নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেলিনা জাহান প্রিয়া , জন্ম পুরান ঢাকা, নাজিরা বাজার , নানা বাড়িতে ।বাবার বাড়ি মুন্সী গঞ্জ , বড় হয়েছি ঢাকা ।স্বামীর বাড়ি কিশোরগঞ্জ ।ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে , কবিতা , গল্প , উপন্যাস পড়তে অজানাকে জানতে । ধর্ম বিশ্বাস করি কিন্তু ধর্ম অন্ধ না ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া

পৃথিবির প্রতিটি গল্পের শুরু আছে শেষ নাই শুধু। আমার লিখা কবিতার সাথে গল্পের সাথে আমার জিবনের কোন মিল নেই , আমি লিখি লিখিকা হবার জন্য নয় । ভাল লাগে তাই । অনেকই মনে করে আমি ব্যক্তি জীবনে খুব কষ্টে আছি । আসলে সুখ দুঃখ নিয়েই জীবন ।, অন্য ১০ জন মানুষের মতেই আমার জীবন ।

সেলিনা জাহান প্রিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প।। অরন্যের নীলাচল

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:১২


নীলা চলে পাহাড়ের উঁচু আর সরু আর আঁকাবাঁকা পথ ধরে অরন্য হাটছিল। আজ এত কঠিন দিন গেল তার । মানুষের জিবনে শুধু পরীক্ষা আর পরীক্ষা । আজ একটা পরীক্ষা ছিল তার অরন্য যাকে ভাল বাসে সে পরীক্ষা নিতে চায় যে কতটা ভালবাসে অরন্য তাকে তাই পরীক্ষা দিতে হবে । , সারা রাত জেগে ভালবাসার কি কি পরীক্ষা এই পর্যন্ত প্রেমিক রা দিয়েছে তাই গুগলে দেখতে দেখতে একেবারেই ক্লান্ত সে। তাই বান্দরবান স্বর্ণ মন্দির থেকে সে হাঁটছে । বান্দর বান শহর হয়ে নীলাচলে আসবে হেঁটে । একটা মাহেন্দ্র গাড়ি করে তার প্রিয় ভালবাসার মানুষ নীলা চলে অপেক্ষা করছে । হাঁটার গতি কিছু টা স্থির। মাথার ওপর রোদ আছে বেশ। একজন কে বলল ভাই কোন চায়ের দোকান হবে । পাহারি ছেলে বলল আর মিনিট পাঁচেক পর চা এর দোকান। মনে মনে একবার ভাবে সেখানে বিশ্রাম নিয়ে নেবে কি না ? কিন্তু তাকে ঠিক টাইমে পৌছাতে হবে । অরন্যের হাতে কোন ঘড়ী নেই । রাস্তার এমন দূরঅবস্থা যে কোন দিন পাহাড়ি রাস্তায় হাটে নাই সে বুঝবে না। একটা উছু পাহাড়ের কি করে যে গাড়ি গুলো উঠে অরন্য তাই চেয়ে চেয়ে দেখে । তার কোন গাড়িতে উঠা চলবে না
। কোন গাড়ী করে যে যাবে সে তার সাথে ছলনা করা হবে ।অরণ্য হাটতে লাগল। হঠাৎ, বাঁ দিকে তাকিয়ে পাহাড়ের নিচে সে কিছুটা অবাক হল । আরে নীলার সেই স্কাফ টা । আরে এত নিচে পরে গেল কিভাবে ? কত বার নীলা কে বলেছি, নীলা খুব বাতাস স্কাফ টা ভাল করে বাধো । ভাগ্য ভাল যে আমার চোখে পড়েছে । কিন্তু এত নিচে নামি কি করে ? অরণ্যের দেখল বেশ খানিক দূর এক অদ্ভুত আকৃতির মায়া নিয়ে মাটিতে পড়ে আছে স্কাফ টা । কখন এসে পড়লো এটা, কিছুই জানে না হয়ত পাগলী মেয়েটা । কিছু বুঝতেই পারে নি সে হয়ত । অরণ্য খুব ধীর গতিতে পাহাড়ে নিচে নামছে । কিছু গাড়িতে অনেক পর্যটক হু হু শব্দ করে যাচ্ছে । অরণ্যের কোন ভয় নেই । গাছের শিকড় ধরে ধরে ঠিকেই নেমে গেল পাহাড়ের নিচে । যদি কোন কারনে সে এই খানে মারা যায় হয়ত তার লাশ কেউ খুঁজে পাবে না। ঝোপঝার আর পাহাড়ি গাছ । শীত কাল বলে পাহাড়ের মাটি খুব শক্ত । স্কাফ টা হাতে নিল । কিন্তু অবাক হয়ে দেখে স্কাফের পাশেই
কি না কি এক জিনিস, !! ভাল করে দেখল কোন মহিলার হাত বেগ ।। কারই বা এটা, কিছুই তো জানে না সে । বিনা কারনে অন্যের কিছু দেখা ঠিক না । আবার কোন বিপদ হয় । আর না ভেবে সামনে না আগানোই ভাল। পাশ কাটিয়ে সামনে গেলেই হবে। এক পা দুই পা সামনে দিয়ে এগোতেই অরণ্য লক্ষ্য করলো, এই অদ্ভুত আকৃতি মায়া থেকে কোনভাবেই সে পাশ কাটাতে পারছে না। ব্যাগটা যেন তাকেই ডাকছে ।
কিছুটা আশ্চর্য হল অরণ্য কারো কোন জিনিসের প্রতি তার তো কোন লোভ নেই ! আচ্ছা যারেই হউক তাকে ফিরিয়ে দিব যদি ঠিকানা থাকে আর ঠিকানা না থাকলে থানায় জমা দিব ।। আমি তো আর চুরি করি নাই ।। দেখে মনে হচ্চে, ব্যাগটা যেন মাটিতে শুয়ে আছে। অরণ্য আরো একটু অবাক হল। আশে পাশে তাকিয়ে দেখল, কেউ আছে কি না, দেখার চেষ্টা করছে কি না তাকে । নাহ ! কেউ কে তো দেখলো না।
হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখল ব্যাগটা । বাহ সুন্দর ।। মহিলার চয়েস আছে । কিছুটা ঘাবড়ে গেল আশে পাশে এখন না হয় কেউ নেই, কিন্তু আর কিছু পথ পরে তো জনকোলাহল এর মাঝেই যাবে সে। তখন মানুশ এই লেডীস ব্যাগ দেখলে কি ভাববে !! আকৃতি তার সাথে দেখলে কি হবে, কি ভাববে ! কি জবাব দেবে সে সবাই কে। মহা মুশকিল এ পড়া গেলো তো !
অরণ্য পাহাড়ের নীচ হতে ধীর গতিতে উপরে আসতে লাগলো স্কাফ টা পকেটে নিল আর ব্যাগটা হাতে ...

