নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ

সরকার পায়েল

মানুষ যা অনুভব করে তাই জ্ঞান।

সরকার পায়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোমানরা ও ইমাম আবির্ভাবের যুগে তাদের ভূমিকা

২৬ শে মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৪

আখেরী যামানা ( সর্ব শেষ যুগ ) এবং ইমাম মাহদী ( আঃ ) এর আবির্ভাব কালের সাথে সংশ্লিষ্ট রেওয়ায়েত সমূহে 'রুম ' শব্দের অর্থ ' ইউরোপীয় জাতিসমূহ ' । বিগত শতাব্দীগুলোতে আমেরিকা মহাদেশেও তাহাদের বিস্তৃতি ঘটেছে । অর্থাৎ আমেরিকা মহাদেশের ইউরোপীয় বংশদ্ভূতগনও রোমের সন্তান এবং ঐতিহাসিক রোমান সম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী ।



কখনো কখনো বলা হয়ে থাকে যে , রোমানদের ব্যাপারে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে একটি সূরা ( সূরা রুম ) অবতীর্ণ করেছেন এবং পরবর্তীকালে মহানবী ( সঃ ) ও মুসলমানগণ যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন তারা এদের থেকে ভিন্ন । কারণ তারা ছিল বাইজানটাইনিও যাদের আদি রাজধানী ছিল ইতালির রোম নগরী । অতঃপর কন্সটানটিনোপল নগরী পাঁচশো বছর আগে মুসলমানদের হাতে বিজিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের রাজধানী বলে গণ্য হতো । মুসলমানগণ বিজিত এই নগরীর নাম দেয় ' ইসলাম বুল ' এবং সাধারণ জনগন এই শহরের নাম উচ্চারণ করত ' ইস্তাম্বুল ' ।





এটা ঠিক যে , রোমানগণ সুরা-ই রুম অবতীর্ণ হওয়া এবং তাদের ব্যাপারে রেওয়ায়েত সমূহ বর্ণিত হওয়ার সমসাময়িক রোমান বা বাইজানটাইনীয় সাম্রাজ্যের সমর্থক বলে প্রসিদ্ধ ছিল । তবে আজকের পাশ্চাত্যের অধিবাসীরা এদের থেকে ভিন্ন নয় । বরং বর্তমান কালের পাশ্চাত্য বিশ্ব হচ্ছে অতিত রোমান সভ্যতা ও রাজনীতিরই সম্প্রসারিত রূপ এবং তাদেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ ।





আর ( বর্তমানকালে ) ফরাসী , ব্রিটিশ এবং জার্মান জাতিগুলো সাংস্কৃতিক , রাজনৈতিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকেও রোমান সম্রাজ্যের প্রকৃত স্তম্ভ বলে গন্য হয় । যেহেতু এ সব জাতি ঐ সময় রোমান সাম্রাজ্যের শাসনাধীন ছিল এবং রোমান সাম্রাজ্যের উপনিবেশ বলে গন্য হতো সেহেতু এ বাস্তবতা অস্বীকার করা যায় না ।



বরং দীর্ঘ দুশ বছর রোম ও কন্সটানটিনোপল ছিল রোমান বাইজানটাইনীয় রাজন্যবর্গ এবং আমির- অমাত্যের রাজধানী । অথচ তাদের সবাই ইতালিও জাতিভুক্ত এবং একই বংশোদ্ভূত ছিলেননা । বরং তারা ছিলেন বিভিন্ন ইউরোপীয় গোত্র ও জাতিভুক্ত । অতঃপর গ্রীস বাইজানটাইনীয় সাম্রাজ্যভুক্ত হলে রাজন্যদের মধ্যে গ্রীকদেরকেও দেখা যেত ।





আর সম্ভবত এ কারণেই রোমান সাম্রাজ্য দুর্বল এবং তা কন্সটানটিনোপল ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেলে তা মুসলিম জাতিসমূহ কর্তৃক আরোপিত সামুদ্রিক অবরোধের সম্মুখীন হয় এবং ইউরোপীয়রা রোমান সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার ও ঐতিহ্যের দাবি তোলে । তাই জার্মানি ও অন্যান্য দেশের কতিপয় শাসনকর্তা নিজেদেরকে কায়সার ( সিজার ) বলে ঘোষণা করে ।





