![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্যিকারের সুখীমানুষের সাথে আমার একটাই পার্থক্য, সুখীমানুষের গায়ের জামা ছিলো না, আমার আছে।
মাস খানেক আগের কথা -
সকালে হাটতে বের হয়েছি, পকেটে টাকা নিয়ে বের হইনি। হারুণের সাথে দেখা। সেই একই ভঙ্গিতে মাটিতে যুবুথুবু হয়ে বসা। গায়ের টি-শার্টটা দিয়ে হাটু দুইটা ঢাকা। জিজ্ঞাসা করলাম
- হারুণ আছো কেমন?
হারুণ মেজাজ গরম করে জবাব দিলো
- টেকা দেওনা, পইশা দেওনা। ভালা থাকি কেমনে?
আমি একটু অবাকই হলাম। হারুণকে আমি প্রত্যেকদিন না দিলেও কয়দিন পরপর টুকটাক টাকা দেই। প্রতিদিনই সে আমাকে বিজ্ঞের মত বলে
- টেকা কিছু না। হারুন টেকার জন্য মরে না।
কিন্তু আজ হারুণের হলোটা কী? পকেটে টাকা নিয়ে বের হইনি। তাই কী আর বলবো, হাটা ধরলাম। হারুন বিরক্ত হয়েই বল্লো
- তুমি খালি কথা কও, টেকা দেও না।
হাটছি আর ভাবছি - সকাল বেলা আমরা তিন জন সাধারণত এক সাথে হাটি। আমি, ইসহাক ভাই আর আলম ভাই। ইসহাক ভাই প্রচন্ড মজার মানুষ। কোন্ এক অদ্ভত কারনে তিনি হারুণকে পছন্দ করেন না। আমাকে প্রায়ই বলেন
- মিয়া আপনে সরল মানুস তাই বুঝতেছেন না, বেটা কিন্তু চরম ধান্দাবাজ। একটু ডিফরেন্ট ভেক ধরছে অন্যদের চাইতে বেশী কামানোর জন্য।
যাই হোক, আমি নেগেটিভলি ভাবছিলাম না। আমি উত্তরায় নিয়মিত থাকছি না। প্রিয়'র জন্য তার নানা-বাড়ীতেই বেশী থাকা হচ্ছে। মনে পড়লো, হরুণের সাথে শেষ দেখা হয়েছিলো দু্ই মাস আগে। তখন দেখেছিলাম তাকে মশায় কামড়াচ্ছে। বলেছিলাম, হারুণ তোমারে তো মশায় কামড়াচ্ছে। তখন হারুন খুব বিরক্ত হয়ে বলেছিলো - কামড়াউক, খাইয়া বাইচ্চা থাক। ৫০০ টেকার ঔষধ খাইয়া আমি বাইচ্চা আছি; এরা আমারে মাগনা খাইয়া বাইচ্চা থাকুক।
-০-
আজ সকাল বেলা চিন্তা করলাম হারুণকে টাকা দিবো কিন্তু কথা বলবো না। অন্যদের মত টাকা দিয়ে চলে যাবো। দেখি কী করে। করলামও তাই।
টাকা দিয়ে হনহন করে হাটা ধরলাম। হারুণ ডাক দিলো
- খারাও
আমি কাছে গেলাম না, দাড়ালাম।
-বলো হারুণ
- তুমি টেকা দিসো কেন? হারুণ কি টেকার জন্য মরে?
আমি কিছু বল্লাম না। হারুণ আবার বলা শুরু করলো
- তুমি আসো না। আমি খালি এই দিক তাকাই (বলে ঘার ঘুরালো) আবার ঐদিক তাকাই (অন্য দিকে এবার ঘার ঘুরালো) তোমারে পাইনা। প্রত্যেকদিন তোমারে খুঁজি, পাইনা। হারুণ তোমার কাছে টেকা চায়?
-০-
হঠাৎ করেই মনে হলো। ভিক্ষুক হলেওতো তার টাকার প্রয়োজন আছে। একটু পাগলও সে, তাই টাকা কামানোর রেগুলার রাস্তায় সে যাবে না। টাকার প্রয়োজন যে তার শেষ কয়টা দিন ছিলো তা টের পেলাম। হারুণের ভালোবাসাকে কি আজ টাকাটা এমন করে দিয়ে অপমান করলাম?
আমি ছাপোষা মানুষ। নিজের পরিবারের সবার চাহিদাই ঠিকমত পূরণ করতে পারিনা। হারুণের মত মানুষজনদের আমি কিভাবে পুনর্বাশণ করবো?
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:২৩
সুখী মানুষ বলেছেন: মাসুদ ভাই, ধন্যবাদ জনাব।
২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:০১
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: তারপরও যে সৎ ইচ্ছা - এটাও কম কিসে -------বেশির ভাল মানুষই চরম স্বার্থপর -------
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:২২
সুখী মানুষ বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ভালো লাগা জানাই
৩| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০২
নির্বোধ পাঠক বলেছেন: দরদী গল্প, ভাল লেগেছে বেশ।
তবে একথাও ঠিক; আজকাল হারুনদের আয় রোজগার ভালই।
তাদের গায়ে জামা না থাকলেও আপনার মত সুখী মানুষদের চাইতে বেশ সুখী ওরা।
গরীব মানুষরা আগের মত আর অনাহারে থাকে না বা জামাহীন থাকে না।
আর্থ সামাজিক উন্নতির পাশাপাশি ওদেরও বেশ উন্নতি হয়েছে। গ্রামেও আজকাল
সত্যিকারের গরীব খুঁজে পাওয়া যায় না। যাদের পাওয়া যায় তারা অভাবের গরীব না
স্বভাবের গরীব।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪২
সুখী মানুষ বলেছেন: অভাবের গরীব যে নাই ভাইজান এইটাই সুখের কথা।
৫ টা বেসিক চাহিদার প্রথম দুইটা (অন্য, বস্ত্র) অন্তত যেন সবাই আমরা পাই।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৪৫
ব্লগার মাসুদ বলেছেন: ++