখাটাও দেখতে পারে নাই। উল্লেখ্য, উনি নানা বাড়িতেই প্রতিপালিত হয়েছিলেন। নানা-নানি আর মামা শখ করে উনাকে উনাদের কাছে রেখেছিলেন। :(

আল্লাহ আপনার নানির বিদেহী আত্মাকে শান্তি দান করুন এবং উনাকে জান্নাত নসীব করুন।

১৬| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:৫৪

সায়েম মুন বলেছেন: আপনার স্বাপ্নিক নানীর সম্পর্কে জানতে পারলাম তার পৃথিবী বিচ্ছেদকালে। এরকম বিচ্ছেদ খুব কষ্টের। নানীর জন্য মৃত্যু পরবর্তী শুভকামনা রইলো। ভাল থাকবেন শরৎ।

১৭| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৭

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: মনে হয় অনেক দিন আপনাকে দেখি না। ধন্যবাদ।




ভালো থাকবেন নিরন্তর।

১৮| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪৪

মেঘনা পাড়ের ছেলে বলেছেন: R.I.P. নানি।

১৯| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০৬

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: আপনার নানীর জন্য দোয়া রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.