নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খাপ খোলা কলমে শাণিত হোক মঞ্চ...

কূপমন্ডূক

জানা ভালো, না জানা খারাপ, ভুল জানা অপরাধ

কূপমন্ডূক › বিস্তারিত পোস্টঃ

আন্তর্জাতিক মাধ্যমের এ কেমন চাল...

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩১

বিশ্ব মিডিয়া হুট করেই কেন যেন "কাশেম বিন আবু বকর" নামের এক অলেখককে নিয়ে উঠেপড়ে লেগেছে। বাংলাদেশের সেরা সাহিত্যিক হিশেবে তাকে প্রমাণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমি জানি না, এর পেছনে উদ্দেশ্য কী? তবে, বিষয়টা উদ্বেগজনক।

বেশ কিছুদিন আগে হুট করে জনপ্রিয় হয়ে গেছিলেন "হিরো আলম।" ডিশ লাইনের ব্যবসা করা এ লোকটা কিছু ভিডিও তৈরি করে বাজারে ছেড়েছিলেন। ভিডিওগুলো ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে, তিনি জনপ্রিয় হয়েছেন। ফেসবুকের আমরাই তাকে জনপ্রিয় করেছি। লোকজন বিদ্রুপ করেছে তাকে নিয়ে, কেউ পক্ষে, কেউ বিপক্ষে গিয়েছে। আখেরে লাভ হিরো আলমেরই হয়েছে। বাংলাদেশের "চেনামুখ" হয়ে গেছেন তিনি( কোনো একটা কোমল পানীয়ের বিজ্ঞাপনেও সম্প্রতি দেখলাম তাকে)। এর কিছুদিন পরেই সমস্যা শুরু হলো। ভারতীয় কয়েকটা "ট্রল পেজ" তাকে বাংলাদেশি স্টাইল আইকন, বাংলাদেশি ক্রেজ, বাংলাদেশি ড্যাশিং হিরো..." ধরণের তকমা দিয়ে পরোক্ষভাবে বাংলাদেশকেই তীব্র অপমান করে গেলো। অথচ, আমাদেরও যে হুমায়ূন ফরিদী, বুলবুল আহমেদ, আনোয়ার হোসেন ছিলো, রাজ্জাক, শহীদুজ্জামান সেলিম, চঞ্চল চৌধুরী আছে... মিডিয়া জানলো না। আমাদের পরিচয় হয়ে গেলো আমরা "হিরো আলম" এর দেশের লোক। ইমপ্যাক্ট টা বুঝতে পারছেন?

এবার শুরু হয়েছে কাশেম বিন আবু বকর কে নিয়ে সার্কাস। ১৯৭৮ সালে এই লোক "ফুটন্ত গোলাপ" নামের এক বই(!) লিখেছিলেন, সে বই নাকি এখন পর্যন্ত কয়েক লক্ষ কপি বিক্রি হয়েছে। সম্ভবত, বইটার ত্রিশতম মুদ্রণ চলছে এখন। আমি বই-টইয়ের ব্যাপারে আগুনের মত, সর্বভুক। "ফুটন্ত গোলাপ" এর পিডিএফ পড়লাম। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি কপি বিক্রি হওয়া বই, আগ্রহ নিয়েই পড়া শুরু করেছিলাম। কয়েক পৃষ্ঠা পড়ার পরে বুঝলাম, এ বই পড়া সময়ের নিদারুণ অপচয়, মস্তিষ্কের অপরিমেয় ক্ষতি। "ফুটন্ত গোলাপ" এত অজস্র কপি বিক্রি হয়েছে কেন, আমি জানি না। তবে, এ বইয়ের মধ্যে সাহিত্যের "স"ও খুঁজে পাইনি। এ বইটি ছাড়াও তিনি আরো অজস্র বই লিখেছেন, তবে সেগুলোর কোনোটিই আর পড়ার সাহস আমার হয়নি।

সেই লোককে যখন আন্তর্জাতিকভাবে পাদপ্রদীপের তলে নিয়ে আসা হয় "বাংলাদেশের জনপ্রিয় লেখক" হিশেবে, আমার আক্ষেপ হয়। আমাদের গল্পের জাদুকর "হুমায়ূন আহমেদ" এর চেয়ে জনপ্রিয় লেখক বাংলাদেশে আর কেউ আছে বলে তো জানতাম না! বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক কে? এ প্রশ্নে "হুমায়ূন আহমেদ" ছাড়া অন্য কোনো উত্তর কীভাবে আসে, বুঝতে পারছিনা। হুমায়ূন আহমেদ কতটা জনপ্রিয়, সে প্রমাণ বইমেলায় "অনন্যা"র স্টল সামনে দিয়ে গেলেই বোঝা যায়। মৃত্যুর এত বছর পরেও শুধুমাত্র তাঁর বই কিনতে কত মানুষের ঢল নামে স্টলের সামনে, সে শুধু যারা দেখেছে, তারাই জানে।

