![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সবসময়ই যেকোনো ধরণের আত্মহত্যার বিপক্ষে। "আত্মহত্যা কোনো সমাধান না" নিয়মিতই বলি, এ লাইনটা নিয়মিত পড়ি বিভিন্ন বইয়েও। কেউ একজন আত্মহত্যা করলে চারপাশের মানুষের খুব বেশি ক্ষতিবৃদ্ধি হয়না। এমনকী, পরিবারের লোকজনও কেঁদেকেটে কয়েকদিন পরে ধাতস্থ হয়ে যায়। তবুও, মোটাদাগে আত্মহত্যা তো অনেকসময় অনেককিছুর খুব সোজাসাপ্টা সমাধানও হয়ে যায়, হয় না?
গত শনিবার গাজীপুরের শ্রীপুরে ট্রেনের নীচে বাবা আর মেয়ে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলো। দশ বছরের মেয়েটি দুই মাস আগে ধর্ষিত হয়েছিলো স্থানীয় এক যুবকের হাতে। বাবা- মা বিচার চেয়েছিলো। ইউপি চেয়ারম্যান বিচার করেননি। ১০০০ টাকার বিনিময়ে মিটমাট করে দিয়েছিলেন! বিচার হলো না। বাবা, মেয়েকে নিয়ে শনিবার সকালে চলে গেলেন রেলস্টেশনে। ট্রেন এলো, মেয়েকে ছুঁড়ে মারলেন ট্রেনের নীচে, নিজেও ঝাঁপ দিলেন। ট্রেন চলে গেলো, কাটা পড়লো দুটি লাশ। অনেককিছুর সোজাসাপ্টা সমাধান হয়ে গেলো। মেয়েটিকে আর প্রতিদিন "ধর্ষনের স্মৃতি" নিয়ে বাঁচতে হবে না। স্কুলে গেলে, কলেজে গেলে চারপাশের সবার "বিস্মিত দৃষ্টি"র সামনে অপদস্থ হতে হবেনা। মেয়ের বাবাকেও ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্যে প্রশাসনের দামী দামী দরজার সামনে ধরনা দিতে হবেনা প্রতিদিন। "আত্মহত্যা কোনো সমাধান না" এ বুলি তো কপচাচ্ছি প্রতিদিন, আসলে সমাধান কী? সমাধান ঠিক কোথায়? আমি দ্বিধাগ্রস্ত। "দ্য শশাঙ্ক রিডেম্পশন" সিনেমার একটা ডায়লগ ভালো লেগেছিলো "Every man has a breaking point." একটা সীমারেখা বোধহয় থেকেই যায়, যে সীমারেখা পেরোলে বাবা, মেয়ের অপমান সইতে না পেরে মেয়েকে নিয়ে চলে যান পৃথিবী ছেড়েই। দশ বছরের মেয়ের জীবনরেখা ফুরিয়ে যায় দশ বছরে পেরোনোর আগেই। যখন আত্মহত্যাই চূড়ান্ত সমাধান হয়ে দাঁড়ায়। ঠিক কতটুকু যন্ত্রণায় আত্মহত্যা "চূড়ান্ত সমাধান" হয়ে যেতে পারে, বোঝা হয়তো অতটা সহজ না। এ সমীকরণ বড্ড গোলমেলে।
ফেসবুক/ব্লগ খুব ঠুনকো একটা জায়গা, সস্তা একটা মাধ্যম। আমার লেখায় কারো কিছুই আসবে, যাবে না। ঐ ধর্ষকেরও কিছুই হবে না, দিব্যি ঘুরে বেড়াবে "আইন" কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে। স্বামী, মেয়ে হারিয়ে যে মহিলা বেঁচে রইলেন, তার ক্ষতেও প্রলেপ পড়বেনা। প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে লিখছি কেন? আসলে, লিখতাম না। শনিবার, রবিবার না লিখেই ছিলাম। আজকে ভাবলাম, যদিও কিছু হবে না, তবু অন্তত এক জায়গায় লিখি, একটু প্রতিবাদ নাহয় করিই। উটপাখির মত বালুর স্তুপে মুখ গুঁজে তো অনেকদিন থেকেই আছি। অন্তত, একবার হলেও প্রতিবাদ করি। আমরা যদি নিজ নিজ জায়গা থেকে একটুও ঘুরে দাঁড়াই, প্রতিবাদ করি, তাহলে আজ না হোক, কাল না হোক, প্রশাসনের টনক একদিন তো নড়বেই। আমরা সবাই মিলেই তো দেশ। ফেসবুকে/ব্লগে লিখে কিছু হবে না, এই ভেবে যদি না লিখে বসে থাকি, কোনো লাভ হবে বলে মনে হয় না।
উত্তর চাইবো কোথায়, বুঝতে পারিনা। এ দেশে পাঁচ বছরের মেয়ে ধর্ষিত হয় পাশের বাসার মধ্যবয়স্ক লোকটির হাতে। দশ বছরের মেয়েটি ধর্ষিত হয়, এলাকার বখাটে ছেলেটির হাতে। বিচার হয় না। আইন, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার... অনেকদিন আগেই আটকে গেছে বইয়ের পৃষ্ঠায়, সিনেমার দৃশ্যে।
কিছুদিন আগে কোরিয়ান একটা সিনেমা দেখেছিলাম, "Silenced." সত্যঘটনা অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্রটিতে "জাস্টিস" শব্দটির ভিন্ন মানে খুঁজে পেয়েছিলাম। খুবই রূঢ় এক বাস্তবতার সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন সিনেমার পরিচালক। আগ্রহীরা দেখতে পারেন। "Silenced" আপনাকে অনেক দিক থেকেই ভাবাবে।
"বাহুবলি-২" তে কাটাপ্পা কেন বাহুবলিকে মেরেছিলো, সেটা জানার পরে, নোয়াখালীকে "বিভাগ" চাইবার পরে, আইপিএলের সাজানো নাটক দেখার পরেও যদি আপনার হাতে খানিকটা সময় থেকে থাকে, তাহলে আসুন, সবাই মিলে নিজের জায়গা থেকে একটু হলেও প্রতিবাদ করি আমরা। একটু প্রতিবাদ তো করা উচিতও। প্রতিবেশি এক দেশকে প্রতিদিন "ধর্ষনে ১ নম্বর দেশ" বলতে বলতে মুখের ফেনা তুলে ফেলা আমরা যে আস্তে আস্তে সে দেশকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছি, কেউ সেটা খেয়াল করেছেন?