অরণ্য পাহাড়ির এক বালিকার চায়ের দোকানে এসে বসলো । মেয়েটা দোকানের পেছনে কিছু একটা ধোয়ার কাজ করছেন।অরণ্য চিন্তিত ভঙ্গিতে, মাটির দিকে তাকিয়ে আছে।
পাহাড়ি মেয়ে বলল দাদা কিছু লাগবে ।।
--- একটু পানি দাও তো ?
---- বোতলের পানি দেব না কি আমাদের ঝর্নার পানি দিব ।
----- দাও তোমাদের ঝর্নার পানি ?
পাহাড়ি মারমা মেয়ে বাঁশের একটা গ্লাসে পানি দিল । অরণ্য বলল চা দাও । পাহাড়ি মেয়ে বলল দাদা কিসে দিব বাঁশের মগে না কি চিনামাটির কাপে । অরণ্য বলল দিবেই যখন তাহলে বাঁশের মগেই দাও । অরণ্য খুবেই অবাক হল । বাঁশের মগে চা তো দারুন মজা । অরণ্য মেয়েটির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে, মাটির দিকে তাকালো । পাহাড়ি মারমা মেয়েটা বলল দাদা এটা কি বউ দিদির ব্যাগ । খুব সুন্দর কিন্তু ।
অরণ্য বলল না আমার বন্ধুর । চা শেষ করে দাম দিয়ে অরণ্য আবার হাঁটতে লাগলো । সারা রাত ইন্টার নেটে পরিশ্রম করাতে, সত্তিই বেশ ক্লান্ত। আবার শুরু করলো সেই হাটা । চার পাশ বেশ সুন্দর আর মাত্র চার কিলোমিটার পথ । পাহাড়ে উচু রাস্তা আর হেঁটে চলা এক বিরাট কষ্ট । নীলা কে আমি অবাক করে দিব । নীলা হয়ত আমাকে বলবে আমি চান্দের গাড়িতে করে আসেছি । আমার মা আমাকে আদর করে বড় করেছে । আমি পরিশ্রম করতে জানি না। কিন্তু ব্যাগের কথা কি বলব ??? জাই হউক এটা রাস্তায় পেয়েছি বলা যাবে না ।। বলব এটা রহস্য ঢাকা গিয়ে বলব । নীলা চলে সূর্য ডুবা দেখতে নাকি খুব ভাল লাগে । শীত শেষ হয়েছে কিন্তু পাহাড়ের গাছে শীতের পাতা ঝরার শব্দ রয়ে গেছে । চার দিক শুধু পাহার আর পাহার অনেক দূরে দূরে কিছু পাহাড়ি গ্রাম । পাহাড়ের উপরে কিছু ঘর । অরণ্য হেঁটে যাচ্ছে আর তার পা গুলো যেন ক্লান্ত হয়ে আসছে ।।