হুমায়ূন আহমেদকে যদি বাদও দিই, জহির রায়হান, সৈয়দ শামসুল হক, আল মাহমুদ, শামসুর রাহমান, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, শহীদুল্লা কায়সার, শহীদুল জহির হুমায়ূন আহমেদ, হুমায়ুন আজাদ, শাহাদুজ্জামান... এদের কীভাবে বাদ দেবো? এত প্রতিভাবান, জনপ্রিয় সাহিত্যিক এ দেশে থাকতে "বাংলাদেশের জনপ্রিয় সাহিত্যিক" হিশেবে পরিচিত হচ্ছেন এমন একজন, যার বই, এমনকী যার নামও বাংলাদেশের অধিকাংশ সচেতন পাঠক জানেন না। কী বিচিত্র, তাই না?

আমি বই কিনতে মাঝেমধ্যে অনলাইন বুক শপগুলোতে ঢুঁ মারি। ঢাকায় থাকতে নীলক্ষেত যেতাম মাসে কয়েকবার। চট্টগ্রামে সে সুযোগ নেই। তাই, দিনশেষে অনলাইন শপগুলোই ভরসা। সেখানেও আজকাল দেখি, কাশেম সাহেবের আধিপত্য। তার বইয়ের ছবিকে চটকদার ভঙ্গিতে উপস্থাপন করে গছিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলে প্রতিদিনই। অনলাইন বা অফলাইন বুকশপগুলোও কী কাশেম বিন আবু বকরকে জনপ্রিয় করার জন্যে দায়ী? এখানেও প্রশ্ন।

এটা কী বাংলাদেশকে হেয় করার আরেকটা দাবার চাল, যেটা মিডিয়া করেছিলো "হিরো আলম" এর সময়ে? আমি সঠিক জানিনা। দেশে এত এত অসাধারণ লেখক থাকতে "কাশেম বিন আবুবকর" এর মত একজন কেন ফুটেজ পাচ্ছে, বুঝতে পারছিনা।

তবে, আমাদেরও কী দোষ নেই? যেসময়ে আমাদের ব্যস্ত থাকার কথা ছিলো হুমায়ূন আহমেদের শ্রেষ্ঠ লেখাগুলো নিয়ে, আলোচনা-সমালোচনা করে যেগুলোকে আমরাই তুলে ধরতে পারতাম গনমাধ্যমে, সে সময়ে আমরা ব্যস্ত ছিলাম "হুমায়ূন আহমেদ কেন তাঁর মেয়ের বান্ধবীকে বিয়ে করলেন" তা নিয়ে, এখনো আছি। রসালো গল্প, রসালো কাজকর্মে আমরা বরাবরই আগ্রহী। আমাদের রসালো লালায় হয়তো দমে যান কোনো প্রতিভাবান লেখক, মাঝখান থেকে "বাংলাদেশের সেরা সাহিত্যিক" হিশেবে উঠে আসেন কাশেম বিন আবুবকরের মত কেউ কেউ। আমরা, পাঠকেরা, আমাদের দায়িত্ব কী সঠিকভাবে পালন করেছি এতদিন ধরে, প্রশ্ন থেকে যায়। আমরা লেখককে তাঁর লেখা দিয়ে বিচার করিনা, আমরা বিচার করি, তিনি কয়টা বিয়ে করেছেন তা দিয়ে। আমরা ক্রিকেট খেলোয়াড়কে খেলা দিয়ে বিচার করিনা, বিচার করি, তার কয়টা গার্লফ্রেন্ড আর কয়টা সীম আছে, তা দিয়ে। আমরা জাতি হিসেবে এমন কেন?