তবুও স্বপ্ন দেখি, একদিন পূজা, খাদিজা, আয়েশার মত কাউকে আর অসময়ে ভুল খবরের শিরোনাম হতে হবে না। বাবা, মেয়েকে হাত ধরে নিয়ে আসবে রেলস্টেশনে, ট্রেন দেখানোর জন্যে, আত্মহত্যার জন্যে না। বাবার হাতের কড়ে আঙুল শক্ত মুঠোতে ধরে রেখে ছোট্ট মেয়ে চোখ রাখবে স্টেশনের ধাতব দুই পাতের মাঝখানের সাদা, চকচকে পাথরগুলোর ওপরে, বাবা শোনাবে রূপকথার গল্প। বাবা আর মেয়ে হেঁটে যাবে কুয়াশা মাখা রেললাইন ধরে। সে দেশে মানুষ শ্বাস নেবে প্রাণভরে, কোনো পশুর অস্তিত্ব থাকবেনা।
এমন দেশের স্বপ্ন দেখি প্রতিদিন...
০১ লা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৭
কূপমন্ডূক বলেছেন: আমার প্রচেষ্টা আমি চালাচ্ছি। আপনিও এগিয়ে আসুন
২| ০১ লা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৭
বেঙ্গল রিপন বলেছেন: দেশে কি কোথাও শকুন পাওয়া যাবে?
শুনেছি যে দেশে বিচার থাকে না, সেই দেশে নাকি শকুনও থাকে না।
আমি দেশে শকুন দেখতে চাই, বিচার না পেয়ে বাবা-মেয়ের আত্মহত্যার সংবাদ নয়।
০১ লা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৪
কূপমন্ডূক বলেছেন: আমিও চাই।
৩| ০১ লা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪২
কবি হাফেজ আহমেদ বলেছেন: বাবা আর মেয়ে হেঁটে যাবে কুয়াশা মাখা রেললাইন ধরে। সে দেশে মানুষ শ্বাস নেবে প্রাণভরে, কোনো পশুর অস্তিত্ব থাকবেনা।
এমন দেশের স্বপ্ন দেখি প্রতিদিন..
আমরাও এমন দেশের স্বপ্ন দেখি। প্রতিবাদ হওয়া চাই দাবি আদায় পর্যন্ত। এগিয়ে যান , আমরাও আছি। কিন্তু আমাদের আওয়াজ ভন্ড নেতাদের কানে সেইদিন পৌছবে যেদিন তদের রক্তের কেউ ধর্ষিত হবে। তবে, নতুন করে তাদের কেউ ধর্ষতা হোক সেটা আমি চাইনা শুধু যারা এই বিষয়গুলোকে এড়িয়ে যাচ্ছে আল্লাহ তাদেরকে এর চেয়ে বেশি ভোগান্তিতে ফেলুক যেদিন কেউ তাদের দিকে তাকিয়েও দেখবেনা।
বিচার চাই মহান আল্লহর কাছে।
হোক প্রতিবাদ
০১ লা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৫
কূপমন্ডূক বলেছেন: হোক প্রতিবাদ
৪| ০১ লা মে, ২০১৭ রাত ৮:২৫
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: বার বার বলি আইন প্রয়োগ ছাড়া এসব বন্ধ হবে না। ধরবে, তারপর দীর্ঘ সময় ধরে মামলা চলবে। জামিন পাবে। এই সিস্টেমে অপরাধ কমবে না...
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
মেয়েটির পক্ষে সমাজের মানুষ এগিয়ে আসেনি; আপনিও এগিয়ে যাবার সম্ভাবনা কতটুকু?