সাম্রাজ্য ও রাষ্ট্র সমূহের ক্ষেত্রে এ ধরনের পরিবর্তন ছিল নিতান্ত স্বাভাবিক ব্যাপ্যার । কারণ সরকার ও প্রশাসন এক দেশ থেকে আরেক দেশে এবং এক জাতি থেকে আরেক জাতিতে স্থানান্তরিত হয়ে থাকে । তাই এ স্থানান্তর পূর্ববর্তী সরকার ও প্রশাসনের নাম ও তার মৌলিক বিশেষত্বের সাথে মোটেও অসঙ্গতি পূর্ণ নয় ।





সুতরাং যে সব রেওয়াতে রোমানদের ভবিষ্যৎ অথবা আরবদের ভাষায় ' বনি আসফার ' বা হলুদ বর্ণ বিশিষ্টদের ব্যাপ্যারে বর্ণিত হয়েছে সেগুলোর প্রকৃত অর্থ সকল ইউরোপীয় জাতিকে বাদ দিয়ে শুধু ইতালিও বাইজানটাইনীয় রোমানগণ নয় ।





এ কারণেই মুসলমানরা তাদের ঐতিহাসিক গ্রন্থসমূহে ইউরোপীয়দেরকে কখনো কখনো 'রোমান' এবং কখনো ' ফিরিঙ্গি ' বলে উল্ল্যেখ করেছে এবং 'রুম' ও ' রোমান ' এর বহু বচন আরওয়াম করেছে ।







অধিকন্তু সূরা রুমের ৩১ ও ৩২ নং আয়াত এবং সূরা কাহাফের ১২ ও ২১ নং আয়াত সমূহে যা কিছু মহান আল্লাহর সাথে তাদের শরিক স্থাপন এবং তাদের অনুসারি বিভিন্ন জাতির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে তার উদ্দেশ্য এই যে , এ সব গোষ্ঠী ও জাতির কাঙ্খিত অর্থ হচ্ছে হযরত মসীহ ( আঃ ) এর অনুসারি হওয়ার দাবিদার ইউরোপীয় জাতি ও গোষ্ঠী সমূহ । এটি , সুস্পষ্ট যে খ্রিস্টান জাতিসমুহের ধর্মীয় নেতৃত্ব ইতালিও এবং কন্সটানটিনোপলের হাতে ন্যস্ত ছিল । অতঃপর বর্তমান পাশ্চাত্য বিশ্ব তাদের থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে অর্জন করেছে ।





ইমাম মাহদি ( আঃ) এর আবির্ভাবের যুগ সংক্রান্ত বহু রেওয়ায়েতে রোমের নাম উল্লেখিত হয়েছে । যেমন - তাদের ফিতনা ও গোলযোগ এবং মুসলমানদের উপর তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত রেওয়ায়েত সমূহ ।



** ইমাম মাহদি ( আঃ ) এর আবির্ভাবের কিছুকাল আগে আরব ভূখণ্ডের উপকূলীয় এলাকাসমুহের দিকে রোমানদের যুদ্ধ জাহাজগুলোর আগমন সংক্রান্ত আরও কিছু রেওয়ায়েত বিদ্যমান ।



** ইমাম জাফর সাদিক ( আঃ ) বলেছেন - যখন শামে তুমি বিপদ- আপদ ও বিশৃঙ্খলা প্রত্ত্যক্ষ করবে তখন হতে আরব দেশ সমুহের দিকে পাশ্চাত্যের অগ্রসর হওয়া পর্যন্ত রয়েছে কেবল মৃত্যু এর মৃত্যু । তখন তাদের মধ্যে বেশ কিছু ঘটনা সংঘটিত হবে ।





