নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খাপ খোলা কলমে শাণিত হোক মঞ্চ...

কূপমন্ডূক

জানা ভালো, না জানা খারাপ, ভুল জানা অপরাধ

কূপমন্ডূক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ কাগজ অথবা সাদা বৃষ্টি

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:১৬

ঘুটঘুটে অন্ধকার। অমাবস্যা বোধহয়। আকাশে চাঁদ, তারা কোনোকিছুর ছিটেফোঁটাও নেই। দোয়াতের জমাট কালি কে যেন লেপ্টে দিয়েছে আকাশের ধবল দেহে। সেই অন্ধকার আকাশের নীচে কালে পীচের এক প্রশস্ত রাস্তা। সে রাস্তার এককোণে দোমড়ানো মোচড়ানো অবস্থায় একটা জিপগাড়ি পড়ে আছে। গাড়ির দুটি হেডলাইটই জ্বলছে তীব্রভাবে।

হুট করে বৃষ্টি নেমে এসেছে। জ্বলজ্বল করে হেডলাইট জ্বলতে থাকা বিধ্বস্ত গাড়িটিকে জলধারায় সিক্ত করছে অবেলার বর্ষণ। মাঝেমধ্যে হাহাকারের সুর হয়ে বয়ে যাচ্ছে ঝোড়ো বাতাস। ঝোড়োবাতাসে ভেজামাটির গন্ধ, সোঁদাগন্ধ।

গাড়ির আরোহী তিনজন। ড্রাইভার সামাদ, লেখক সমরজিৎ লাহিড়ী, তার স্ত্রী রূপা লাহিড়ী। ড্রাইভিং সিটের সামনে স্টিয়ারিং হুইলের সাথে সামাদের মাথা আটকে আছে। মাথার দুপাশ থেকে গলগল করে উষ্ণ রক্ত এখনো বেড়োচ্ছে। সামাদ মরে যাচ্ছে বোধহয়।

বাইরে বজ্রপাত। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে মাঝেমধ্যে। আলোয় ঝলসে উঠছে দুমড়ে যাওয়া গাড়িটা। আচ্ছা, লেখক আর লেখকের স্ত্রী কী বেঁচে আছে?

ফিরে যাওয়া যাক কয়েকঘন্টা আগে।

১.
নাস্তার টেবিলে বাদামী রুটিতে ছুরি দিয়ে পুরু করে মাখন মাখতে মাখতে সমরজিৎ জানালেন, সে আজ একবার গ্রামের দিকে যাবে। আগামী বইমেলার জন্যে একটা উপন্যাস লিখতে হবে। মাথায় একটা প্লট এসেছে। প্রেক্ষাপট গ্রাম, গ্রাম থেকে কিছু হোমওয়ার্ক করে ফিরবেন সন্ধ্যেবেলাতেই।

সমরজিৎ খ্যাতিমান লেখক। প্রত্যেক বইমেলাতে একটাই বই লেখেন, সেই বই প্রতিবারই নির্দিষ্ট একটা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়। বইমেলায় সহস্রকপি বিক্রি হয় বইটির। প্রতিবারই বেস্টসেলার। সমরজিৎ মেলায় গেলে অস্বাভাবিক ভীড় হয়, ভীড় সামলাতে পুলিশের একাধিক বাহিনীকে তটস্থ থাকতে হয় প্রতিবারই। এর অন্যথা এখনো হয়নি। এ এক বিড়ম্বনা, খ্যাতির বিড়ম্বনা।

সমরজিৎ এর ঘোষণা শুনে তাঁর স্ত্রী রূপা লাহিড়ীও গ্রামে যেতে চায়। রূপা, মহানগর নারীসংঘের সভাপতি। সারাদিনই নানা মিটিং, মিছিল, সম্মেলনে ব্যস্ত থাকতে হয় তাকে। আজকে রূপারও অফ ডে। আপাতত, কয়েকদিন সংঘের কার্যক্রম স্থগিত। এরকম অবকাশ পাকেচক্রে আসে। রূপার স্বতঃস্ফূর্ত উৎসাহে সমরজিৎও দ্বিরুক্তি করেনা। গল্পের জন্যে ম্যাটেরিয়াল কালেক্ট, সাথে আউটিং... রথ দেখা, কলা বেচা সবই হয়ে যাবে।

নাস্তা শেষে হালকা চিনি দেয়া বাদামী কফিতে কড়া চুমুক দিয়ে সাদা ন্যাপকিনে ঠোট ছুঁইয়ে আলতো মুছে ডাইনিং টেবিল থেকে উঠে পড়ে সমরজিৎ। তেতলায় গিয়ে স্নান করে নিতে হবে। সেসাথে ক্যামেরা, বাইনোকুলার, নোটপ্যাড, ল্যাপটপ...সবকিছু ব্যাগে গুছিয়ে নিতে হবে। যাবার পথে "কাবাব কিং" থেকে লাঞ্চ প্যাকেট নিলে দুপুরের খাবার নিয়েও আর চিন্তা করতে হবেনা।

