নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এস এম এলিট

সিমন্ত

এস এম এলিট

সিমন্ত › বিস্তারিত পোস্টঃ

সীমিত লকডাউন

০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ১২:০৬


এটা সেই যুগের কথা যখন কেউ SSC পাশ করলে সারা গ্রাম তাকে দেখতে আসতো। সেই আমলে, পাশাপাশি দুটি গ্রাম ছিল। সেই গ্রাম দুটি, সকল ক্ষেত্রে একে অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগীতা করতো। গ্রাম দুটির একটিতে একজন ইংরেজী শিক্ষক নিয়ে আসা হল। সেই শিক্ষক অস্টম শ্রেনী্ পাশ, এসেছেন দুরের কোন গ্রাম থেকে। গ্রামের লোকজনের গর্বের সীমা থাকলো না। আমাদের শিক্ষক খুব জ্ঞানী,, উনি এটা জানেন, ওটা জানেন। তিনি ইংরেজীতে খুব পারদর্শী। এসব শুনে অন্য গ্রামের লোকজনের আর সহ্য হল না। তারা শহর থেকে বিএ পাশ একজন শিক্ষক নিয়ে আসলো। এবার দুই গ্রামের মধ্যে বিতর্ক। এরা বলে, আমাদের শিক্ষক ভালো। ওরা বলে, আমাদের শিক্ষক ভালো। অবশেষে, একদিন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হল।

গ্রামের গন্যমান্য ব্যাক্তি ও সাধারন মানুষের উপস্থিতিতে একটি মেলার মতন লোক সমাগম হল। দুজন শিক্ষক একে অপরকে মাত্র একটি করে প্রশ্ন করবেন। প্রথমে বিএ পাশ শিক্ষক প্রশ্ন করল - dilemma অর্থ কি? অষ্টম শ্রেনী পাশ উত্তর দিল - উভয়সঙ্কট। উত্তর সঠিক হয়েছে, সবাই হাত তালি দিল। এর পরে অষ্টম শ্রেনী পাশ জিজ্ঞেস করল - I don't know অর্থ কি ? বিএ পাশ উত্তর দিল - আমি জানি না। জনগন বলাবলি শুরু করে দিল - দেখেছ, কেমন মাস্টার, উত্তরটা জানে না। জনগনকে ব্যাপারটা বোঝানোই গেল না। তারা এইট পাশ শিক্ষককে ফুল দিয়ে বরন করল, গলায় মেডেল পরিয়ে দিল আর বিএ পাশ শিক্ষককে শহরে ফেরত পাঠালো।

করোনা ভাইরাস নিয়ে আমি যাই বলি না কেন, মানুষ আমাকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। সারাদিন ভাইরাসের কথা বলে যারা ভয় দেয়, মেডেলটা তারাই পায়।

বন্যার পানিতে আপনার এলাকা যখন ডুবে যায়, তখন পানিটা সমস্যা নয়, পানিটা হল সমস্যার কারন। সমস্যাটা হল, আপনি স্বাভাবিক জীবন জাপন করতে পারছেন না। বন্যার পানিতে পুরো শহর ডুবে থাকার পরেও যদি আপনি কোন কায়দায় স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারতেন, তাহলে বন্যা আপনার কোন সমস্যাই করতে পারতো না। বন্যা আপনার সমস্যা করে কিভাবে? বন্যা আপনার স্বাভাবিক জীবন জাপনে বাধা দেয়। করোনার এই সময়ে ভাইরাসটি সমস্যা নয়। ভাইরাস হচ্ছে এই সমস্যার কারন। সমস্যাটা হল - আপনি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেন না। সারা নিশ্বে তিন লক্ষ লোক মারা গেছে। তিন কোটি লোক মারা গেলেও কোন সমস্যা হতো না, যদি আপনি স্বাভাবিক জীবনে থাকতে পারতেন। করোনা আপনার ক্ষতি করেনি। আপনার ক্ষতি করছে সাধারন জীবন জাপনের বাধাটি। ক্ষতি হয়ছে কারন আপনার জীবন এক প্রকারের থেমে রয়েছে। এভাবে জীবনকে আরও ৬ মাস থামিয়ে রাখেন। তাহলে আপনার চাকরী, ব্যাবসা সবই বন্ধ হয়ে যাবে। যারা দিন আনে দিন খায়, তারা খাদ্যের অভাবে মারা পড়বে। করোনার কারনে দেশে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০ লোক মারা গেছে। আরো ছয় মাস সবাইকে ঘরে আটকে রাখতে পারলে, টাকার অভাব, কাজের অভাব, খাবারে অভাব এমন পর্যায়ে পৌছাবে যে - প্রতিদিন ৫০০ লোক অনাহারে মরবে।

