নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নের উপড়ে হাটতে শেখাটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় একটা দক্ষতা। স্বপ্ন পূরণ করতে প্রয়োজন স্বপ্নের উপড় দিয়ে হেটে চলা। জীবনে সফল হবার জন্য প্রয়োজন সুস্থ স্বপ্ন দেখা এবং স্বপ্নের উপড় আরোহণ করা। আমি স্বপ্নের উপড়ে আরোহী একজন স্বপ্নঘোর ব্যক্তি।

অ শুভ্র আহমেদ

অ শুভ্র আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রমজানে তরুণদের করণীয়

১০ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:০৩

তরুণরা অন্যদের থেকে বেশী প্রোডাক্টিভ হয়ে থাকে। যে কোনো কাজ অনেক সুন্দর এবং দক্ষতার সাথে করে থাকে। অনেকেই চাচ্ছেন এই রমজানে নিজেকে আল্লাহ্‌ তায়ালার নিকট নিজেকে বিলিয়ে দেবেন। যারাই চাচ্ছেন এবং যারা চাচ্ছেন না তাদের সবার জন্যই এই লেখা। আশা করি এই রমজানে ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য সঠিক একটা নির্দেশনা পাবেন । আল্লাহ্‌ আমাদের সঠিক পথ অনুসরণ করার তাওফিক দান করুণ।




ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হচ্ছে রমজান। রমজানের কোন ভূমিকা বা গুরুত্ব বর্ণনা করে লেখার পরিধি বৃদ্ধি করবো না। রমজান মাসে আমরা যেনো নিজেদের পরিবর্তন করি তার শেষ থাকে না। তরুণদের স্বতঃস্ফূর্ত রোজা রাখা খুবই লক্ষণীয়। তবে বেশিরভাগ তরুণ রোজা অবস্থায় অলস সময় কাটায়। যেহেতু স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি এই মাসের বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকে - তাই সবাই বাসায় থাকে। এ সময় অনেকেই টেলিভিশন, রেডিও, উপন্যাস, খেলাধুলা, আড্ডা করে সময় পাড় করে। এসব কাজ ছাড়াও যে আরও কাজ আছে, যেগুলো করলে এই রমজানে আমরা বেশী বেশী সাওয়াব পাবো সেগুলো কাউকে করতে দেখা যায় না। তাই আমি সহজ করে কিছু নির্দেশনা দিচ্ছি - যেগুলো অনুসরণ করলে আশা করা যায় এবারের রমজান হবে আরও প্রভাবিত আরও ফলপ্রসূ।


পর্যাপ্ত ঘুম : তরুণদের মধ্যে একটি সহজাত প্রবৃত্তি হচ্ছে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব বা আধিক্য। কেউ কেউ অত্যধিক বেশি বেশি ঘুমিয়ে রোজা শেষ করার চেষ্টা করেন। আসলে প্রতিদিন ৮ ঘন্টা ঘুমালেই যথেষ্ট। রাত এগারোটা থেকে তিনটা পর্যন্ত ঘুমান চার ঘন্টা। এরপরে সেহরি করে নামাজ পড়ে কোরআন তেলাওয়াত করে ছয়টা বাজে ঘুমাতে যান । সকাল দশটা পর্যন্ত ঘুমান। আগের চার ঘন্টা এবং পরের চারঘন্টা মিলিয়ে আট ঘন্টার ঘুম হয়ে গেলো। অল্প ঘুম এবং বেশী ঘুমের ফলে সারাদিন শরীর খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং ক্লান্ত থাকে। ফলে আপনার কোনো কাজেই মন বসে না। চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে আটঘন্টার ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী।

কোরআন তেলাওয়াত করা : যেহেতু কোরআন আমাদের একমাত্র বই যেখানে আল্লাহ্‌'র উক্তি রয়েছে তাই এটা পড়া মানে হচ্ছে আল্লাহর সাথে কথা বলা। আল্লাহ্‌ তায়ালা যাবতীয় আদেশ নির্দেশ হুকুম কোরআন এ দিয়েছেন। তাই কোরআনের বিকল্প নাই। আমাদের নবীজি মৃত্যুর আগের বছরে ছাড়া প্রতি রমজানে একবার করে কোরআন রিভিশন দিতেন। মৃত্যুর আগের বছর তিনি দুবার খতম দিয়েছিলেন। এখন কথা হচ্ছে, কোরআন কী শুধু রিডি পড়ে যাবেন? না তা করলে তো হলো না। যদি বাংলায় অনুবাদিত কোনো কোরআন না থেকে থাকে তাহলে আজই কোরআন কিনে নিয়ে আসুন। বাজারে অনেক আছে। প্রতিদিন কম করে হলেও দুইঘন্টা কোরআন তেলাওয়াত করুণ। অথবা পিডিএফ ফাইল পড়ুন। বাংলা কিতাব , বাংলা কোরআন, বাংলা ওয়াজ