২.
গাড়ির চাকা সামনে এগোয়। সামাদ গাড়ি চালাচ্ছে। সামাদ, সমরজিৎ এর গাড়ির ড্রাইভার, সামাদের ড্রাইভারি জীবনের তাও প্রায় বছর আটেক হয়ে গেলো। মৃদুতালে রবিঠাকুরের "আমারো পরানো যাহা চায়" বাজছে গাড়ির এমপিথ্রি প্লেয়ারে। সমরজিৎ সাদা ফতুয়া, নীল জিন্স, চামড়ার স্যান্ডেল পরেছে। রূপার নীল-সাদা শাড়ি। ম্যাচিং ব্লাউজ, টিপ, নেইলপলিশের সাথে কানে-গলার অলঙ্কারও নীলবর্ণ।

সমরজিৎ গাড়িতে উঠেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। গতদিনের মেইলগুলো চেক করছে। ব্যস্ত লেখক হওয়ায় সারাক্ষণই প্রায় ব্যস্ত থাকতে হয় তাকে। অনেকেই ভাবেন, লেখকের জীবনই বোধহয় নিশ্ছিদ্র শান্তির। এটা বহুলাংশেই এক ভ্রান্ত ধারণা। অন্তত, সমরজিৎ এর মত বিখ্যাত লেখকদের জন্যে।

সমরজিৎ এর মেইল চেক করা একসময়ে শেষ হয়। এ সময়ের মধ্যে রূপা "উইমেনস ব্লগ" এ শান্তা শফিকের নারীজাগরণ সিরিজের চতু্র্থ প্রবন্ধটা পড়ে ফেলে। এই প্রবন্ধ পড়ে রূপার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। বেশ কয়েকদিন আগে এক পার্টিতে রূপা, শান্তাকে নারীজাগরণের জন্যে যে যে জিনিসগুলো খুবই দরকার তা বুঝিয়েছিলো, সেগুলোই হুবহু প্রবন্ধে উঠিয়ে দিয়েছে শান্তা। শান্তাকে মনে মনে "বীচ" বলে গালি দিয়ে ওঠে রূপা।

গাড়ির চাকা ঢাকার রাস্তা, অলিগলি, পেরোয় দ্রুতবেগে। মাঝে একবার "কাবাব কিং" এর সামনে গাড়ি থামে। খাবার নেয়া হয় একগাদা। গাড়ির ভেতরে এয়ার ফ্রাশনারের সুগন্ধের সাথে যুক্ত হয়ে যায় নতুন এক গন্ধঃ বিরিয়ানি আর গ্রিল চিকেনের গন্ধ।
রাস্তার খানাখন্দে পড়লে গাড়ি ঝাঁকুনি দিয়ে ওঠে, সুগন্ধের তীব্রতাও বেড়ে যায়।

৩.
সমরজিৎ এর মাথায় আজ ঝোঁক চেপেছে। যদ্দুর পর্যন্ত গাড়ি চলবে, তদ্দুরই যেতে চায় সে। মানে, গাড়ি চলার রাস্তা যে সীমানা পর্যন্ত আছে, সে সীমানা পর্যন্ত এগোনোই তার ইচ্ছে। একটা আইডিয়াল গ্রাম খুঁজে পেতে হবে। সমরজিৎ লেখার ব্যাপারে কখনোই একবিন্দু ছাড় দেন না। গ্রামের প্রেক্ষাপটে হাহাকারের, বিষাদের এক উপাখ্যান লিখবেন তিনি। চরিত্র রেডি,প্লট রেডি, লোকেশন ঠিক করবেন আজ। তারপরেই শুরু হবে আরেকটি উপন্যাস লেখা। সে উপন্যাস সফল না ব্যর্থ... সে বিচার অবশ্য পাঠকের হাতে।

বিলাসবহুল জিপগাড়ির চাকা, যে চাকা শহুরে মসৃণ রাস্তায় চলতে অভ্যস্ত, সে চাকা একসময়ে থেমে যায়। সামনে অপ্রশস্ত এক মজাপুকুর। পুকুরের ওপরে পারাপারের জন্যে ছোট্ট এক সরু বাঁশের সাঁকো। মজাপুকুরের চারপাশে ঝোপঝাড়, বনজঙ্গল। এই ভরদুপুরেও ঝিঁঝিঁপোকার ঐক্যজোটের তীব্র ডাক, তাদের সমবেত কোরাস শোনা যাচ্ছে।

