![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্যিকারের সুখীমানুষের সাথে আমার একটাই পার্থক্য, সুখীমানুষের গায়ের জামা ছিলো না, আমার আছে।
- ছার (স্যার), আপনে ছার জানেন না আপনেরে আমরা কত পছন্দ করি।
- ভাইরে আমি ঋণ শোধ করি, এর বেশী কিছু না।
- কিসের ঋণ ছার?
- আছেরে ভাই, আছে।
বয়সে বা পদে যারা ছোট তাদেরকে আমি একটু বেশীই আদর করি। যারা একটু আবেগী হয়ে প্রশ্ন করে
- স্যার আপনে এত ভালো কেন?
তাদেরকে আমি এই কমন উত্তরটা দেই।
একবার পড়লাম এক মহাবিপদে। ভদ্রলোক নাছোরবান্দা।
- স্যার সব সময় খালি কন্ ঋণ আছে, ঋণ শোধ করেন। স্যার কাহিনীটা কি আজ কইতে অইবো।
আমি মিটিমিটি হাসছি। ভদ্রলোক আসলেও নাছোরবান্দা
- কন্ স্যার, কন্ না...
পরে যা বল্লাম তা হলো,
আমার জীবনের প্রথম চাকরী হলো ২০০৩ সালে, ১ হাজার টাকা বেতনে। মাসে দুই একবার গিয়ে অফিসের ডাকা ব্যাকআপ নেওয়া হলো কাজ। প্রথম যেদিন অফিস করলাম। এমডি স্যার বল্লেন, কী খাবা? একটু সাহস করে নম্রভাবে বল্লাম, ভাইয়া আইসক্রিম খাবো।
উনি কি যেন ভাবলেন। তারপর বল্লেন, চলো।
তিনি গাড়ী করে আমাকে অনেক দূর নিয়ে গেলেন। বল্লেন, এই জায়গার আইসক্রিমটা বেষ্ট। আমার মত পার্ট টাইম একজন এমপ্লয়ীকে এতটা ভালোবাসা দেখানোর কোন মানে হয়?
পরে ২০০৬ সালে, ফুল টাইম চাকরীতে ঢুকলাম সিএসবি নিউজে। ইন্টারভিউতেই এমডি স্যারকে বল্লাম, স্যার আমার তো থিসিসের কাজ এখনো শেষ হয় নাই। স্যার বল্লেন, সমস্যা কি? সপ্তাহে দুই একদিনের বেশীতো আর ভার্সিটি যাওয়া লাগবে না, যাবেন।
সপ্তাহ খানেক পরেই দেখলাম কাজের বেশ ভালো চাপ। সফ্টওয়্যার বানানোর কাজ। রাতে মনযোগ দিয়ে কাজ করলে বেশ ভালো হয়। এমডি স্যারকে বল্লাম, স্যার কাজের যে অবস্থা আমার তো সারা রাত জেগে কাজ করতে হয়। স্যার বল্লেন, আজ থেকে আপনার ইচ্ছাটাইম অফিস। ই্চ্ছা হয় আসবেন, না হয় না। আমি স্যারকে হাসি দিয়ে বল্লাম, স্যার এইচ. আর তো ঝামেলা করবে। স্যার এইচ আর এর হেড আজিজ ভাইকে হাসি দিয়ে বল্লেন, আজিজ সাহেব অরুণের আজ থেকে ইচ্ছা টাইম অফিস।
এমন করে কত বলবো?
শুধু বর্তমানের অবস্থা বলি। আমার টি শার্ট, পাঞ্জাবী ইত্যাদি কিনতে হয় না। সিনিয়ররা যারা ভালোবাসেন তাদের গিফটেই অনেকটা হয়ে যায়। আমি সম্মান ও শ্রদ্ধার সাথে তাঁদের নাম উল্লেখ করলাম না। কারন যারা এমন করে ভালোবেসে দেন তারা নামের আশায় দেন না। নাম করলে বরং তারা কিছুটা বিব্রত হয়ে যান।
তো এমন করে যে মানুষটা সবসময় বড়দের কাছ থেকে ভালোবাসাটা পেয়ে আসছে। সে মানুষটা কতটা ঋণী? আমি শুধু পেয়ে আসা ভালোবাসাটা এমন করে দিয়ে যাচ্ছি। আর ভালোবাসার ঋণ বড় শক্ত ঋণ, সারা জীবন শোধ করেও তা থেকে মুক্তি মিলে না।
©somewhere in net ltd.