আবির্ভাবের যুগ সম্পর্কিত রেওয়ায়েত সমূহে শামের ফিতনা ও গোলযোগ , মুসলিম উম্মাহর উপর ধর্মদ্রোহীদের আধিপত্য বিস্তার ও গোলযোগ সৃষ্টি করার পর যে সব দ্বন্দ্ব সংঘাতের উদ্ভব হবে সেগুলোর সাথে মিলে যায় । তবে এ কারনে যে , বনি আসফার অর্থাৎ পাশ্চাত্য ঐ অঞ্চলের অধিবাসীদের তীব্র প্রতিরোধ এবং সেখানে বিদ্যমান রাজনৈতিক আন্দোলন ও সঙ্ঘাত সংঘর্ষের কারনে ফিলিস্তিনের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের উপর তাদের রাজনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ ব্যর্থ হওয়ায় এবং অত্র এলাকায় তাদের সামরিক আগ্রাসন ভবিষ্যতে আরব দেশ সমূহের মুসলমানদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়ার সম্ভাবনা বিদ্যমান থাকায় তাদের প্রত্যক্ষ সামরিক হস্তক্ষেপ করার বিষয়টিকে অনিবার্য বলে বিবেচনা করবে ।

এর



** হযরত আলী ( আঃ ) থেকে বর্ণিত , রমজান মাসের ফজরের সময় পূর্ব দিক থেকে একজন আহ্বানকারী আহ্বান করে বলবে , হে ঈমানদারগন ! তোমরা সকলে একত্রিত হও । আর সাদা ভাব মিলিয়ে যাবার পর পশ্চিমদিক থেকে আরেক জন আহ্বানকারী বলবে , হে বাতিলপন্থিরা তোমরা সবাই একত্রিত হও । রোমানরা আসহাব-ই কাহাফের গুহার নিকটবর্তী সমুদ্র সৈকতে আগমন করবে এবং মহান আল্লাহ ঐ সব যুবককে তাদের কুকুর সহ গুহা থেকে বের করে আনবেন । তাদের মধ্যে মালিখা ও খামালাহ নামে ২ ব্যাক্তি থাকবে যারা কায়েমের ( মাহদী ) নির্দেশাবলী মেনে নেবে ।







এই সামরিক অভিযান অতীতের সামরিক অভিযানেরই ধারাবাহিকতা অথবা আবির্ভাবের কাছাকাছি সময়ের অভিযানও উদ্দেশ্য হতে পারে । আর রেওয়ায়েত থেকে যেন বোঝা যায় যে , এই সামরিক অভিযান ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের আন্দোলনের খুব কাছাকাছি সময় সংঘটিত হবে । কারণ ঘটনা সমূহ রমজান মাসে আসমান থেকে একের পর এক গায়েবী ধ্বনির পর পরই শুরু হবে এবং মুহররম পর্যন্ত অব্যাহতভাবে চলতে থাকবে । আর ইমাম মাহদী মুহররমের ১০ তারিখের রাত অথবা দিবসের মধ্যে আবির্ভূত হবেন ।

সে



কতিপয় রেওয়ায়েত থেকে প্রতিওমান হয় যে , পাশ্চাত্য বাহিনী শামের উদ্দ্যেস্যে রওয়ানা হবে এবং আক্কা ও সুর এলাকায় এবং উপরিউক্ত রেওয়ায়েত অনুসারে আসহাব-ই কাহাফের গুহার কাছে অর্থাৎ সিরিয়া - তুরস্কের সমুদ্র সৈকতের কাছে অবস্থিত আনতাকিয়ায় অবতরন করবে ।





আশাব-ই কাহাফ সংক্রান্ত রেওয়ায়েত সমূহে বর্ণিত আছে , মহান আল্লাহ তাদেরকে আখেরি যামানায় আবির্ভূত করাবেন যাতে করে তারা জনগণের জন্য নিদর্শন বলে গন্য হতে এবং ইমাম মাহদী ( আঃ ) এর সাথী হতে পারেন ।





ঐ অতি সংবেদনশীল সন্ধিক্ষনে পাশ্চাত্য বাহিনীর আগমনের মুহূর্তে আশাব-ই কাহাফের আবির্ভূত হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে এই যে , তারা খ্রিস্টানদের জন্য মুজিযা বলে গন্য হবেন । কারণ রেওয়ায়েত সমূহ অনুযায়ী ইমাম মাহদীর সঙ্গি-সাথিরা তাওরাত ও ইঞ্জিলের আসল কপিসমূহ আনতাকিয়ায় গুহা থেকে বের করে আনবেন এবং এগুলোর মাধ্যমে তারা রোমান ও ইহুদীদের সাথে আলোচনা ও বিতর্ক করবেন । এই গুহাটি আশাব-ই কাহাফের গুহা অথবা অন্য কোন গুহাও হতে পারে ।