এগুলো আপনি জানেন ও বোঝেন। সারা জীবন আপনি ঘরে বসে থাকতে চান না। আপনি জানেন, একদিন আপনাকে বের হতেই হবে, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে হবে। সেই শুরুটা যত তারাতারি করতে পারবেন, ততই মঙ্গল। বেশী দেরী হলে, করোনা নয়, দুর্ভিক্ষে মানুষ মরবে।

এখানে প্রশ্ন থাকতে পারেঃ
এখন বাইরে বের হলে বেশি মানুষ আক্রান্ত হবে, বেশি মানুষ মারা যাবে। এটা কিভাবে ঠেকাবো?

বিষয়টাকে ধীরে সহ্য করিয়ে নেবার জন্যই সীমিত আকারে খুলে দেবার পদ্ধতি। একবারে সবকিছু না খুলে, ধিরে ধিরে খুলে দেওয়া। গত ছয় মাসে করোনাতে ৫০০ লোক মারা গেছে। ছয় মাসে এর থেকে বেশি লোক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। সড়ক দুর্ঘটনার ভয়ে আপনি কি গাড়ি চড়া বন্ধ করেছেন? দুর্ঘটনা প্রতিদিন হয়, ওদিকে বেশিরভাগ লোকই নিরাপদে বাড়ি ফিরে আসে। সবাই সড়কে চলাফেরা করে। ঠিক তেমনি, করোনাতে কিছু মানুষ মরবে, বেশিরভাগ লোকই সুস্থ হবে। সবাই স্বাভাবিক জীবন যাপন করবে।

দ্রষ্টব্য: আপনি বুদ্ধিমান। বাইরে গিয়েই বোকার মতন আচরণ করবেন না। জন সমাগম এড়িয়ে চলুন, মাস্ক ব্যবহার করুন, স্বাস্থ বিধি মেনে চলুন, সতর্ক থাকুন।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ১২:৫৯

কল্পদ্রুম বলেছেন: শুরুর দিকের চমৎকার চিন্তা করেছেন।

২| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ২:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: কিছুই আর সীমিত নেই।

৩| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ সকাল ৮:৪১

পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনার লেখার প্যাটার্ন পছন্দ হয়েছে কিন্তু থিংকিংটা নয়। গত ছয় মাসে এর চেয়ে বেশি মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে... এই কথা বলে একটা দুর্যোগ অব্যবস্থাপনাকে জাস্টিফাই করাটা আহাম্মকি ছাড়া কিছুই নয়। সড়কে যেটা হয়, সেটা আপনিই লিখেছেন 'দুর্ঘটনা' যদিও সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তার সংখ্যাও ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনা সম্ভব। অন্যদিকে করোনাকে মোকাবেলায় গা এলিয়ে দিয়ে সেটা বিস্তার হতে দিয়ে এখন মানুষকে নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়াটা কিভাবে মেলাচ্ছেন আপনি?

বিমানের পাইলট ভুল করলে যাত্রীরা অক্সিজেন মাস্ক আর লাইফজ্যাকেট পরা না পরা সমান হয়ে যায়।

দেখুন, কঠোর লকড ডাউনের পরিবর্তে সাধারণ ছুটি ঘোষণার মাধ্যমে আমাদের সরকারের প্রচুর অর্থ সাশ্রয় হয়েছে, তা কিন্তু নয়, অর্থনৈতিক ক্ষতি কিছু কম হয়েছে এমনও নয়, আবার সংক্রমণও রোধ করা যায়নি। তাহলে কঠোর লক্ড ডাউন দিতে অসুবিধা কি ছিলো?

আমরা পাব্লিকও খুব সুবধিার নই, সেটাতো নতুন কিছু নয়। কিন্তু ডিসিশন নিয়ে সেটা প্রয়োগ ও জনগণকে পালন করানোর দায়িত্ব ওনাদের ওপর বর্তেছে বলেই তো উনারা সরকার নাকি! সে যায়গাতে ব্যর্থতার বিপরীতে হার্ড ইমিউনিটি, ধীরে ধীরে সহ্য করিয়ে নেয়ার থিয়োরি নিতান্তই বালখ্যিল্যতা।

আমার মনে হয় সময় এখনও পেরিয়ে যায়নি। মানুষ দুমাস কষ্ট করেছে। আরও একমাস করতে পারবে। কিন্তু কথা হলো- সঠিক ডিসিশনটা নিচ্ছে কে?

ভালো থাকবেন, শুভ ব্লগিং।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.