![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভুলভাল দোষারোপঃ নুসরাত হত্যাকান্ড।
নুসরাত হত্যাকান্ডের জন্য দায়ী উপাদানগুলো কি, চলুন দেখা যাক।
১) ২০১৭ সালে নুসরাতকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়ে তার উপর দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপ করেছিল বখাটে নূর উদ্দিন। মামলাসহ সকল আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করার পরও সেই অপরাধের বিচার কেন হয়নি? বখাটে নূর উদ্দিনকে আইনের আওতায় নেয়া হয়নি।এখন কেউ কেন আংগুল তুলছে না সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দিকে? তখনকার অপরাধের মূল আসামীবখাটে নূর উদ্দিনই তো এখন নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়ার মূল পরিকল্পনাকারী!! তখন যদি যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হত, তাহলে কি এখন এই অপরাধটা হত? প্রথম এবং প্রধান দোষ হচ্ছে তখনকার প্রশাসনের কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়া। সাংবাদিকরাও তাদের বিরুদ্ধে সহজে কঠোর হয় না। কেন কঠোর হয় না সেটা উপজেলায় চাকরি করার সুবাদে আন্দাজ করতে পারি।
২) কালপ্রিট অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এর আগেও প্রশাসনে নারী নির্যাতন বিষয়ক অভিযোগ জানানো ছিল।
গত বছরের ৩ অক্টোবর অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা আলিম শ্রেণির আরেক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেন। প্রতিকার চেয়ে মেয়েটির বাবা মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। চিঠির অনুলিপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছেও দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং যে তিনজন শিক্ষক অধ্যক্ষের যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন, তাঁদের কারণ দর্শানোর চিঠি দেন অধ্যক্ষ। ওই তিন শিক্ষক হলেন আরবি বিভাগের প্রভাষক আবুল কাশেম এবং জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বেলায়েত হোসেন ও হাসান আহমেদ। অধ্যক্ষের রোষানলে পড়ে তিনজনই কোণঠাসা হয়ে যান। - সূত্র, প্রথম আলো।
এবারও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, উলটো যারা অভিযোগ করেছে, তারাই পরে কোনঠাসা ।
উপরের দুইটা ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে যথাযথ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হলে এসব ঘটনা ঘটত না। তাহলে আমরা কেন সবার আগে প্রশাসনিক ব্যবস্থার দিকে আংগুল তুলছি না?
৩) ফেনীতে উম্মুল কুরা ডেভেলপার্স নামের একটি কথিত সমবায় প্রতিষ্ঠান আছে। অধ্যক্ষ সিরাজ এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে জমা পাওয়া টাকা তিনি আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় চেক প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে ১ কোটি ৩৯ লাখ ৪ হাজার টাকার মামলা হয়। এ বিষয়ে আদালতে দায়ের হওয়া মামলায় (সিআর ৯৪/১৮ নম্বর) আদালত গত বছরের ১০ জুলাই তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। পরে জামিনে মুক্ত হন তিনি। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে মাদ্রাসা তহবিলের ৪৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
২০১৪ সালে নাশকতা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় সিরাজ উদ দৌলা ২০১৭ সালে কারাভোগ করেন। - সূত্র- প্রথম আলো।
একজন আর্থিক অনিয়মের আর নাশকতামূলক একটিভিটিসের কারণে শাস্তিপ্রাপ্ত আসামী কিভাবে একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান থাকেন?
আমরা কি মাদ্রসা বোর্ড বা মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) -কে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেছি?