নীলা দারিয়ে আছে নীলাচলের শেষ পাহাড়ের উপর সিঁড়িতে । নীলার সাথে কায়েস জিম কেয়া । সবাই এক সাথে হা হা হা করে হেসে উঠলো ।
অরণ্য বলল হাসির কারন কি ? আমি একটু দম নিয়ে নেই তার পর শুনি । কেয়া বলল থাক আর অভিনয় করতে হবে না। আমারা দূরবীন দিয়ে বার বার দেখছি কিন্তু তোমাকে একবার ও দেখি নাই । অরণ্য বলল দূরবীন ধরা আগে শিখে নাও । আমাকে কি তোমাদের সন্দেহ হচ্ছে যে আমি ঐ স্বর্ণ মন্দির থেকে হেঁটে আসি নাই , জিম বলল দেখ তুমি টাইম মতো আসতে পার নাই । তিন ঘণ্টা লাগিয়েছ । নীলাচলে আমরা বসতে বসতে নীলাচল দেখার সাধ মিটে গেছে । এবার কিছু খেতে হবে । নীলা বলল আসার পথে কোন খাবার হোটেল দেখেছ । অরণ্য বলল হ্যা দেখেছি ফানুস নামে একটা তবে ভাত পাওয়া যায় কি না জানি না ? নতুন হয়েছে । নীলা বলল সবাই গাড়িতে উঠ । অরণ্য বলল আমি তো নীলা চল কিছুই দেখি নাই । নীলা বলল দেখতে হবে না আমরা ছবি তুলেছি তুমি দেখে নিও । সব কিছুইতেই তুমি অলস তমার মা আদর দিয়ে দিয়ে একে বারে অকর্মা করেছে ।। আমার বাকি জীবনে যে কি আছে কে জানে । অরণ্যের মনটা খারাপ হয়ে গেল । মাহেন্দ্র গাড়িতে উঠে বসলো । এবার নীলা বলতে লাগলো গাড়িতে উঠে আমার মনটা কিন্তু খুবেই খারাপ অরণ্য ।
---- কেন নীলা ।
----- আর বল না ? গাড়ি পাহাড়ের ঢাল থেকে উঠার সময় আমার স্কাফ টা বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে গেল । কিন্তু কেউ এত নিচুতে যেতে সাহস পায় নাই । সে কি ঢালু পাহাড় । ---- অরণ্য এখন কি হবে ?
------ কি আর হবে তুমি আর একটা কিনে দিবে !
------ কিন্তু ঐ রকম কি আর পাওয়া যাবে নীলা বল ? আমি কত কষ্ট করে মামাকে দিয়ে কাশ্মীরী স্কাফ তোমার জন্য আনিয়েছি ।
------- আমার তো আর কাজ নেই তোমার সেই স্কাফ আনতে গিয়ে জিবন হারাই ।
-------- ভালই করেছ না এনে । তোমার জিবন চলে যায় এমন কোন কাজ করা ঠিক না।
কেয়া একটু রাগের মাথায় বলল আমি কোন দিন আর নীলা আর অরণ্যের সাথে কোথাও আসব না । পেটের খিদে জিবন যায় তারা আছে স্কাফ নিয়ে । ফানুস আর কত দূর । জিম বলে ঐ তো দেখা যায় । কায়েস বলল আরে অরণ্য তোর হাতে এই লেডীস ব্যাগ কেন ? এটা তো নীলার না। নীলা বলল এটা কি আমার জন্য নিয়েছ অরণ্য ।
অরণ্য বলল না এটা তোমার জন্য না।
----- তাহলে এই ব্যাগ কার জন্য ? পিলিস এটা আমাকে দাও দেখি ?
------ না এটা দেয়া যাবে না। আর কার ব্যাগ বলা যাবে না।
------- অরণ্য কাজটা কি ঠিক ?
------ নীলা দেখ আমাকে আর বোকা বানিয়ে লাভ নেই । সেই রাত থেকে সবাই মিলে প্ল্যান করে আমাকে বোকা বানাচ্ছো ।
সবাই এক সাথে হাসি দিয়ে জিম বলল এটা কায়েসের প্ল্যান । কেয়া আর কায়েস মিলে করেছে । অরণ্য বলল উপর ওয়ালা যায় করে ভালোর জন্য করে ।।
নীলা একটু অবাক হয়ে বলল দেখ অরণ্য তুমি আসলেই বোকা । আমরা বান্দর বান এসেছে সবাই মিলে মজা করতে আর তুমি হ্লে সেই মজার একমাত্র মধ্য মনি । তুমি আমাকে ভালবেসে সেই স্বর্ণ মন্দির হতে হেঁটে এই নীলাচল পাহাড়ে এসেছ । আর সারা রাত নেটে পড়েছ কে কি করেছে কার জন্য ভালবেসে !! দেখ এটা আধুনিক যুগ লাইলি মজনুর যুগ না। একটু সিরিয়াস হও । এত অবেগ ভাল না ।।
সবাই খাবার নিয়ে যে যার খেয়ে যাচ্ছে । কায়েস একটু হেসেই বলল অরণ্য তুই সেই আগের মতো বোকাই আছিস । নীলা কিন্তু তকে পছন্দ করে কিন্তু নীলা তুই যেই ভাবে ভালবাসিস নীলা কি তকে সেই ভাবে ভালবাসে কিনা একবার নীলার পরীক্ষা নেয়া দরকার ? সবাই কি বলিস ? নীলা একটু হেসে বলে মানুষ কে বোকা বানাতে তোর ভাল লাগে আমার না। আমি প্রেম ভালবাসার কোন পরীক্ষা দিতে পারব না । কপালে মজনুই থাক আর অরন্যেই থাক আমি আগে আমার । কারো জন্য ম্রতে পারব না।
কায়েস বলল আচ্ছা দেখি কে কার জন্য মরে । অরণ্য যদি অন্য কোন মেয়ের প্রেমে পরে যায় তখন তোর কেমন লাগবে ? নীলা বলল দেখ এই নীলাচল আর ঐ দূরে নীলগিরি সব খানেই অরণ্য আছে । অরণ্য ছাড়া নীলা আর নীলগিরির কোন মুল্য নেই তবে হয়ত অরণ্য কাউকে একটু বেশি বৃষ্টি ঝরাবে ? আমি জানি না কায়েস প্রেম কি ? তবে যারা কবি তারা ই প্রেমের উপমা দিয়ে গেছে । প্রেম হল দুরের মিতালী কাছে আসলেই প্রেম আরও দূরে ।। অরণ্য একটু হেসে বলল আসলেই তো নীলা আমি কি তোমাকে ভালবাসি ? একবার নতুন করে ভাবতে হবে ।
জিম বলল যাই ভাব নিল গিরি গিয়ে কাল ভাববে । আকাশে দেখ মেঘ করেছে । কেয়া একটু হেসে এবার বলল মেঘ হয়ত কোন পর্যটককে বৃষ্টি দিয়ে বোকা বানাতে চায় ।।
অরণ্যের ফোন বেজে উঠলো । বাংলালিংক বান্দর বানে খুবেই খারাপ অবস্থা । অরণ্য হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে তোর কোন বিবেক হবে না কোন দিন ।
------ সরি মা । বান্দর বানে বাংলা লিংক নেট ওয়ার্ক খুবেই.........।
------ তা অন্য বন্ধুদের তো অন্য ফোন আছে ।
-------সরি মা ভুল হয়ে গেছে ।
-------- ভুল তো হবেই । নীলা সাথে থাকলে এখনি মায়ের কথা ভুলে যাস আর বিয়ের পরে তো মনে হয় আমি যে মা আছি এটা মনেই থাকবে না।
------- তা ফোন কি এই জন্য করেছ ।
------ না বাবা ফোন করেছি নীলার মা বাথ রুমে পরে গিয়ে পা মচকে গেছে ।
------ অহ তাই ভাল হয়েছে
------ ভাল হয়েছে মানে ? তুই কি নীলার সাথে ঝগড়া করেছিস ।
-------- না মা। একটু তাড়াতাড়ি আসতে পাড়ব । তাহলে আর কালকে নীলগিরি যাওয়া লাগবে না। তুমি একটু নীলার সাথে কথা বল আমি ওকে ফোনটা দিচ্ছি ।
নীলা মায়ের কথা শুনে বলল আমারা এখনি যাব । তোরা আসতে ধিরে আয় । আমার মায়ের পা মনে হয় ভেঙে গেছে । আমি কান্না ক্রব বলে মা মিথ্যা বলছে আরন্য ঢাকার গাড়ি কয়টায় । অরণ্য বলল ফোন করে জেনে নেই । রাতেই অরণ্য রওনা দিল নীলা কে নিয়ে । সেই লেডীস ব্যাগটা আর খুলে দেখা হল না ।। নীলা বাসে ঘুমাচ্ছে চিন্তা মুক্ত একটা নারী । অরণ্য পকেট থেকে স্কাফ টা বের করে নীলার অজান্তে তার হাত ব্যাগের পকেটে রেখে দিল ।