ইমাম বাকী (আঃ) এর নিকত থেকে জাবির জুফী বর্ণনা করেছেন , তিনি বলেছেনঃ রোমের বিদ্রোহীরা অতি শীঘ্রই রামাল্লায় অবতরন করবে । হে জাবির ! ঐ বছর পাশ্চাত্যের পক্ষ্য থেকে সমগ্র বিশ্বে প্রচুর দন্দ-সঙ্ঘাত সংঘটিত হবে ।





অবশ্য এই বিদ্রোহীরা পাশ্চাত্যের বেতনভুক চর হতে পারে যারা ইহুদীদের পক্ষ্যে স্বেচ্ছায় যুদ্ধ করার জন্য ফিলিস্তিনের রামাল্লায় আসবে । বাহ্যত এ মতবিরোধ অথবা মাগরিব ( লিবিয়া , আলজেরিয়া , তেউনিসিয়া ও মরক্কো ) এর পক্ষ থেকে হতে পারে । কারণ এর পর পরই রেওয়ায়েতটিতে বলা হয়েছে সর্ব প্রথম যে ঘটনাটি শামে ঘটবে তা হচ্ছে সে দেশের ধ্বংস সাধন এবং সম্ভবত তা পাশ্চাত্যের কারণেই হবে ।





এ ক্ষেত্রে যে বিষয়টি লক্ষ্যণীও তা হচ্ছে , এমন কিছু বিষয় আহলে বাইত থেকে সূরা রুমের প্রথম দিকের আয়াত সমূহের ব্যাখ্যায় বর্ণিত হয়েছে,



** পরম করুনাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে । আলিফ লাম মীম । রোমানরা পরাজিত হয়েছে । নিকটবর্তী এলাকায় এবং তারা তাদের পরাজয়ের পর বিজয়ী হবে অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই । অগ্র- পশ্চাতের কাজ মহান আল্লাহর হাতেই । সেদিন ( যেদিন রোমানরা বিজয়ী হবে ) মুমিনগণ আনন্দিত হবে মহান আল্লাহর সাহায্যে । তিনি যাকে ইচ্ছা টাকে সাহায্য করেন এবং তিনি পরাক্রমশালী ও পরম দয়ালু ।





ইমাম বাকির (আঃ) উক্ত আয়াতে উল্লেখিত , ' মুমিনদের প্রতি মহান আল্লাহর সাহায্য ' -কে ইমাম মাহদী ( আঃ ) -এর আবির্ভাব হিসেবে ব্যাখ্যা করে বলছেন , মহান আল্লাহ তাকে রোমানদের উপর বিজয়ী করবেন ।



এতদপ্রসঙ্গে বর্ণিত রেওয়ায়েত সমূহের মধ্যে ঐ সব রেওয়ায়েতও আছে যেগুলোতে হযরত ঈসা ( আঃ) -এর অবতরন এবং ইসলাম গ্রহন ও ইমাম মাহদী ( আঃ ) -এর অনুসরণ করার প্রতি খ্রিষ্টানদেরকে তার আহ্বান জানানোর বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে । আর এসব রেওয়ায়েতে মহান আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণী স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেঃ ' তিনি ( ঈসা ) কেয়ামতের অন্যতম নিদর্শন ।'





তার মৃত্যুর আগে সকল আহলে কিতাব তাঁর প্রতি ঈমান আনবে এবং সে কেয়ামত দিবসে তাদের উপর সাক্ষী থাকবে ।'



হযরত ঈসা মসীহ ( আঃ ) কেয়ামতের অন্যতম নিদর্শন । আর যখন তিনি পৃথিবীতে আসবেন খ্রিস্টান ও ইহুদি তাঁর প্রতি ঈমান আনবে এবং তাঁর মৃত্যুর আগেই তাকে এবং তাঁর মুজিযা সমূহ প্রত্যক্ষ করবে ।





রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে যে , হযরত ঈসা ( আঃ ) ইমাম মাহদী (আঃ ) এর সাহায্যে এবং যে সব মুজিযা মহান আল্লাহ তাকে দেবেন সেগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে রোমানদের সাথে আলোচনা ও বিতর্কে লিপ্ত হবেন ।





