![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্যিকারের সুখীমানুষের সাথে আমার একটাই পার্থক্য, সুখীমানুষের গায়ের জামা ছিলো না, আমার আছে।
একবার, বেতন বাড়লো আমার। এই আনন্দে আমাকে কেএফসিতে খাওয়ালেন একজন। সেই থেকে, আমি কাউকে বলিনা - মিষ্টি খাওয়াবেন কখন। বরং বলি, আপনার এই আনন্দের দিনে আমি কি খাওয়াবো বলেন।
আমার বিয়ের দাওয়াতের লিষ্ট থেকে খুব কাছের কিছু মানুষ বাদ পরে গিয়েছিলেন। এর অন্যতম কারন হলো, তখন এক চাকরী ছেড়ে আরেক জায়গায় জয়েন করেছি। শেষ মাসটা দুই জায়গাতেই ওভারলেপ হয় সাধারণত। দুই জায়গায় চাকরী করে পাশাপাশি বিয়ের মত এমন কম্প্লেক্স ফরমালিটিজগুলো আমাকে করতে হয়েছে একলা। আমার বাবা, মা দুইজনই তখন অসুস্থ গ্রামের বাড়ীতে। যাই হোক, এই কাছের মানুষটা সম্ভবত দাওয়াতের লিষ্ট থেকে বাদ পড়ে গিয়েছিলেন। অবশ্য সবাইকে আমি দাওয়াত দিয়েছিলাম ফোনে ফোনে। যেহেতু ফোন লিষ্ট দেখে দেখে দাওয়াত দিয়েছি। উনার বাদ পড়ার কথা না। হয়ত ফোন দিয়েছিলাম, ধরেন নি। পরে হয়ত আর মনে নেই। যাই হোক, মোদ্দা কথা হলো বিয়ের অনুষ্ঠানের ছবিগুলোতে তার অনুপস্থিতি দেখে বুঝলাম, তিনি আসেননি।
বিয়ের প্রথম প্রথম বউ তখনো ঝারি মারা শিখে নাই। খুব নরম ভাবেই বললো, তুমি এইটা একটা কাজ করছো? এত কাছের মানুষ তোমার, আর তাকেই দাওয়াত দিলা না?
দাওয়াত দিলাম, হেসে উড়িয়ে দিলেন। একদিন উনি নিজেই ফোন করে দাওয়াত নিলেন। তবে বাসায় না, বসুন্ধরা মার্কেটে। আমি মনেমনে মহা খুশি। অনেক বেশী ঋণী যে মানুষদের কাছে তাদেরকে একটা বেলা খাওয়ানো, তাদের কোন কাজে লাগা এইসবের আনন্দ বলে বুঝানো যায়না। বসুন্ধার গিয়ে আনন্দে ধুমসে খাওয়া-দাওয়া হলো। কিন্তু বরাবরের মতই বিল দেওয়া গেলো না।
সবসময় বিল, ভাড়া ইত্যাদি দেওয়ার একস্ট্রিম স্বভাব ছিলো আমার। খুব কাছের এক বন্ধু একবার বলেছিলো - মাঝেমাঝে অন্যদেরও এই সুযোগটা দিও। না হয় অন্যরা একটা সময় ইনফিরিওর কম্প্লেক্সে ভোগবে। এর পর থেকে আমি মাঝেমাঝে এই সুযোগটা অন্যদের দেই। কিন্তু নিজে এই সুযোগ কোনদিনই আমি এই ভদ্রলোকের কাছে পাইনি।
এই খাওয়া দাওয়া টপিক এবার বাদ দেই। এমন স্মৃতি অনেক অনেক আছে উনার সাথে। এবার আসি জ্ঞানের বিষয়ে। হিন্দিতে একটা কথা আছে, ছুপা রোস্তম। অর্থাৎ তলেতলে বিরাট কিছু কিন্তু উপরদিয়ে কিছুই বোঝা যায়না। তিনি হলেন, ছুপা জ্ঞানী। অনেক অনেক জানেন কিন্তু বোঝা যায়না। কারন তিনি বোঝতে দেননা। ভালোমত গল্প জমাতে পারলে, তখন হুরহুর করে উদাহরণ ঝরতে থাকে। আর উপদেশের চাইতে উদাহরণের গুরুত্ব অনেক বেশী। এই গুরুত্বটা তিনি বহন করেন।
