| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস | 
 ![]()
দরবান্দিখান  জলবিদ্যুৎ  কেন্দ্র  
কুর্দিস্থানে  একমাত্র  সোলেমানিয়া  প্রদেশে  দুটো  জলবিদ্যুৎ  কেন্দ্র  আছে।  একটা  দোখান  ও  অন্যটা  দরবান্দিখান  এলাকায়।  লেসার  জেব  নদীর  উপর  বাধ  দিয়ে  দোখান  লেকের  সৃষ্টি  এবং  এই  জলবিদ্যুৎ  কেন্দ্র  থেকে  প্রায়  চারশ  মেগাওয়াট  বিদ্যুৎ  উৎপন্ন  করা  যেতো।  দিয়ালা  নদীর  উপর  বাধ  দিয়ে  দরবান্দিখান  লেক  সৃষ্টি,  এই  কেন্দ্র  দুইশত  পঞ্চাশ  মেগাওয়াট  বিদ্যুৎ  উৎপাদন  ক্ষমতা  সম্পন্ন  ছিল।  যুদ্ধ  ও  অবরোধ  এই  বিদ্যুৎ  উৎপাদন  কেন্দ্র  গুলোকে  প্রায়  অকেজো  করে  দেয়। ১৯৯৬-৯৭ সালের  দিকে  কুর্দিস্থানে  বিদ্যুৎ সমস্যা ছিল বড়  একটা  সমস্যা  ।  শুকনো  মওসুমে  বিদ্যুতের  লোডশেডিং  ছিল  নিত্যনৈমিত্তিক  ব্যাপার , রাত  দিনে  ৫/৬  ঘন্টার  বেশী  বিদ্যুৎ  পাওয়া  যেত না। আন্তর্জাতিক  অবরোধ  আরোপের  আগে  কুর্দিস্থানের  তিনটি  প্রদেশ -  ইরবিল, ডহুক  ও  সোলেমানিয়াতে  মসুল  ও  কিরকুক  শহর  থেকে  বিদ্যুৎ  সরবরাহ  করা  হতো।  দুটি  কেন্দ্রই  বিভিন্ন  ধরনের  যন্ত্রাংশ  ও  মেরামতের  অভাবে  কোন  মতে  ধুকে  ধুকে  টিকে  আছে।  দুটো  মিলিয়েও  সোলেমানিয়াকে  কয়েক  ঘন্টার  বেশী  বিদ্যুৎ  দিতে  পারছেনা। অন্য  প্রদেশ গুলোর  কথা  নাই  বললাম।  
 দুটো  লেকের  দৃশ্যই  চমৎকার।  দোখান  লেক  এর  আশে  পাশে  পর্যটকদের  জন্য  সুন্দর  বিনোদন  কেন্দ্র  বানানো  হয়েছে।  হোটেল  রেষ্টুরেন্ট  কটেজ  ও  নানা  রকম  চিত্তবিনোদনের  ব্যবস্থা  আছে  দোখান  রিসোর্টে ।  আন্তর্জাতিক  অবরোধ  এই  রিসোর্ট  শহরকে  বিরান  ভূমিতে  পরিনত  করেছে।  সব  কিছুই  আছে  শুধু  মানুষের  কোলাহলে  তা  মুখরিত  না  এবং  যতেœর  অভাবে  মলিন।  দোখান  লেকের  পানিতে  নীল  আকাশের  প্রতিবিম্ব  লেকের  পানিকে  করেছে ঘন  নীল, এত নীল পানি  সাধারনত  দেখা  যায়  না।  লেকের  চারধারের  পাহাড়ে  সুন্দর  করে  রাস্তা  বানানো।  পর্যটকদের  টেনে  আনার  সব  ব্যবস্থাই  আছে।  যুদ্ধ  যে  বিনোদনকে  কত  দুরে  রাখে  তা  এই  রিসোর্ট  এ  এলে  হাড়ে  হাড়ে  অনুভব  করা  যায়।  বর্তমানে  জলবিদ্যুৎ  কেন্দ্রের  কয়েকজন  কর্মী  ও  রিসোর্ট  এর  দুই  একজন  কর্মচারী  ছাড়া  কেউ  নেই।  তারাও  যাই  যাই  করছে।  বেঁচে  থাকতে  হবে  তো।  এত  কম  বেতনে  কি  চলে। 
 ![]()
দোখান  লেক  