বৃষ্টির ছাঁটে জানালার পাশে থাকা টেবিলের বই পত্র সব ভিজে যাচ্ছে। অরণ্যের মা সানু বেগম , পাশের ঘর থেকে এসে জানালা আটকালো। অরণ্য শুয়ে আছে বিছানায় বাইরের দিকে তাকিয়ে। মা কখন এসে জানালা আটকে দিয়েছে, সেটা খেয়ালই করল না। অরণ্যের পাশে গিয়ে বসলেন ,ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
- কি রে ! হয়েছে কি তোর ? বাড়ী ফিরে তো কোন খাবার মুখেই নিলি না, সারা রাত জেগেছিস, কিন্তু ঘুম এর তো কোন নামিই নেই তোর চোখে। বৃষ্টির পানি তে সমস্ত ঘর ভিজে যাচ্ছে তাও তোড় হুশ নেই। কি রে ...এই অরণ্য !!
- জী,মা।
- কি হয়েছে তোর ?
-কিছুই তো না, মা।
-আমার কাছে লুকোচ্ছিস ?
-না, মা। তেমন কিছু না।
অরণ্যের মা উঠে দাঁড়ালেন ।
- ঠিক আছে। একটু ঘুমিয়ে নে। এই দেখ, আবার রোদ হয়ে গেলো।
অরণ্য উঠে বসলে, খেয়াল করলো। ঘরের তার টেবিলে সেই ব্যাগটা । অরণ্যনমা বলে ডাকতেই করতেই সানু বেগম ফিরে তাকালেন।
- কি রে অরণ্য, কি হল !
-মা !! ওই দেখো ঐ ব্যাগটা ।
- কার ব্যাগ ওটা নীলার ?
- না মা !! নীলার না । আর এখনো দেখি নাই । পাহাড়ের ঢালে পেয়েছি ।
- কি বলিস দেখি ? ঐ খানে কাউকে বলিস নাই ।
- মা ঐ পাহাড়ি এলাকার মানুষ জন খুবেই কম । কাকে বলি ।
- আচ্ছা ভালই করেছিস । মেয়েদের ব্যাগ ছেলেদের দেখতে নাই ।
- মা মেয়েদের ব্যাগে কি ভুত থাকে
ছেলের কথা শুনে সানু বেগম হাসলেন ।
-বোকা ছেলে বলে কি দেখো।তিনি আবার হাসলেন ।
- মা, তুমি হাসছো ! আর আমি এই ব্যাগ নিয়ে খুবেই চিন্তায় আছি ?
- হ্যা, হাসছি। মেয়েদের ব্যাগে ভুত থাকে শুনে । অরণ্য বাবা একটু বড় হতে হবে । তুই এখনো সেও ছোট আছিস ।
-- মা একটা কথা বলবে ।
---কি কথা বল শুনি ?
-- মা আমি নীলার উপযুক্ত ছেলে না। মা নীলা আমাকে সব সময় অলস আর বোকা ভাবে । আমাকে হয়ত আমার বাবার অর্থনীতিক ভাল অবস্থার জন্য পছন্দ করে । ব্যক্তি অরণ্য তার কাছে মুল্য হীন মনে হল । মা আমার দেয়া স্কাফ টা সে পাহাড়ে হারালো কিন্তু বিন্দু মাত্র তার জন্য তার মন খারাপ না ।
- ভয় পাস না। জানিস মজার বিষয় । সময়ের সাথে সব পালটায়। অনেক কিছু চলেও যায়। এবার অনেক কিছু চলে আসে । এটা জিবনের একটা নিয়ম । বাবা অরণ্য হয়ত তোমার নীলা কে ভাল লাগে কিন্তু আসলে কি ভালবাস কি না একবার মন কে প্রশ্ন ক্র ? মনের পরীক্ষা নাও । তুমি আসার পর সে কিন্তু তোমার কোন খবর নেয় নাই । তার মায়ের কি অবস্থা টা জানাই নাই ।। বাবা অরণ্য ভালবাসা হল মানুষের সাথে মানুষের ছায়ার মতো । আলতে গেলেই ভালবাসা ছায়া চোখে পড়বে ।
কিন্তু, ছায়া হল এমন এক সঙ্গী , যে কিন্তু কখনো তোকে ছেড়ে যাবে না। জীবনের প্রতি পদে পদে তোর সাথে থাকবে। তুই যদি কখন একা একা চলিস, তোর ছায়া তোকে সঙ্গ দিবে। তোর বন্ধু হবে।
এমন এক বন্ধু যার সাথে তুই চাইলেও সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারবি না ।
অরণ্য মৃদু হাসলো ।
মেঝের দিকে তাকিয়ে, অরণ্য দেখল, সত্যি তো। এই যে অদ্ভুত আকৃতি , এটা তো অর নিজেরই প্রতিচ্ছবি। অরণ্য হাত নাড়ালো, সাথে সাথে ছায়ার আকৃতি পাল্টে গেলো। অরণ্যের এক রকমের আনন্দ হতে লাগলও।
।এতদিন কেন সে খেয়াল করলো তার নিজেকে এভাবে। সত্যি, এ এক নতুন ধরনের আত্মপোলব্ধি। যা তার মা তাকে শিখিয়েছে ।।

