![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্যিকারের সুখীমানুষের সাথে আমার একটাই পার্থক্য, সুখীমানুষের গায়ের জামা ছিলো না, আমার আছে।
ডিসেম্বার মাস, ২০০৬।
একটা ফোন আসলো
- জাহাঙ্গীর হোসেন বলছেন?
- জ্বি বলছি।
- আগামী দিন আপনার একটা ইন্টারভিউ আছে।
- ভাই আমি তো কোথাও রেজিওমি দেই নাই! ইন্টারভিউ আসলো কোত্থেকে?
ঘটনা হলো, তখনো আমার অনার্স শেষ হয় নাই। আর দুইটা সফ্টওয়্যার ফার্ম চালাচ্ছি। পাঁচ বন্ধু মিলে দেওয়া সফ্টওয়্যার ফার্ম আলটেরিয়াস (http://www.ulterious.com) আর বড় ভাইয়ের ইউএস থেকে ফান্ডে চলা টেকসি (http://teksea.com)। তাই কোথাও রেজিওমি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।
যাই হোক, ভদ্রলোক বল্লেন, ভাই আমরা ইউনিভার্সিটিগুলোতে গিয়েছিলাম মেরিট হান্টিং এর জন্য। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি থেকে আপনার নাম প্রপোজ করা হয়েছে। এই কথা শুনে একটু খুশি খুশি লাগলো। তার মানে মেধা শিকারীর লিষ্টে আমার নাম আছে!
গেলাম ইন্টারভিউ দিতে। অফিসের ডেকোরেশন, স্মার্টনেস দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। কেন জানি মনে হলো, এই জায়গাটায় আমি আপন হয়ে যাবো।
ইন্টাররভিউতে এমডি স্যার, ম্যাডাম দুইজনই খুব আগ্রহ নিয়ে এটা ওটা জিজ্ঞাসা করছেন। আমাকে প্রশ্ন করে ঠেকানো তাদের উদ্দেশ্য না। উদ্দেশ্য হলো, তারা যা চাচ্ছেন তা আমি করতে পারবো কি না তা যাচাই করা। অনেক্ষণ প্রশ্নোত্তর দিয়ে পরে হাসি দিয়ে বল্লাম
- ম্যাডাম, আপনি যদি বলেন এমন একটা সফটওয়্যার বানান যেন মনিটরটা এই টেবিল থেকে ওই টেবিলে চলে যায়। তাহলে সরি, তা পারবো না। এ ছাড়া লজিক্যাল যে কোন কিছু তৈরী করতে বল্লে, রিয়েজনএবল টাইম দিলে তা তৈরী করা সম্ভব।
ব্যাস, এই সহজ একটা কথায় আমাকে তাদের পছন্দ হলো। বল্লেন, কবে থেকে জয়েন করতে পারবেন? আমি ডিটেইলস বল্লাম। এখনো যে থিসিস বাকী তা ও বল্লাম। এমডি স্যার হেসে বল্লেন, থিসিস বাকী থাকলে জব করতে কোন সমস্যা হয় না। সপ্তাহে একবার ভার্সিটি গেলেই হয়। অফিস থেকে ভার্সিটি যাবেন, সমস্যা কী?
কোন সমস্যা দেখলাম না। জয়েন করবো ওয়াদা দিয়ে চলে আসলাম নিজের অফিসে।
অফিসের লোকজনদেরকে বলেই গিয়েছিলাম ইন্টারভিওতে। হাসি মুখে যখন অফিসে ঢুকলাম তখন আমার অফিসের কলিগরা যে যার মত চেয়ার ছেড়ে বারান্দায় চলে গেলো। আমি এর পিছনে, ওর পিছনে ঘুরছি। কেউই আমার সাথে কথা বলছে না! বারান্দায় গিয়ে দেখি দুই একজন মন খারাপ করে দাড়িয়ে আছে, আর অন্যরা কাঁদছে। আমি বল্লাম, আরে ভাই এইটা তো আমার নিজের অফিস! আমি তো ফাঁকে ফাঁকে আসবোই। আর সন্ধার পরেও তো আসবো। তবু আমাকে ফুল টাইম আর অফিসে পাবেন না এই ভেবে যারা কেঁদেছিলেন সেইদিন তারা এখনো কি আমাকে এতোটা ভালো বাসেন?
সবাইকে কাঁদিয়ে সিএসবি নিউজে জয়েন করেছিলাম। সেই সিএসবি নিউজ থেকে নিজে কেঁদে বের হয়ে গেলাম আজকের এই দিনে। ৬ সেপ্টেম্বার, ২০০৭ ছিলো সেই দিন। সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলেই কি এম্পলয়ীরা এমন করে কাঁদে? নাকি সিএসবিকেই আমরা সবাই এতটা ভালো বেসেছিলাম?
২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৪৪
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ভাই, কর্পোরেট হাউজগুলোকে আমার কোকিলের বাসা মনে হয়, যে বাসা কখনো আপন হয় না, তবু আমরা এম্প্লয়িরা একে নিজের চেয়ে আপন ভেবে থাকি। খারাপ লাগলো ঘটনাটি পরে।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৫৬
সুখী মানুষ বলেছেন: এই জন্যই জ্ঞানীরা বলেন, লাভ ইউর জব নট ইউর অর্গানাইজেশান।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৪৯
মো কবির বলেছেন: সত্যি দুনিয়াটাই এমন।