 সোলেমানিয়া  থেকে  ইরবিলের  পথে  দোখান  লেক  পার  হয়ে  যেতাম। ফাঁকা  রিসোর্ট  এলাকা  দেখে  মনটা  খারাপ  হয়ে  যেত। দোখান  রিসোর্ট  এ  সোলেমানিয়া  থেকে  সরাসরি  ভাল  রাস্তা  রয়েছে  তবে  কালাদিজা  কিংবা  রানিয়া  হয়ে  আসতে  হলে  পথে  ফেরী  পার  হতে  হয়  ছোট্ট  কিন্তু  বেশ  খরস্রোতা  ছোট  জেব  নদী।  এটা  আরো  দক্ষিণে  গিয়ে  টাইগ্রিস  নদীর  সাথে  মিশেছে ।  ফেরীর  অবস্থা  বেশ  জীর্ণ  ও  ছোট  দুই  তিনটা  গাড়ী  নিয়ে  পারাপার  হয়।  ফেরী  ঘাটে  তেমন  মানুষ  নেই।
 ![]()
ফেরী  পারাপার
  ফেরী  ওয়ালা  দুই  একজন  আছে  ফল  বাদাম  ইত্যাদি  বিক্রি  করছে  যদি  কখনো  কেউ  পার  হতে  আসে।  বিদেশী  না  থাকায়  এখন  দেশী  লোকজনই  ভরসা।  তবে  এক  সময়  এখানে  প্রচুর  বিদেশী  আসত  তা  বোঝা  যায়।  অল্প  কিছুক্ষনের  মধ্যেই  ফেরী  ওপারে  চলে  আসে  তারপর  লেককে  ঘিরে  রাখা  পাহাড়  কেটে  সুন্দর  রাস্তা  বানানো।  চলাচল  তেমন  নেই  তাই  ছমছমে  পরিবেশ,  রাস্তা  থেকে  নীল  লেকের  পানি  অপূর্ব  লাগে।  এই  লেকে  এক  সময়  স্পীডবোট  ও  অন্যান্য  জলক্রীড়ার  ব্যবস্থা  ছিল।  বোট  গুলো  এখনো  ঘাটে  বাধা  আছে।  লেকের  শান্ত  পানিতে  এখন  মাঝে  মাঝে  বড়  বড়  মাছ  ধরা  হয়।  মাছগুলো  অন্যপাশে  দোখান  শহর  ও  রিসোর্ট  এলাকায়  বিক্রি  হয়।  সোলেমানিয়াতে  থাকার  সময়  এই  দুটো  লেকেই  বেশ  কয়েকবার  যাওয়া  হয়েছিল।  দোখান  লেক  ইরবিলের  রাস্তায় বলে  আমাদের  এ  পথে  যেতেই  হতো।
 ![]()
দোখান  লেক  
দরবান্দিখান   ইরান  বর্ডার  থেকে  ১৫  কিলোমিটার  দক্ষিণ  পূর্বে  এবং  সোলেমানিয়া  থেকে  ৬৫  কিলোমিটার  উওরে। কালার  কিফ্রী  শহরে  যেতে  হলে  দরবান্দিখান  পার  হয়ে  যেতে  হয়।   দরবান্দিখানে  আমরা  যেতাম  বোতলের  পানি  আনতে।  জলবিদ্যুৎ  কেন্দ্রের  পাশেই , লেকের  পানিকে  জীবানুমুক্ত  করে  বোতলজাত  করার  বিশাল  এক  কারখানা  বানানো  হয়েছে।  পাহাড়ের  মধ্য  দিয়ে  সুরঙ্গ  পথে  দরবান্দিখান  যেতে  হতো।  পাত্থরে  পাথার ,  বিশাল  সুরঙ্গের  মাঝে রাস্তা।  এখানে  জনপদ  তেমন  সংগঠিত  নয়।  অল্প  কিছু  লোকজন  বাস  করে।  পানির  ফ্যাক্টরীতে  কর্মরত  লোকজন  আশে  পাশে  থাকে।  জলবিদ্যুৎ  কেন্দ্র  কোনমতে  টিকে  আছে  এখানেও  মেরামত  ও  যন্ত্রাংশের  সমস্যা।  আমরা  পিকআপ  নিয়ে  যেতাম। বারটা  বোতলের  একটা  করে  কেইস।  আমরা  এক মাসের  জন্য  প্রয়োজনীয়  পানি  নিয়ে  আসতাম  এক  বোতলের  দাম  ২  টাকার  মত  পড়ত  মাত্র।  জলবিদ্যুৎ  কেন্দ্রে  যাওয়া  যদিও  মানা  ছিল  তবুও  বিদেশী  হিসেবে  আমরা  কিছুটা  সুয়োগ  পেতাম।  বিশাল  কেন্দ্রটা  ঘুরে  ঘুরে  দেখেছিলাম।  