সমরজিৎ এখানেই গাড়ি থামাতে বললেন। সমরজিৎ, রূপা, সামাদ নেমে এলো গাড়ি থেকে। বেশ কসরত করেই বাঁশের সাঁকো পার হতে হলো তিনজনকেই। সমরজিৎ এর জন্ম গ্রামে, বহু সাঁকোকে হেলায় পদদলিত করেছেন এক সময়ে, কিন্তু, বহুবছরের অবহেলায়, হেলায় পদদলিত করা অভ্যেসটা ভুলে গেছেন বেমালুম। অনেক কষ্টে, বহুসতর্কতায় পেরোলেন নড়বড়ে সাঁকো। রূপা অনেকটা সমরজিৎ এর কাঁধে চেপেই পার হলো সাঁকো। সামাদের অতটা সমস্যা অবশ্য হলোনা।

সাঁকো পার হলেই নারকেল বাগান। ঝুনো নারকেলে নারকেলে সয়লাব দীর্ঘদেহী বৃক্ষগুলো। নারকেল বাগানের মধ্যদিয়ে পায়ে চলা পথ। সেটা পেরিয়ে এগোলেই কলাবাগান। গাছে গাছে কাঁচা কলার কাদি ঝুলছে। এখনো পাকেনি। মাঝেমধ্যে দমকা হাওয়া বইছে। কলা গাছের পাতার সাথে পাতার সংঘর্ষে এক অপার্থিব সুর, মাথার ওপরে চিলের কর্কশ-তীব্র স্বর, বাতাসের সাথে সাথে নাকে এসে ধাক্কা দিচ্ছে অপরিচিত কোনো ফুলের মৃদু অথচ মিষ্টি গন্ধ... ঝিঁঝিঁর ডাক এখানেও শোনা যাচ্ছে। সমরজিৎ মনে মনে উল্লসিত হলেন। পার্ফেক্ট লোকেশন, পার্ফেক্ট...

৪.
সারাদিন কাটে এই অজ্ঞাতনামা গ্রামে। বিকেলে আবার শহরের দিকে ফেরা। শহরের পাখি, গ্রামে প্রাণ টিকবে কেন? শহুরে পাখি, শহুরে বাহনে উঠে যাত্রা শুরু করে শহরপানে। আস্তে আস্তে ধূলিধূসর পথঘাট, গাছপালা, বাড়িঘর তীব্রবেগে পেছনে ফেলে এগোয় চার চাকার যান্ত্রিক বাহন। অনেকটা বায়োস্কোপের মত যেন সবকিছু। খুব তাড়াতাড়ি দৃশ্যপটের পরিবর্তন হচ্ছে। মাঝে একটা গ্রাম্য হাট পড়ে। সেখানে গাড়িটা সামান্য সময়ের জন্যে থামানো হয়। রূপা গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে দেখছিলো। হঠাৎ দেখলো, রাস্তার এককোণে বসে মধ্যবয়স্ক এক লোক গরম গরম ডালপুরি ভাজছে। সেটা দেখেই গাড়ি থামানো। রূপা যথেষ্ট হেলথ কনশাস। এসব স্ট্রীট ফুড, জাঙ্ক ফুড সে ছুঁয়েও দেখেনা কখনো। কিন্তু, পরিবেশটাই যেন নেশা ধরিয়ে দিচ্ছে। বেলাশেষের চুরি যাওয়া আলোতে কাঁচাপাকা চুলের এক মধ্যবয়স্ক হাসিখুশি লোক গাওয়া ঘি'তে চুবিয়ে গরম তেলে ডালপুরি ভাজছে। তার দোকানের চারপাশে জনতার ভীড়, যেখানে অবশ্য হাটুর উচ্চতার ধূলিমলিন, তেল জবজবে চুল আঁচড়ানো, প্যান্টশার্ট বিহীন অথবা ছেঁড়া প্যান্টশার্টের জনতারই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা। বিকেলের এক চিলতে রোদ এসে ডালপুরি ভাজার কড়াইয়ে আশ্রয় গেড়েছে। এ এক অদ্ভুত দৃশ্য।

রূপা খুব মনোযোগ দিয়ে পুরি খায়। গরম গরম পুরি, সাথে কাঁচা পেঁয়াজ আর কাঁচামরিচ। সমরজিৎও সাধারণত এসব খায়না। তবে, আজ সেও দুয়েকটা পুরি নিমেষেই উধাও করে দেয় উদরের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। নোটবই প্রায় ভরিয়ে ফেলেছে সে স্কেচে, লিখেছেও অনেকগুলো দৃশ্যপট। ক্যামেরায় অনেকগুলো ছবি তুলেও নিয়েছে।

