![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সেই বদলি খেলোয়ার, যে একজন star player'এর injury'র সুবাদে খেলা শেষ হবার ৫ মিনিট আগে মাঠে নেমে ২টি গোল করে খেলার ফলাফল ঘুরিয়ে দেয়।
প্রথম পর্ব
|| দ্বিতীয় পর্ব ||
উত্তেজনা চরমে। কখন কী ঘটে বলা মুশকিল। জাতিগত দাঙ্গা বেধে যাবার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। কোর্টের ড্রামার চেয়ে বেশি সমস্যা হয় কোর্টের বাইরে। ইতোমধ্যে খবর পাওয়া গেছে মোরগের বাসার পাস দিয়ে একটি একটি কবুতরকে প্রায়ই এদিক-সেদিক উড়তে দেখা যেত। মোরগ মশাই শহরে চাকুরী করেন নাইট গার্ড হিসেবে। ২-৩ মাস পর পর স্ত্রীর সাথে দেখা করেন। মুরগির উতলা যৌবন নিশ্চয়ই তা মেনে নিবে না। এটাই স্বাভাবিক।
এদিকে জালালি কবুতরের গুষ্টি উঠে পুরে লেগেছে মুরগি বেচারির চরিত্র হনন করতে। “সব দোষ মুরগির” বললেন হযরত শাহ জালাল মাযারের পরিচালনা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জনাব গুটুর-গু। “তার চাল চলনই তো ঠিক নাই। লক্ষকরে দেখেছেন কীভাবে মাজা দুলিয়ে হাঁটে? কার না লোভ লাগবে?...” বলেই মনে হল একটু বিব্রত বোধ করলেন। তবে কথা মন্দ বলেন নাই। মুরগির যে ফিগার। তার আণ্ডার বাপ হবার সুযোগ তো আমি পেলে আমিও ছাড়ব না! তবে আজকে আর যাই হোক না কেন, ছাপার মত কিছু না পেলে মিস্টার গুটুর-গু’র কথা গুলোই মসলা মাখিয়ে ছাপানো যাবে। সকালের চায়ের সাথে সেমি-চোটি নিউজ পড়তে মন্দ না! হেডলাইন হবে – “মুরগির মাজা দেখে আকর্ষণ বোধ করেন যু. সা. স. গুটর-গু”। ভেতরে থাকবে “মুরগির যৌন আবেদনে মুগ্ধ হয়ে অকপটে স্বীকারোক্তি দিলেন হুজুর। মুরগির নবযৌবনা দেহের বর্ণনা দিতে গিয়ে তার দোলন ও আকার ...”। এরই মধ্যে জজ সাহেব একটি চা বিরতির ঘোষণা দিলেন। জজ সাহেব বার বার বিরতি নিচ্ছেন। অবশ্য এই বিরতির যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে। জজ সাহেবের একদিকে হজমে গণ্ডগোল তো অপর দিকে গ্যাস সমস্যা। ৫ মিনিট পরপর দমকা হাওয়া পরিবেশ ভারী করে ফেলছে। জজ সাহেবের খুব কাছাকাছি বসা এক মহিলা তো অজ্ঞান হয়ে পরেই গেলেন। জজ সাহেব ইতস্তত করে বললেন – মেয়ে মানুষের এমন টেনশনের যায়গায় না আসাই উত্তম। প্রেশার নিতে পারেনা। উনাকে কেউ বাসায় পৌঁছে দিন।
আজকের হেয়ারিং শেষ হল বিকেল ৫টায়। সারা দিনে কাজের কাজ কিছুই হল না। সব কথা ঘুরে ফিরে একই যায়গায়। এই আণ্ডার বাবা কে? বাংলা ছবির টাইটেল হিসেবে মন্দ হয় না! যাই হোক তবে আজকে একটা বিষয় লক্ষ করলাম যে প্রসিকিউটর খুব শান্ত ভাবে এগুচ্ছেন। একটা সহজ কেস তার নাকের ডগার নিচ দিয়ে চলে যাচ্ছে আর এতে তার কোন বিকার নেই। মনে হচ্ছে যেন চার পাশের উত্তেজনা তাকে বিন্দুমাত্র স্পর্শ করতে পারছে না। তিনি কি ইচ্ছে করে হারতে চাচ্ছেন? ঘুষ-টুসের ব্যাপার না তো? নাকি এটা কোন বড় ঝড়ের পূর্বাভাস? প্রসিকিউটর এত সহজে হার মানার লোক নন। দীর্ঘ ১৬ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে যে ক’বার তিনি হেরেছেন তার জন্যে তার প্রতিপক্ষকে যে কী পরিমাণ যুদ্ধ করতে হয়েছে তা কেবল তারাই জানে। তবে আর যা কিছুই হোক, এই কেস টি দীর্ঘায়িত হওয়া প্রয়োজন। জাতি আজ বহুদিন হল বড় তামশা দেখে নি। খবরের বাজারের মন্দা কাটানোর এই তো সুযোগ।
সকালে খবরের কাগজের প্রথম পাতায় বড় বড় অক্ষরে লেখা – “সাত দিনেও সুরাহা হল না জালালি আণ্ডা কেসের। ডি.এন.এ পরীক্ষাই শেষ আসা!”। হেডলাইনে ৩ বার চোখ বুলালাম। ফন্টটা আরো একটু মোটা করার দরকার ছিল। পুরো হেডলাইন এক লাইনে করতে গিয়ে প্রথম পেজের ১২টা বেজেছে। গাধার বাচ্চাটাকে বলেছিলাম লাল কালি ব্যাবহার করতে, দিয়েছে কালো কালি। বলেছিলাম “৭ দিন ...” আর লিখল “সাত দিন ...”। হেড লাইনে শব্দের বদলে অঙ্কের ব্যাবহারের কৌশলটি আমাকে ঝিচু মামা শিখিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি এটা শিখাতে ভুলে গেছেন যে পি.এ রাখতে হলে খরচ বেশি হলে ও যোগ্য লোক রাখা দরকার। নয়তো সকল বিদ্যাই বৃথা যাবে। হারামজাদা চা করতে গিয়েছে। আসলে বুঝাব মজা।
(চলবে...)
©somewhere in net ltd.