৪) মূল অপরাধী অধ্যক্ষ সিরাজের সাথে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের সাথে সখ্যতার বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট। সোনাগাজী পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদের কথা পত্রিকায় এসেছে। মাদ্রসার বিভিন্ন ধরনের ইনকাম ছিল, যেমন দোকান ভাড়া ইত্যাদি। আর্থিক দিকটা বিভিন্ন প্রভাবশালীদের জড়িত থাকার মূল কারণ হিসেবে বিবেচনা করা যায়। কিন্তু বেশীরভাগ বিদ্যালয়ের সাথে স্থানীয় রাজনীতিবিদদের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা নিয়ে এখনও কোন প্রশ্ন করছি না।
৫) অধ্যক্ষ সিরাজের গ্রেফতারের পর শিশু শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের মুক্তি চেয়ে ব্যানার সহ মিছিল করেছিল, আমরা সেইসব শিশুদেরকে অনলাইনে আজেবাজে কথা বলে তাদের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করছি। কিন্তু ঠান্ডা মাথায় ভাবলে এটা স্পষ্ট হতো যে, তারা যদি অধ্যক্ষকে অপরাধী জানতো তাহলে বশ্যই এরকম একটা মিছিলে শামিল হতো না। তাদেরকে দোষারোপ করা বন্ধ করুন।
৬) অধ্যক্ষের মুক্তি চেয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের ব্যানারসহ মিছিলের ছবিটা এডিট করে অনলাইনে ছাড়া হয়েছে। ব্যানারে অধ্যক্ষ লেখাটা এডিট করে মুছে সেখানে ধর্ষক শব্দটা লেখা হয়েছে। এখন ছবিটা দেখে মনে হচ্ছে শিশু শিক্ষার্থীরা ধর্ষক সিরাজের মুক্তি চাচ্ছে। যে এই এডিট টা করেছে সে অবশ্যই বিকৃত মনা। উন্নত বিশ্ব হলে এডিটকারীর চরম শাস্তি হত। ছবিটার শিশুদের ছবি ব্লার না করে দিয়ে আপনারা যারা এডিটেড ছবিটা শেয়ার করছেন তারাও কিন্তু ঐসব শিশুদের ন্যভাবে শ্লীলতাহানী করছেন। এসব বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিৎ।
৭) একটা পক্ষ একচোখা দৃষ্টিতে সমানে শুধু জেন্ডারভিত্তিক পুরুষদের দোষারোপ করে যাচ্ছে। কিন্তু শ্লীলতাহানীর মূল অপরাধটা পুরুষ কর্তৃক সংগঠিত হলেও, বা অন্যায়ের পুরোভাগে পুরুষ থাকলেও, ভিকটিমের গায়ে আগুন লাগানোতে ব্যবহৃত হয়েছে একাধিক নারী। তাই এখানে জেন্ডারভিত্তিক পুরুষ যতটা না দায়ী, তার চেয়ে বেশী দায়ী পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতা। ক্ষমতার কেন্দ্রে না থাকা কতিপয় পুরুষ শিক্ষক ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা পুরুষ অধ্যক্ষের অপকর্মের বিরোধিতা আগে থেকেই করছিল।
৮) ভিক্টিমের একটা বক্তব্য থেকে জানা যায় যে, ২০১৭ সালে প্রেমের প্রস্তাবে রাজী না হওয়ার প্রেক্ষিতে তার চোখে তরল দাহ্য ছুড়ে মারায় চোখের বারোটা বাজা সত্তেও , তার নিজের কোন দোষ না থাকা সত্তেও তাকে সমাজে নানা রকম কটু কথা শুনতে হয়েছিল, তার অপবাদ হয়েছিল, অদ্ভুত। এটা সেই সমাজ যেখানে পুরুষ নারী, শিক্ষিত আর অশিক্ষিত সবাইই আছে। শুধু শক্ত অবস্থানে থাকে ক্ষমতাবানরা। এ থেকে স্পষ্ট যে, এ ঘটনা গুলোর জন্য সমাজও কম দায়ী না। ভিক্টিমের সামাজিক অবস্থান সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রযন্ত্রের পার্টগুলো অতটা কার্যকরী না প্রমানিত। এই সকল ব্যার্থতা শুধু এই ঘটনা না, সব ধরনের ধর্ষণ/শ্লীলতাহানী/ দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচারের বেলায়েও প্রযোজ্য।
৯) মাদ্রাসাগুলোতে নারী শিক্ষক হারিকেন দিয়েও খুজে পাওয়া যায় না। পুরুষ শিক্ষকরা তাদের পুরুষতান্ত্রিক আধিপত্যবাদ টিকিয়ে রাখার জন্য হলেও নারী শিক্ষক অন্তর্ভুক্তি ঠেকিয়ে রেখেছে যুগ যুগ ধরে। অন্তত নারী মুসলিম মাদ্রাসা গুলোতে ১০০% নারী শিক্ষকের দাবী ১০০% যৌক্তিক।
### কিন্তু আমরা/আপনারা উপরের এই প্রবলেমগুলোকে পাশ কাটিয়ে শুধু মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে বন্ধ করার দাবী তুলছি । শুধু মাদ্রাসা শিক্ষার দিকে আংগুল তুলে আসলে আমরা সমস্যাগুলোকে জিইয়েই রাখছি। আমি বলবো না যে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় ত্রুটি নেই, কিন্তু নারী পুরুষের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানে থাকা শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে থাকা অনুসরণকারীদের ত্রুটির জন্য শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে দোষ দেয়া টা আসলে রাজনৈতিক মর্মে দৃশ্যমান।
কিছু বিপদগামী আছে যারা অন্য ধর্মের কারো দোষ পাইলে পুরো জাতিকেই দোষারোপ করা শুরু করে । এখানেও কিছু এরকমই মানুষ পাওয়া যাচ্ছে, যারা লক্ষাধিক মাদ্রাসার মধ্যে গুটিকয়েক বিপথগামীকে উদাহরণ হিসেবে পুরো মাদ্রসা ব্যবস্থাকে বন্ধ করার দাবী তুলছে। আমি আসলে এই দুই গ্রুপের মধ্যে বিশেষ কোন পার্থক্য দেখতে পাচ্ছি না।
২| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৩:০০
অনল চৌধুরী বলেছেন: সব পুরুষ শিক্ষক যেমন লম্পট না তেমনই সব নারী শিক্ষকও সাধু না
ভিখারুননিসার অরিত্রীর কথা মনে আছে????
