নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুখীমানুষ

সুখী মানুষ

সত্যিকারের সুখীমানুষের সাথে আমার একটাই পার্থক্য, সুখীমানুষের গায়ের জামা ছিলো না, আমার আছে।

সুখী মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভূমিকম্প কী, কেন এবং করণীয়

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৫

‘খেলিছো এ বিশ্ব লয়ে / বিরাট শিশু আনমনে।’ পরপর দু’বার ভূমিকম্পের পর কাজী নজরুল ইসলামের এই কথাটাই বারবার মনে পড়ছে। প্রকৃতির কাছে মানুষ বড়ই অসহায়। বিজ্ঞানের জাদু দিয়ে কিছু কিছু বিষয় হয়তো বিজ্ঞান জয় করতে পেরেছে। কিন্তু ভূমিকম্পের মতো এত বড় শক্তিকে কিছুতেই বশে আনা সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি ভূমিকম্পের কোনো আগাম বার্তাও এখন পর্যন্ত বিজ্ঞান দিতে পারছে না।
ভূমিকম্প হচ্ছে পারমাণবিক বোমার চেয়েও শক্তিশালী একটা ঘটনা। নিমিষেই একটা গোছানো শহরকে ধ্বংসের ধূলিতে পরিণত করার মতো শক্তিশালী জিনিস এই ভূমিকম্প।
ভূমিকম্প আসলে কেন ঘটে একটু বোঝার চেষ্টা করি। প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি বছর আগে জ্বলন্ত সূর্য থেকে খসে পড়া একটা আগুনের পিণ্ড হচ্ছে আমাদের এই পৃথিবী। কোটি কোটি বছরে তার ওপরের আস্তরণটা শীতল হয়ে শক্ত হয়েছে। ৬৩৭৮.১ কিলোমিটার গভীরে হচ্ছে পৃথিবীর কেন্দ্র। আর শীতল হয়েছে মাত্র ওপরের প্রায় ৫৫ কিলোমিটার আস্তরণ। খুব সহজ করে ভাবতে গেলে, টিক যেন একটা আপেলের চামড়াটা হচ্ছে আমাদের পৃথিবীর মাটি। আর এর ভেতরের রয়েছে জ্বলন্ত, গলন্ত পাথর, ধাতু ইত্যাদির মিশ্রণ।
সমস্যা হচ্ছে এই যে ৫৫ কিলোমিটার আস্তরণ শক্ত হয়ে মাটি হয়েছে তা আবার একত্রে জোড়া লাগানো না। সাতটা টুকরায় এই আস্তরণটা বিভক্ত। প্রত্যেকটা টুকরাকে বলা হয়, টেকটোনিক প্লেট। এই প্লেটগুলো চরম উত্তপ্ত গলিত লাভার ওপর ভাসমান। আর প্লেটের নিচের হাজার হাজার কিলোমিটার জ্বলন্ত তরল যে লাভা আছে তাও যে স্থির বসে আছে তা নয়। কারণ সাতটা টুকরার ফাঁকে ফাঁকে আছে সাগর, আছে আগ্নেয়গিরির চূড়া। যার কারণে লাভার তাপমাত্রাও পরিবর্তন হচ্ছে নিয়মিত। আর সেই শৈশবেই আমরা পড়েছি তাপমাত্রার কম-বেশির জন্য পদার্থের দৈর্ঘ্য কম-বেশি হয়। তাই লাভার ঘনত্ব কম-বেশি হয়ে এরা নিজেরা একটা গতি পায়। এই কারণে গতিময় লাভার ওপরে ভাসমান সাতটা আস্তরণও সঙ্গে সঙ্গে চলতে বাধ্য হয়। বিষয়টা ঠিক নদীতে ভাসা নৌকার মতো। নদীর পানি যদি চলতে থাকে, তাহলে তার ওপরে ভাসা সাতটি নৌকাও বিভিন্ন দিকে চলতে বাধ্য হবে। আর গলন্ত লাভার চলার দিক সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