আস্তে আস্তে দিনের আলো ফুরিয়ে আসে। সমরজিৎ সীটে গা এলিয়ে দেন। কেমন যেন ঘুম ঘুম পাচ্ছে। গাড়িতে বিটোভেনের নাইন্থ সিম্ফোনি বাজছে মৃদুলয়ে। রূপা মোবাইলে কোনো আর্টিকেল পড়ছে হয়তো। ঘুম আসছে, তীব্র ঘুম।

ঘুম ভেঙ্গে যায় তীব্র আলোর ঝলকানিতে, বজ্রপাত। হালকা বৃষ্টি নেমেছে কিছুক্ষণ আগে। গাড়ির ছাদে বৃষ্টির আঘাতের শব্দ হচ্ছে। গাড়ির উইন্ডস্ক্রিণ ওয়াইপার চালু করে দিয়েছে সামাদ। গাড়ি চলছে বৃষ্টির প্রাচীর ভেদ করে, হঠাৎ করে কোনোরকম হর্ণ ছাড়াই এক বিপজ্জনক বাঁক থেকে সামনে এসে পড়ে এক ট্রাক। মুখোমুখি সংঘর্ষ, ট্রাকের ভারী দেহ, সাদা জিপকে পাখির পলকা শরীরের মত দুমড়ে মুচড়ে ফেলে চলে যায় দ্রুতবেগে। কী অদ্ভুত! গাড়িতে তখনো বিটোভেনের কোনো সিম্ফোনি বেজে যাচ্ছিলো মৃদুলয়ে, ঢিমেতালে। চোখের পলক ফেলার আগেই সবকিছু কেমন যেন দ্রুত ঘটে যায়।

তারপরেই সব অন্ধকার... সব আঁধারে ঢাকা।

বৃষ্টির বেগ ক্রমশ বাড়ছে। ডানাভাঙা এক বকের মত সফেদ জিপখানি রাস্তার পাশে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে।

৫.
নতুন গাড়ি কিনেছি, অনেকটা সিদ্দিকের জোরাজুরিতেই। সিদ্দিক আমার সাথেই থাকে, কথা একটু বেশি বললেও মন খুব একমুখী, সরলরৈখিক। ভেতরে প্যাঁচালো কোনো ব্যাপার নেই।

সেদিন সকালে ঘরের সামনের অপ্রশস্ত লনে লাগানো গোলাপের গাছ থেকে মরা পাতা ছেঁটে দিচ্ছি, হঠাৎ হন্তদন্ত হয়ে সিদ্দিকের আগমন।

- ভাই, ও ভাই?
- কী?
- ভাই, গাড়ি কিনবেন একটা?
- না।
- ধুর, রিক্সা আর সিএনজিতে আর কত ঘুরবো? আপনার একটা প্রেস্টিজ আছে না? এখন, আপনার একটা সেই লেভেলের গাড়ি দরকার।
- এখান থেকে যা। কানের কাছে ভ্যানভ্যান করিস না। যে চাকরি করি, তার আবার গাড়ি? ঘটি ডোবেনা, নাম তালপুকুর!
- এই দ্যাখেন ভাই। নতুন মডেলের অনেকগুলো গাড়ি আসছে বাজারে। পেপারে দিলো। ৯-১০ লাখের মধ্যেই বড়সড় একটা গাড়ি পাওয়া যাবে। ভাই, একটা কেনেন না...
- তুই গেলি এখান থেকে।

বেশিদিন চুপচাপ থাকতে পারিনি, প্রতিদিন সকালে উঠলেই সিদ্দিকের ঘ্যানঘ্যানানি আরম্ভ হতো। বিরক্ত হয়ে এক বিকেলে সিদ্দিককে নিয়ে গিয়ে কিনে আনতে বাধ্য হলাম চার চাকার এক বাহন। গাড়ি ড্রাইভ করতে আমি আগে থেকেই জানি। ছাত্রজীবনেই শিখে নিয়েছিলাম। ড্রাইভারের ঝক্কিতে তাই আর যেতে হয়নি।

গাড়ি নিয়ে আজ বিকেলে একটু বেরিয়েছি। গাড়িতে মান্না দে'র "পৌষের কাছাকাছি" গানটা বাজাতেই দাত কিড়মিড় করে সিদ্দিক গানের ট্রাক পালটে দিলো। এখন গাড়িতে উচ্চস্বরে বাজছে "ডানাকাটা পরী, আমি ডানাকাটা পরী।" সাথে সিদ্দিকের উপর্যুপরি হাত-পা ছোঁড়াছুড়ি। আমি উদ্বিগ্ন, যেভাবে হাত-পা ছুঁড়ছে, হাত অথবা পায়ের যেকোনো অংশ আমার গায়ে লাগলেই, আমি বোধহয় অজ্ঞান হয়ে যাবো।

