![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভূমিকা ঃ
আল্লামা ফখরুল ইসলাম বাযদাভী (র) হানাফি ওলামায়ে কেরামের মধ্যমণি ছিলেন। ফিকহে হানাফি তাঁর দ্বারা সম্মান ও মর্যাদার এতটুকু শিখে পেীঁছেছিল যে, যা অন্য কোনো মনীষীর দ্বারা খুব কমই সম্ভব হয়েছে। তাই হানাফি মতবাদ তাঁর নিকট চির ঋণাবদ্ধ।
নাম ও বংশ পরিচিতি ঃ
তাঁর নাম ফখরুল ইসলাম উপনাম আবুল হাসান আবুল ওসর, পিতার নাম আলী, তারঁ বংশ নসব হলো, শায়খ ফখরুল ইসলাম আবুল হাসান ওয়া আবুল ওসর আলী ইবনে মুহাম্মদ ইবনে হোসাইন ইবনে আব্দুল কারীম ইবনে মুসা ইবনে মুজাহিদ বাযদাভী হানাফী। বাযদা দুর্গেও প্রতি সম্বোধিত কওে তাকে বাযদাভী বলা হয় ।
জীবন বৃত্তান্ত ঃ
আল্লামা বাযদাভী (র) ফিক্হ,উসূল,হাদীস,মোনাযায়াহ এবং কালামশাস্ত্রে ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। মাওলানা আব্দুল হাই তাঁর পরিচয় দিতে গিয়ে বলে। আরবী
তাঁর নাম ও বংশ লতিকা ঃ
তিনি ছিলেন “আলী ইবনে মুহাম্মদ ইবনে হুসাইন ইবনে আব্দুল কারীম ইবনে মূসা ইবনে মুজাহিদ। বংশ পরস্পরায় উল্লিখিত ব্যক্তিগণ ইসলামী জ্ঞানশাস্ত্রে সুপন্ডিত ছিলেন। এদের অনেকেই তৎকালে বিভাগীয় বড় বড় পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন”।
তাঁর জন্মস্থান ঃ
এ মহামনীষী ৪০০ হিজরীতে বাযদাহ নামক পল্লীতে জন্মগ্রহণ করেন। এ পল্লীটি ‘মাওরাউন্নহর’ প্রদেশের ‘নসফ’ নগরীর ছয় ক্রোশ দূরে বোখারার দিকে চলে যাওয়ার মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। পল্লীটির নামের প্রতি সম্পর্কিত করে তাকে আল-বাযদাভী বলা হয়ে থাকে।
তাঁর মনীষা ঃ
তিনি বংশ পরস্পপরায় শিক্ষানুরাগী পরিবারের সন্তান ছিলেন।
তাই তিনি প্রকৃতিগতভাবে তীক্ষè মনীষা ও মেধা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি তাঁর ত্বদীয় পিতা মুহাম্মদ ও বড় ভাই আবুল ইউসারী থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন। অল্প দিনেই তিনি কুরআন, হাদীস,তাফসীর ও ফিক্হশাস্ত্রে এবং ভাষাজ্ঞানে অসাধারণ ব্যুৎপত্তি লাভ করেন।
ইসলামী গবেষণামূলক বক্তব্যে ও লেখনীতে তিনি সমকালীন মুসলিম পন্ডিতদেরকে স্তম্ভিত করে দেন।তিনি আজীবন হানাফি মাজহাবের উৎকর্ষ সাধনের জন্য কুরআন ও হাদীস মন্থরে রত ছিলেন।
উপাধি লাভ ঃ
সমকালীন আলেমগণ ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানে তাঁর অসাধারণ পান্ডিত্য দেখে তাঁকে “ফাখরুল ইসলাম” উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। কাল পরম্পরায় আরো কয়েকজন মনীষী এ উপাধিতে ভূষিত ছিলেন, কিন্তু যখন এ উপাধি ব্যক্তি চিহ্নিতকরণ ছাড়া উল্লেখ করা হয় তখন বক্ষ্যমান মনীষীকে বুঝানো হয় । তাই এটি তাঁর উচ্চ মর্যাদার প্রতীক। তাঁর কোন কোন রচনা দুর্বোধ্য ছিল বিধায় তাঁর একটি উপনাম ছিল ‘আবুল আ’ছর’।
স্মৃতি শক্তি ঃ
তিনি মাজহাব রক্ষায় কঠোর ছিলেন। জনৈক শাফেয়ী আলেমের সাথে মোনাযায়া করতে গিয়ে এক পর্যায়ে দুই বছরের রাষ্ট্রীয় আয় ব্যয় দফতর মুখস্থ করে ফেলেন এবং ছয় মাস পর হজ্জ থেকে ফিরে হুবহু মুখস্থ শুনিয়ে। তাঁর এরুপ স্বরণশক্তির কারণে লোকজন তাঁকে গভীর শ্রদ্ধা করতেন।
তাঁর রচনাবলী ঃ
তিনি অনেক গ্রন্থ রচনা করেন্ কাওয়াইদে ফিক্হিয়্যায় তাঁর অনবদ্য অবদান রয়েছে। যা তিনি উসুলুল বাজদাভীতে তুলে ধরেছেন।
এগুলোর মধ্যে সর্বাধিক আলোচিত একটি গ্রন্থ হল আল মাবছুত, যা ১১ খন্ডে রচিত হয়েছে এবং এতে ইসলামের সার্বিক বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ব্যাখ্যা গ্রন্থ হিসেবে ‘শারহুল জামিয়িল কাবীর এবং শারহু জামিয়িস ছগীর’ নামীয় কিতাবাদি সমধিক খ্যাতিসম্পন্ন সমাদৃত গ্রন্থ। ফিক্হ মূলনীতি বিধৃত ‘উসুলুল বাজদাভী’ গ্রন্থটি তাঁর অমর কীর্তি , যা মুসলিম জগত হাতে হাতে গ্রহণ করে নিয়েছেন। এছাড়া তাঁর আরো অনেক রচনা আছে।
তাঁর জীবনাবসান ঃ
৪৮২ হিজরীতে সমরকন্দ নগরী অনতিদূরে কশ নামক স্থানে ইহধাম ত্যাগ করেন। অতঃপর তাঁর মরদেহ সমরকন্দ নগরীতে নিয়ে আসা হয় এবং সেখানেই চিরনিদ্রায় মৃত্তিকাশয্যা গ্রহণ করেন।
উপসংহার ঃ
আল্লামা বাযদাভী এক প্রসিদ্ধ নাম। তাঁর নাম হানাফি মাজহাবে শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করা হয়। যে কোন সমস্যায় সমাধানের জন্যে তাঁর অভিমত সানন্দে গ্রহণ করা হয়। আর যতদিন উসূলশাস্ত্র থাকবে ততদিন জ্ঞান পিপাসুরা তাঁকে স্বরণ করবে।
©somewhere in net ltd.