অরণ্যের মা সেই লেডীসব্যাগ টা খুলে অবাক । তাতে অনেক গুলো টাকা এক হাজার টাকা নোটের পাঁচ টা ব্যান্ডেল ।। অরণ্য বলল মা আমি কিন্তু পাহাড়ে খুলে দেখি নাই । আর দেখলে আমি এই টাকা আনতাম না।
সানু বেগম টাকা আর একটা চিঠি পেল । তাতে লিখা তুমি টাকা বিশ্বাস কর কিন্তু আমাকে না। তাই এই টাকা আমি তোমাকে দিব না যদি কোন বিশ্বাসী পায় তাহলে টাকা ঠিক আমার কাছে চলে আসবে ।।
অরণ্য বলল মা কোন ঠিকানা আছে ?
--- আগে দেখি
--- দেখ তো ?
--- না কিছুই নাই চিরুনি , আয়না কসমেটিক আর টাকা ।
---- তবু মা একটা লিস্ট করে ফেল ।
---- আমি ফেইস বুকে একটা স্ট্যাটাস দেই ছবি সহ । ব্যাগে কি কি ছিল সব সঠিক বলতে পারলে তাকে ফেরত দেয়া হবে ।।
---- থানায় দিলে কেমন হয় অরণ্য ।
--- মা পুলিশের কি এত সময় আছে ব্যাগের মালিক খুঁজে বের করার । দেখি কিছু দিন
তার পর না হয় পুলিশে দিয়ে দিব
---- ঠিক আছে বাবা তাই কর ।
মায়ের দিকে চেয়ে অরণ্য অবাক হচ্ছে । আজ প্রথম মা তাকে সত্য কথা খুব সহজ ভাবে বলেছে কিন্তু মায়ের কোন কথা আজ অরণ্য রাগ করে নাই ।।
পড়ার টেবিলে বসে জনালা টা খুলে দিল । বিকালের আকাশ বেশ সচ্ছ । এমন সময় হালকা বৃষ্টি এর আগে কবে দেখেছে ঠিক মনে নেই । ফেব্রুয়ারী মাস শেষ প্রায় । আজ কাল আবহাওয়া আর মানুষের মন এই ভাবেই বদলে যাচ্ছে ।
ফেইস বুকে একটা ব্যাগের ছবি সহ একটা স্ট্যাটাস দিল ।। তাতে লিখেছে আমি এক বিশ্বাসী হতে চাই এটা ফিরিয়ে দিয়ে । তুমি যদি বিশ্বাসী হও খুঁজে নাও তোমার টাকা আর ব্যাগ । আমি অরণ্য ফিরিয়ে দিতে চাই বিশ্বাস ।।
এই ব্যাগটা যার হারিয়েছে উপযুক্ত প্রমান দিয়ে বিশ্বাস নেন আপন করে ।।
আর বন্ধুরা সবাই শেয়ার করুন মুল মালিক কে ব্যাগটা পেতে ।।
স্ট্যাটাস দেয়া শেষ করে মাকে বলল একটু চা হবে কি ?
অরণ্যের মা বলল বাবা অরণ্য চা পাতা শেষ আনতে হবে । বাতেন বাসায় নাই তুমি যদি আনো চা হবে । অরণ্য হেসে বলে মায়ের কাজ তো বেহেশতের সমান ।
চাপাতা কিনে দোকান দার কে টাকা দিতেই নীলার ফোন । নীলা বলে চলছে ও তাহলে এই কথা ব্যাগ তুমি বান্দর বান পেয়েছ । তা এত রাস্তা আসলাম একবার বললেও তো না। যে এটা তুমি রাস্তায় পেয়েছ । আজকাল তোমার রাস্তার জিনিস খুব পছন্দ ।
আরে আমার কথা শুন নীলা । না তোমার কোন কথা শুনব না। আমাকে আর ফোন দিবে না। ঐ ব্যাগ ওয়ালীর কাছে বিশ্বাসী হও । আমার কাছে না। আমাকে ব্যাগ টা দিলে কি তোমার রামায়ণ নষ্ট হয়ে যেত । কায়েস ঠিক বলে যেই সকল ছেলে বাপের টাকায় জিবনের সবপ্ন দেখে তারা তোমার মত হয় ।। এটা কেউ ফেইস বুকে দেয় ।। ছিঃ মানুষ কি বলবে ? যে তুমি রাস্তার বেগ কুড়িয়ে ফেইস বুকে দিয়ে সততা দেখাচ্ছ । এসব সস্থা আবেগের কোন মুল্য নেই ।। বলে ফোন কেটে দেয় । অরণ্য একা একা একটু হেসে বলে যাই হউক কেউ কষ্ট পেলে যে ভাল লাগে আজ প্রথম জানলাম ।।