আমাদের ভুলের মাশুল হিশেবেই কী বারবার লাইমলাইটে চলে আসে "হিরো আলম" বা "কাশেম বিন আবু বকর" এর মত কেউ কেউ? প্রশ্ন থেকে যায়।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



কোন গোস্ঠী লবিং করছে, টাকা খরচ করছে।

২| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪০

সালমান মাহফুজ বলেছেন: এসব হুট করে প্রচার পাওয়া ব্যক্তিবর্গ ; আবার হুট করেই ঝরে যায় ।

আমরা হুযুগে তো ! তাই ভালোমন্দ চেকে দেখার আগেই মাতামাতি শুরু কইরা দেই ।

টেনশনের কারণ নাই ।

৩| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


বাংগালী সাহিত্যিকদের হেয় করার প্রচেস্টা চালাচ্ছে কিছু লোক লবিং করে।

৪| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৭

রিফাত হোসেন বলেছেন: চাঁদগাজী বলেছেন:



কোন গোস্ঠী লবিং করছে, টাকা খরচ করছে। --- আমারও তাই মনে হচ্ছে।

তার সাহিত্য বিকাশ নিয়ে আমার তেমন মাথা ব্যথা নাই, ব্যাপারটা হল মানসম্মত কিনা। কারণ ব্যাপারটা বিশ্বের মিডিয়ায় অবস্থান করেছে। সবার কাছে ভাল লাগা, মান যাচাই এক হয় না তবুও মন হচ্ছে কোন একটি শক্তি প্রচারণায় সহযোগীতা করছে।

৫| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৩৪

আলপনা তালুকদার বলেছেন: প্রচারটা সত্যি খুব জরুরী। নাহলে যত ভাল মানের লেখকই হোননা কেন, তাঁর যোগ্য সম্মান তিনি পাবেননা। আর মিডিয়া ভালকে খারাপ বা খারাপকে ভাল - দুটোই বানাতে পারে।

৬| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:২০

মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: ফেসবুক সয়লাব করে ফেলেছে সবাই এই নিউজ দিয়ে। আখেরে তাদেরই লাভ হচ্ছে আমাদের শেয়ারে যারা এইসব বদমাশি করছে। আমরা আবারো হুজুগে মেতে উঠছি নিজের অজান্তেই।

৭| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:৩৪

হাফিজ রাহমান বলেছেন: কূপমণ্ডূক ভাই ! এক পশলা ধন্যবাদ আপনাকে নতুন একটি বিষয়ে ধারনা দেবার জন্যে। ভাই বিশ্বকবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল বিজয় নিয়েও কথা উঠেছিল। তাঁর গীতাঞ্জলি নিয়েও কথা উঠেছিল। এ কথা উঠা বা প্রশ্ন উঠা থেকে বাদ যাবে না অনেক কিছুই। কোনো বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হলেই তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায় না। আপনি কাসেম বিন আবুবাকার (আপনি লিখেছেন কাশেম বিন আবু বকর। লেখকের দেয়া নামটিই লেখা দরকার ছিল। অনেক ক্ষেত্রে লেখকের নামের লেখ্যরীতিতে পরিবর্তন আনা হলে অনেক লেখকই অপমানবোধ করেন এবং বিরাগভাজন হন। তাই এটা উচিৎ হয় নি।) সম্বন্ধে প্রশ্ন তুলেছেন, তাকে কেন বিশ্ব মিডিয়াতে তুলে আনা হলো ? দেখুন কাসেম বিন আবুবাকার একটি আদর্শিক দর্শনকে সামনে রেখে উপন্যাস লেখেন। এ দর্শনটা বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ জন-মানুষের সেন্টিমেন্টের সাথে মিলে যায়। তাই বাংলা আপামর জনতা লেখকের রচনাকে লুফে নিয়েছে। লেখকের ঔপন্যাসিক উপস্থাপনায় পাঠকের হৃদয় হরণ করার একটা শক্তিমত্তা রয়েছে। দর্শনগত ও উপস্থাপনাগত এ শক্তিমত্তার কারণেই তিনি বিশ্ব মিডিয়াতে জায়গা করে নিতে পেরেছেন। এক্ষেত্রে লবিং টবিং এর প্রসঙ্গ তোলা নিতান্তই প্রান্তিকতার পরিচয়ক। একজন নিরক্ষর ব্যক্তিকে যদি বিশেষ কোনো বৈশিষ্ট্যের কারণে বাংলার মানুষ প্রধানমন্ত্রীর ময়ূর সিংহাসনে বিসয়ে দেয় তাহলেও তিনি বিশ্ব মিডিয়াতে উঠে আসবেন। এক্ষেত্রে বিশ্ব মিডিয়াকে দোষারোপ করা বোকামো হয়ে যাবে। আর কাসেম বিন আবুবাকার এর রচনায় সাহিত্যের সও নেই- আপনার এ একরৈখিক কথটির সাথেও সহমত পোষণ করা যায় না। কারণ ফুলের সৌরভে যেমন বৈচিত্র্য আছে তেমন সাহিত্যের রসবোধ ও স্বাদেও বৈচিত্র্য আছে। হুমায়ূন আহমেদ আকাশচুম্বী পাঠক প্রিয়তা পেয়েছেন একমাত্র তাঁর সাহিত্য শিল্পের কারণে নয়; তাঁর লেখার সারল্য রীতিটাই মানুষকে মুগ্ধ করেছে। তাঁর রচনায় যে উচ্চাঙ্গের সাহিত্য থৈথৈ করছে ব্যাপারটা এরকম নয়। অনেক উঁচু মর্গের সাহিত্যিক রয়েছন যারা পাঠককে এতটা বিপুলভাবে টানতে পারেন নি। তাই বলে কি তাঁরা সাহিত্যিকদের শ্রেণী থেকে বেরিয়ে যাবেন ? বাংলাদেরশের মিডিয়াতে কি কম বেশ কাসেম বিন আবুবাকারকে নিয়ে মাতামাতি হয় নি ? অমর একুশে বই মেলায় বাংলা একাডেমির মঞ্চ থেকে কাসেম বিন আবুবাকার এর উপন্যাসের advertiseও তো আমরা শুনেছি। তো এমন একজন অসাহিত্যককে কেন তাঁরা সাহিত্যিকের মর্যাদা দিতে গেলেন ? প্রশ্নটা বিশ্ব মিডিয়াকে না করে বাংলা মিডিয়া বা বাংলা একাডেমিকে করা প্রয়োজন ছিল। এবার কালের কণ্ঠের একটি ফিচার লক্ষ্য করা যাক_
আলোচনায় কাসেম বিন আবুবাকার
কালের কণ্ঠ অনলাইন ২৬ এপ্রিল, ২০১৭ ১৮:০০