৩| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৭:১১
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
পারিবারিক শিক্ষা খুবই জরুরি।
সন্তান বখাটে হয় এর অভাবে।
৪| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৮:২৮
নাহিদ০৯ বলেছেন: দোষ দোষারোপ করতে করতেই একদিন মুছে যাবে নুসরাত ইস্যু। তবে দোষারোপ এর শুরুটাই হয় বাঁচার খাতিরে। দোষ চাপানো এখন খুবই হাস্যকর একটা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গতকালকে ভেনিজুয়েলা সংকট এর উপর একটা ডকুমেন্টারী দেখছিলাম৷ সে দেশে মানুষ খেতে পায় না এর দোষ নাকি বিরোধী দলের। খোদ সে দেশের প্রধানমন্ত্রী এই বক্তব্য দিয়েছে সংবাদমাধ্যমে।
৫| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১০:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: জানাজায় যতজন মানুষ চোখের জল ফেলছেন, শুধু তারা ঘুরে দাঁড়ালেই তো সব সিরাজের সিরাজত্ব ঘুঁচে যায়! কিন্তু তা কেনো হয় না?
মেয়েরা মরে যাবার পরে শুদ্ধ হয় বুঝি? যাদের মৃতদেহের জন্য এত চোখের জল, তাদের বেঁচে থাকার অধিকারের জন্য কেনো জমায়েত হয় না?
৬| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১১:২১
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: যুক্তিযুক্ত কথা।
আবেগে ভাসা জাতি বলে কথা।
জাতীয় জীবনে যেমন সমস্যার মূল কারন উদঘাটনে ব্যার্থ
ব্যাক্তিক এবং সামাজিক জীবনেও মূলে না পৌছে কান নিয়েছে চিলের পিছনেই সব দৌড়ায়।
এ জন্যে দায় ব্যক্তি এবং রাস্ট্র ও সরকার সকলেরই আনুপাতিক।
ভাইস ভার্সা চক্রে অভিমূন্যের চক্রবুহ্যে আকটে এভাবেই চলছে জীবন।
বেরিয়ে আসার বা আনার চেষ্টাও খুবই কম!
৭| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:৩২
বাংলার মেলা বলেছেন: এগুলো উদ্দেশ্যমূলক। একজন মদ্রাসার লম্পট অধ্যক্ষ হল সোনার ডিম পারা হাঁস। এইটাকে প্রশ্রয় দেয়া গেলে ইসলাম বা ধর্মীয় শিক্ষার ব্যাপারে মানুষের ঘৃণার সৃষ্টি করা যাবে জেনেই এতদিন এর কোন প্রতিকার করা হয়নি। এর প্রমাণ পাওয়া যাবে এক ছাগ্লা ব্লগারের এই নিয়ে মাতামাতি দেখলে। তার ভাষায়, তৌহিদী (!) জনতা নাকি এরি মধ্যে অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে জিহাদ শুরু করেছে, যে কারণে সরকারের শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থা হয়েছে। সেই সাথে তিনি এও বলেছেন যে কাফির মুনাফিকদের সাথে লড়াই করতে করতে ইসলামের মুজাহিদরা ক্লান্ত হয়ে গেলে গনীমতের মাল হিসেবে নুসরাতের মত মেয়েদের একটু আধটু ব্যবহার করে - এতে অন্যায়ের কিছু নেই।
এই ব্লগারের ভাষার ব্যবহার দেখলে সহজেই বুঝা যায়, সিরাজ নামের এইসব বিকৃত রুচির মানুষগুলোকে বারবার প্রশ্রয় দেবার আসল উদ্দেশ্য কি!
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ২:১৭
নতুন বলেছেন: আমাদের সমাজে বিচার হয় না সেটাই আসল সমস্যা..... এটা কমাতে না পারলে সমস্যা কমবেনা।