বারান্দায় এসে দাঁড়াতেই মাথার উপর কড়া রোদ এর উপস্থিতি টের পেলো। হঠাৎ মনে এক রকম আনন্দের বেগ পেল। আনন্দে উচ্ছসিত হয়ে ফোনের স্কিনে তাকালো অরণ্য ।। একটা ম্যাসেজ আসছে নীলিমা নামে । ম্যাসেজ অন করতেই অরণ্য অবাক
হয়ে পড়ছে । ব্যাগে কি কি আছে এবং কি লিখা ছিল তাও লিখা আছে । শেষ কথা হল কেউ তো আমার বিশ্বাস নিয়ে নতুন করে কোন জাল ফেলছে না। আমি এই ব্যাগটা কোথায় পেলেন টা কিন্তু লিখেন নাই । আর আমি যা বর্ণনা দিলাম তাই আমার ব্যাগেছিল । যদি ও আপনার ব্যাগের সাথে হবু হবু মিল । আর আমার চ্যাট করতে ভাল লাগে না। সব কিছু ঠিক থাকলে আমাকে ফোন করুন । তবে ঐ ব্যাগের সব কিছু যদি মিলে যায় তবু আমি ঐ ব্যাগ চাই না। তবে ব্যাগের মানুষটা কে সামনে থেকে একটু দেখতে চাই । আমার ফোন নাম্বার এই ---------
অরণ্য মা বলে একটা চিৎকার দিল ।
--- কি রে আজ এবার কি হল ?
---- মা গুড নিউজ , ব্যাগের মেয়েকে পাওয়া গেছে । সে যা যা লিখেছে তোমার দেয়া
লিস্ট মতে সব ঠিক আছে । ফোন নাম্বার দেয়া কল করব কি ??
---- কি নাম মেয়েটার
---- নীলিমা নাম !!
----- আমার নীলা ?
----- মা নীলা না নীলিমা
----- একেই কথা ।
----- মা সে ব্যাগ আর টাকা চায় না। কোথায় ব্যাগ পেলাম আর আমার সাথে একবার দেখা করতে চায় ।।
------ না টা কি হয় বুঝিয়ে ব্যাগটা দিয়ে আসতে হবে । আর কোথায় পেয়েছিস বলে দে ।
------ ঠিক আছে মা বলছি ।।
মেয়েটার ফেইস বুক ভাল করে দেখলো । বা অপূর্ব একটা মেয়ে । কিন্তু মেয়েটির বাড়ি বিক্রমপুর । এখন থাকে গাজিপুর । আরও ভাল করে জানলো । কিছু লাইক কমেন্ট করলো ।
মেয়েটা এবার লিখল আমার উত্তর পেলাম না।
অরণ্যের প্রোফাইল মেয়েটা ভাল করে দেখল । বনো নিবাস রিসোরটের ছবি দেখে বলে আরে আমি তো এই বননিবাসে উঠেছিলাম । খুবেই সুন্দর রিসোর্ট । একটা খরগোশ আছে আর হাসনা হেনা গাছে ফুল ছিল । আমাকে মুগদ্ধ করেছে জাম্বুরার ফুলের গন্ধে ।
অরণ্য বলল ঠিক বলেছেন আমাকেও মুগ্ধ করেছে । আমি কি আজ রাতে ফোন দিতে পারি । মেয়েটি বলল তার জন্য কোন অনুমতির দরকার নাই ।।
নীলিমা ফোনের অপেক্ষা করছে । অরণ্য হাতের কাছে ব্যাগটা নিল । রাত ১২ টা এক মিনিট । হ্যালো আমি অরণ্য বলছি ।
--- নীলিমা বলল তাহলে নীলিমা অরণ্যের বনে ?
--- বনে থেকে তো মনে হয় মনে চলে এসেছেন ।
---- আমার বিশ্বাস হচ্ছে না যে আপনি ব্যাগটা কি করে পেলেন ।।
---- কি করে পেলাম শুনতে চান ? আমার খুব প্রিয় একটা রঙ জাফ্রানি । সেই রঙের স্কাফ আমি কাউকে দিব বলে সেই কাস্মির থেকে আনিয়েছি । কিন্তু যার জন্য আনলাম সে তার মুল্য দিল না । সে পাহাড়ের বাতাসে ছেরে দিল । আমার ভালবাসার কোন মুল্য নেই তার কাছে । আমার মা বুঝিয়ে দিল ভালবাসা আর বন্ধুত্ব এক না । এক সময় আমি সেই স্কাফ খুঁজে পাই নীলাচলের পাহাড়ের ঢালে । অনেক কষ্ট করে জিবন বাজি রেখে আমি সেই স্কাফ উদ্ধার করি । সেই ঢালে এই স্কাফের সাথে আপনার লেডীস ব্যাগটা পাই । কি ছিল তখন দেখি নেই ? বাড়ি ফিরে মাকে দিলে মা প্রথম দেখে এত গুলো টাকা আর একটা চিঠি ।
----- বলেন কি আপনি সেই পাহাড়ি ঢালে নেমেছেন ? মা গো বলেন কি ? আমার তো শুনেই গা শিউরে উঠছে ।
অরণ্য বলল হয়ত নীলাচল আমার জন্য একটা নতুন কিছু রেখেছে আপনার কথা বলুন শুনি ।। নীলিমা বলল আজ আপনার কথা শুনব কাল আমার কথা বলব একটা কথা আমাকে কিন্তু ঐ স্কাফ টা দিতে হবে আর কাল কে ইমুতে দেখাতে হবে ।।
অরণ্য বলল আচ্ছা ঠিক আছে ।। আরও কিছু কথা বলে শেষ করলো ।ঘড়ীর দিকে চেয়ে দেখে রাত চারটা ।

