নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুখীমানুষ

সুখী মানুষ

সত্যিকারের সুখীমানুষের সাথে আমার একটাই পার্থক্য, সুখীমানুষের গায়ের জামা ছিলো না, আমার আছে।

সুখী মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রশঙ্গ: শিশু শিক্ষা

০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৩

Put Key এর মানে তখনো বুঝি না।

অজ পাড়া গ্রামের এক স্কুলের টু তে পড়ি। স্যার ক্লাশে এসে পড়ালেন-



if যদি is হয় but কিন্তু what কি

my mother put key.



সবাই খিলখিল করে হেসে ওঠলাম। এই হাসি আর থামে না। স্যার অতীত অভিজ্ঞতা থেকে ভালো করেই জানেন, এই হাসি থামবে না। তিনি মজাটা দিয়ে খুব নিরবে মজা নিচ্ছেন। বাকী ক্লাশটা এক প্রকার হাসির উপরেই কাটলো।



অন্য পড়া মুখস্থ হয়না। কিন্তু এই পড়া একবার শুনেই মুখস্থ হয়ে গেলো। স্কুল থেকে বাড়ী ফিরার পথে, বাড়ীতে এসে ঐ একই পড়া। ইফ যদি ইজ হয় বাট কিন্তু হোয়াট কি। এর পর মাই মাদার পুট কী বলার পরেই ফিক করে হাসি। এই হাসির জন্য ভাত খাওয়ার সময় নাকে মুখে ওঠলো, তাও হাসি থামে না। বাপের ধমক খাওয়ার পরেও এই হাসি থামতেই চায় না।



শিশু মনের স্মৃতিতে ব্যাপক আন্দের একটা বিষয় ছিলো ঘটনাটা। কিন্তু যখন বড় হলাম, একটু একটু ইংরেজী শিখতে শুরু করলাম। তখন কেবল মনে হলো, আচ্ছা স্যার তো বলতে পারতেন - মাম পুট দ্যা কী। মাই মাদার পুট কী তো কোন ইংরেজী না! শিশুকালের প্রিয় এই স্যারের প্রতি মনের একটা কষ্ট বাড়তে থাকলো। স্যার কি জেনেশুনে এই বাজে রাস্তায় কোমলমতি শিশুদের মনে আনন্দ দেওয়ার চেষ্টাটা করেছিলেন? অথবা এমনও হতে পারে, গ্রামের এক শিক্ষক বিনোদন বলতে তেমন কিছুই জানতেন না। কোন এক দুষ্ট বন্ধুর কাছে ম্যালডি এই ছড়া শুনে ভাবলেন, এই জিনিস তো স্কুলে পড়ানো যায়। আর বছরের পর বছর এই শিক্ষা দিয়ে গেছেন কোমলমতি শিশুদের।



আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, পড়াশুনা হচ্ছে তিতা ট্যাবলেটের মত। বিনোদনের রসগোল্লার ভিতরে পড়াশুনাটা ঢুকিয়ে দিয়ে তবেই খাওয়াতে হয়। আর বিনোদনটা হতে হবে অবশ্যই শিক্ষনীয়। বিনোদনটা হতে হবে পড়াশুনা কেন্দ্রীক।



আমি শিশুদের সাথে খুব মিশি। মনের বিরুদ্ধে মিসি না, সহজাত স্বভাবেই মিশি। শিশুরা যেমন সরল হয় তেমনি দুষ্টও হয়। ভোলাভালা শিশুটা থাকে দুষ্টের শিরোমনি। শুধু ওর সাথে মিশে একটু নাড়া দিতে হবে এই যা। শিশুরা ভাষা শিখার পরপর যা আনন্দ নিয়ে শিখে তা হলো গালি। গালিরও প্রয়োজন আছে জীবনে, স্বীকার করি। দোস্তদের আড্ডায় শালা, বান্দর ইত্যাদি গালি না দিলে জমে না। কিন্তু গালিটা যেন শিশুরা শৈশবেই না শিখে। ভাষার, বিজ্ঞানের খুব সুন্দর সুন্দর মজা আছে। আমি যে কাজটা করি তা হলো, ভাষা ভেঙ্গে ভেঙ্গে বুঝাই। যেমন

- বিপদজনক হলো বিপদ+জনক। জনক হলো বাপ। বিপদজনক মানে বিপদের বাপ।

এই কথা বলার পরে চোখ গুলো একটু টান টান করে অভিনয় করে, বি প দে র বা...প এমন করে উচ্চারণ করলে শিশুরা খুব মজা পায়। আর আনমনেই সে কিন্তু শিখে গেলো, যে কয়েকটা শব্দ মিলেও নতুন একটা শব্দ হয়। শিশুদের নিয়ে আর কী কী মজা করা যায় তা নিয়ে আলাদা করে একদিন লিখবো, যদি পাঠকের ইন্টারেষ্ট থাকে তো।



যাইহোক, পরিশেষটা লিখেই ফেলি। গত কিছুদিন আগে গ্রামের বাড়ী গিয়ে ঐ স্যারের সাথে দেখা। আমি জানি শিক্ষকরা পা এ ধরে সালাম করলে খুশি হন। আমি বিনয়ের সাথে স্যারের পায়ে ধরে সালাম করলাম। নিজের আমার বয়স কম হয়নি। একটু রঙ্গ করে বলছি, স্যারতো বয়সেও আমার বড়, তাই তিনিও এখন রিটায়ারমেন্টে। তাই রিকোয়েষ্ট করে যে বলবো, 'স্যার এই মজার ছড়াটার লাষ্ট লাইন এ কী এর আগে একটা দি বসায়ে দেন' এই সুযোগ আর নাই। শুধু একটাই কামনা, তখনকার কোন ছাত্র যেন এখন শিক্ষক হয়ে এই ছড়াটার আর পুনরাবৃত্তি না করেন। শুভ, শুভ্র হোক শিশুদের বড় হওয়ার পথ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.