ঈসা (আঃ ) আসমান হইতে অবতীর্ণ হওয়ার পর পাশ্চাত্য দেশগুলোর শাসনকর্তাদের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যের জাতি সমূহের বিদ্রোহ এবং সে সব দেশের রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন আনয়ন করার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্তপূর্ণ ভুমিকা পালন করবেন ।





আলোচ্য রেওয়ায়েত সমূহের মধ্যে মুসলমান ও রোমানদের মধ্যেকার যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত রেওয়ায়েত সমূহ বিদ্যমান । হযরত মাহদী ( আঃ ) রোমানদের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করবেন । বাহ্যত এ চুক্তিটি ইমাম মাহদী ( আঃ )- এর সেনবাহিনী এবং ইহুদী ও রোমানদের সমর্থন পুষ্ট সুফিয়ানি বাহিনীর মধ্যে আক্কা- কুদস - আনতাকিয়া ট্রায়েঙ্গলে কুদস মুক্ত করার যে বৃহৎ যুদ্ধ সংঘটিত হবে তার পরে সম্পাদিত হবে । ইমাম মাহদী ( আঃ ) - এর বিজয় , আল কুদসে তাঁর প্রবেশ এবং ঈসা (আঃ ) এর অবতরনের পর এ ঘটনা ঘটবে । সম্ভবত ঈসা (আঃ) এ যুদ্ধে মদ্ধ্যস্ততাকারীর ভুমিকা পালন করবেন ।





**মহানবী (সঃ) - এর নিকট থেকে বর্ণিত আছে , ' হে আউফ! কেয়ামতের আগে ৬ টি ঘটনা স্মরণ রেখো ,



-- যে ফিতনা থেকে কোন আরব পরিবার ও ঘর নিরাপদ থাকবেনা ।

-- তন্মদ্ধে তোমাদের ও বনি আসফার ( পাশ্চাত্য ) মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে ।

--এরপর তারা তোমাদের সাথে চুক্তি ভঙ্গ করবে ।

-- এবং আশিটি সেনাদল

-- যার প্রতিটিতে বারো হাজার সৈন্য থাকবে ।

--তারা তোমাদের উপর আক্রমন চালাবে ।



** মহানবী (সঃ ) থেকে বর্ণিতঃ তোমাদের ও রোমানদের মধ্যে ৪ টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে । এগুলোর ৪নং হিরাক্লিয়াসের বংশের এক ব্যাক্তির সাথে হবে এবং তা ২ বছর টিকে থাকবে । এই সময় সুদাদ ইবনে গাইলান নামে আব্দুল কাইস গোত্রের এক ব্যক্তি জিজ্ঞ্সা করলো , ঐ সময় জনগণের নেতা কে থাকবেন ? তিনি বললেন , আমার বংশধর মাহদী ।



কিছু রেওয়াতে উক্ত চুক্তি ৮ বছর হবে বলা হয়েছে । কিন্তু ২ বছর পরই পাশ্চাত্য ঐ চুক্তি ভঙ্গ করবে এবং আশিটি পতাকাধারী প্রায় ১০ লক্ষ সৈন্যের এক বিশাল বাহিনী নিয়ে ফিলিস্তিন ও শামের সমুদ্র সৈকতে মুসলমানদের বিরদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হবে ।





এরপরই ইমাম মাহদী (আঃ ) ইউরোপ ও অনৈসলামিক বিশ্ব জয় করার জন্য সেনা বাহিনী নিয়ে অগ্রযাত্রা শুরু করবেন ।



রোমানদের সাথে সুফিয়ানির সম্পর্ক , তাঁর পরাজয়ের পর তাঁর সমর্থকদের রোম অর্থাৎ পাশ্চাত্যে পলায়ন এবং হযরত মাহদী (আঃ) -এর সঙ্গী সাথী কর্তৃক তাদেরকে পশ্চাদধাবন করে সেখান থেকে ফিরিয়ে আনা সংক্রান্ত রেওয়ায়েতঃ



** ইমাম বাকির (আঃ ) থেকে বর্ণিত , যখন আল কায়েম ( মাহদী ) আন্দোলন শুরু করবেন এবং বনি উমায়্ইয়ার ( সুফিয়ানি ) বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী প্রেরন করবে তখন তারা রোমের দিকে পালিয়ে যাবে ।



