নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিরোনামহীন

সাখাওয়াত জুলফিকার

সাখাওয়াত জুলফিকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

থানায় দুটি জিডির অভিজ্ঞতা এবং কিছু উপলব্ধি

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৩৫

১ম ঘটনাঃ- ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল, চিনতাইকারি ধরে আমার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন সেট (যা নতুন কেনা) এবং কিছু নগদ টাকা নিয়ে নেয়। আমি থানায় জিডি করতে গেলে জিডিতে পুলিশ চিনতাইয়ের কথা লিখতে দেয়নি। অনেকবার বলার পরও তারা চিনতাইয়ের কথা না লিখে লিখেছে, অজ্ঞাত স্থান থেকে হারিয়ে গেছে!
কিন্তু পুলিশ কেন সত্য কথাটি লিখতে রাজি হয়নি তা আমার মাথায় কোনভাবেই ঢুকলোনা। অনেকদিন পর এক পরিচিত ব্যক্তি যে পুলিশে চাকরি করে তার কাছে কথা প্রসঙ্গে এর ব্যাখ্যা চাইলে সে বলে, চিনতাই লিখলে ঝামেলা আছে, পুলিশকে চিনতাইকারি ধরার পেছনে ছুটতে হবে, তদন্ত করতে হবে। এত ঝামেলায় কে যেতে চায়? তার চেয়ে অজ্ঞাত স্থান থেকে হারিয়ে গেছে লিখলে কোন ঝামেলা নেই

২য় ঘটনাঃ- গত ৩০/১১/২০১৮ তারিখে সিএনজি অটোরিক্সা থেকে আমার একটি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর হারিয়ে যায়। থানায় জিডি করতে গেলে সেখানে তারা কোন জায়গা থেকে হারিয়ে গেছে তা লিখেছে কিন্তু সিএনজি শব্দটি লিখেনি। আমি এতবার অনুরোধ করলাম, তাদের এক কথা সেটা লিখা যাবেনা, লিখলে সমস্যা আছে!
পরে বুঝতে পারলাম, সিএনজি অটোরিক্সার কথা লিখলে শহরের সিএনজিগুলো পুলিশকে চেক দেয়া লাগবে, তদন্ত করা লাগবে। সে ঝামেলায় তারা যেতে রাজি নয়। তাই তথ্য গোপন করতে পারলেই তারা বাঁচে।

এবার আপনারা বলুন কিভাবে পুলিশের উপর আস্থা রাখবেন? দেশে যে এত এত অপরাধ সংগঠিত হয় আর অপরাধ করেও অপরাধি পার পেয়ে যায় তার পেছনে শুধু উকিলের মার-প্যাঁচ, সঠিক তদন্তে অবহেলা দায়ী নয়, দায়ী মামলার এজাহারও। কারন এজাহারে পুলিশ সবসময় হয় নিজের সুবিধামত ঘটনার বিবরণ লিখে অথবা পুলিশের উপরের মহল তাদের উপর যাতে নাখোশ না হয় সেভাবেই ঘটনার বিবরণ লিখে।আর দেশের ভেতর ঘটে যাওয়া বিভিন্ন মামলার সঠিক তদন্ত না হওয়া বা বিচার না হওয়ার বড় কারন এজাহারে প্রকৃত তথ্য গোপন করা।

ধরা যাক কোন একজন ব্যক্তিকে অন্য আরেকজন মাথায় রড় দিয়ে আঘাত করে খুন করল। এখন পুলিশ যদি এজাহারে লিখে গাড়ি দুর্ঘটনার সময় মাথায় গাড়ির রডের আঘাত লেগে মৃত্যু হয়েছে, তাহলে এই খুনের সুবিচার আশা করা জীবনে বড় ভুল হবে। কারন পুলিশ তদন্তে যাওয়ার আগে দেখবে এজাহারে কি লিখা আছে, সে অনুযায়ীই তারা তদন্তে নামবে, বাস্তব ঘটনা যেমনই হোক, পুলিশ সেদিকে আর ফিরেও তাকাবেনা।

দুঃখজনক হলেও সত্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আজকাল থানায় এমন হচ্ছে। থানায় বেশিরভাগ এজাহারগুলো পুলিশ নিজে লিখে অথবা পুলিশের নিয়োগকৃত রাইটাররা লিখে। তারপর বাদীর কাছ থেকে শুধু স্বাক্ষরই নেয়া হয়। অনেকসময় পুলিশ বাদীকে তাড়াতাড়ি স্বাক্ষর দেয়ার জন্য তাড়া দেয় যাতে বাদী ঠিকমত না পড়তে পারে। আর যারা পড়তেই জানেনা, তাদের ক্ষেত্রে কি হয় তা তো বলার অপেক্ষা রাখেনা। এই যদি অবস্থা হয় তাহলে আপনি কিভাবে, কার কাছে ন্যায় বিচার আশা করবেন?

শেষ খবরঃ নোয়াখালির সুবর্ণচরের ধর্ষণ ঘটনায় বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নির্বাচনের সাথে ঐ ঘটনার কোন সম্পর্ক খুঁজে পায়নি। পেয়েছে পুর্ব শত্রুতার সম্পর্ক, কারন এজাহারে তাই লিখা আছে! সে ঘটনার ভিকটিম এবং বাদীও আবার নিরক্ষর।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.