নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুখীমানুষ

সুখী মানুষ

সত্যিকারের সুখীমানুষের সাথে আমার একটাই পার্থক্য, সুখীমানুষের গায়ের জামা ছিলো না, আমার আছে।

সুখী মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সেলুন

১১ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৩২

সেলুনটাতে চুল কাটাতে গেলে আমার একটু ভয় ভয় করে।
অতি আধুনিক সব কী কী যেন যন্ত্রপাতি। হাসপাতালের আইসিইউতেও মনে হয় এত যন্ত্রপাতি থাকেনা। এরপরেও আমি এখানে যাই। আমি কোথাও "না" বলতে পারিনা। কিন্তু এই খানে আমি নিষ্ঠার সাথে "না" বলতে পারি। এই না বলতে পারার সুখের কারনেই মনে হয় আমি যাই। উদাহরন দেই -
- স্যার চুলটা দেখি ফেকাসে হয়ে আছে! সাইনি করে দেই?
আমি মুচকি হাসি দিয়ে বলি, না লাগবে না।
- স্যার, সেভ করে দেই?
ব্যাটা জানে আমি সেলুনে সেভ করি না। এরপরেও প্রত্যেকবার একই কথা বলবে। আমি সংক্ষিপ্ত উত্তর দেই, না।
- স্যার ষ্টিম ফেসওয়াস করে দেই? মুখের চামড়াটা মোলায়েম হবে।
আমি প্রায়ই "না" বলি। আবার মাঝেমাঝে মজা করে বলি, চামড়া খসখসে করতে পারলে করে দেন। পুরুষ মানুষ মোলায়েম হয় মিয়া!
ছেলেটা বিনয়ের হাসি হাসে। ভাবটা এমন যে খসখসে মেশিন নেক্সট উইকেই আসছে। তখন করে দিতে পারবে। সে আবার মনযোগ দেয় চুল কাটায়। একটু পর আবার শুরু করে
- স্যার চুলটা একটু কালার করে দেই? এইটা স্যার কলপ না, ফরেন একটা মেডিসিন।
আমি বিরক্তিটা দুই, তিন সেকেন্ড জমায়ে রাখি। তারপর দৃঢ়তার সাথে বলি, ন্নাআ...।
চুল কাটা শেষ হতেই চায় না। আবার বলে, স্যার মাসাজ করে দিবো? যাই হোক, এইসব ঘটনার সাথে আমি পরিচিত। না বলতে পারার সুখের সাথেও আমি পরিচিত। গত দিনের ঘটনা বলি।

চুল কাটার জন্য ওয়েটিং রুমে বসে আছি। কারো চুল কাটাই শেষ হচ্ছে না। খেয়াল করে এক বেচারাকে দেখলাম। মনে হয় ভার্সিটিতে পড়ে। চেহারায় স্পষ্ট লেখা আছে, কোন একটা মেসে হয়ত বন্ধুদের সাথে থাকে। বন্ধুদের সবার সাথে একটু নাক উঁচু ভাব দেখিয়ে যে চলে তাও চেহারায় স্পষ্ট। সেলুনের ছেলেটা একটা একটা টুপ ফেলছে আর ছেলেটা খুব ভান নিয়ে ইশারায় হ্যাঁ বলছে। এর মধ্যে আমিও পাশের সিটটা ফাঁকা পেয়ে চুল কাটাতে বসলাম।

একই মুখস্থ প্রশ্নের উত্তরে আমি একের পর এক "না" বলে যাচ্ছি। আর ছেলেটা খুব ভাব নিয়ে "হ্যাঁ" বলে যাচ্ছে।
সবশেষে বিল দেওয়ার মুহূর্ত আসলো। ছেলেটা খুব যত্ন সহকারে মুখের ভ্রণ টিপছে আয়নায় দেখে দেখে। একটু তাচ্ছিল্যের সাথেই বল্লো
- কত হইসে?
সেলুনের ছেলেটা জানালো, স্যার পাঁচশো বিশ টাকা।
ভ্রনটা আর গালা হলো না। চট করে লম্বা হয়ে বসলো।
- কত হইছে বিল!
- স্যার, ফাইভ হানড্রেড এন্ড টুইন্টি টাকা।
এবার মনে হয় ছেলেটা একটু নরম হইলো। খুব অসহায়ের মত বল্লো, দুই শো রাখলে হয় না? সেলুনের ছেলেটা মহা ভদ্র। বল্লো, স্যার আপনি বিল চার্ট দেখেন।

ছেলেটা তার মানিবেগের কোনাকাঞ্চিতে জমানো টাকা খোঁজা শুরু করলো। তাকে খুব চিন্তিত দেখাচ্ছে। আমি পকেট থেকে চকচকা একটা একশো টাকার নোট বের করে সেলুনের ছেলেটাকে দিলাম। খুব ভাব নিয়ে বল্লাম
- কিপ দা চেঞ্চ।
বলেই বের হয়ে আসলাম। এতক্ষণ হাসিটা কিছুতেই চেপে রাখতে পারছিলাম না। সেলুন থেকে বের হয়েই খুকখুক করে দাত বের করে হাসতে থাকলাম। আহারে বেচারা!

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৪

ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: আপনি হাসলেন কিন্তু সেই বেচারার তো ১২টা বেজে গেছে।

১১ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৪:২৯

সুখী মানুষ বলেছেন: আমার তো কিছু করার ছিলো না রে ভাই!

২| ১১ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৩:২৭

অব্যক্ত স্লোগান বলেছেন: ব্যতিক্রমী বিনোদন পেলাম!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.