উনার সাধারণ জ্ঞান কতটা অসাধারণ তার কয়েকটা উদাহরণ দেই। হয়ত বললেন, আচ্ছা শান্ট জিনিসটা কী? ইঞ্জিনিয়ার হলে উত্তর দিবে, একটা বাইপাস সার্কিট। ডাক্তার হলে উত্তর দিবে, শরীরের ফ্লুইড চলাচলের ছিদ্র। রেলওয়েতে যারা কাজ করেন তারা বলবেন, সুইচিং মেকানিজম। আর লন্ডনে যারা থাকেন তার বলবেন একটা থিয়েটার কম্পানী। এই ভদ্রলোকের স্পেশালিটি হলো, তিনি আগে মেপে দেখবেন আপনি কোন সেক্টরের মানুষ। পরে আপনার জগৎ অনুযায়ীই উত্তরটা দিবেন।
রবীন্দ্রনাথ নোবেল পাওয়ার পর স্যার জগদীস চন্দ্র চিঠিতে বললেন, রবী আমি জানতাম তুমি এমন স্বীকৃতি পাবে। রবী পাল্টা এই বিজ্ঞানীকে উত্তর দিলেন, সাহিত্যের যে স্বরস্বতী তোমার পায়ে মাথা ঠুকছে তাকে যদি একটু বসতে দিতে, তবে আমার আগে এই স্বীকৃতি তুমিই পেতে। ভদ্রলোক যা করছেন তাতে তিনি সফল। কতটা সফল তা বলবো না, ভদ্রলোক বিনয়ী, হয়ত লজ্জা পাবেন। শুধু এটুকু বলবো, যে কোন পেশার স্বরস্বতীকেই যদি তিনি একটু বসতে দেন তবে তিনি এ পেশাতেও সফল হবেন। এতটা জ্ঞান তার আছে।
একবার ভদ্রলোকের সাথে বসে আছি। ফাঁকে বউকে ফোন দিয়ে বল্লাম যে আমি উনার সাথে আছি। আমাকে বললেন, ভাইজান, ভাবি তো বলবো অফিস ছেড়ে আড্ডা দিয়ে বেড়াচ্ছো? আমি উত্তর দিলাম, ভাইজান, আমি নিজের দামটা একটু বাড়াইলাম বউয়ের কাছে। বউয়েরতো ধারনা আমি একেবারেই অযোগ্য মানুষ। আপনার মত মানুষদের সাথে উঠাবসা করার মত যে আমার সুযোগ হয় এইটা বউকে মনে করায়ে দিলাম। অন্তত এই উসিলায়ও যদি বউ একটা পাত্তা দেয়।
ব্যক্তিগত লেখা আর বড় না করি। ব্যাক্তি আমি এখনো রবীন্দ্রনাথ বা হুমায়ূন আহমেদ হয়ে যাইনি যে আমার ব্যক্তিগল লেখাও মানুষ মনযোগ দিয়ে পড়বে। কিন্তু যখন হিসাব মিলায়ে দেখি, এমন বড় বড় কিছু মানুষের স্নেহ আমি পাই তখন নিজেকে অনেক বড় মনে হয়। পাগলের সুখ নাকি মনেমনে। এমন মানুষদের সিন্নিধ্য পেয়ে মনেমনে আমি সুখী। এতে পাগল হলেও ক্ষতি কি?
কারো কাছ থেকে গিফ্ট পেলে, কাউকে প্রশংসা করলে সাধারণত আমি তাঁর নাম উল্লেখ করিনা। কিন্তু আজ একটু ব্যতিক্রম কাজ করতে ইচ্ছা করছে। এমন ছুপা জ্ঞানী মানুষটাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার লোভ সামলাতে পারছিনা। তিনি ব্লগার কে এস আমীন ভাই।
২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৫৫
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: উনার কথা জেনে ভালো লাগলো ভ্রাতা
ভালো থাকবেন
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৫০
ঘুড্ডির পাইলট বলেছেন: ব্লগার কে এস আমিন ভাইকে শুভেচ্ছা