আলোচনায় কাসেম বিন আবুবাকার
শহুরে অনেক মানুষই কাসেম বিন আবুবাকার নামে সাহিত্যিককে চেনেন না। যদিও দেশের এ বিশিষ্ট সাহিত্যিকের অসংখ্য বই বিক্রি হয় বড় লাইব্রেরির পাশাপাশি রেল স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড ও ফুটপাথের হকারদের হাতে হাতে। আর এ কারণে তার বইয়ের পাঠক ছড়িয়ে রয়েছে সারা দেশে। মূলত সারা দেশের সাধারণ মানুষই তার বইয়ের পাঠক। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম এএফপিও কাসেম বিন আবুবাকারকে নিয়ে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেছে।
কাসেম বিন আবুবাকার লেখালেখি শুরু করেন ৭০ দশকে। তিনি জানান, সে সময় বইয়ের দোকানগুলোতে যেসব বই পাওয়া যায় তার সবই ছিল আধুনিক জীবনযাপনকারী ব্যক্তিদের কথা। এ সময়ে তিনি গ্রামের ধর্মভীরু ও সাধারণ মানুষের জন্য লেখা ধর্ম অনুপ্রাণিত উপন্যাস লেখা শুরু করেন। তার বইতে উঠে আসে ইসলাম ধর্মের নানা মূল্যবোধ ও বিশ্বাস। বাংলাদেশের ইসলাম ধর্মাবলম্বী বহু মানুষেরাই তার বই যেন লুফে নেয়। তার চরিত্রেরা ধর্মের কথা বলে। নারীরা বোরখা পরে। পালন করে বহু ধর্মীয় আচার-আচরণ।
তবে ধর্ম অনুপ্রাণিত এ ধরনের উপন্যাস প্রকাশ করা সহজ ছিল না। কাসেম বিন আবুবাকার জানান, বই প্রকাশ করতে গিয়ে প্রথমেই হোচট খেতে হয় তাকে। তার উপন্যাস যেন ‘মোল্লাদের উপন্যাস’। আর এ কারণে প্রথম যখন তিনি বই প্রকাশ করতে যান তখন অনেকেই বলেছিলেন, এ বই বিক্রি হবে না। তবে শেষ পর্যন্ত যখন তার বই প্রকাশিত হয় তখন সবাই নতুন করে যেন তার দিকে ফিরে তাকায়। এরপর বই প্রকাশ করে যথেষ্ট অর্থও কামাতে থাকেন তিনি।
বাস কিংবা ট্রেনযাত্রী, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্র, গ্রামের সাধারণ মানুষ ও তরুণ-তরুণী সবাই যেন কাসেম বিন আবুবাকারের বই পড়তে থাকে। তার কোনো কোনো বই ৩০বার পর্যন্ত পুনঃপ্রকাশিত হয়েছে বলে জানা যায়।
কাসেম বিন আবুবাকারের উপন্যাসের বিভিন্ন চরিত্র নিজেদের ধর্মীয় পরিচয় অধিকাংশ সময়েই মনে রাখে। আর তাদের আচার-আচরণেও প্রায়ই উঠে আসে সে পরিচয়। এ বিষয়টিকে তিনি স্বীকার করেছেন তার প্রথম বই ফুটন্ত গোলাপের ভূমিকায়। তিনি সেখানে লিখেছেন, ‘বর্তমান সমাজের চরম অবনতি উপলব্ধি করে এই কাহিনী লেখার প্রেরণা পেয়েছি। আমার মনে হয়েছে এভঅবে যদি দিন দিন আমার প্রগতি ও নারী স্বাধীনতার নাম দিয়ে চলতে থাকি, তা হলে ইসলাম থেকে সমাজের মানুষ বহুদূরে চলে যাবে। শুধু মুখে ,কেতাবে ও মুষ্টিমেয় লোকের কাছে ছাড়া অন্য কোথাও ইসলামের নাম গন্ধ থাকবে না। ’
তিনি লিখেছেন, ‘যদি এই বাস্তবধর্মী উপন্যাসটি পড়ে বর্তমান যুব সমাজ সামান্যতমও জ্ঞান লাভ করে সেইমতো চলার প্রেরণা পায়, তবে নিজেকে ধন্য মনে করব। ’
অনলাইনে কাসেম বিন আবুবাকারের শতাধিক বই রয়েছে বিক্রির জন্য। এগুলোর মধ্যে ফুটন্ত গোলাপ, বিদায় বেলায়, প্রেম যেন এক সোনার হরিণ, মেঘলা আকাশ, বিকেলে ভোরের ফুল, জানি তুমি আসবে, স্বপ্নে দেখা সেই মেয়েটি, তোমার প্রত্যাশায়, স্বর্ণ তুমি, শরিফা, সংসার সুখের হয় রমনীর গুণি, ফুলের কাঁটা, শরীফা, শ্রাবণী, বহুরূপিনী, মনের মতো মন, কালো মেয়ে, অবশেষে মিলন, রাগ-অনুরাগ, কেউ ভোলে কেউ ভোলে না, ধনীর দুলালী, তোমারই জন্য, হৃদয়ে আঁকা ছবি, কে ডাকে তোমায়, আগুনের মানব, বিদেশী মেম, ভালোবাসি তোমাকেই, বাসর রাত, সংসার, আমিও মানুষ, সে কোন বনের হরিণ, যেখানে কেউ নেই, প্রেমের পরশ, অমর প্রেম, ফেরারি প্রেমিকা, কামিনী কাঞ্চন, পলাতকা, প্রেম, বড় কে, ভালোবাসার নিমন্ত্রণ, প্রেম ও স্বপ্ন, জোনাকির আলো, ক্ষমা, চাওয়া পাওয়া, একদিন অপরাহ্নে, শেষ উপহার, একটি ভ্রমর পাঁচটি ফুল উল্লেখযোগ্য।
১৯৮৬ সালে কাসেম বিন আবুবাকারের প্রথম উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়। এরপর তার বহু বই প্রকাশিত হয়েছে। বেশ কিছু বই বহুবার পুনঃপ্রকাশিত হয়েছে। তার এমন এক পাঠকশ্রেণী গড়ে উঠেছে, যাদের অস্তিত্ব অন্য কেউ টের পাননি।