ঢাকা- ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে যাচ্ছিলাম। সন্ধ্যা পেরিয়েছে কিছু আগে। বৃষ্টি নেমেছে হুট করে, বেগ বাড়ছে ক্রমশ। সাথে বজ্রপাত, ঝোড়ো বাতাস। হঠাৎ, রাস্তার পাশে সাদা সাদা কিছু একটা দেখলাম।

- সিদ্দিক, রাস্তার সাইডে কিছু একটা পড়ে আছে না?
- বিলবোর্ড-টোর্ড হবে হয়তো। টেনশন নিয়েননা। আপনে চইলা যান, ভাই।
- থাম তুই, এই পাণ্ডববর্জিত এলাকায় বিলবোর্ড আসবে কোত্থেকে! কোনো গাড়ি এক্সিডেন্ট করেছে বলে মনে হচ্ছে।

গাড়ির স্পিড বাড়িয়ে দিলাম। আস্তে আস্তে সাদা বস্তুটা স্পষ্ট হচ্ছে। সাদা একটা জিপ, দোমড়ানো অবস্থায় বিমর্ষ কাগজের নৌকার মত রাস্তার একপাশে পড়ে আছে।

তাড়াতাড়ি গাড়ি থামিয়ে দৌড়ে গেলাম ঐ গাড়িটার কাছে।

৬.
হাসপাতালে বসে আছি। গাড়ি থেকে দুইজনকে অর্ধমৃত অবস্থায় নিয়ে এসেছি এখানে। সমরজিৎ লাহিড়ীর অনেকগুলো বই আমি পড়েছি। তাকে দেখেই চিনতে পেরেছিলাম। গত বইমেলায় সমরজিৎ এর বই "অনাকাঙ্ক্ষিত সময়" কেনার সময়ে সমরজিৎ এর অটোগ্রাফও নিয়েছিলাম। সমরজিৎ, রূপা দুজনেরই নিঃশ্বাস পড়ছিলো ধীরে ধীরে। ড্রাইভার লোকটাকে বাঁচাতে পারিনি, সে মারা গেছে প্রচুর রক্তক্ষরণে। তবে, তাকেও নিয়ে আসা হয়েছে হাসপাতালে। এই দুর্যোগের রাতে কাছেপিঠে কোনো হাসপাতালও ছিলোনা। তাও, সবচেয়ে কম দূরত্বে যে হাসপাতাল ছিলো, সেখানেই চলে এসেছি। হাসপাতালটা অতটা খারাপও না। আধুনিকই বলা চলে।

- ভাই, কফি খাবেন?
- না, তুই খা।
- আমি কফি খাই না। নামের মধ্যেই কফ, কফ একটা বিষয়। আমি চা খাবো। আপনার জন্যে নিয়ে আসি কফি?
- আচ্ছা, নিয়ে আয়।

মাথার শিরা দপদপ করছে, প্রচণ্ড মাথাব্যথা। হাসপাতালে আমি পারতপক্ষে আসিনা। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণের এই চত্বরে এলেই কেমন যেন দমবন্ধ লাগে আমার। ফিনাইল, রক্ত, পুঁজ, ডেটল, বমি... অসহ্য নারকীয় পরিবেশ। হয়তো স্ট্রেচারে করে কাউকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আইসিএইউতে। আবার, একই স্ট্রেচারে করেই হয়তো মুমূর্ষু লোকটি লাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছে পরিবারের কোমল হাতে। কী অদ্ভুত! কী বৈপরীত্য! কোমল-কঠোরের এ এক বিচিত্র সমীকরণ। হাসপাতাল যেন বিচিত্র এক পাণ্ডুলিপি। হাসপাতাল যেন এক অসমাপ্ত আত্মজীবনী।

কফি নিয়ে সিদ্দিক ফিরে এসেছে কিছুক্ষণ আগে। এখন মোবাইলে গেমস খেলছে। এ ছেলে দিন-রাত মিলিয়ে চব্বিশ ঘন্টাই মোবাইলে গেমস খেলতে পারে। আগের মোবাইলে চার্জ বেশি থাকতো না। তাই, ঝামেলায় পড়তো। গত মাসে, আমার সাথে রীতিমত যুদ্ধ করেই আমাকে দিয়ে আরেকটি মোবাইল কিনিয়েছে নিজের জন্যে। এই মোবাইলের চার্জ বেশি, ডিসপ্লেও বড়।

- কী খেলিস রে?
- ভাই, জিটিএ ভাইস সিটি। খেলবেন?

