নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুখীমানুষ

সুখী মানুষ

সত্যিকারের সুখীমানুষের সাথে আমার একটাই পার্থক্য, সুখীমানুষের গায়ের জামা ছিলো না, আমার আছে।

সুখী মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

৫০ টাকার জন্য

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪২

৫০ টাকার জন্য শুদ্ধ করে "মেজাজ জ্বলে যাচ্ছে" বললে শান্তি লাগবে না। বলতে হবে ৫০ টাকার জন্য মিজাজটা জ্বইল্লা যাইতাছে।

ঘটনা হইলো, কাঁচা বাজার করতেছি। আলু, সিম, বাঁধাকপি, কাঁচামরিচ, টমেটু ইত্যাদি নেওয়া শেষ। পাশ ফিরে দেখি তিন তলার ভদ্রলোক। পরিচিত মানুষ দেখলে আমিই আগে হাসি দিয়ে আপন আপন একটা ভাব করি। তাই করলাম
- আরে ভাই!
- ভাই কী নিতাছেন?
- শব্জি দোকানে কি আর মাছ মাংস নিবো? এইতো আলু টালু নিচ্ছি ভাই।
- তো আলু কত কইরা নিতাছে?
- ২৫ টাকা ভাই।
- কন কি! আলু তো ১৫ টাহা কইরা ভাই!
শব্জিওয়ালা মামা শুনছিলেন কথাবার্তা। একটু বিরক্ত হয়েই বললেন
- নুতুন আলু ১৫ ট্যাহা কইরা! দেন ঠিকানা দেন, আমি কিনমু।

ভদ্রলোক এবার বল্লেন
- দেন আমারেও এক কেজি দেন। আর উনার আলুর দামও রইকখেন না। দুই কেজির দামই আমার কাছ থেকে নিয়েন।

আমি বল্লাম
- ভাই আমি তো অনেক কিছু নিচ্ছি। অনেক কিছুর সাথে আপনার এক কেজির দামটা আমারইতো দেওয়াটা সুন্দর দেখায়, তাই কি না কন?

ভদ্রলোক কিছু বল্লেন না, দোকানদারের দিকে তাকিয়ে বল্লেন
- এই আমারে দুই কেজি দেন।

আমি মনে মনে হিসাব করলাম, পঞ্চাশ। যাক ব্যাপার না। টাকা হিসাব করে শব্জিওয়ালা মামাকে বল্লাম মামা তিন কেজি আলু সহ টুটাল টাকাটা রাখেন, এই নেন।

তিন তলার ভদ্রলোক পকেন থেকে ৫০০ টাকার নোট বের করে শব্জিওয়ালার দিকে বাড়িয়ে দিলেন। কয় কেজির দাম রাখবে কিছুই বললো না। দোকানদার বল্লো, ভাঙ্গতি নাই। তিনি ভাঙ্গতির জন্য অন্য কোথাও যাচ্ছেন। আমি বল্লাম, ভাইরে আমি তো আপনার টাকা সহ দিয়ে দিয়েছি। উনি কিছু বল্লেন না। হাটা ধরলেন।

আমি প্রায় মিনিক পাঁচেক দাড়িয়ে রইলাম। ভাবলাম, এক সাথেই যাই। উনি এসে পঞ্চাশ টাকা দোকানে ঢিল মেরে ফেলে তার দুই কেজি আলুর পলিথিনটা নিয়ে হাটা ধরলেন। আমি অবাক, একটু বেশীই অবাক! বল্লাম
- ভাই, টাকা তো অলরেডি আমি পে করে দিয়েছি।
তিনি বল্লেন
- আমার বাজারের টাকা আপনি কেন দিবেন?
আমি ভদ্রলোকের পিছন পিছন হাটছি।
- আরে ভাই সত্যিই সব টাকা দেওয়া হয়ে গেছে। আপনার টাকাটা কাইন্ডলি ফেরত নেন।

তিনি কোন কথাই শুনলেন না। পিছন থেকে শব্জিওয়ালা মামা ডাক পারলেন
- মামা এই ট্যাহা কি করুম?
আমি বল্লাম, মামা রাইক্খা দেন। এইটা আপনার।

ভদ্রলোকের সাথে বাসার পথে হাটছি। জিজ্ঞাসা করলাম
- ভাই এইটা কেমন আচরণ দেখাইলেন?
- না আমার বাজারের টাকা আপনে কেন দিবেন?
- বিষয়টাতো শুরু করলেন আপনি। আপনিইতো আমার এক কেজি আলুর দাম দিতে চাইলেন।

এখন ভদ্রলোক আর কোন কথা বলেন না। এমন জটিল মেন্টালিটির মানুষ আমার ভালো লাগে না। টাকা পয়সা অতি তুচ্ছি জিনিস, এইসব নিয়ে এমন জটিল ভাবনা যথেষ্ঠই যন্ত্রনার। আমি প্রায়ই এইসব ছোট ব্যবসায়ীদের কাছে ইচ্ছা করে ঠকে আসি। এর পরেও একটু বেশী টাকা দেই। কিন্তু আজকের এই পঞ্চাশটা টাকা কেন জানি খুবই যন্ত্রনা দিচ্ছে মনে। ---জাদা কোথাতার।

টাকা পয়সা, জিনিস পত্র দেওয়া নেওয়ায় কোন দোষ নাই। কিন্তু দোষ হলো, দিয়েও না দেওয়া, নিয়েও না নেওয়ায়।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো প্যাঁচ তো!

২| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪৯

নতুন বলেছেন: বেচারা নিজেকে আপনার চেয়ে বেশি ধনী মনে করে.... তাই উনি আপনাকে অফার করেছেন...

কিন্তু যখন ভাংতি নাই...তখন আপনি টাকা দিয়েছেন সেটা তার ইগোতে আঘাত করেছে... B-)) সেইটা তিনি আর ঢাইকা রাথতে পারেনাই...

৩| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৩৯

কলমের কালি শেষ বলেছেন: ভাবের দুনিয়া । কি আর করা ।

৪| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:১২

সুমন কর বলেছেন: টাকা পয়সা, জিনিস পত্র দেওয়া নেওয়ায় কোন দোষ নাই। কিন্তু দোষ হলো, দিয়েও না দেওয়া, নিয়েও না নেওয়ায়।

=p~ =p~

৫| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:২৫

লাজুক ছেলে...... বলেছেন: কিন্তু দোষ হলো, দিয়েও না দেওয়া, নিয়েও না নেওয়ায়-----
এই লাইনটার একটা ওজন আছে.....
ছোট একটা বিষয় নিয়া ঘটনা ঘটলেও এতে মানুষের ব্যাক্তিত্ত সম্পরকে জানা গেছে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.