![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এস কে এস আলী
সোভিয়েত রাশিয়ার পররাষ্ট্র নীতি:
পুজিবাদ বিরোধী প্রচার :
আধুনিক যুগে আতœ-রাষ্ট্রিয় সর্ম্পকের মূলনীতি হল: অপর রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করা। সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের নাগরিকদের তাদের প্রতিষ্ঠিত সরকারের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক তৎপরতায় সহযোগিতা না করা। কিন্তু সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃবৃন্দ এই নীতি অমান্য করে সর্বত্র পুজিবাদী বিরোধী প্রচারকার্য শুরু করে। ফলে পুজিবাদী দেশগুলি রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিদ্বেষ হয়ে ওঠে।
পুজিবাদ বিরোধী নীতির পরিবর্তন :
শেষ পর্যন্ত সোভিয়েত নেতৃবৃন্দ তাদের পররাষ্ট্রনীতির আংশিক পরিবর্তন করতে বাধ্য হল। ১৯২১ সালে রাশিয়ার ব্যাপক দূভিক্ষের পর ঘবি গ্রহন করে। এই পরির্বনের প্রভাব পররাষ্ট্রনীতিতেও দেখা দেয়। ঐ বছর সোভিয়েটত সরকার ইংল্যান্ডের সাথে একটি বানিজ্য চুক্তি সম্পাদন করে। সোভিয়েত সরকার অন্যান্য পুজিবাদী রাষ্ট্রের সাথে বানিজ্য চুক্তি করতে চাইলে , ফ্রান্স ও বেলজিয়াম রাাজি হয়নি। ফলে পাশ্চাত্য দেশের সাথে বন্ধুুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়া সম্ভব হয়নি।
জার্মানীর সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন :
এমতাবস্থায় সোভিয়েত সরকার জার্মানির সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করে। জার্মান তখন ইউরোপের অন্য রাষ্ট্র থেকে কিছুটা পিছিয়ে জার্মান ও রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক করতে আ্গ্রহী ছিল। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে দুই দেশের মধ্যে যাপেলো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তিতে দুইদেশের মধ্যে কুটনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপন এবং সামরিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার কথা বলা হয়। র্যাপেলো চুক্তি আন্তজাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
পুজিবাদী রাষ্ট্র কতৃক সোভিয়েত ইউনিয়নকে স্বীকৃতি :
১৯২৪ সালে বৃটিশ সরকার সোভিয়েত সরকারকে স্বীকৃত দেওয়ার সাথে সাথে জাপান, ফ্রান্স, ইতালিসহ অন্যান্য পুজিবাদী দেশ এই সরকারকে স্বীকৃতি দিল। কিন্তু ১৯২৪ সালে লেলিনের মৃত্যুর পর স্ট্যালিন ও ট্রটস্কির মধ্যে দ্বদ্বের কারনে আবার অবনতি দেখা দেয়।
ট্রটস্কির মতে, সমাজতন্ত্রের আর্দশ্য ইউরোপসহ সারা বিশ্¦ে ছড়িয়ে দিতে হবে।
স্ট্যালিনের মতে, আপতত:শুধুমাত্র রাশিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা।
এই সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিতে দুইটি বিপরীতমুখি বৈশিষ্ঠ্য ফুটে উঠে।
পুজিবাদী রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষেপ :
সোভিয়েত রাশিয়ার পররাষ্ট্র নীতি , একদিকে পুজিবাদী দেশগুলো হতে অর্থনৈতিক সাহায্য গ্রহন এবং সেই সকল দেশ থেকে স্বীকৃতি লাভের চেষ্টা। অপরপক্ষে কমিউর্টান কতৃক পুজিবাদ বিরোধী প্রচার কার্যে উৎসাহ দেন। সোভিয়েত পররাষ্ট্রনীতি ইংল্যান্ডে শ্রমিক আন্দোলনের ইন্ধন যোগান এবং ১৯২৬ সালে সাধারন ধর্মঘটে প্ররোচারনা দেন। রাশিয়া কতৃক একই সাথে পুজিবাদের ধ্বংস সাধন এবং পুজিবাদী দেশগুলোর সাথে সদ্ভাব স্থাপনের চেষ্টা বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃস্টি করে। এভাবে সোভিয়েত রাশিয়া অভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষে করে।