কড়া চোখে তাকাতেই চুপ হয়ে যায় সিদ্দিক। মনোযোগ সাড়ে পাঁচ ইঞ্চির ছোট্ট ডিসপ্লেতে আবদ্ধ। আমার মাথাব্যথা বাড়ছে। গরম ছুরি দিয়ে ঘিলু খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করছে কে যেন। মাথার শিরা-উপশিরায় ছড়িয়ে পড়ছে দাবানল। আগুনে পুড়ে যাচ্ছে সব।

- স্যার, আপনি কী অসুস্থ?

নার্সের ডাকে সম্বিৎ ফিরলো। নার্স উদ্বিগ্নমুখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমি কাষ্ঠহাসিতে মিথ্যে বললাম, "না, ঠিক আছি।"

নার্স জানালো, লেখকের জ্ঞান ফিরেছে। তার অবস্থা কিছুটা স্থির। তবে, লেখক সাহেবের স্ত্রীর জ্ঞান এখনো ফেরেনি। আমি নার্সের পেছনে পেছনে চলে গেলাম সমরজিৎ লাহিড়ীর কেবিনে। অনেকগুলো স্বচ্ছ নল আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছে তাকে। স্যালাইনের ব্যাগ, রক্তের ব্যাগ, মনিটরের বিপ বিপ শব্দ, বেডে সাদা চাদর, মুখে অক্সিজেন মাস্ক...শুয়ে আছেন অনেকগুলো বিখ্যাত বইয়ের সফল লেখক "সমরজিৎ লাহিড়ী। " আমাকে দেখে ধীরে ধীরে কাছে ডাকলেন, গেলাম। পরিচয় দিলাম। আমার পরিচয় জানার ব্যাপারে ওনার কোনো ভ্রুক্ষেপ দেখলাম না। কিছুটা স্বগতোক্তির মতই যেন বলে গেলেনঃ

"এই উপন্যাসটাই বোধহয় আমার জীবনের শেষ উপন্যাস হতে যাচ্ছে। আমার স্ত্রীকে বলবেন, লেখাটা শেষ করতে। রূপাও খুব ভালো লেখে। এই লেখাটা নিয়ে আমার পরিকল্পনা ছিলো অনেক। আমি বোধহয় শেষ করে যেতে পারবোনা। ভেতরের বাতাস ফুরিয়ে আসছে ধীরে ধীরে, যবনিকাপতনের সময় হয়েছে। ওকে বলবেন বইটার নাম হবে কাগজ অথবা সাদা বৃষ্টি। বইটা যেন প্রকাশিত হয়।"

এটুকু বলেই যেন হাঁপ ধরে গেলো সমরজিৎ লাহিড়ীর। জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিলেন একটু। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে তার, বুঝতে পারছি। ভরানদীর জোয়ার-ভাটার মত ওঠানামা করছে বুক। আমি তার নল লাগানো হাতের ওপরে আমার ডানহাতটা অল্প একটু ছুঁইয়ে, তাকে আশ্বস্ত করে চলে এলাম কেবিনের বাইরে।

৭.

কতগুলো জমে যাওয়া ইমেইলের জবাব দিচ্ছিলাম মোবাইলে। রাত দেড়টার মত বাজে। সিদ্দিক কিছুক্ষণ আগে খেয়ে এসেছে হাসপাতালের ক্যান্টিন থেকে। সিদ্দিক বেশিক্ষণ খিদে সহ্য করতে পারেনা। এখন আমার পাশে বেঞ্চে বসে বসে ঢুলছে।

আবার সেই পরিচিত নার্সকে ফিরে আসতে দেখলাম। আস্তে আস্তে বিমর্ষ মুখে জানালেন, লেখকের স্ত্রী রূপা লাহিড়ী মারা গেছেন এইমাত্র। সিদ্দিক তন্দ্রাচ্ছন্ন ছিলো, খেয়াল করেনি নার্সের কথাগুলো।

সিদ্দিককে কিছু বলতে ইচ্ছে করছে না। আমি ওর পাশ থেকে সরে চলে এলাম। এখন হাসপাতালের টাইলসের মেঝে দিয়ে সাবধানে হাঁটছি। খুবই পিচ্ছিল মেঝে, একটু অসাবধানে পা হড়কে যেতে পারে। রূপা লাহিড়ীর রক্তাক্ত মুখখানা চোখের সামনে ভাসছে। যখন জিপগাড়ি থেকে তাকে নামাচ্ছি, তার হাতের পাশে তখন কয়েকটা ডালপুরি ছড়িয়ে আছে, হাতের মুঠোর মধ্যেও আধখাওয়া একটা পুরি।