প্রথমত, সাতটা টেকটোনিক প্লেট যদি মুখোমুখি চলতে থাকে। তাহলে, দুইটা প্লেটের মাঝখানের অংশ চাপ সহ্য করতে না পেরে ওপরের দিকে উঠে যায়। আর তখন স্বাভাবিক কারণেই প্লেট দুটো একটু একটু করে ধাক্কা খাবে। আর তার নামই ভূমিকম্প। মাঝের অংশগুলো যে ধাক্কা খেতে খেতে ওপরে উঠতে থাকে এরই ফলাফল হলো হিমালয়ের মতো পাহাড়। মজার কথা হচ্ছে, দুটো প্লেট মুখোমুখি এগোতে থাকার কারণে ভারত ধীর ধীরে ইউরোপের দিকে ঢুকে যাচ্ছে। হিমালয়ের উচ্চতা প্রতি বছর এক সেন্টিমিটার করে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পরের আরেকটা ঘটনা হলো, প্লেটগুলো যদি একে অন্যের কাছ থেকে দূরে সরে যায়। ১৯৪২ সালে যখন কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করেন। তারপর আমেরিকা ইতিমধ্যেই প্রায় ২৫ মিটার সরে গেছে। কয়েক কোটি বছর পর হয়তো আমেরিকা গিয়ে অন্য একটা দেশের সঙ্গে ধাক্কা খাবে। দুই দেশের মাঝে গড়ে উঠবে হিমালয়ের মতো কোনো একটা পাহাড়।
আরেকটা ঘটনা হলো, দুটো প্লেট যদি পাশাপাশি চলতে থাকে। তখনো দুই প্লেটের মধ্যে সংঘর্ষ হবে। এই শক্তি ভূমিকম্প হিসেবে আমরা দেখব।
প্রতি বছর পৃথিবীতে প্রায় এক লাখবার ভূমিকম্প হয়। কিন্তু রিখটার স্কেলে যদি এই মাত্রা ৪-এর কম থাকে তাহলে আমরা তা টের পাই না। আর এই মাত্রা যদি ৭-এর ওপরে হয়, যা মাত্রই হয়ে গেল নেপালে তাহলে তার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হয় অত্যাধিক। আর এই মাত্র যদি ৯-এর ওপর হয়, তাহলে সব কিছু ধূলিসাৎ হয়ে যায়। জাপানে সুনামির সময় এই মাত্রা ছিল ৯.১। গোটা জাপান দেশটিই কয়েক মিটার সরে যায় এর ফলে।
ভূমিকম্প হলে কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয় এই নিয়ে অনেক কথা বার্তা আছে। কিন্তু জ্ঞানের কথা বিপদের সময় মনে পড়ে না। তাই যতই এসব কথা মুখস্ত করেন, বিপদে কাজে লাগবে না। বিপদে যা করতে হয়, তা হলো খুব ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে দেখতে হয়। খুবই ঠাণ্ডা মাথায়। মাথা গরম কিছুতেই করা যাবে না।
যদি উঁচু বিল্ডিংয়ে থাকেন, তাড়াহুড়া করে নামতে পারবেন না। তাই আশপাশের শক্তি কিছু ধরে দাঁড়িয়ে থাকুন। লক্ষ্য রাখবেন আশপাশে যেন কাচ বা সহজে ভেঙে যায় কিছু না থাকে। ভূমিকম্পের সময় কিছুতেই লিফটে উঠবেন না। লিফট মাঝপথে আটকে যেতে পারে বা ছিঁড়ে যেতে পারে।
রাস্তায় নেমে এলেও খেয়াল রাখুন যেন আশপাশের গাছ, খাম্বা ইত্যাদি আপনার মাথায় এসে না পড়ে।
গাড়ি চালাতে থাকলে, গাড়ি রাস্তার পাশে পার্ক করুন। কিছুতেই ব্রিজের নিচে বা বিল্ডিংয়ের আশপাশে পার্ক করবেন না।
সবচেয়ে বড় কথা ভূমিকম্পের সময় নিজে বিভ্রান্ত হবেন না, দিকভ্রান্ত হবেন না। এতে করে তা আশপাশে ত্বরিত গতিতে ছড়িয়ে যাবে। বিপদের সময় মানুষের যা ক্ষতি হয় তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয় বিপদের গুজবের কারণে। - See more at: Click This Link

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:০৫

নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: ভাই প্রিয়তে রাখলাম সময় করে পরে নেব।

২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:২১

কাবিল বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.