বিভিন্ন দেশের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন :
কম্যুনিস্ট পার্টি হতে ট্রটস্কির সদস্যপদ বাতিল করার ফলে, আবার পররাষ্ট্র নীতিতে পরিবর্তন ফিরে আসে। কয়েক বছরের মধ্যে সোভিয়েত সরকার ইউরোপের দেশ সমূহের সাথে মিত্রতা বন্ধনে আবদ্ধ হতে সক্ষম হয়। ১৯৩১ সালে ইতালি ও তুরস্কের সাথে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করে অর্থনীতিতে আদান প্রদান শুরু করে। ১৯৩৩ সালে পোল্যান্ড, ইরান,আফগানিস্থান, ল্যাটভিয়া, এস্তোনিয়া, তুরস্ক, রুমানিয়া, চেকোস্লাভিয়া,ও যুগোস্লাভিয়ার সাথে অনাক্রমন চুক্তি স্বাক্ষর করে।
একই বছর চীনের সাথে রাশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক পৃুন:প্রতিষ্টিত হয় এবং আমেরিকা রাশিয়াকে স্বীকৃতি দেয়।
শান্তি ও নিরাপত্তা নীতি :
সোশিয়েত রাশিয়া পাশ্চাত্য রাষ্ট্রবর্গের সাথে আন্তজার্তিক ক্ষেত্রে শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার নীত গ্রহন করেন।১৯৩৪ সালে রাশিয়া জাতিপুঞ্জের সদস্যপদ গ্রহন ্এর পরিচায়ক। সোভিয়েত রাশিয়ার পররাষ্ট্র নীতিতে এই পরিবর্তন ফরাসি-রুশের উন্নয়ন ঘটে। ১৯৩৪ সালে ফরাসি-রুশ একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করে। ফলে তাদের দীর্ঘ দিনের বিবাদ মিটে যায়।
পাশ্চাত্যের সাথে সর্ম্পকের উন্নয়ন :
পাশ্চাত্য শক্তি বর্গের সাথে সোভিয়েত রাশিয়ার পররাষ্ট্র নীতিতে ভাঙন দেখা যায়। এর প্রধানত তিনটি কারন-
(ক) ইতালি ইথিওপিয়া আক্রমন করলে জাতীপুঞ্জ তথা ফরাসি শক্তিগুলো উদাসীন থাকে।
(খ) জার্মানের কারনে সোভিয়েত সরকার ইউরোপীয় শক্তিগলোর উপর সন্দিহান হয়ে পড়ে।
(গ) অক্ষশক্তিগুলো অর্থাৎ জর্মান, ইতালি ও জাপান কতৃক কমিউনিস্ট বিরোধী চুক্তি স্বাক্ষর।
এসব কারনত্ োছিলই উপরন্তু ১৯৩৮ সালে “গঁহরপয চধপঃ” অনুযায়ী বৃটেন, ফ্রান্স ও ইতালি হিটলারকে চেকোস্লাভিয়া অধিকার করার সুযোগ দেয়।তখন সোভিয়েত সরকার স্পষ্ট বুঝতে পারে যে, পাশ্চাত্য শক্তি সমূহের তোষননীতির আসলউদ্দেশ্য -রাশিয়ার উপর হিটলার কতৃক আক্রমনের পথ সুগম করা।
এমতাবস্থায় সোভিয়েত সরকার বৃটেন, ফান্স ও রাশিয়ার মধ্যে একটি ত্রি-শক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব করে। কিন্তু তারা এই প্রস্তাবে কোন গুরুত্বরোপ করেনি। তখন পাশ্চাত্য শক্তির উদ্দেশ্য বুঝতে আর বাকী রইল না সোশিয়েত রাশিয়ার।
জার্মান রুশ অনাক্রমন চুক্তি :
উপায়ন্তর না দেখে সোভিয়েত পররাষ্ট্র নীতি আতœরক্ষার স্বার্থে জার্মানীর সাথে মৈত্রি স্থাপনে সচেষ্ট হয়। এদিকে হিটলারও চা”িলেন রাশিয়া ইউরোপিয় শক্তি থেকে বিচ্ছিন্ন থাকুক।
এমতবস্থায় জার্মান ও সোভিয়েত রাশিয়ার মধ্যে ১৯৩৯ সালের ২৩ শে আগস্ট একটি অনাক্রমন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।এই চুক্তি নামে পরিচিত।
পাশ্চাতদ্য শক্তি বর্গ এইচুক্তির গুরুত্বউপলম্বি করে রাশিয়ার সাথে বন্ধুত্বে হাত বাড়ায়। কিন্তু স্তালিন ্এটা গ্রহন করেননি। ফলে জার্মানির পক্ষে পোল্যান্ড আক্রমনের আর কোন বাধা রইল না। ১৯৩৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হিটলার পোল্যান্ড আক্রমন করলে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সুচনা হয়।
©somewhere in net ltd.