কানে হেডফোন গুঁজে দিয়েছি, মোবাইলে ফুল ভলিউমে শুনছি "যখন পড়বেনা মোর পায়ের চিহ্ন এ বাটে।" হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গলায় যেন বিষাদের সুর জীবন্ত হয়ে নড়াচড়া করছে। চোখে ভাসছে কতগুলো ছড়িয়ে থাকা ডালপুরি। ডালপুরিগুলো যেন বিদ্রুপ করছে, করুক, বিদ্রুপ করুক।

বাইরে বৃষ্টির বিরাম নেই। জীর্ণশীর্ণ সব ধূলিকণা যেন ভেসে যাবে আজ অবিরল জলস্রোতে, অগভীর জলপথে।

হাঁটতে হাঁটতে চলে গেছিলাম কিছুটা দূরে। দেখলাম, সিদ্দিক দৌড়ে এদিকেই আসছে। কিছুটা বিরক্তই হলাম। এই পিচ্ছিল মেঝে দিয়ে কেউ এরকম জোরে দৌড়ে আসে! ছেলেটার কাণ্ডজ্ঞান কখনোই কী হবেনা?

কাছে আসলে কড়া ধমক দেবো, ভাবছিলাম। সিদ্দিকের কথার তোড়ে থেমে গেলাম।

-ভাই, তাড়াতাড়ি চলেন। ঐ লেখক আপনার সাথে কথা বলতে চাচ্ছে। কুইক।

পিচ্ছিল মেঝে দিয়ে আমি আর সিদ্দিক দৌড়ে যাচ্ছি সমরজিৎ এর কেবিনের দিকে...

৮.
আবার সেই স্বচ্ছ নল, প্লাস্টিকের ব্যাগ, রক্ত, অক্সিজেন মাস্ক, সাদা বিছানার চাদরের রুম।

- যা বলতে বলেছিলাম, রূপাকে বলেছিলেন তো?( উদ্বিগ্ন হয়ে জিজ্ঞেস করেন সমরজিৎ।)
- হ্যাঁ, বলেছি।
- ও ভালো আছে?
- তিনি সুস্থ আছেন। আপনি চিন্তা করবেন না।
( মিথ্যে বলা ছাড়া উপায় ছিলো না আমার।)
- যাক, এবার নিশ্চিন্ত হলাম। (লেখকের বুক থেকে স্বস্তির নিঃশ্বাস বেরিয়ে এলো যেন।)

আমার হাতে নিজের নলযুক্ত হাতটা ছুঁইয়ে আমার দিকে ধীরে ধীরে ফিরলেন সমরজিৎ লাহিড়ী। তাঁর চোখে চিকচিক করছে দু ফোঁটা জল। আমার শৈশব কেটেছে শ্যামানদীতে ডুব আর চিৎ-সাঁতারে। বাড়ির পাশেই ছিলো শ্যামা নদী। দুপুরের প্রখর রোদে চিকচিক করতো শ্যামার স্বচ্ছ জল। সমরজিৎ এর চোখ যেন শ্যামানদী... আমি সেই চোখের মধ্যে নিজের প্রতিকৃতি দেখতে পাচ্ছি। আমি এই চোখের নদীতে ডুবে যাচ্ছি, তল পাচ্ছিনা, অতলে চলে যাচ্ছি।

কতক্ষণ এভাবে তাকিয়ে ছিলাম, জানিনা। লেখক শ্যামানদীর দৃষ্টি নিয়ে একভাবে আমার দিকে তাকিয়েই আছেন। চোখে পলক পড়ছেনা। বিস্মিত আমি ডাক্তারের দিকে তাকালাম। ডাক্তার এসে লেখকের দুচোখ বুজিয়ে দিলেন। ধীরে ধীরে সমরজিৎ লাহিড়ীর পুরো দেহ ঢেকে গেলো সাদা চাদরের আড়ালে।

সিদ্দিককে নিয়ে খুব দ্রুত চলে আসছি হাসপাতালের গণ্ডির বাইরে। হাসপাতাল যেন তার কুৎসিত, নগ্ন রূপ দেখিয়ে হা হা করে গিলে ধরতে চাইছে। নীচে অনেকগুলো টিভি চ্যানেলের গাড়ি। লাইভ টেলিকাস্ট শুরু হয়ে গেছে। সমরজিৎ লাহিড়ী এদেশের বিখ্যাত লেখক। তার দুর্ঘটনার খবর জেনে গেছে গনমাধ্যম। তাঁর ভক্তদেরও ঢল নেমেছে হাসপাতাল চত্বরে। সবাই উদ্বিগ্ন। সবাই চিন্তিত। বাইরে বহুমানুষের ভীড়।

বাইরে বৃষ্টির বিরাম নেই। বৃষ্টিতে ঝাপসা চারপাশ। আচ্ছা, এটাকেই কী সাদা বৃষ্টি বলে? আমার ভীষণ শীত করছে। মাথাব্যথা নেই, মাথাটা কেমন ভারশূণ্য মনে হচ্ছে। টলতে টলতে এগোচ্ছি আমি, সিদ্দিককে সাথে নিয়ে। ভেসে যাচ্ছে সব, ভেসে যাচ্ছি আমি, সাদা বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে অজস্র কাগজ। "কাগজ অথবা সাদা বৃষ্টি"র পাণ্ডুলিপিও কী ভেসে যাচ্ছে?