নামাজ আদায় : নামাজ আদায় করা সবার জন্য ফরজ। নিয়মিত সালাত আদায় না করলে নিজের ভেতরে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশিত হয় না। অনেকেই দেখা যায় রোজা রেখেছি কিন্তু সালাত আদায় করি না। আসলে এই মাসে দুই রাকাত নফল নামাজ অন্য মাসের চাইতে অনেক অনেক মর্যাদাসম্পন্ন। অধিক পুরস্কার পাওয়া যায়। দিনে অন্তত পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ পড়া অবশ্যই জরুরী বাধ্যতামূলক ইবাদত। যাদের নামাজ আদায় করতে ইচ্ছা হয় না তারা এক কাজ করতে পারেন - বন্ধুরা সবাই একত্রিত হন। সালাতের কিছুক্ষণ আগে সবাই কিছুক্ষণ গল্প করুণ। এরপরে সবাই একসাথে মসজিদে ঢুকে পড়ুন। নামাজ পড়ায় কোনো জড়তা থাকবে না, অলসতা থাকবে না।


ইত্তেকাফ করা : রমজানের শেষ দশদিন ইত্তেকাফ করতে পারেন। নবীজি রমজানের শেষ দশ দিন ইত্তেকাফ করতেন এবং তার মৃত্যুর পরে তার স্ত্রীরাও ইত্তেকাফ করতেন।

মায়ের কাজে সাহায্য : নবীজির হাদিস আছে যে একলোক এসে জিজ্ঞেস করলো কে বেশী সহচার্য পাওয়ার অধিকারী? নবীজি তিনবার বললেন মা। একবার বললেন বাবা। অর্থাৎ আপনার মা আপনার সহচার্য পাওয়ার অধিকার রাখে সবচেয়ে বেশী। তাই মা কে সাহায্য করুণ। রমজান মাসে মায়েরা তিনবেলা রান্না করেন। আবার ইফতার তৈরি করেন। এছাড়াও নিয়মিত কাজ যেমন থালাবাসন পরিষ্কার, ঘর পরিষ্কার, কাপড়চোপড় পরিষ্কার করতে হয়। এসব করে বেচারি বাকি যে সময় পায় তাও ব্যয় করেন কোরআন তেলাওয়াত এবং সালাত আদায় করে। কোনো রকমে হুড়মুড় করে। রাতেও দেরিতে ঘুমাতে যান। আপনার মনে রাখা প্রয়োজন তিনি একজন মানুষ এবং আপনার মা। তাই মায়ের কষ্ট লাঘব করতে টুকিটাকি কিছু কাজে সাহায্য করুণ। এতে আপনার মায়ের জন্য সুবিধা হবে। মায়ের খুশিই তো আপনার খুশী তাই না?

অন্যান্য কাজ ঠিক মতো করার চেষ্টা : রোজা রেখে অনেকেই নড়াচড়া বন্ধ করে দেয়। তরুণ তরুণীদের ক্ষেত্রে এই প্রবণতা বেশি। দেখলে মনে হয় আহারে এই বেচারা মনে হয় কিছুক্ষণ পরেই মারা যাবে। অবাক হয়ে দেখার মতো বিষয়। নড়াচড়া বন্ধ মৃত্যুপ্রায় একটা তরুণ। যেহেতু তরুণদের মধ্যে ছাত্রছাত্রী বেশী তাই পড়ালেখায় ফাকি দেওয়ার জন্যই অনেকে এরকম করে। আমাদের রোজা রেখেও পড়ালেখা করা উচিত। আসলে শুয়ে থাকলে বেশী ক্লান্তি লাগে। বসে বসে কিছুক্ষণ পড়ে দেখেন ভালো লাগবে। সকালের দিকে পড়তে বসলে ভালো হয়। নবীজি এবং সাহাবীরা রোজা রেখেও তাদের কাজ করতেন। তাই রোজা রেখে অন্যান্য কাজ করা এক হিসেবে নবীজির অনুসরণ করা। যতোটুকু পাড়ি নিজেদের কাজ করে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