অরণ্য বেলা বারটার দিকে নীলার বাসায় আসে । নীলার মা আরে অরণ্য এসেছ বাবা । হ্যা খালামনি পা কি অবস্থা ?
--- ভাল বাবা সামান্য মুচকে গিয়েছিল । এখন একদম ভাল ।
---- নীলা কোথায় ?
----- যাও নীলা তার ঘরে কায়েস আর জিম আসছে । নীলার জ্বর । রাত থেকে । তোমাকে ফোন করে নাই ।
---- না খলামনি ।
---- ো একটু এমনি ? তুমি যাও ওড় ঘরে
অরণ্য নীলার ঘরে যায় । কায়েস আরে অরণ্য তুই কোথায় খবর পেলি যে নীলার জ্বর
--- বাতাসে !!
---- নীলা বলল কায়েস অরণ্য কে যেতে বল ! আমার সাথে ওর কোন কথা নাই ।
----- নীলা তোমার সাথে কোন কথা বলার জন্য আসি নাই । বান্দর বান জাওয়ার সময় যেই হাত ব্যগ টা নিয়ে গিয়েছিলে সেটা দরকার ।
---- কেন নতুন গার্ল ফ্রেন্ড কে এমন একটা কিনে দিবে নাকি ?
---- আমি তোমাদের মতো না তবে হতে পারলে ভাল হত । আমি বোকা মানুষ আমাকে বোকার মতো থাকতে দাও ।
---- তুমি বোকা না অরণ্য তুমি হলে সে বনবিলাসের খরগোশের মতো । দিনে পাওয়া যায় না। তুমি তোমার সুবিধা মতে আসো ।
----- ঠিক আছে আমি সুবিধাবাদী আর তুমি নিজবাদি । আমাকে ব্যাগটা দাও একটা জিনিস রেখেছি নিতে হবে ।
নীলা তার মাকে বলে মা কালো চেক ব্যাগটা দাও তো । নীলার মা বলে অরণ্য তুমি কিছু মনে নিও না জ্বরে মাথা ঠিক নাই ।
--- ঠিক বলেছেন খালামনি !! জ্বরে মাথা ঠিক নাই কিন্তু কালো চেক ব্যাগ চিনে ?
কায়েস বলে অরণ্য আমার মনে হয় তোরা কিছু দিন কথা বলা বন্ধ রাখ । কথা বললেই তদের ঝগড়া হয় ।
----- ঝগড়া হয় না । কেউ লাগায় । থাক সে কথা
নীলার মা ব্যাগ টা এনে দেয় । নীলা বলে কি আছে নিজেই খুলে নাও আমি শুয়া থেকে উঠতে পাড়ব না।
অরণ্য ব্যাগটা হাতে নিয়ে চেইন খুলে সেই কাশ্মীরী স্কাফ টা বের করে । নীলা জিম আর কায়েস সবাই অবাক হয়ে চেয়ে থাকে । স্কাফ টা হাতে নিয়ে বলে নীলা শুন নীলা নামে একটা পাথর আছে তা সবাই কে নাকি সুড করে না। আমি এমনি এক অরণ্য নীলাচল দেখা হল না । নীলগিরি না।এমন কি নীলা কে আজ না করে গেলাম ।
নীলা বলে অরণ্য আমার কোথাও ভুল হয়েছে আমার কথা শুন । এই কথা বলার আগেই অরণ্য তার বাসা থেকে বের হয়ে যায় । নীলা বলে কায়েস তমারা ভুল আসলেই অরণ্য সেই দিন আমার জন্য স্বর্ণ মন্দির থেকে হেঁটে নীলাচলে এসেছে । তোমাদের মতো বন্ধুর চেয়ে শত্রু অনেক ভাল । আমি জানি অরণ্য আর ফেরার না । বলে কাদতে থাকে নীলা ।।