রোমানরা তাদেরকে বলবেঃ যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা আমাদের ধর্ম গ্রহন না করবে ততক্ষন পর্যন্ত আমরা তোমাদেরকে প্রবেশাধিকার দেবনা । তারা তা মেনে নেবে এবং রোমানরাও তাদেরকে প্রবেশ করতে দেবে । ঠিক তখনই ইমাম মাহদী ( আঃ ) এর সঙ্গি-সাথিরা রোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবে । তখন তারা সন্ধির প্রস্তাব দেবে । ইমাম মাহদীর অনুসারীরা তাদের বলবে , যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের ধর্মানুসারীদের আমাদের হাতে তুলে দেয়া না হবে সে পর্যন্ত আমরা নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবনা । অতঃপর তারা তাদেরকে তাদের হাতে তুলে দেবে ।



অন্যান্য রেওয়ায়েতে বর্ণিত আছে , সুফিয়ানি পাশ্চাত্যমনা হবে । সে প্রথমে পাশ্চাত্যে বাস করবে ও পরে শামে এসে সেখান থেকে আন্দোলন শুরু করবে ।



শেখ তুসির 'গাইবাত' গ্রন্থে বর্ণিত আছেঃ ' যে সুফিয়ানি কওমের নেতা হবে সে রোম থেকে আন্দোলন শুরু করবে এমতাবস্থায় যে , তার গলায় ক্রুস থাকবে ।'



ইমাম মাহদী (আঃ ) কর্তৃক রোম বিজয় এবং তাঁর হাতে রোমানদের ইসলাম গ্রহন সংক্রান্ত রেওয়ায়েত সমূহে বর্ণিত আছে , পাশ্চাত্য কর্তৃক চুক্তি ভঙ্গ , ফিলিস্তিন ও শামের সমুদ্র সৈকতের উপর তাদের সামরিক আক্রমন এবং তাদের পরাজয় বরনের পরপরই এ ঘটনা ঘটতে পারে । এ যুদ্ধটি ইমাম মাহদী (আঃ) -এর বিরুদ্ধে রোমানদের সবচেয়ে তীব্র যুদ্ধ হতে পারে - যার পর পরই ইসলামের প্রতি পাশ্চাত্যের জাতি সমূহ ঝুঁকে পড়বে ।



কতিপয় রেওয়ায়েতে বর্ণিত, তাকবির ধ্বনি দিয়ে সত্তর হাজার মুসলমান রোম দখল করবে ।



' স্বয়ং পাশ্চাত্যবাসীর আন্দোলন , বিক্ষোভ এবং তাদের তাকবিরের মাধ্যমে পাশ্চাত্যের এ রাজধানীর পতন হতে পারে । আর সে সময় ইমাম মাহদী (আঃ) ও তাঁর সঙ্গিরা তাদের সাহায্য করবেন ।



ইমাম বাকির (আঃ) বলছেন , তখন রোমবাসী ইমাম মাহদী (আঃ) এর হাতে ইসলাম গ্রহন করবে । তিনি তাদের জন্য একটি মসজিদ নির্মাণ করবেন । এরপর তিনি তাঁর সঙ্গী সাথিদের মধ্যে এক ব্যক্তিকে সেখানে তাঁর পক্ষ থেকে প্রতিনিধি নিযুক্ত করে প্রত্যাবর্তন করবেন ।



বাহ্যত পাশ্চাত্যের জাতি সমূহের মাঝে পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে হযরত ঈসা (আঃ) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবেন । যে ২/৩ বছর ইমাম মাহদী (আঃ) ও পাশ্চাত্যের মধ্যে শান্তি বিরাজ করবে সেই বছর গুলোতে হযরত ঈসা (আঃ ) পাশ্চাত্যে অবস্থান করবেন অথবা অধিকাংশ সময় তিনি পাশ্চাত্যে কাটাবেন ।





সংগ্রহ - ইমাম মাহদী (আঃ) এর আত্মপ্রকাশ ( আসরে যুহুর)



লেখক - আল্লামা আলী আল কুরানী



অনুবাদ- মোহাম্মদ মুনির হোসেন খান





প্রকাশ-ফেব্রুয়ারি , ২০০৮

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.