এটা  ১৯৮৩  সালের  দিকে  বানানো  শুরু  করলেও  কাজ  শেষ  হয়ে  উৎপাদন  করতে  করতে  ১৯৯০  সাল  লেগে  যায়।  তারপরই  শুরু  হয়  ইরান  ইরাক  যুদ্ধ।  ইরাকের  উপর  অবরোধ।  তারপরও  এটা  সোলেমানিয়া  ও  আশেপাশের  শহরে  বিদ্যুৎ  সরবরাহ  করত।  তবে  এখন  কোনমতে  চলছে।  পানির  লেয়ার  নেমে  গেলে  উৎপাদন  প্রায়  বন্ধই  হয়ে  যায়। দোখান  লেকের  আশে  পাশে  যেমন  খোলামেলা  এলাকা  দরবান্দিখানে  তেমন  প্রাকৃতিক  দৃশ্য  দেখা  না  গেলেও  খাড়া  পাত্থরে  পাহাড়গুলো  দেখতে  খারাপ  ছিল না।  মাঝে  মাঝে  কালচে  ও  ধুসর  পাথরের  ফাঁকে  সবুজের  ছোয়া  অন্যরকম  লাগত। 
 
০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩  রাত ৮:১৫
শোভন শামস বলেছেন: সাথে থাকবেন আশা করি, ধন্যবাদ
২| 
০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩  বিকাল ৫:২০
কালবৈশাখীর ঝড় বলেছেন: মধ্যযুগে মুসলিম জাগরনে কুর্দিদের বীরত্বের কাহিনী এক বিশাল ইতিহাস, বীর কুর্দি নেতা সালাউদ্দিনের কথা পড়েছিলাম ইতিহাস বইতে। তুরষ্ক, ইরান ও ইরাকের মাঝে কুর্দিস্তান হত একটা বিশাল সুন্নি সংখাগরিষ্ঠ দেশ। কিন্তু ইতিহাসের পালাবদলে তারা চিপায় পরে যায়।
বিবিসি জানিয়েছে এজাবৎ তুর্কিরা বিভিন্ন ভাবে প্রায় চল্লিশ হাজার কুর্দি হত্যা করেছে। ইরাকি সাদ্দাম নার্ভ গ্যাস দিয়ে লক্ষাধিক কুর্দি মেরেছিল, ইরান সবচেয়ে বেশী কুর্দি মেরেছে। বীরের জাতী কুর্দিরা এখন খুবই হতভাগা।
Click This Link
 
০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩  রাত ৮:১৮
শোভন শামস বলেছেন: সঠিক এক বছর কুর্দিদের সাথে ছিলাম । 
হালাবজা তে এটা হয়েছিল।
সাথে থাকবেন আশা করি, ধন্যবাদ 
৩| 
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩  রাত ১১:২০
মনিরা সুলতানা বলেছেন: 
দোখান লেক  এর ছবি ভাল লাগল ... ![]()
 
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩  সন্ধ্যা  ৬:৫৭
শোভন শামস বলেছেন: বিদ্যুৎ কেন্দ্র , লেক ও নদীর পাশা পাসি এটা একটা টুরিস্ট  রিসোর্ট , সেখানে গেলে আর ভালো লাগতো । 
সময় পেলেই চলে যেতাম সেখানে । 
এরবিল থেকে আসার পথে ও যাওয়া হত । 
সেখানে আকাশ , পাহাড় আর নীল জলের মাখা মাখি । 
 ধন্যবাদ 
৪| 
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭  সকাল ৯:৫৩
সাদা মনের মানুষ বলেছেন: ভালোলাগা ভালোলাগা এবং ভালোলাগা
 
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭  সকাল ৮:৪০
শোভন শামস বলেছেন: ধন্যবাদ সাথে থাকবেন
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩  বিকাল ৪:৩৪
ইয়ার শরীফ বলেছেন: সাথেই আছি ।
আরও লিখে যান
ভালো ভ্রমন কাহিনী