৮| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৫:৫৫

রডারিক বলেছেন: আমি হাফিজ ভাইয়ের সাথে একমত পোষণ করছি। একটা সময়ে আমাদের কণ্ঠ শিল্পী মমতাজ কেও কেউ জানতোনা। মনে আছে হানিফ সংকেত যখন তাকে ইত্যাদি অনুষ্ঠানে নিয়ে আসেন তখন তার ৫০০ গানের অডিও ক্যাসেট বাজারে প্রকাশিত হয়েছিলো। আমার মত অনেকেই তখন প্রথম জানতে পেরেছিল মমতাজ নামের একজন শিল্পীকে।
কাসেম বিন আবু বাকারের বই আমিও পড়েছি অনেক আগে। একেবারে ফেলে দেবার মত নয়। তার লেখায় ইসলামি মূল্যবোধ কিছুটা প্রকাশ পায়। যেটা সাধারন মানুষ পছন্দ করে। এখানেই অনেকের আপত্তি। তিনি যদি আধুনিক লেখকের মত রগরগে বর্ণনা দিয়ে কিছু লিখতেন তাহলে হয়তো অনেকের পছন্দের লেখক হতে পারতেন।

৯| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পোষ্ট এবং মন্তব্য গুলো থেকে কিছু জানলাম। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.