পরিশিষ্টঃ

ঢাকার অন্যতম ব্যস্ত এলাকা সায়দাবাদ। সায়দাবাদের জনপথ মোড় থেকে হাতের ডান দিকের রাস্তা ধরে সাতাশ গজ এগোলে রেদোয়ানের চা'র দোকান। সেই দোকানের পেছনে জোড়া নারকেল গাছের ঠিক মাঝখান দিয়ে এক সরু রাস্তা, সে রাস্তা দিয়ে হেঁটে মিনিটখানেক গেলে পড়বে ছোট্ট এক গলি। সেই গলির একেবারে শেষ মাথায় কাঠাল গাছটার নীচে এক ছোট্ট খুপড়ি। কেরামতের দোকান। সে দোকানে বাংলা, ইংলিশ দুটোই পাওয়া যায়...মদ।

দোকানের ভেতরে কাঠের টুলে বসে মদ গিলছে মতিন, ট্রাক ড্রাইভার। সন্ধ্যার দিকে একটা সাদা জিপগাড়িকে চাপা দিয়ে দিয়েছে ভুল করে। বরাতজোরে পালিয়ে এসেছে। সেই খুশিতেই আজ ইংলিশ মদ গিলছে দোকানে বসে বসে। সাধারণত, মদের ব্যাপারে দেশপ্রেমিক সে। তবে, আজ ব্যাপারটা ভিন্ন। দোকানে ছোট্ট একটা টিভি চলছে। সে টিভিতে প্রখ্যাত লেখক সমরজিৎ লাহিড়ীর মৃত্যুর খবর দেখানো হচ্ছে। ইনসেটে তিনটি ছবি ভেসে উঠেছে। এদের মধ্যে একটা ছবি কেন যেন মতিনের খুব পরিচিত লাগছে।

মাতাল চোখে, শূন্য দৃষ্টিতে দেখতে থাকে সে ছবিটি। কেমন যেন কাছে আবার দূরে সরে যাচ্ছে চেহারাটা। চোখ কচলে ভালো করে দেখে একবার। এবার ছবিটা বেশ পরিষ্কার হয়, মতিনের গলা ভেদ করে একটা চাপা আর্তনাদ বেরিয়ে আসে। হাত থেকে বোতলটা ঠুক করে মেঝেতে আছড়ে পড়ে। বোতল থেকে দ্রুতবেগে বেরিয়ে ইংলিশ মদ ধুলোমাখা মেঝেতে মিশে যেতে থাকে।

সন্ধ্যায় যে গাড়িটিকে মতিন চাপা দিয়েছিলো, সে গাড়ির ড্রাইভার তার বাবা। সামাদের একমাত্র ছেলে মতিন। ইনসেটে সামাদের ছবি।

কোথায় যেন বাজ পড়লো ভীষণ শব্দে। আকাশ অন্ধকার, দোয়াতের কালিগোলা অন্ধকার। বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে বিশ্বচরাচর। আজ রাতে বৃষ্টি বোধহয় আর থামবেনা।









মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৪৫

জেন রসি বলেছেন: গল্পটা পড়ার সময় কেন যেন বারবার তারেক মাসুদের কথা মনে পড়ছিল। আমাদের দেশে প্রতিদিনই অনেক মানুষ রোড এক্সিডেন্টে মারা যায়। এবং আমার মনে হচ্ছে এ সমস্যা আরো প্রকট হচ্ছে।

গল্প ভালো লেগেছে।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৪

কূপমন্ডূক বলেছেন: ধন্যবাদ। তারেক মাসুদের কথাটা মাথায় রেখেই এ গল্প এগিয়েছে।

২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৩১

কালীদাস বলেছেন: জেন রসির সাথে সহমত, আমারও তারেক মাসুদের কথা মনে পড়ছিল পুরোটা গল্প শেষ করার পর। গল্পটা ভাল হয়েছে।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৫

কূপমন্ডূক বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ১৭ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৭

সুমন কর বলেছেন: অনেক দিন পর ব্লগে, চমৎকার একটি গল্প পড়লাম। বেশ সাবলীল বর্ণনা। গল্পে ভালো লাগা।

২৮ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:১৯

কূপমন্ডূক বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.