ইমুতে রাত ঠিক বারটা এক মিনিট নীলিমা ফোন করে খুব আস্তে করে বলে হ্যালো কেউ কি আছেন আমি অরন্যে হারিয়ে গেছি ?
অরণ্য সেই কাশ্মীরী স্কাফ টা দেখিয়ে বলে এটা কার ?
----- এবার নীলিমা বলে এটা কি আমাকে আমার করে দেয়া যাবে ।
----- এটা কিন্তু তোমার হারিয়ে যাওয়া রাস্তা দেখাবে ?
------ অরণ্য আমি যে খুব দুখি একটা মেয়ে ?
------ আমি কি বলেছি তোমার সুখ গুলো দাও ।
------ দুখ গুলো যে দিতে চাই না
------ নীলিমা সবাই সুখের সাথি হতে চায় আমি না হয় দুখের সাথি হলাম ।
------অরণ্য তোমার কথার মাঝে বিশ্বাস খুঁজে পাই আমার হারিয়ে যাওয়া ব্যাগের মতো । অরণ্য কবে আমাকে তোমার স্কাফ টা দিবে ?
------ তুমি যে দিন চাইবে ?
------ তাহলে কোথায় আসবে বল ।
------- অরণ্য নীলা চলে
------ তারিখ বল
------- ১লা মার্চ
-------ওকে নীলিমা
------- টাইম বল
------- ঠিক দুপুর বার টা । আমার সাথে কিন্তু আমার বাবা মা থাকবে ।
------- আমার সাথে কিন্তু আমার বাবা মা থাকবে
তার পর তাদের প্রায় কথা হয় । তাদের খুঁজ খবর ফেইস বুক খুলেই চোখে পরে । এখন তাদের পাস ওয়ার্ড এক হয়ে গেছে । নীলা নিলামায় হারিয়ে গেছে । অরণ্য কোন দিন জানতে চায় নাই নিলিমার ব্যাগ কেন নীলাচলে হারিয়েছিল । নীলিমা প্রায় বলতে চাইলে অরণ্য বলে তুমি যেই অরন্যে হারিয়েছ সেই অরণ্যের মাঝে নিলিমার কোন অতীত নেই । যা আছে তা আগামি ।।
কিন্তু তারা কি নীলাচলে গিয়েছিল কি না কবি তার অপেক্ষায় পথ চেয়ে থাকে ?

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৭:৪৩

জীবন সাগর বলেছেন: অনেক বড় পোষ্ট ভাই
ভালো লাগলো +++

২| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:০৪

বিজন রয় বলেছেন: কেমন আছেন?

এত লেকা টাইপ করেন যে কখন!!
অনেক পরিশ্রম করতে হয়।

এবার মেলায় কি আপনার কোন বই প্রকাশিত হয়েছে?

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:১৩

সেলিনা জাহান প্রিয়া বলেছেন: একটু একটু করে করি । কোন বই বের করি নাই ।।

৩| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:২২

আখেনাটেন বলেছেন: নীলিমা প্রায় বলতে চাইলে অরণ্য বলে তুমি যেই অরন্যে হারিয়েছ সেই অরণ্যের মাঝে নিলিমার কোন অতীত নেই--সব অরণ্যরাই এরকম হলে দুনিয়াটা আরও সুন্দর হয়ে উঠত।

ভালো লাগল পড়ে। তবে টাইপোতে আর একটু সচেতন হতে হবে মনে হয়।

সুন্দর গল্পের জন্য শুভেচ্ছা রইল।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:২৬

সেলিনা জাহান প্রিয়া বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ বন্ধু

৪| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৪২

বিজন রয় বলেছেন: অরন্যের নীলাচল.... অরণ্যের ।

আপা আপনার কয়টি বই বেরিয়েছে এ পর্যন্ত।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৪৬

সেলিনা জাহান প্রিয়া বলেছেন: না কোন বই নেই । আমি শুধু অন লাইনে লিখি

৫| ১০ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:০৪

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: অনেক ক্ষন লাগিয়ে পড়লাম , ভাল করে বুঝার জন্য মাঝে মাঝে একই জায়গা কয়েক বার পড়তে হয়েছে , একটু সুবিধা হতো সঠিক জায়গায় একটু কমা দিলে, যাহোক ভাল লিখেছেন ।
ধন্যবাদ । শুভেচ্ছা রইল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.