অযাচিত জিনিস থেকে বিরত : সিয়াম শব্দের অর্থই হচ্ছে বিরত থাকা। এর মানে এই না যে ইবাদত থেকে বিরত থাকা। এর মানে ইবাদত বৃদ্ধি করা এবং ইবাদতের সাথে বিরোধী কাজ থেকে বিরত থাকা। সারাদিন কম্পিউটারে, মোবাইলে গেমস খেলা অবশ্যই একটা বর্জনীয় কাজ। এই মাসে বিনোদন একটু কম করাই ভালো। ভালো না লাগলে কিছু অলস গেইম খেলুন, পাজল বা বুদ্ধির খেলা খেলুন। সিনেমা গান না দেখাই ভালো। এগুলো আসক্তি সৃষ্টি করে। একটা মুভি দেখতে বসলে আড়াই ঘন্টার আগে ওঠা সম্ভব হয় না। মুভি দেখা কোন ইবাদত নয়। যদি দেখতেই হয় পিস টিভি, হুদা টিভি সহ অন্যান্য ইসলামিক চ্যানেলগুলো দেখুন। নিজের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি পাবে। তবে সরাসরি ইবাদতে মসগুল থাকাই মঙ্গলময়।


জিকির করা : সব সময় জিকির করার চেষ্টা করুন। জিকিরের নেকি অসামান্য। জিকির করতে বেশী কসরতের প্রয়োজন হয় না। অল্প বিনিয়োগে ( ইবাদতে) অধিক মুনাফা (সাওয়াব) পেতে জিকির করুণ।

তালিম করা : বন্ধুদের অথবা ছোট-বড় ভাইয়েদের সাথে নিয়ে হাদিসের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করুণ। এতে করে আনন্দের সাথে অনেককিছু শেখা যায়।

দাওয়াত দেওয়া : ইফতারির জন্য দাওয়াত দিতে বলছি না। অনেকেই আছেন যারা রোযা থাকেন না। সিয়াম পালন করেন না। আমরা যারা নিয়মগুলো মেনে চলি তারা এদেরকে নানানভাবে বোঝাতে পারি। মনে করুণ আপনার বন্ধু চক্রের মধ্যে সবাই রোযা রাখলেও আপনার তমুক বন্ধু রোযা রাখে না। তখন আপনারা সবাই বন্ধুকে বোঝাতে পারেন। লক্ষণীয় যে, আমরা অনেকেই টিটকারি মারতে পছন্দ করি। এটা করা ঠিক না। আমাদের উচিত তাদের বোঝানো সবচেয়ে উত্তম হিকমার'র সাথে। সবচেয়ে উত্তম কৌশলে। নমমীয়তার সাথে।

সামাজিক কর্মকাণ্ড : বিভিন্ন সামাজিক কাজ করতে পারেন। যেমন এলাকা'র সবার বাড়ি থেকে অল্প সল্প করে খাবার সংগ্রহ করে অভাবগ্রস্ত রোজাদারদের দিতে পারেন। এটা অবশ্যই একটা ভালো কাজ। আবার ধূমপান বিরোধী কর্মকাণ্ড করতে পারেন। সতর্কতামূলক লিফলেট হাতে তৈরি করে বিলি করতে পারেন। এটা যদিও কাজ হয় না তবুও চেষ্টা করতে দোষ কোথায়?


তরুণ বয়স থেকেই এসব চর্চা করলে পরবর্তী জীবনে খুবই সাচ্ছন্দের সাথে রোজা পালন করা যায়। জীবনের প্রথম এবং প্রধান সময় হচ্ছে তারুণ্য। এটাকে কাজে লাগালেই জীবন দাঁড়িয়ে যায়।



উপড়ে উল্লেখিত বিষয়গুলো মানার চেষ্টা করলেই আমার লেখাটি সার্থক। নির্দেশনাগুলো মেনে চলতে দুনিয়া এবং আখিরাতেও স্থায়ী শান্তি পাবেন। আসুন সবাই রজমান মাসকে আরও ফলপ্রসূ এবং আরো আনন্দদায়ক করি.......

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:০২

সমূদ্র সফেন বলেছেন: চমৎকার দিকনির্দেশনামূলক লেখা ।পড়ে ভালো লাগলো । অনেক ধন্যবাদ অ শুভ্র আহমেদ কে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.